কচ্ছপ আর খরগোশের গল্পের নতুন সংস্করণ!

3 comments
    কচ্ছপ আর খরগোশের গল্পের নতুন সংস্করণ



আমরা সকলেই কচ্ছপ আর খরগোশের গল্প পড়েছি বা শুনেছি। একটু সংক্ষেপে দেখে নিই -

একবার খরগোশের নিজের দ্রুত চলার উপরে অহংকার হয়ে গেল। সে যাকে দেখে তাকেই চ্যালেঞ্জ করে।

একদিন কচ্ছপ তার চ্যালেঞ্জ স্বীকার করল।

রেস হল। খরগোশ দ্রুত দৌড়াতে লাগল এবং কিছুক্ষণ পর পিছনে তাকিয়ে দেখল কিন্তু কচ্ছপ কে দেখতে পেল না। সে ভাবল যে কচ্ছপের তো এই পর্যন্ত আসতে এখনো অনেক সময় লাগবে, তো ততক্ষণ একটু আরাম করে নেওয়া যাক। আর এই ভেবে সে একটি গাছের নিচে শুয়ে পড়ল। শুয়ে শুয়ে কখন তার ঘুম এসে গেল সে বুঝতেই পারল না।



ওদিকে কচ্ছপ আস্তে আস্তে কিন্তু অবিরাম চলতে থাকল। অনেক্ষণ পর যখন খরগোশের ঘুম ভাঙল, তখন সে দেখল যে কচ্ছপ ফিনিশিং লাইনের কাছাকাছি পৌঁছেই গেছে। খরগোশ অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ছুটতে লাগল, কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল, কচ্ছপ রেস জিতে গেল। 



এই গল্পটি পড়ে আমরা কি শিক্ষা পেলাম -  "আস্তে হোক কিন্তু অবিরাম যে চলে সেই রেস জেতে"।



এই গল্পটি তো আমরা সকলেই জানি, এবার এর পরের ঘটনাটি জানা যাক।



রেস হারার পর খরগোশ একদম নিরাশ হয়ে গেল, সে ঐ বিষয়ে বারবার ভাবতে লাগল। আর সে বুঝতে পারল যে over - confidence এর জন্যই রেস হেরে গেছি...লক্ষ্য পর্যন্ত পৌঁছে আরাম করা দরকার ছিল।


পরের দিন সকাল হতেই সে কচ্ছপ কে আবার রেসের চ্যালেঞ্জ দিল। কচ্ছপ তো রেস জিতে আত্ম বিশ্বাসে ভরে ছিল, সে তৎক্ষণাৎ চ্যালেঞ্জ  স্বীকার করে নিল।
রেস শুরু হল। এইবার খরগোশ না থেমে অত্যন্ত দ্রুত ছুটে কচ্ছপ কে একটা বড় অন্তরে হারিয়ে সে রেস জিতে নিল।


কি শিক্ষা পেলাম - "যে দ্রুত এবং অবিরাম চলে, সে ধীরে এবং অবিরাম চলা ব্যক্তি কে সর্বদা হারিয়ে দেয়"।



এইবার কচ্ছপ একটু চিন্তা - ভাবনা করতে লাগল আর সে বুঝতে পারল যে যেভাবে রেস হচ্ছে এইভাবে কখনোই খরগোশ কে হারানো যাবে না।
পরের দিন কচ্ছপ খরগোশ কে রেসের চ্যালেঞ্জ দিল, আর বলল যে এইবার রেসের পথ আমি ঠিক করেছি। খরগোশ তৈরি হয়ে গেল।



রেস শুরু হল। খরগোশ লক্ষ্যের দিকে দ্রুত গতিতে ছুটতে লাগল, কিন্তু কিছু দূর গিয়েই সে থমকে দাঁড়িয়ে গেল, তার সম্মুখে একটি নদী ছিল। খরগোশের করার কিছুই ছিল না সে চুপচাপ দাঁড়িয়ে দেখতে লাগল। কচ্ছপ ধীরে ধীরে চলতে চলতে খরগোশের কাছে পৌঁছে গেল, আর আরামের সাথে নদী পার করে রেস জিতে নিল।


কি শিক্ষা পেলাম - "প্রথমে নিজের শক্তি কে চিনুন আর সেই অনুযায়ী কর্ম কে বেছে নিন, জিত আপনারই হবে"।



তারপর কচ্ছপ আর খরগোশ দুজনেই খুব ভাল বন্ধু হয়ে গেল। তারা একে অপরের শক্তি এবং দুর্বলতা কে বুঝে নিয়েছিল। তারা দুজনেই পরামর্শ করল যে, যদি আমরা একে অপরের সাথ দিই তাহলে আমরা যে কোন রেস জিততে পারব।


সেই জন্য তারা দুজনে মিলে আবার একবার একটা শেষ রেস লাগানোর সিদ্ধান্ত নিল। কিন্তু এইবার প্রতিদ্বন্দী হিসাবে নয় একটি দল হিসাবে চলার সিদ্ধান্ত করল।



দুজনেই স্টার্টিং লাইনে দাঁড়িয়ে...get set go...আর তুরন্ত খরগোশ কচ্ছপ কে পিঠে বসিয়ে নিয়ে ছুটতে লাগল। নদীর ধারে গিয়েই কচ্ছপ নেমে খরগোশ কে পিঠে বসিয়ে নিল আর সহজেই নদী পার করে ফেলল। তারপর আবার খরগোশ নেমে কচ্ছপ কে পিঠে বসিয়ে ফিনিশিং লাইনের দিকে ছুটতে লাগল। আর রেকর্ড টাইমে রেস পুরো করে নিল। দুজনেই খুব খুশি এবং সন্তুষ্ট হল, এর আগে রেস জিতে তারা এতটা খুশি কখনো হয়নি।



কি শিক্ষা পেলাম - "টিম ওয়ার্ক সর্বদাই ব্যক্তিগত প্রদর্শনের চেয়ে অনেক বেশি ভাল হয়"।


আপনি যত ভালোই প্রদর্শনকারী হন না কেন একার বলে প্রতিটি ম্যাচ জিততে পারবেন না।


যদি সব সময় জিততে চান তাহলে দলগত (teamwork) হিসাবে কাজ করা শিখতে হবে। নিজের যোগ্যতা ছাড়াও অপরের শক্তিকেও বুঝতে হবে। আর যখন যেমন স্থিতি হবে তখন তেমন ভাবে দলের ক্ষমতা কে ব্যবহার করতে হবে।



এখানে আর একটি কথা ধ্যান দেওয়ার যোগ্য। যে কচ্ছপ আর খরগোশ দুজনেই হেরে গিয়ে নিরাশ হয়ে যায়নি, তারা পরিস্থিতি কে বোঝার চেষ্টা করল এবং নিজেকে আবার নতুন চ্যালেঞ্জের জন্য তৈরি করল। 
তাই যদি কোন ক্ষেত্রে ব্যর্থ হন তো নিরাশ না হয়ে পরিস্থিতি কে বোঝার চেষ্টা করুন, যে কেন ব্যর্থ হলেন। এবং নিজের কৌশলে আর পরিশ্রমের তরিকা তে পরিবর্তন করুন, সফলতা অর্জন নিশ্চয়ই করবেন।



ধন্যবাদ!

Related Posts

3 comments

  1. নতুন সংস্করণটার টিম work টা ভালো লাগছে।

    ReplyDelete
  2. This comment has been removed by a blog administrator.

    ReplyDelete

Post a Comment