কেউ দেখে শিখে আর কেউ ঠেকে শিখে

Post a Comment


জীবনে সবাই শেখে। কেউ কেউ শেখার জন্য বেছে নেয় খুব কষ্টের পথ। আপনি যে জিনিস হয়ত মধ্য বয়সে শিখছেন, তা হয়ত অনেকে কৈশোরে শিখে ফেলেছে। কেউ হয়ত স্কুল জীবনে যা শেখার কথা, আজো তা শেখেনি। এগুলো চিন্তা করে অবাক হবেন, তাতে লাভ নেই। আসল বিষয় হলো, আপনি কখন শিখবেন। যখনই হোক, জীবনে যখন "ঠেকে শিখবেন" তখনই আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ হতে হয়। প্রকৃতপক্ষে, যতই শিখবেন, শেখার সময়টা অবশ্যই কষ্টের, কিন্তু না শেখা জীবন হতাশা আর গ্লানির। যারা কখনই শেখে না, বুঝেও বুঝে না, দেখেও অনুভব করে না--তারা আজীবন বুকের জ্বালায় দগ্ধ হয়ে মরে। কষ্টের উৎস খুঁজে না পাওয়ার যে জ্বালা, সেটা তারা হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করে।

কেউ ক্লাসরুমে আনন্দ করে শেখে, কেউ শেখে শুভাকাংখীর উপদেশ থেকে। আবার নির্মম শিক্ষা হলো খুব বড় ক্ষতি থেকে শেখা। তবুও, শেখা শেখাই। একটা কথা বহুল প্রচলিত, "শিখেছি কোথায়? ঠেকেছি যেথায়"। তাই শেখায় কোন লজ্জা নেই, বয়স নেই। ঐ যে বলে না? 'better late than never'-- দেরিতে হলেও শিখুন। শেখাই জীবন। শিখলেই জীবন বদলায়। কিন্তু শেখার পথটা খুব কষ্টের। খুব। যে কোন চিন্তা, অভিজ্ঞতা আমাদের যা শেখায়, তা একটা দুর্গম পথ। কিন্তু, শেখা ছাড়া জীবন হয় না। 'পড়ো, তোমার প্রভুর নামে, যিনি তোমায় সৃষ্টি করেছেন,' -- শেখার এক পরম আদেশ, হালাল-হারাম, অমুক-তমুক, ইত্যাদি চিন্তা করার আগেই শিখতে দৌড়াতে হবে।

যারা সাধারণ বাক্যই উপলব্ধি করতে পারে না, চোখের সামনে, নিজের জীবনে শত-সহস্র ঘটনা থেকেও শিখতে পারে না। ধর্মের কথা, হালাল-হারাম আর পাপ-পুণ্যের গল্প বলে সে তো কেবল অন্যের ক্ষতিই করবে। আল্লাহ তো দিন-রাত্রির পরিবর্তনে, আকাশ আর দুনিয়ার সৃষ্টির মাঝে তাকিয়ে থেকে চিন্তাশীলদের শেখার আমন্ত্রণ দিয়েছেন। কয়টা হৃদয় সত্যিকারের শিখতে পারি? এই আকাশ আর পৃথিবী, রাত আর দিনে কী কী শিখেছি তা পয়েন্ট করে লিখে নিজেরাই লজ্জায় পড়ে যাবো না?

শিখতে হবে। একদম শিশুদের মতন শেখা। শেখাতেই রয়েছে মুক্তির শুরু। শেখার মাঝেই রয়েছে কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার চাবি। সবাই আটকে পড়ে আছি কারাগারে। অজ্ঞতা, অন্ধত্ব, অহং, হিংসার কারাগার। আলো দাও খোদা। 'নূরুন আলা নূর' কবে একটানা হতেই থাকবে আমাদের হৃদয়ে?

[১৩ নভেম্বর, ২০১৫]

Related Posts

: