কলেজের সেই বট গাছের নিচে বসে আছি, অথচ নিরব কোন আসার খবরই নাই। ছেলেটা এমনি ভাল তবে একটু হাবলু কোয়ালিটির এতে কোন সমস্যা নেই। চালিয়ে নেয়া যাবে কিন্তু সমস্যাটা অন্য জায়গায় কোন কিছুতেই সিরিয়াস না,
আরে বাবা ভালোবাসিস ভালো কথা তাই বলে এভাবে???
প্রতিদিন কলেজে আসবে, এ সে আমাকে খোজ করা শুরু করে দিবে, আর সামনে পরলেই ব্যাস, পিছে পিছে ঘোরা শুরু করবে, i love you i love you বলে চিৎকার করবে, এটা সে একটা রুটিনে পরিণত করেছে।
আমার কী আমিও করেছি, হয় থাপ্পড় না হলে এলোপাথাড়ি বকাঝকা, গত পরশুদিন সে এক বিরাট কাণ্ড করে বসে আছে হঠাৎ করেই কবি হয়ে উঠেছে, আমাকে নিয়ে কবিতা লিখে ফেলছে,
কবিতা টা,
নিলা তুমি এখন ঘুমিয়ে না জেগে, তা বলতে পারছি না ।
তবে আমি এখনো জেগে তোমার কথা মনে করে,
আকাশের দিকে তাকিয়ে চাদের সাথে কথা বলছি,
নিলা তুমি ভালোবাসো কিনা, না যেনে কল্পনায় তোমায় নিয়ে সুখের বাসর বেধেছি,
দেবে কি ধরা, মনের ঘরে হাত দুটো বাড়িয়ে?
যাবে কি হেটে, হাত ধরে অন্তহীন সেই পথে,
যে পথে, রাতের আধারে হাজারো জোনাকি জ্বলে আর নেভে?
যে পথে রাত্রি নামে হাজার তাঁরার সাথে জোসনা নিয়ে?
পারি দিতে চাই, সেই পথ তোমার হাত দুটো ধরে।
-----
কবিতাটা শুনে আমি ও আমার বান্ধবীরা হাসতে হাসতে পেট বেথা করে ফেলেছি। আর বেচারা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে, আমার চোখের দিকে!
নিরবঃএই শোন এত হাসির কি আছে, কাল সারারাত ধরে এরকম একটা কবিতা লিখছি আর তোরা হাসতেছিস? তোরা হয়তো কবিতাটার মানে বুঝতে পারিস নি, আমি আবার বলি শোন?
নিলাঃতোকে আর বলতে হবেনা আমরা বুঝতে পেরেছি! তুই কি এখন চোখের সামনে থেকে যাবি না আবার থাপ্পড় খাবি?
থাপ্পড় খাওয়ার ভয়ে সেদিনকার মতো নীরব চলে গেল, ছেলেটাকে পিছে পিছে ঘুরিয়ে খুব মজা পাচ্ছি। অনেকদিন যাবত পিছু পড়ে আছে মাঝে মাঝে মায়া তৈরি হয়। ওর প্রতি ভালো লাগা তৈরি হয়, হাত ধরে অনেক টা পথ পারি দিতে মন চায়, রাতভর ফোনে কথা বলে, বেলা করে ঘুমোতে মন চায়।
কিন্তু এসব কিছুই তাকে বুঝতে দেইনা। কারন আমি জানি ভালোবাসা তখনি, সুন্দর থাকে যখন ভালোবাসার পিছে মানুষ ছুটে। অল্প অল্প অনুভৃতি এক সময় অনেক বেশি হয়। আর যেটা খুব সহজে পাওয়া যায়, সেটার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমই থাকে। সে জন্যই তো একটু বেশি করে তাকে পিছে পিছে ঘুরাচ্ছি। কারন আমিও তো তাকে ভালোবাসি? আর ওর থেকে বেশিই ভালোবাসি, সে জন্যই তো হারাতে চাই না।
আজ কয়েকদিন যাবৎ নিরব আমাকে বেশ এড়িয়ে চলছে যেটা মোটেও আমার ভালো লাগছে না!! আজকে নিরবের সঙ্গে দেখা কিছু না বলেই সামনে দিয়ে হেটে চলে যাচ্ছিল, যেটা দেখে আমার আকাশ থেকে পড়ার মতন অবস্থা, যে ছেলে সারাদিন পিছে পিছে ঘুরে, সে হঠাৎ করে এরকম বদলে যাবে কিভাবে??
আমি উপরে পড়ে জিজ্ঞেস করলাম, কেমন আছো নীরব?
জি ভালো। বলে হাঁটা শুরু করল বাড়িতে আর একটা কথাও বলল না, নিরবের এরকম আচারন দেখে মেজাজটা যে কি রকম গরম হচ্ছে বলে বোঝানো যাবে না।
আমার পদ্ধতি আমার উপরি প্রয়োগ করছে এখন আমাকে এড়িয়ে চলছে, হয়ত আমাকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করছে।তাই আমিও এড়িয়ে চলতে শুরু করলাম।
এখন নিরবের আরো পরিবর্তন হইছে, আমাকে দেখে কথা বলে না, আমার দিকে তাকায় না, এসব দেখে আমার গায়ের ভেতর কি পরিমানই যে জ্বলছে,
হয়তো গায়ের সাথে ম্যাচের কাঠি লাগলে কাঠি জ্বলে উঠবে এমন অবস্থা।আবার কান্নাও পাচ্ছে।
শুরু করে দিলাম গোয়েন্দাগিরি বের করতে হবে নিরবের পরিবর্তনের কারণ!
সঙ্গে নিলাম আমার বান্ধবী ইরাকে। ইরা আবার এইসব বিষয়ে খুবই পারদর্শী খুব সহজেই বের করে ফেলে যে কোন কিছুর কারণ! ওর সঙ্গে যুক্তি তর্কে কেউ পারবে বলে আমার মনে হয় না।
ক্লাসে গিয়ে কয়েক ঘন্টা অনুসন্ধান চালানো,, নাম উঠে আসলো একজনের, নাম নিতু, নামটা শুনে তো আমার আকাশ থেকে পড়ার মত অবস্থা!!
ইরার মতে, নিতু নাকি বেশ কয়েকদিন যাবত নিরবের পিছে পিছে ঘোরে ইনিয়ে-বিনিয়ে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে, নিরব ও নাকি, সারা দিতে শুরু করছে, সেদিন ইরার বান্ধবি দেখেছে, তারা দুজন অনেকক্ষন ক্যামপাসে বসে গল্প করছে, নিতুর সাথে ফুসকা খেয়েছে।
ইরার কথা শুনে চোখ পানি টলমল করছে, যে কোন সময় ঝরতে পারে??
এবার মনে হয় স্যাকা টা খেয়েই গেলাম।
ইরাঃ কিরে নিলা তোর চোখে পানি কেন?
আমি নিরব কে ভালোবাসি?
ইরাঃ এ্য বলিস কি, এটা কি ভাবে সম্ভব? তুই তো নিরব কে দেখতেই পারিস না? ওকে দেখলেই তোর গা ঘিনঘিন করে?
-----নিশ্চুপ।
এই নিলা কাদিস কেন?
আমি সত্তি সত্তি নিরব কে ভালোবাসি।
-তাহলে এতোদিন, তুই রাজি ছিলি না কেন?
-ছিলাম! কিন্তু বলি নি, নিরব আমার পিছে পিছে ঘুরতো তখন খুব ভালো লাগতো, নিজেকে ভাগ্যবান মনে হত! কিন্তু নিবর এটা কি করল?
-একদম প্যন্দাবি না, দেখি কি করা যায়?
-আমি নিরব কে ছারা বাচবো না।
-আবার,, চুপ *
- বাসায় চলে আসলাম, কিছুই ভালো লাগছে না। শুধু কান্না পাচ্ছে, কথা বলতে গেলেই চোখ দিয়ে পানি পরে।
কলেজ থেকে এসে খাওয়া দাওয়া করি নি, আম্মু খেতে ডাকলেও যাই নি। খাওয়ার ইচ্ছা মরে গেছে।
সিগারেট খেতে মন চাচ্ছে, কিন্তু মেয়ে মানুষ বলে কিনতে পারি নি।
রাতে আম্মু রুমে আসলো,
এসেই কি হয়েছে জিগেস করতেই, ফ্যাত ফ্যাত করে কেদে দিলাম!!
কিরে মা, কাদিস কেন? আমাকে বল?
আম্মু একটা ছেলে আমাকে ভালোবাসতো,নাম নিরব, পিছে পিছে ঘুরেছে প্রায় বছর খানেক, আমি পাত্তা দেই নি। তবে ভাল বাসতাম!!!
কিন্তু কয়েকদিন সে আমাকে এরিয়ে চলে,আমি ভাবলাম আমাকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করছে, তাই আমিও এরিয়ে চলতাম।
আজকে জানতে পারলাম, সে আর আমার নেই, বলেই আবার কান্না শুরু করলাম।
আম্মুঃ কি ছেলেটার এতো বড় সাহস, আমার মেয়েকে রেখে অন্য মেয়ের সাথে প্রেম করে, আমার মেয়ে কি দেখতে খারাপ নাকি হু? শোন কালকে গিয়ে ছেলেটা কে তুলে নিয়ে আসবি, আমি দারিয়ে থেকে বিয়ে দেব!! অনেক টা রাগের সাথেই কথা টা বললেন আম্মু
নিরব যদি বিয়ে করতে না চায়??
ও বিয়ে করবে, ওর বাপ বিয়ে করবে, ভুলে যাস না, আমি এস পি এর বোন, আয় মা এখন খেতে আয়, বলেই মা চলে গেল,,
আমি মায়ের পিছে পিছে খেতে আসলাম, মা খাইয়ে দিচ্ছে, আমি বসে বসে খাচ্ছি, আসলে মা গুলো যে কেন এতো ভালো হয়।
সকাল বেলা...
অন্যদিনের থেকে আজকে একটু বেশিই সাজুগুজু করছি, মা নিজে আমাকে সাজিয়ে দিচ্ছে, আচ্ছা এমন ও কি মা হয়, যে ছেলে কে না দেখে, তার পরিবার কেমন না জেনে, একটা বেকার ছেলের সাথে আমার বিয়ের ব্যবস্হা করছে? এটা আমার মা বলেই হয়ত সম্ভব।
কলেজে এসেছি,,, হারামি বান্ধবিগুলো সব উল্টে পাল্টে দেখছে,
-এই তোরা কি শুরু করলি বল তো?
-তার আগে বল, এতো সাজার কারন কি?
-বিয়ে করব, নিরব কে! এবং আজকেই!!!
-এ্য বলিস কি??
-হুম আম্মুর নির্দেশ, তুলে নিয়ে যেতে হবে।
-কি আন্টি এ কথা বলেছে?
-হুম।
আমার কথায় হারমি বান্ধবি গুলো যেন, গুন্ডা হয়ে উঠল। সবাই বুক ফুলিয়ে বলল, ঠিক আছে।।।
নিরব কলেজে ঢুকলো,,, ইরা বলল, আগে গিয়ে কথা বলে দেখ কি বলে, রাজি না হলে তুলে নিয়ে যাবো। আমার কাছে চাকু আছে।
-আচ্ছা ঠিক আছে,
-এই নিরব শোন?
-হুম বল?
কেমন আছিস?
-ভালো তুই?
আমার আর ভালো থাকা, স্যাকা খেয়ে গেছি।
-কি??? কিভাবে?
-আচ্ছা নিরব তুই এখন আর আমার পিছে ঘুরিস না কেন? ভালোবাসি ভালোবাসি বলে চিল্লাস না কেন?
-তুই তো রাজি না, সুধু সুধু ঘুরে কি লাভ, তোকে বিরক্ত করে তাই সরে এসেছি।
-কে বলছে তোকে বিরক্ত না করতে? কে বলেছে সরে আসতে? নিতু? ওই শালা কে আগে পাই তারপর দেখাবো মজা।
-আরে না, নিতু বলবে কেন!!!
-ও ই তো বলবে, ওর সঙ্গেই তো তোমার বর্তমানে প্রেম চলছে, এক সাথে ক্যমপাসে বাদাম খাও, ফুসকা খাও মনে হয় আমি কিছু দেখি না। লুচু একটা???
বলার আগেই আমাকে একটা কষে থাপ্পর মারলো নিরব!! আমি তো পুরো চমকে উঠেছি, তার চেয়ে বেশি অবাক???
-শোন ওই রকম ছেলে আমি না, তুই জানিস ? আর ওটা আমার খালাতো বোন, সে জন্য কথা বলি।
-তার মানে,, নিতু কে তুই ভালোবাসিস না, তাই তো?
-আজব, নিতু কে ভালোবাসবো কোন দুঃখে,
-তাহলে, এসো_হাত_ধরি, হাটবো সেই তোমার কল্পনার, পথে,
যে পথে, রাতের আধারে হাজারো জোনাকি জ্বলে আর নেভে?
যে পথে রাত্রি নামে হাজার তাঁরার সাথে জোসনা নিয়ে?
নিরব হাসতে হাত দুটো বারিয়ে দিল, আমি হাত ধরলাম। এতে আমার তিস্না একটুও মেটে নি, তাই জাপটে ধরলাম নিরবের বাহু কে।
-এই কি করস, আশেপাশে অনেক মানুষ ছার?
-চুপ একদম চুপ। জিবনের প্রথম কাউকে জরিয়ে ধরেছি, এতো সহজে ছারবো না।
আচ্ছা নিরব তুই আমাকে মারলি ক্যনো?
-কেন খুব ব্যথা পেয়েছিস?
-হুম,
-আচ্ছা বাবা ওখানে আদর করে দিব,
-যা তোর আদর লাগবে না, লুচু কোথাকার!!
সমাপ্ত।
*কিছু ভালোবাসা অনুভৃতি প্রকাশ পায়,কিছু ভালোবাসা না বলাতেও লুকিয়ে থাকে,সে জন্যই তো কিছু কিছু প্রেম রঙিন হয়ে,নীল আকাশে ভাসে ★
লেখক আইডি.....
Nistobdho Nirob(সাইকো)
আরে বাবা ভালোবাসিস ভালো কথা তাই বলে এভাবে???
প্রতিদিন কলেজে আসবে, এ সে আমাকে খোজ করা শুরু করে দিবে, আর সামনে পরলেই ব্যাস, পিছে পিছে ঘোরা শুরু করবে, i love you i love you বলে চিৎকার করবে, এটা সে একটা রুটিনে পরিণত করেছে।
আমার কী আমিও করেছি, হয় থাপ্পড় না হলে এলোপাথাড়ি বকাঝকা, গত পরশুদিন সে এক বিরাট কাণ্ড করে বসে আছে হঠাৎ করেই কবি হয়ে উঠেছে, আমাকে নিয়ে কবিতা লিখে ফেলছে,
কবিতা টা,
নিলা তুমি এখন ঘুমিয়ে না জেগে, তা বলতে পারছি না ।
তবে আমি এখনো জেগে তোমার কথা মনে করে,
আকাশের দিকে তাকিয়ে চাদের সাথে কথা বলছি,
নিলা তুমি ভালোবাসো কিনা, না যেনে কল্পনায় তোমায় নিয়ে সুখের বাসর বেধেছি,
দেবে কি ধরা, মনের ঘরে হাত দুটো বাড়িয়ে?
যাবে কি হেটে, হাত ধরে অন্তহীন সেই পথে,
যে পথে, রাতের আধারে হাজারো জোনাকি জ্বলে আর নেভে?
যে পথে রাত্রি নামে হাজার তাঁরার সাথে জোসনা নিয়ে?
পারি দিতে চাই, সেই পথ তোমার হাত দুটো ধরে।
-----
কবিতাটা শুনে আমি ও আমার বান্ধবীরা হাসতে হাসতে পেট বেথা করে ফেলেছি। আর বেচারা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে, আমার চোখের দিকে!
নিরবঃএই শোন এত হাসির কি আছে, কাল সারারাত ধরে এরকম একটা কবিতা লিখছি আর তোরা হাসতেছিস? তোরা হয়তো কবিতাটার মানে বুঝতে পারিস নি, আমি আবার বলি শোন?
নিলাঃতোকে আর বলতে হবেনা আমরা বুঝতে পেরেছি! তুই কি এখন চোখের সামনে থেকে যাবি না আবার থাপ্পড় খাবি?
থাপ্পড় খাওয়ার ভয়ে সেদিনকার মতো নীরব চলে গেল, ছেলেটাকে পিছে পিছে ঘুরিয়ে খুব মজা পাচ্ছি। অনেকদিন যাবত পিছু পড়ে আছে মাঝে মাঝে মায়া তৈরি হয়। ওর প্রতি ভালো লাগা তৈরি হয়, হাত ধরে অনেক টা পথ পারি দিতে মন চায়, রাতভর ফোনে কথা বলে, বেলা করে ঘুমোতে মন চায়।
কিন্তু এসব কিছুই তাকে বুঝতে দেইনা। কারন আমি জানি ভালোবাসা তখনি, সুন্দর থাকে যখন ভালোবাসার পিছে মানুষ ছুটে। অল্প অল্প অনুভৃতি এক সময় অনেক বেশি হয়। আর যেটা খুব সহজে পাওয়া যায়, সেটার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমই থাকে। সে জন্যই তো একটু বেশি করে তাকে পিছে পিছে ঘুরাচ্ছি। কারন আমিও তো তাকে ভালোবাসি? আর ওর থেকে বেশিই ভালোবাসি, সে জন্যই তো হারাতে চাই না।
আজ কয়েকদিন যাবৎ নিরব আমাকে বেশ এড়িয়ে চলছে যেটা মোটেও আমার ভালো লাগছে না!! আজকে নিরবের সঙ্গে দেখা কিছু না বলেই সামনে দিয়ে হেটে চলে যাচ্ছিল, যেটা দেখে আমার আকাশ থেকে পড়ার মতন অবস্থা, যে ছেলে সারাদিন পিছে পিছে ঘুরে, সে হঠাৎ করে এরকম বদলে যাবে কিভাবে??
আমি উপরে পড়ে জিজ্ঞেস করলাম, কেমন আছো নীরব?
জি ভালো। বলে হাঁটা শুরু করল বাড়িতে আর একটা কথাও বলল না, নিরবের এরকম আচারন দেখে মেজাজটা যে কি রকম গরম হচ্ছে বলে বোঝানো যাবে না।
আমার পদ্ধতি আমার উপরি প্রয়োগ করছে এখন আমাকে এড়িয়ে চলছে, হয়ত আমাকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করছে।তাই আমিও এড়িয়ে চলতে শুরু করলাম।
এখন নিরবের আরো পরিবর্তন হইছে, আমাকে দেখে কথা বলে না, আমার দিকে তাকায় না, এসব দেখে আমার গায়ের ভেতর কি পরিমানই যে জ্বলছে,
হয়তো গায়ের সাথে ম্যাচের কাঠি লাগলে কাঠি জ্বলে উঠবে এমন অবস্থা।আবার কান্নাও পাচ্ছে।
শুরু করে দিলাম গোয়েন্দাগিরি বের করতে হবে নিরবের পরিবর্তনের কারণ!
সঙ্গে নিলাম আমার বান্ধবী ইরাকে। ইরা আবার এইসব বিষয়ে খুবই পারদর্শী খুব সহজেই বের করে ফেলে যে কোন কিছুর কারণ! ওর সঙ্গে যুক্তি তর্কে কেউ পারবে বলে আমার মনে হয় না।
ক্লাসে গিয়ে কয়েক ঘন্টা অনুসন্ধান চালানো,, নাম উঠে আসলো একজনের, নাম নিতু, নামটা শুনে তো আমার আকাশ থেকে পড়ার মত অবস্থা!!
ইরার মতে, নিতু নাকি বেশ কয়েকদিন যাবত নিরবের পিছে পিছে ঘোরে ইনিয়ে-বিনিয়ে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে, নিরব ও নাকি, সারা দিতে শুরু করছে, সেদিন ইরার বান্ধবি দেখেছে, তারা দুজন অনেকক্ষন ক্যামপাসে বসে গল্প করছে, নিতুর সাথে ফুসকা খেয়েছে।
ইরার কথা শুনে চোখ পানি টলমল করছে, যে কোন সময় ঝরতে পারে??
এবার মনে হয় স্যাকা টা খেয়েই গেলাম।
ইরাঃ কিরে নিলা তোর চোখে পানি কেন?
আমি নিরব কে ভালোবাসি?
ইরাঃ এ্য বলিস কি, এটা কি ভাবে সম্ভব? তুই তো নিরব কে দেখতেই পারিস না? ওকে দেখলেই তোর গা ঘিনঘিন করে?
-----নিশ্চুপ।
এই নিলা কাদিস কেন?
আমি সত্তি সত্তি নিরব কে ভালোবাসি।
-তাহলে এতোদিন, তুই রাজি ছিলি না কেন?
-ছিলাম! কিন্তু বলি নি, নিরব আমার পিছে পিছে ঘুরতো তখন খুব ভালো লাগতো, নিজেকে ভাগ্যবান মনে হত! কিন্তু নিবর এটা কি করল?
-একদম প্যন্দাবি না, দেখি কি করা যায়?
-আমি নিরব কে ছারা বাচবো না।
-আবার,, চুপ *
- বাসায় চলে আসলাম, কিছুই ভালো লাগছে না। শুধু কান্না পাচ্ছে, কথা বলতে গেলেই চোখ দিয়ে পানি পরে।
কলেজ থেকে এসে খাওয়া দাওয়া করি নি, আম্মু খেতে ডাকলেও যাই নি। খাওয়ার ইচ্ছা মরে গেছে।
সিগারেট খেতে মন চাচ্ছে, কিন্তু মেয়ে মানুষ বলে কিনতে পারি নি।
রাতে আম্মু রুমে আসলো,
এসেই কি হয়েছে জিগেস করতেই, ফ্যাত ফ্যাত করে কেদে দিলাম!!
কিরে মা, কাদিস কেন? আমাকে বল?
আম্মু একটা ছেলে আমাকে ভালোবাসতো,নাম নিরব, পিছে পিছে ঘুরেছে প্রায় বছর খানেক, আমি পাত্তা দেই নি। তবে ভাল বাসতাম!!!
কিন্তু কয়েকদিন সে আমাকে এরিয়ে চলে,আমি ভাবলাম আমাকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করছে, তাই আমিও এরিয়ে চলতাম।
আজকে জানতে পারলাম, সে আর আমার নেই, বলেই আবার কান্না শুরু করলাম।
আম্মুঃ কি ছেলেটার এতো বড় সাহস, আমার মেয়েকে রেখে অন্য মেয়ের সাথে প্রেম করে, আমার মেয়ে কি দেখতে খারাপ নাকি হু? শোন কালকে গিয়ে ছেলেটা কে তুলে নিয়ে আসবি, আমি দারিয়ে থেকে বিয়ে দেব!! অনেক টা রাগের সাথেই কথা টা বললেন আম্মু
নিরব যদি বিয়ে করতে না চায়??
ও বিয়ে করবে, ওর বাপ বিয়ে করবে, ভুলে যাস না, আমি এস পি এর বোন, আয় মা এখন খেতে আয়, বলেই মা চলে গেল,,
আমি মায়ের পিছে পিছে খেতে আসলাম, মা খাইয়ে দিচ্ছে, আমি বসে বসে খাচ্ছি, আসলে মা গুলো যে কেন এতো ভালো হয়।
সকাল বেলা...
অন্যদিনের থেকে আজকে একটু বেশিই সাজুগুজু করছি, মা নিজে আমাকে সাজিয়ে দিচ্ছে, আচ্ছা এমন ও কি মা হয়, যে ছেলে কে না দেখে, তার পরিবার কেমন না জেনে, একটা বেকার ছেলের সাথে আমার বিয়ের ব্যবস্হা করছে? এটা আমার মা বলেই হয়ত সম্ভব।
কলেজে এসেছি,,, হারামি বান্ধবিগুলো সব উল্টে পাল্টে দেখছে,
-এই তোরা কি শুরু করলি বল তো?
-তার আগে বল, এতো সাজার কারন কি?
-বিয়ে করব, নিরব কে! এবং আজকেই!!!
-এ্য বলিস কি??
-হুম আম্মুর নির্দেশ, তুলে নিয়ে যেতে হবে।
-কি আন্টি এ কথা বলেছে?
-হুম।
আমার কথায় হারমি বান্ধবি গুলো যেন, গুন্ডা হয়ে উঠল। সবাই বুক ফুলিয়ে বলল, ঠিক আছে।।।
নিরব কলেজে ঢুকলো,,, ইরা বলল, আগে গিয়ে কথা বলে দেখ কি বলে, রাজি না হলে তুলে নিয়ে যাবো। আমার কাছে চাকু আছে।
-আচ্ছা ঠিক আছে,
-এই নিরব শোন?
-হুম বল?
কেমন আছিস?
-ভালো তুই?
আমার আর ভালো থাকা, স্যাকা খেয়ে গেছি।
-কি??? কিভাবে?
-আচ্ছা নিরব তুই এখন আর আমার পিছে ঘুরিস না কেন? ভালোবাসি ভালোবাসি বলে চিল্লাস না কেন?
-তুই তো রাজি না, সুধু সুধু ঘুরে কি লাভ, তোকে বিরক্ত করে তাই সরে এসেছি।
-কে বলছে তোকে বিরক্ত না করতে? কে বলেছে সরে আসতে? নিতু? ওই শালা কে আগে পাই তারপর দেখাবো মজা।
-আরে না, নিতু বলবে কেন!!!
-ও ই তো বলবে, ওর সঙ্গেই তো তোমার বর্তমানে প্রেম চলছে, এক সাথে ক্যমপাসে বাদাম খাও, ফুসকা খাও মনে হয় আমি কিছু দেখি না। লুচু একটা???
বলার আগেই আমাকে একটা কষে থাপ্পর মারলো নিরব!! আমি তো পুরো চমকে উঠেছি, তার চেয়ে বেশি অবাক???
-শোন ওই রকম ছেলে আমি না, তুই জানিস ? আর ওটা আমার খালাতো বোন, সে জন্য কথা বলি।
-তার মানে,, নিতু কে তুই ভালোবাসিস না, তাই তো?
-আজব, নিতু কে ভালোবাসবো কোন দুঃখে,
-তাহলে, এসো_হাত_ধরি, হাটবো সেই তোমার কল্পনার, পথে,
যে পথে, রাতের আধারে হাজারো জোনাকি জ্বলে আর নেভে?
যে পথে রাত্রি নামে হাজার তাঁরার সাথে জোসনা নিয়ে?
নিরব হাসতে হাত দুটো বারিয়ে দিল, আমি হাত ধরলাম। এতে আমার তিস্না একটুও মেটে নি, তাই জাপটে ধরলাম নিরবের বাহু কে।
-এই কি করস, আশেপাশে অনেক মানুষ ছার?
-চুপ একদম চুপ। জিবনের প্রথম কাউকে জরিয়ে ধরেছি, এতো সহজে ছারবো না।
আচ্ছা নিরব তুই আমাকে মারলি ক্যনো?
-কেন খুব ব্যথা পেয়েছিস?
-হুম,
-আচ্ছা বাবা ওখানে আদর করে দিব,
-যা তোর আদর লাগবে না, লুচু কোথাকার!!
সমাপ্ত।
*কিছু ভালোবাসা অনুভৃতি প্রকাশ পায়,কিছু ভালোবাসা না বলাতেও লুকিয়ে থাকে,সে জন্যই তো কিছু কিছু প্রেম রঙিন হয়ে,নীল আকাশে ভাসে ★
লেখক আইডি.....
Nistobdho Nirob(সাইকো)
: