রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক স্বপ্নে দেখা একদল মানুষের বিবরণ
আবু উমামা বাহেলী (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা রাসূল (ছাঃ) ফজরের ছালাতের সময় আমাদের নিকটে এসে বললেন, গতরাতে আমি একটি সত্য স্বপ্ন দেখেছি। তোমরা তা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ কর। আমার নিকট দু’জন লোক এসে আমার দু’হাত ধরে এক দুর্গম পাহাড়ের কাছে নিয়ে গিয়ে বলল, এতে আরোহণ করুন! আমি বললাম, আমি পর্বতারোহণে সক্ষম নই। তারা বললেন, আমরা শীঘ্রই আপনার জন্য তা সুগম করে দিব। আমি যখনই পা উঠাচ্ছিলাম তখনই সিঁড়িতে পা রাখছিলাম। অবশেষে পর্বতের সমতল ভূমিতে পৌঁছে গেলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে জিজ্ঞেস করলাম, এটা কিসের শব্দ? তারা বললেন, এটি জাহান্নামীদের আর্তনাদ। আমরা সামনের দিকে অগ্রসর হতেই একদল নারী ও পুরুষকে দেখলাম যাদের দু’চোয়াল ফাড়া রয়েছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা ঐ সকল লোক যারা নিজেরা যা বলত তদনুযায়ী আমল করত না। অতঃপর আমরা সামনে অগ্রসর হতেই আরেকদল নারী ও পুরুষকে দেখলাম, যাদের চোখ ও কানে পেরেক মারা আছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা ঐ সকল লোক যারা এমন কিছু দেখার দাবী করত, যা তারা দেখেনি। এমন কিছু শুনার দাবী করত, যা তারা শুনেনি (অর্থাৎ মিথ্যা বলত)।
এরপর তারা আমাকে নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হলেন। সেখানে দেখলাম, একদল নারী ও পুরুষের পায়ের গোছায় রশি বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে, চোয়াল ফাড়া আছে এবং তা থেকে রক্ত বেরুচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা ঐ সকল লোক যারা সময়ের পূর্বে ইফতার করত। তিনি বললেন, ইহূদী-নাছারারা ধ্বংস হউক! সুলায়মান বলেন, আমি জানিনা আবু উমামা এ উক্তিটি রাসূল (ছাঃ) থেকে শুনেছেন, না একথাটি তিনি নিজে বলেছেন। অতঃপর তারা আমাকে নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হলেন। সেখানে গিয়ে দেখলাম, একদল নারী-পুরুষের লাশ পড়ে আছে। যা অত্যন্ত ফুলে-ফেঁপে আছে, দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এবং তার দৃশ্য অত্যন্ত বীভৎস। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা কাফেরদের নিহত ব্যক্তিবর্গ। আমরা কিছুদূর অগ্রসর হতেই একদল লোককে গাছের ছায়ায় ঘুমিয়ে থাকতে দেখলাম। জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এগুলো মুসলমানদের লাশ। তারা আমাকে আরো সামনে নিয়ে গেলেন। সেখানে দেখলাম, একদল নারী-পুরুষের লাশ পড়ে আছে। যা অত্যন্ত ফুলে-ফেঁপে আছে, যেগুলোর দৃশ্য অত্যন্ত বীভৎস এবং (সেগুলো থেকে) বাথরুমের মত দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা হ’ল ব্যভিচারী নারী ও পুরুষ। অতঃপর আমাকে আরো সামনে নিয়ে যাওয়া হল। সেখানে দেখলাম একদল নারীর পায়ের গোছায় রশি বেঁধে নীচের দিকে মাথা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আর সাপ তাদের স্তন দংশন করছে। জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? উত্তরে তারা বললেন, এরা ঐ সকল মহিলা, যারা (শারীরিক সৌন্দর্য অটুট রাখার জন্য) নিজ সন্তানদের দুধ পান থেকে বঞ্চিত করেছিল। অতঃপর তারা আমাকে সামনে নিয়ে গেলেন। সেখানে দেখলাম, একদল শিশু দুই নদীর মধ্যবর্তী স্থানে খেলছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা মুমিনদের সন্তান। অতঃপর সামনে চললাম। কিছু লোককে দেখলাম যাদের চেহারা অত্যন্ত সুন্দর, পোষাক সুন্দর এবং সুগন্ধির অধিকারী। তাদের চেহারা ‘কারাতীস’ সদৃশ (সাদা কাগজের ন্যায়)। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা হলেন ছিদ্দীক, শহীদ ও সৎকর্মশীলগণ। আরো কিছুদূর অগ্রসর হয়ে তিনজন লোককে দেখলাম, যারা শরাব পান করছিল এবং গান গাচ্ছিল। জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা হলেন যায়েদ বিন হারেছা, জা‘ফর বিন আবু ত্বালিব ও আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা (রাঃ)। অতঃপর আমি উপরের দিকে মাথা উঁচু করে আরশের নীচে তিনজন ব্যক্তিকে দেখলাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, তাঁরা হলেন আপনার পিতা ইবরাহীম এবং মূসা ও ঈসা (আঃ)। তাঁরা আপনার জন্য অপেক্ষা করছে ।
(মু‘জামুল কাবীর হা/৭৬৬৭; ইবনু খুযায়মাহ হা/১৯৮৬; হাকেম হা/২৮৩৭; ছহীহাহ হা/৩৯৫১; ছহীহ তারগীব হা/২৩৯৩)।
হাদিসের শিক্ষা:
(১) সূর্যাস্তের সাথে সাথে ছায়েম ইফতার করবে। তার পূর্বেও না, পরেও না।
(২) নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে ইফতার করার কারণে এতো বড় শাস্তি হলে, যারা ছিয়াম পালন করে না তাদের কিরূপ শাস্তি হবে তা সহজেই অনুমেয়।
(৩) আযান দেওয়ার ক্ষেত্রে মুওয়াযযিনদের খুবই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ মানুষজন স্বভাবতঃ তাদের আযান শুনে ইফতার করে।
(৪) শারীরিক সৌন্দর্য অটুট রাখার অভিপ্রায়ে যে সকল নারী তাদের শিশু সন্তানদের নিজের বুকের দুধ পান করান না সাপ তাদের স্তন দংশন করবে।
(৫) ব্যভিচারের শাস্তি অত্যন্ত ভয়াবহ।
(৬) সদা-সর্বদা সত্য কথা বলতে হবে এবং তদনুযায়ী আমল করতে হবে। অন্যথায় কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
(৭) মুসলমানদের সন্তানেরা জান্নাতী হবে।
– মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
সংগৃহীত।। ইসলামিক অনলাইন মিডিয়া
আবু উমামা বাহেলী (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা রাসূল (ছাঃ) ফজরের ছালাতের সময় আমাদের নিকটে এসে বললেন, গতরাতে আমি একটি সত্য স্বপ্ন দেখেছি। তোমরা তা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ কর। আমার নিকট দু’জন লোক এসে আমার দু’হাত ধরে এক দুর্গম পাহাড়ের কাছে নিয়ে গিয়ে বলল, এতে আরোহণ করুন! আমি বললাম, আমি পর্বতারোহণে সক্ষম নই। তারা বললেন, আমরা শীঘ্রই আপনার জন্য তা সুগম করে দিব। আমি যখনই পা উঠাচ্ছিলাম তখনই সিঁড়িতে পা রাখছিলাম। অবশেষে পর্বতের সমতল ভূমিতে পৌঁছে গেলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে জিজ্ঞেস করলাম, এটা কিসের শব্দ? তারা বললেন, এটি জাহান্নামীদের আর্তনাদ। আমরা সামনের দিকে অগ্রসর হতেই একদল নারী ও পুরুষকে দেখলাম যাদের দু’চোয়াল ফাড়া রয়েছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা ঐ সকল লোক যারা নিজেরা যা বলত তদনুযায়ী আমল করত না। অতঃপর আমরা সামনে অগ্রসর হতেই আরেকদল নারী ও পুরুষকে দেখলাম, যাদের চোখ ও কানে পেরেক মারা আছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা ঐ সকল লোক যারা এমন কিছু দেখার দাবী করত, যা তারা দেখেনি। এমন কিছু শুনার দাবী করত, যা তারা শুনেনি (অর্থাৎ মিথ্যা বলত)।
এরপর তারা আমাকে নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হলেন। সেখানে দেখলাম, একদল নারী ও পুরুষের পায়ের গোছায় রশি বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে, চোয়াল ফাড়া আছে এবং তা থেকে রক্ত বেরুচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা ঐ সকল লোক যারা সময়ের পূর্বে ইফতার করত। তিনি বললেন, ইহূদী-নাছারারা ধ্বংস হউক! সুলায়মান বলেন, আমি জানিনা আবু উমামা এ উক্তিটি রাসূল (ছাঃ) থেকে শুনেছেন, না একথাটি তিনি নিজে বলেছেন। অতঃপর তারা আমাকে নিয়ে সামনের দিকে অগ্রসর হলেন। সেখানে গিয়ে দেখলাম, একদল নারী-পুরুষের লাশ পড়ে আছে। যা অত্যন্ত ফুলে-ফেঁপে আছে, দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এবং তার দৃশ্য অত্যন্ত বীভৎস। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা কাফেরদের নিহত ব্যক্তিবর্গ। আমরা কিছুদূর অগ্রসর হতেই একদল লোককে গাছের ছায়ায় ঘুমিয়ে থাকতে দেখলাম। জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এগুলো মুসলমানদের লাশ। তারা আমাকে আরো সামনে নিয়ে গেলেন। সেখানে দেখলাম, একদল নারী-পুরুষের লাশ পড়ে আছে। যা অত্যন্ত ফুলে-ফেঁপে আছে, যেগুলোর দৃশ্য অত্যন্ত বীভৎস এবং (সেগুলো থেকে) বাথরুমের মত দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা হ’ল ব্যভিচারী নারী ও পুরুষ। অতঃপর আমাকে আরো সামনে নিয়ে যাওয়া হল। সেখানে দেখলাম একদল নারীর পায়ের গোছায় রশি বেঁধে নীচের দিকে মাথা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আর সাপ তাদের স্তন দংশন করছে। জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? উত্তরে তারা বললেন, এরা ঐ সকল মহিলা, যারা (শারীরিক সৌন্দর্য অটুট রাখার জন্য) নিজ সন্তানদের দুধ পান থেকে বঞ্চিত করেছিল। অতঃপর তারা আমাকে সামনে নিয়ে গেলেন। সেখানে দেখলাম, একদল শিশু দুই নদীর মধ্যবর্তী স্থানে খেলছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা মুমিনদের সন্তান। অতঃপর সামনে চললাম। কিছু লোককে দেখলাম যাদের চেহারা অত্যন্ত সুন্দর, পোষাক সুন্দর এবং সুগন্ধির অধিকারী। তাদের চেহারা ‘কারাতীস’ সদৃশ (সাদা কাগজের ন্যায়)। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা হলেন ছিদ্দীক, শহীদ ও সৎকর্মশীলগণ। আরো কিছুদূর অগ্রসর হয়ে তিনজন লোককে দেখলাম, যারা শরাব পান করছিল এবং গান গাচ্ছিল। জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা হলেন যায়েদ বিন হারেছা, জা‘ফর বিন আবু ত্বালিব ও আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা (রাঃ)। অতঃপর আমি উপরের দিকে মাথা উঁচু করে আরশের নীচে তিনজন ব্যক্তিকে দেখলাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, তাঁরা হলেন আপনার পিতা ইবরাহীম এবং মূসা ও ঈসা (আঃ)। তাঁরা আপনার জন্য অপেক্ষা করছে ।
(মু‘জামুল কাবীর হা/৭৬৬৭; ইবনু খুযায়মাহ হা/১৯৮৬; হাকেম হা/২৮৩৭; ছহীহাহ হা/৩৯৫১; ছহীহ তারগীব হা/২৩৯৩)।
হাদিসের শিক্ষা:
(১) সূর্যাস্তের সাথে সাথে ছায়েম ইফতার করবে। তার পূর্বেও না, পরেও না।
(২) নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বে ইফতার করার কারণে এতো বড় শাস্তি হলে, যারা ছিয়াম পালন করে না তাদের কিরূপ শাস্তি হবে তা সহজেই অনুমেয়।
(৩) আযান দেওয়ার ক্ষেত্রে মুওয়াযযিনদের খুবই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ মানুষজন স্বভাবতঃ তাদের আযান শুনে ইফতার করে।
(৪) শারীরিক সৌন্দর্য অটুট রাখার অভিপ্রায়ে যে সকল নারী তাদের শিশু সন্তানদের নিজের বুকের দুধ পান করান না সাপ তাদের স্তন দংশন করবে।
(৫) ব্যভিচারের শাস্তি অত্যন্ত ভয়াবহ।
(৬) সদা-সর্বদা সত্য কথা বলতে হবে এবং তদনুযায়ী আমল করতে হবে। অন্যথায় কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
(৭) মুসলমানদের সন্তানেরা জান্নাতী হবে।
– মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
সংগৃহীত।। ইসলামিক অনলাইন মিডিয়া
: