আদর্শ নারীর গল্প (The Story of the Ideal Woman)
আমি শুয়ে শুয়ে আমার স্ত্রী পল্লবীকে বললাম আমার পা টা একটু মালিশ করে দাও না! খুব ব্যাথা করছে। মুখটা বাঁকা করে হাসি দিয়ে বললো আমি পারবো না। নিজের পা নিজে মালিশ করে নেন। আপনার দাসী না আমি। এই বলেই রান্না ঘরে গেল। দ্বিতীয়বার ডাক দেই নি। আমি জানি পল্লবী বাড়ির সমস্থ কাজ একাই করে। মা কাজে সাহায্য করতে আসলেও মায়ের সাথে রাগারাগি করে তারিয়ে দেই। বাড়িতে অতিথি আসলে কি খাবার দিবে, কেমন করে আপ্যায়ন করবে সব প্লান পল্লবীই করে। আর মায়ের কাজ শুধু অতিথিদের সাথে গল্প করা।
পল্লবী রান্নাঘর থেকে আমার জন্য চা করে আনলো। আমাকে সেই আগের মত শুয়া অবস্থায় দেখে ওর মাথা নষ্ট হয়ে গেল। ভীষণ রাগ নিয়ে বললো..
' কি গো নবাবজাদা! এখনো শুয়ে থাকতে হবে? না উঠলে কিন্তু গায়ের উপর গরম চা ঢেলে দেবো'
" তুমি না, খুব পারো। সাত সকালে একটু আরাম করছি তোমার সহ্য হচ্ছে না। কি চাও বলোতো?"
এবার হেসে হেসে বললো..
' উঠবেন, না চা ঢেলে দেবো?'
" তোমাকে বললাম একটু পা টা মালিশ করে দাও তা না উনি আসছে চা নিয়ে যতসব"
পল্লবী চা রেখে পায়ের পাশে গিয়ে বসলো। মনে মনে খুব ভালো লাগা কাজ করলো ওর প্রতি। ভাবছি, অাহ্ এখন একটু আরাম পাবো। সেই ছোট বেলায় মা পা টিপে দিতো। আজ কত বছর পেরিয়ে গেল মায়ের পা টিপে দেয়া মিস করি। পড়নে ছিল লুঙ্গি। হঠাৎ পল্লবী লুঙ্গি উপরের দিকে তুলছে। এদিকে আমি লজ্জায় চোখ বন্ধ করে আছি। তুলতে তুলতে প্রায় হাটু অবধি তুললো। আমি লুঙ্গিটা ধরে বললাম..
' এই ফাজিল মেয়ে, সকাল সকাল এসব কি করছো! কেউ দেখে ফেলতে পারে'
" দেখলে দেখুক। তাতে আমার কি? লোকে দেখুক একটা ধ্যামরা পোলাকে তার বউ পা টিপে দিচ্ছে। লজ্জা পেলে তুমি পাবে আমি না"
' এই তোমার মনে ছিল! অন্তরে বীষ রেখে মধু খাওয়াচ্ছো'
পল্লবী আমাকে চুপচাপ থাকতে বললো। আমিও চুপচাপ শুয়ে রইলাম। হঠাৎ পায়ের পশম ধরে টান দিল। ব্যাথায় আমি ওমা বলে চিৎকার দিয়ে উঠলাম। বারণ করা সত্যেও বার বার টানছে। যতবার টানছে ততো বারই আমি ওমা বলে চিৎকার করছি। পাশের রুম থেকে হঠাৎ মায়ের আগমন। পল্লবী সাথে সাথে লুঙ্গিটা আবার নিচে নামিয়ে দিল। মা বললো..
- কিরে আবির কি হয়েছে?
~ দেখো ও আমার পায়ের পশম ধরে টানছে।
মায়ের কাছে সব কিছু বলছি আর পল্লবী আমার পায়ে চিমটি দিচ্ছে।
~দেখো মা, ও এখনো চিমটি দিচ্ছে। তোমাকে এসব বলতে মানা করছে।
আমার কথা শোনে মা মুচকি মুচকি হাসছে। এদিকে পল্লবী লজ্জাই কাপড় দিয়ে মুখ লুকিয়ে আছে। মা বললো, "চুপ কর। এসব বলতে হয়না"।
মা পল্লবীকে বাহিরে যেতে বললো। ও বাহিরে গেল। মা একরাশ হাসি দিয়ে বললো..
- পল্লবীকে তুই কি করেছিস, যে ও তোকে ব্যাথা দিবে?
~ পা টা কেমন যেন ব্যাথা করছে তাই একটু টিপে দিতে বললাম। ও না টিপে পশম ধরে টান মারলো। মা তুমিই বলো, কাজটা ও ঠিক করছে?
- আচ্ছা, আমি তোর পা টিপে দেই। তুই শুয়ে থাক। পল্লবী সারাদিন কাজ-কর্ম করে। তোর সেবাযত্ন কখন করবে বল! আয় আমি টিপে দেই।
মায়ের কথা শোনে আমি জিহ্বাই কামড় দিয়ে বললাম..
~ আস্তাগফিরুল্লাহ। মা তুমি আমার পাশে শুয়ে পড়ো আমি তোমার পা টিপে দিচ্ছি। কখনো তো তোমার সেবা-যত্ন করতে পারি নাই। একটু সুযোগ দাও মা। না করো না মা। একটু সুযোগ দাও।
- এখনো তুই সেই ছোট্ট আবিরই রয়ে গেলি।
কোনো মা-ই চাইনা তার সন্তান কষ্ট পাক। তোর কষ্ট হবে বাবা। বরং উঠে চা খা।
আজ চা খেতে ইচ্ছে করছে না। চা টা টেবিলের উপর রেখে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা খেতে গেলাম। মা একা টেবিলে বসে আমার জন্য অপেক্ষা করছে। মা'কে বললাম, মা পল্লবী কই? মা বললো, নাস্তা রেখে কই যেন গেল। হয়তো রুমে গেছে। ওর আসার অপেক্ষায় আছি আমরা দুজন। পাঁচ মিনিট পেরিয়ে যাচ্ছে ও আসছে না। মা আমাকে বসিয়ে রেখে পল্লবীকে খুঁজতে গেল। ওরে খুঁজতে গিয়ে মাও নিখুঁজ। ১০ মিনিট হয়েছে মা আসছে না। না খেয়ে আমিও দুজনকে খুঁজতে বেড় হলাম। প্রথমে মায়ের রুমে গেলাম। রুমে কেউ নেই। তারপর আমার রুমে, কিচেন রুমে কোথাও পেলাম না কাউকে। তাহলে দুজনে ওরা কোথায় গেল? আর একটা রুম বাকি আছে বারান্দার রুমটা। ওখানে যেতেই দেখি মা দরজার সাথে কান পেতে আছে। মায়ের কাঁধে হাত রেখে বললাম..
- মা খাবে না তুমি?
মা আমাকে কথা বলতে নিষেধ করছে। আমিও কথা বলছি না। দরজার সাথে কান লাগাতে বলছে। আমিও কান লাগালাম। রুমের ভিতর থেকে কুরআন তেলোয়াতের শব্দ আসছে। পবিত্র কুরআনের একটি করে শব্দ শুনছি আর আমার গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। অাহ্, কি মধুময় কন্ঠ। কোথাও হারিয়ে ফেললাম নিজেকে। বুঝতে আর বাকি নেই কে কুরআন তেলোয়াত করছে। প্রায় মিনিট বিশেক দাঁড়িয়ে শুনলাম। হঠাৎ তেলোয়াত বন্ধ হলো। তার মানে পল্লবীর কুরআন তেলোয়াত করা শেষ। এখন ও নাস্তা করতে যাবে। আমি আর মা ওখান থেকে তাড়াহুড়ো করে আবার নাস্তার টেবিলে গিয়ে বসলাম। প্রায় তিন মিনিট পর পল্লবী আসলো। কিন্তু আমরা ওরে বুঝতে দেইনি যে, সব জানি বা শোনে ফেলেছি।
পল্লবী ঢুকেই মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন। কারণ, তার আসতে দেড়ি হয়েছে বলে। আমার জন্য অপেক্ষা করছেন তাইনা? আমি খাবার বেড়ে দেই মা ও ছেলে মিলে খান। মা বললো, সে কি কথা? তুমিও আমাদের সাথে খাবে বসো। ও বললো, না মা আগে আপনারা দুজন মিলে খান। খাবার বেশি হলে আমি খেয়ে নিবো। পল্লবীকে মা জোর করে বসিয়ে নিজ হাতে খাইয়ে দিল। খাওয়া শেষ করে আমি রুমে এলাম। মা আর পল্লবী মিলে গল্প করছে।
দুপুর দুইটা। হটাৎ মা আসলো রুমে। এমন সময় সাধারণত মা'র ঘুমের টাইম। দুপুর দুইটা থেকে বিকেল পাঁচটা নাগাদ ঘুম পারে। মাকে বললাম..
- ঘুমাও নাই তুমি?
~ না, আজ আর ঘুমাবো না। তোকে কিছু কথা বলার জন্য আসছি। শোন, পল্লবীকে নিয়ে কতদিন হলো কোথাও ঘুরতে যাস না! আজ ওরে নিয়ে বেড় হো কোথাও।
মনে মনে ভাবছি, হঠাৎ মা পল্লবীকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলবে কেনো? বললাম..
- যাবো মা, কিন্তু কোথায় যাবো? রাস্তায় মেয়ে নিয়ে বেড় হলেই মানুষের মন্তব্যের শেষ নেই!
কথা শোনে মা আনমনা হয়ে বেরিয়ে গেল। হয়তো মন খারাপ করেছে। মায়ের মনে আঘাত দেয়া ঠিক হবে না। কিছুক্ষণ পর পল্লবী আসলো। ওরে সব বললাম। যেতে রাজি হচ্ছে না। মায়ের কথা বলাতে যেতে রাজি হয়। কিন্তু সে বোরকা ও হিজাব ছাড়া যাবে না। পল্লবীর মাঝে ভালো লাগা অনুভব করলাম। কাপড় চেঞ্জ করবে। আমি পাশের রুমে গেলাম। কিছুসময় পর ডাক আসে। তার কাপড় পাল্টানো শেষ। আমিও আবার রুমে গেলাম। দেখি কালো বোরকা, কোমড় পর্যন্ত হিজাব। চেনাই যাচ্ছে না এটা পল্লবী। হাতে লাগানো কালো হাত মুজা। পায়ে পড়া শো জুতা। বেরিয়ে পরলাম অজানা স্থানে। কোথায় যাবো এখনো ঠিক করা হয়নি। কিছুদূর যাবার পর পল্লবী বললো, নদীর ধারে যেতে। কিন্তু নদীতো অনেক দূরে। গেলাম নদীর পারে। চারিদিকে কাশফুল। মৃদু বাতাসে সাদা ফুল গুলো উড়ছে। আশেপাশে কেউ নেই। নিরব পরিবেশ। পল্লবী আমার হাত ধরলো। হাত ধরে দৌঁড়াবে। মানা করিনি। এরকম মুহূর্ত জীবনে একবার-ই আসে বলা যায়। প্রায় ঘন্টা ক্ষাণিক পর ওখান থেকে এসে পরবো। হঠাৎ ও বললো মার্কেটে যাবে। পল্লবী আজ যা চাইবে সব দিবো। পৃথিবীটা ওর জন্য। বাকি সব বৃথা। নিয়ে গেলাম মার্কেটে। সন্ধের আজান দিচ্ছে। পল্লবী নিয়মিত নামাজ পড়লেও ওখানে মেয়েদের জন্য নামাজ পড়ার জায়গা নেই। তাই ও পড়তে পারেনি। আমি ওকে একটি পরিচিত দোকানে বসিয়ে রেখে মসজিদে এলাম নামাজ পড়তে।
নামাজ শেষ করে আবার মার্কেটে গেলাম ওর কাছে। হাতে কয়েকটা ব্যাগ দেখতে পেলাম। মানে আমার অনুপস্থিতিতে কেনা-কাটা করেছে। যাক তবুও আমি খুশি। পল্লবী বললো..
' আপনি কিছু কিনবেন না নিজের জিন্য?'
" হ্যাঁ, কিনবো।
ওরে দোকানে বসিয়ে রেখে আমি লাইব্রেরীতে গেলাম। একটা কুরআন শরিফ ও নামাজের জন্য সুন্দর জায়নামাজ কিনলাম। ইদানিং মার্কেট গুলোতে শপিং ব্যাগের উপর বিভিন্ন পশু পাখি বা মানুষের ছবি থাকে। ওগুলো করে কুরআন শরিফ আনা ঠিক হবে না। তাই ভালোমতো প্যাকেট করে হাতে করেই নিয়ে এলাম। পল্লবী জিজ্ঞাসা করছে আমার হাতে কি, আমি বলছি না। এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। ও যা কিনছে সব গুলোর বিল পরিশোধ করলাম। আর কিছু কেনার আছে কি-না! ও বললো না নেই। চলেন বাসায় যাবো। মা একা বাসায়।
বাসায় আসতে আসতে সন্ধে সাতটা বাজে। মা রান্না-বান্না করে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। ঘর গুলো একদম গোছানো। প্রতিটা রুম থেকে পার্ফিউমের ঘ্রান আসছে। বুঝতে বাকি নেই এসব মায়ের কাজ। পল্লবী শপিং গুলো মায়ের হাতে দিয়ে ওযু করতে যাচ্ছে। আমি তড়িঘড়ি করে বারান্দার রুমে গেলাম কুনআন শরিফ ও জায়নামাজ রাখতে। দেখি, খাঁটের উপর রেহাল রাখা। রেহালটা সুন্দর ভাবে মুছে কুরআন শরিফ রাখলাম। জায়নামাজ বিছিয়ে চলে এলাম। পল্লবী ওযু করে বারান্দার রুমে ঢুকলো। আমি ও মা দুজনে মিলে গল্প করছি বসে। কিছুক্ষণ পর ও নামাজ শেষ করে ও এলো। আসা মাত্রই দুজনকে একত্রে পেয়ে কাঁন্না করে দিল। অবাক হলাম কাঁন্না দেখে। মা বললো..
- কি হয়েছে বউমা, কাঁন্না করছো কেন?
কিছু বলতে পারছে না। বাচ্চাদের মত কেঁদেই যাচ্ছে। মা আবার বললো..
- বলো কি হয়েছে?
~ আপনাদের খুব ভালোবাসি। কখনো পর করে যায়েন না আমাকে। জানেন মা, আপনার ছেলে আমার জন্য কুরআন শরিফ আর জায়নামাজ এনে রেখে দিয়েছে বারান্দায়। কিন্তু আমাকে না জানিয়ে।
- বোঁকা মেয়ে। তাই বলে কাঁন্না করতে হবে?
পল্লবী কাঁন্না মাখানো ভেজা চোখে শপিং গুলো খুললো। দেখি কয়েকটা শাড়ি। এর মধ্যে একটা কম দামি তাতের শাড়ি। কিন্তু কয়েকটার মধ্যে একটা কম দামি শাড়িটা কার জন্য? মোট শাড়ি ছিল পাঁচটা। চারটা মায়ের জন্য আর কম দামি শাড়িটা ওর নিজের জন্য। মা রেগে যাচ্ছে কার্যকলাপ দেখে। এটা ঠিক না বউমা। তুমি এই চারটা নাও। আমাকে কম দামি শাড়িটা দাও। আমি বয়েস্ক মানুষ! বেশিদামি শাড়ি দিয়ে কি করবো। পল্লবীকে যত বুঝাচ্ছে ততো ও আরো জেদ দেখাচ্ছে। ও মায়ের জন্য কেনা শাড়ি নিবে না। পল্লবী বললো..
- মা, আপনার ছেলেকে একটু বুঝান না! ও যেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে।
ওর কথায় আমার কলিজাটা ঠান্ডা হয়ে গেল। ভিতর থেকে দোয়া আসছে পল্লবীর জন্য। কি বলবো ওরে, বলার মত কিছু নেই। বাড়ির যাবতীয় কাজ করেও নামাজ টা ধরে রাখছে। আবার আমাকেও নামাজের জন্য তাগিদ দিচ্ছে।
(বিঃদ্র: একজন আদর্শবান নারীই পারে সংসারটাকে টিকিয়ে রাখতে। এখন হয়তো আপনি যৌবনের তারণ্যে যেনার কাজে লিপ্ত, কিন্তু যৌবন শেষ হলে আপনার পরিস্থিতিতে কোন দিকে যাবে একটু ভেবে দেখেছেন?)
(সমাপ্ত The story of Married life)
Keyword:
bangla love story facebook
bangla love story 2020
bangla love story kobita
bangla love story sms
new romantic love story in bengali
heart touching love story in bengali
bangla romantic love story facebook
romantic bengali love story facebook posts
new romantic love story in bengali
heart touching love story in bengali
bangla love story kobita
bangla love story sms
bangle love story
romantic golpo facebook
love story facebook
story bangla romantic
bengali 100 love sms
bangla love sms 2020
bangla love sms for husband
bangla romantic sms kobita
bangla misti premer sms
propose line in bengali
: