গত চারদিন হলো রাফসানের সাথে ব্রেক-আপ হয়ে গেলো।টানা চার বছরের সম্পর্ক আমাদের। এই কয়েকটা দিনে তার কোনো খোজ পাইনি।এবার আমি আর খোজ নেওয়ার চেষ্টাও করিনি।
রাত্রে খাওয়া-দাওয়া না করেই কাদতে কাঁদতে অবশেষে ফোনটা ভাইব্রেট মুডে রেখে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।-
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি ফোনে চার্জ নেই। চার্জারটা লাগিয়ে ফোনটা অন করে আমি তো হতবাক।
রাফসানের টেক্সটে ইনবক্স ফুল হয়ে আছে।
রাফসান আমাকে কতবার ফোন দিয়েছিল তার হিসেব করতে হয়ত পারিনাই।কিন্তু, রাত্রে তার অনবরত ফোন কলিংয়ের প্রেসারে ফোনের ৪৮%চার্জই শেষ করে বন্ধ হয়ে গেছিলো-এটুকু ঠিকই বুঝতে পারলাম।
ইনবক্স টা ওপেন প্রথম টেক্সট থেকে শুরু করলাম--
১) ১০:৩৫--অনামিকা, জানি না তোমার সাথে এটা করা ঠিক হলো কিনা।তবে এই মুহুর্তে আমি ভাল আছি।
২)১০:৪২-বিশ্বাস করো-আমি নিরুপায়। কেন জানি আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিলো।
৩)১০:৫৮-- আমার সাথে এমন কেন হয়.? কেন তোমার প্রতি বিরক্ত হয়ে যায়.? জানি, আমি খুব খারাপ। তোমার ভালবাসার মুল্য দিতে পারিনা বিন্দুমাত্র।
৪)১১:১৫--আমি কি ভুল করে ফেললাম.?ব্রেক-আ প করাটা বোধহয় ঠিক হলো না। তুমি নিশ্চয় কাঁদছ.? আমার কেন জানি কান্না পাচ্ছে না।
আমি এখন মুক্ত পাখির মত অনুভব করছি।টের পাচ্ছো.??
৫)১১:৩৬-- অনামিকা, ঘুম আসছে না।গতকাল অব্দি তো ভালোই ছিলাম। তোমার বোকামো আর পাগলামোটা খুব মিস করছি..
৬)১২:-০৬-- ফোন টা রিসিভ করছো না কেন.? ভাল লাগছে না।
প্লিজ কথা বলো।
৭)১২:৫৬-আর কত ফোন দেবো.? প্লিজ, রিপ্লাই তো দাও।
৮)১:৫০-- ভীষণ কান্না পাচ্ছে। ফোনটা রিসিভ করো।
৯)২:২৩:-- আমার ভুল হয়েছে অনু। তুমি ছাড়া আমি এক মুহুর্ত ভালো থাকতে পারছিনা। ভালোবাসি খুব।
১০)২:৪৭:- ফোনটা বন্ধ করে ফেললে.? এভাবে তুমি অভিমান করে থাকতে পারলে.? আমার যে-বিশ্বাস হচ্ছে না।
টেক্সগুলো শেষ করে ওয়াশরুমে গেলাম।চোখ দুটো ফুলে গেছে। জোর করে হাসার চেষ্টাও করলাম। লাভ হলো না।
হবেই বা কিভাবে.? চার বছরের সম্পর্ক্টা চুকে দিয়ে এলাম। রিলেশনের আড়াই বছর পর থেকে এই গত দেড় বছরে মোট তেরো বার ব্রেক-আপ হয়েছে।
নিছক মজা করে বা অভিমানের জন্য নয়।
কিছুদিন পর পরই ও বলে--"ওর নাকি এই রিলেশনে বিরক্ত ধরে গেছে।নিজেকে জেলখানার কয়েদি মনে হয়। আমার কেয়ার তার বিরক্ত ধরার কারণ। এভাবেই চলে যায়। অত:পর কয়েকদিন পর,যখন বাকিরা অবহেলা করে, কেয়ারহীনতায় ভোগে,তখন এসে ক্ষমা চাই। ক্ষমা করে দিই। কিন্তু, আর পারছি না। এভাবে কোনো সম্পর্ক টিকে থাকে না। আমি তার শুন্যতার পূরণ,মন ভাল থাকার কারণ।কিন্তু, আমার মনটা ভালো আছে কিনা.!সেটা জানার বিন্দুমাত্র আগ্রহ এখন আর তার নেই। সত্যি বলতে-তার নতুন কোনো গার্লফ্রেন্ড নেই।
তবুও পুরনো জিনিসে হয়ত মরিচা ধরাটাই স্বাভাবিক।""
ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে রুমে আসতেই ফোনটা টুং করে বেজে উঠল।
রাফসানের টেক্সট:--
-"অনু, প্লিজ। আই এম সরি। তোমাকে ছাড়া আমার সত্যি খুব কষ্ট হচ্ছে।এই শেষ বার, আর তোমাকে কাদাবো না। তোমাকে ছেড়ে যাবার কথা বলবো না। ক্ষমা করে দাও প্লিজ.""--
টেক্সটা পড়ছি আর চোখ দিয়ে টুপ টুপ করে জল গড়িয়ে পড়ছে। নিশব্দে কেঁদে নিলাম কিছুক্ষণ।
তারপর রিপ্লাই বক্স ওপেন করে টাইপ করলাম:--
-"কিন্তু,আমি এই প্রথম এবং শেষবারের মত তোমাকে ছেড়ে যাচ্ছি। ভালবাসতে হলে একটু যত্ন করতে হয়। ভালবাসার মানুষকে না পারলেও ভালবাসাকে আগলে রাখতে হয়,নয়ত সে হারিয়ে যায়।আর যত্ন না থাকলে সেটাকে এমন পানসে মনে হয়। জেলখানারর কয়েদিই লাগে। জোর করিনি তো কখনো.!তবুও কেন এত অসস্ত্বি.!!
""সম্পর্কে ভালবাসতে না পারলেও সেটা গ্রহন করার সামর্থ্য রাখতে হয়, নতুবা, ভালবাসা আশা করাটা স্বার্থপরতা। আর,আমার ভালবাসায় স্বার্থপরতার কোনো স্থান নেই। তোমার তো ভালবাসা গ্রহণ করার মতোও সাহস বা ক্ষমতা নেই।জোর করে আর কি দেবো.!!""--
টেক্সটা আরেকবার চেক করে সেন্ড অপশনে ক্লিক করলাম। তারপর সিমটা ভেঙে চোখে পানি ঝাপটা দিয়ে ধুয়ে মিউজিক প্লেয়ারে গান ছাড়লাম:--
""তুমি সুখও যদি নাহি পাও,
যাও সুখেরও সন্ধানে যাও।""-
উদ্দেশ্য আপাতত ঘুম। পরে যা হবার হবে।
জানি না, এ সম্পর্কে আমি অসুস্থ পাগল ছিলাম নাকি নার্স.!!
(গল্পটি কল্পনা থেকে লেখা। তবে,আমাদের বাস্তবতায় এভাবেই কিছু দীর্ঘদিনের সম্পর্কে ঘুণে ধরেছে অবহেলা,অযত্ন,আর পানসে নামক মিথ্যে স্বাদের কারণে। তাদের অবস্থাটা এমন যে:-নেহাৎ দ্বায়ে পড়েছি."। দুয়া রইলো তাদের জন্য,যেন এসব থেকে দূরে থেকে ভালবাসার বাধনে বাধতে পারেন।)
--""আসলে আপনি যতক্ষণ কাউকে কেয়ার করবেন,সে ততক্ষণ আপনার কেয়ারটাকে অবহেলা করবে।আবার যখনি কেয়ার করাটা কমিয়ে দিবেন,সে কেবল তখনি আপনার শুন্যতা অনুভব করবে।এর আগে নয়।""-
লেখিকা:-- সুহাসিনী সোনামনি
সময়:-রাত-১:২৯।
স্থান:--সিনেমা হল পাড়া,চুয়াডাঙ্গা
রাত্রে খাওয়া-দাওয়া না করেই কাদতে কাঁদতে অবশেষে ফোনটা ভাইব্রেট মুডে রেখে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।-
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি ফোনে চার্জ নেই। চার্জারটা লাগিয়ে ফোনটা অন করে আমি তো হতবাক।
রাফসানের টেক্সটে ইনবক্স ফুল হয়ে আছে।
রাফসান আমাকে কতবার ফোন দিয়েছিল তার হিসেব করতে হয়ত পারিনাই।কিন্তু,
ইনবক্স টা ওপেন প্রথম টেক্সট থেকে শুরু করলাম--
১) ১০:৩৫--অনামিকা,
২)১০:৪২-বিশ্বাস
৩)১০:৫৮-- আমার সাথে এমন কেন হয়.? কেন তোমার প্রতি বিরক্ত হয়ে যায়.? জানি, আমি খুব খারাপ। তোমার ভালবাসার মুল্য দিতে পারিনা বিন্দুমাত্র।
৪)১১:১৫--আমি কি ভুল করে ফেললাম.?ব্রেক-আ
আমি এখন মুক্ত পাখির মত অনুভব করছি।টের পাচ্ছো.??
৫)১১:৩৬-- অনামিকা, ঘুম আসছে না।গতকাল অব্দি তো ভালোই ছিলাম। তোমার বোকামো আর পাগলামোটা খুব মিস করছি..
৬)১২:-০৬-- ফোন টা রিসিভ করছো না কেন.? ভাল লাগছে না।
প্লিজ কথা বলো।
৭)১২:৫৬-আর কত ফোন দেবো.? প্লিজ, রিপ্লাই তো দাও।
৮)১:৫০-- ভীষণ কান্না পাচ্ছে। ফোনটা রিসিভ করো।
৯)২:২৩:-- আমার ভুল হয়েছে অনু। তুমি ছাড়া আমি এক মুহুর্ত ভালো থাকতে পারছিনা। ভালোবাসি খুব।
১০)২:৪৭:- ফোনটা বন্ধ করে ফেললে.? এভাবে তুমি অভিমান করে থাকতে পারলে.? আমার যে-বিশ্বাস হচ্ছে না।
টেক্সগুলো শেষ করে ওয়াশরুমে গেলাম।চোখ দুটো ফুলে গেছে। জোর করে হাসার চেষ্টাও করলাম। লাভ হলো না।
হবেই বা কিভাবে.? চার বছরের সম্পর্ক্টা চুকে দিয়ে এলাম। রিলেশনের আড়াই বছর পর থেকে এই গত দেড় বছরে মোট তেরো বার ব্রেক-আপ হয়েছে।
নিছক মজা করে বা অভিমানের জন্য নয়।
কিছুদিন পর পরই ও বলে--"ওর নাকি এই রিলেশনে বিরক্ত ধরে গেছে।নিজেকে জেলখানার কয়েদি মনে হয়। আমার কেয়ার তার বিরক্ত ধরার কারণ। এভাবেই চলে যায়। অত:পর কয়েকদিন পর,যখন বাকিরা অবহেলা করে, কেয়ারহীনতায় ভোগে,তখন এসে ক্ষমা চাই। ক্ষমা করে দিই। কিন্তু, আর পারছি না। এভাবে কোনো সম্পর্ক টিকে থাকে না। আমি তার শুন্যতার পূরণ,মন ভাল থাকার কারণ।কিন্তু, আমার মনটা ভালো আছে কিনা.!সেটা জানার বিন্দুমাত্র আগ্রহ এখন আর তার নেই। সত্যি বলতে-তার নতুন কোনো গার্লফ্রেন্ড নেই।
তবুও পুরনো জিনিসে হয়ত মরিচা ধরাটাই স্বাভাবিক।""
ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে রুমে আসতেই ফোনটা টুং করে বেজে উঠল।
রাফসানের টেক্সট:--
-"অনু, প্লিজ। আই এম সরি। তোমাকে ছাড়া আমার সত্যি খুব কষ্ট হচ্ছে।এই শেষ বার, আর তোমাকে কাদাবো না। তোমাকে ছেড়ে যাবার কথা বলবো না। ক্ষমা করে দাও প্লিজ.""--
টেক্সটা পড়ছি আর চোখ দিয়ে টুপ টুপ করে জল গড়িয়ে পড়ছে। নিশব্দে কেঁদে নিলাম কিছুক্ষণ।
তারপর রিপ্লাই বক্স ওপেন করে টাইপ করলাম:--
-"কিন্তু,আমি এই প্রথম এবং শেষবারের মত তোমাকে ছেড়ে যাচ্ছি। ভালবাসতে হলে একটু যত্ন করতে হয়। ভালবাসার মানুষকে না পারলেও ভালবাসাকে আগলে রাখতে হয়,নয়ত সে হারিয়ে যায়।আর যত্ন না থাকলে সেটাকে এমন পানসে মনে হয়। জেলখানারর কয়েদিই লাগে। জোর করিনি তো কখনো.!তবুও কেন এত অসস্ত্বি.!!
""সম্পর্কে ভালবাসতে না পারলেও সেটা গ্রহন করার সামর্থ্য রাখতে হয়, নতুবা, ভালবাসা আশা করাটা স্বার্থপরতা। আর,আমার ভালবাসায় স্বার্থপরতার কোনো স্থান নেই। তোমার তো ভালবাসা গ্রহণ করার মতোও সাহস বা ক্ষমতা নেই।জোর করে আর কি দেবো.!!""--
টেক্সটা আরেকবার চেক করে সেন্ড অপশনে ক্লিক করলাম। তারপর সিমটা ভেঙে চোখে পানি ঝাপটা দিয়ে ধুয়ে মিউজিক প্লেয়ারে গান ছাড়লাম:--
""তুমি সুখও যদি নাহি পাও,
যাও সুখেরও সন্ধানে যাও।""-
উদ্দেশ্য আপাতত ঘুম। পরে যা হবার হবে।
জানি না, এ সম্পর্কে আমি অসুস্থ পাগল ছিলাম নাকি নার্স.!!
(গল্পটি কল্পনা থেকে লেখা। তবে,আমাদের বাস্তবতায় এভাবেই কিছু দীর্ঘদিনের সম্পর্কে ঘুণে ধরেছে অবহেলা,অযত্ন,আর
--""আসলে আপনি যতক্ষণ কাউকে কেয়ার করবেন,সে ততক্ষণ আপনার কেয়ারটাকে অবহেলা করবে।আবার যখনি কেয়ার করাটা কমিয়ে দিবেন,সে কেবল তখনি আপনার শুন্যতা অনুভব করবে।এর আগে নয়।""-
লেখিকা:-- সুহাসিনী সোনামনি
সময়:-রাত-১:২৯।
স্থান:--সিনেমা হল পাড়া,চুয়াডাঙ্গা
: