ছোট্ট একটি গ্রামে এক মেয়ে বাস করতো।
মেয়েটি দেখতে শুনতে যেমন ভাল ছিল তেমনিই ছিল বেশ সুন্দরী।
তবে মেয়েটির একটি সমস্যা ছিল সে তার দুটি চোখে দেখতে পেতো না।
অন্ধ ছিল।
একদিন একটি ছেলে মেয়েটিকে দেখে খুব পছন্দ করল।
ছেলেটি ঐ মেয়েটিকে তার ভালবাসার কথাটি বলল।
মেয়েটি প্রথমে ছেলেটিকে মেনে না নিলেও একসময় সে তার প্রেমে সাড়া দেয়।
এভাবেই চলতে থাকে তাদের প্রেম।
ছেলেটি খুব খুব ভালবাসতো মেয়েটিকে।
সব সময় তার খোজ খবর নিতো তাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গাতে ঘুরতে যেতো।
মেয়েটিকে ঔষুধও কিনে এনে দিত যাতে করে সে তার চোখের আলো ফিরে পায়।
কিন্তু তাতে কিছুই হয়না।
তাই ছেলেটি একজন বড় ডাক্তারের শরণাপন্ন হল।
ডাক্তারবলল, মেয়েটির চোখ দুটি সম্পূর্নই নষ্ট হয়ে গেছে তাই খুব দ্রুত তাকে নতুন দুটি চোখ দিয়ে যদি অপরাশেন করা হয় তবে হয়তো সে আবার আগের মতো দেখতে পারবে।
যদি জলদি না করা হয় তবে সে আর কখনও দেখতে পাবে নাহ।
ছেলেটি খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলো।
দিন রাত সৃষ্টিকর্তার কাছে তার ভালবাসার মানুষটির সুস্থের জন্য প্রার্থনা করত।
একদিন মেয়েটিকে সে জিজ্ঞেস করল, আচ্ছা যদি কখনও তুমি তোমার চোখের আলো ফিরে পাও তবে কি আমাকে ভুলে যাবে? আমাকে কি ছেড়ে চলে যাবে?
মেয়েটি একটি হাসি দিয়ে বলে, আমি তোমাকে কখনও ছেড়ে যাব না, কোথাও যাব না।
এরপর কেটে গেল অনেক দিন।
একসময় অপারেশন করে মেয়েটি সুস্থ হয়ে ওঠে।
এখন চোখে দেখতে পারে সে, তার চোখের আলো আবার ফিরে পেয়েছে।
সে এখন সম্পূর্ন সুস্থ।
এখন তাকে সবাই পছন্দ করে, তাকে ভালবাসতে চায়।
কারোর কথা মনে পড়ার মত সময়ও তার আসে না।
একদিন এক অন্ধ ছেলে এসে তাকে বলে, আমি তোমাকে খুব ভালবাসি, তুমি কি আমাকে একটু ভালবাসবে?
মেয়েটি উত্তরে বলে, আমি কোন অন্ধ ছেলেকে ভালবাসতে যাব কোন দুঃখে, কত ভালো ভালো ছেলে আমার জন্য পাগল হয়ে আছে আর আমি তোমার মতো অন্ধ ছেলেকে ভালবাসব!?
ছেলেটি কিছু বলল না।
মেয়েটির কথাগুলো শুনতে থাকে আর চোখ থেকে অশ্রু গুলো গড়িয়ে পড়তে থাকে।
ছেলেটি চুপ থেকে মেয়েটিকে শুধু এতোটুকুই বলে যে "তুমি ভাল থেকো আর চোখ দুটির যত্ন নিও।"
এই বলে ছেলেটি চলে যায় আর কখনও ফিরে আসেনা তার ভালবাসার দাবি নিয়ে।
ঠিক এইভাবে,
বদলে যায় কিছু প্রিয় মানুষগুলো,
সময়ের সাথে একটু সুখ পেয়ে ভুলে যায় অতীতগুলোকে।
কি অদ্ভুত এই বাস্তবতার খেলা যা শুধুই মানুষই পারে খেলতে।
: