প্রশ্নঃ আল্লাহ্র তো কারও প্রতি ব্যাক্তিগত রাগ থাকতে পারেনা তাহলে কেন মুসলিমরা নামাজে দাড়িয়ে বলেন "ধ্বংস হোক আবু লাহাব তার দু হাত ও সে নিজেও" - সামান্য মানুষের সাথে ব্যাক্তিগত রাগ না থাকলে আল্লাহ কেন কুরআনে আবু লাহাবকে গালাগালি করলেন?
লিখেছেনঃ এম ডি আলী
উত্তরঃ চোরকে চোর বলা, সন্ত্রাসীকে সন্ত্রাস বলা , হত্যাকারীকে ডাকাত বলা , মানুষকে অন্যায়ভাবে নির্যাতনকারীদের অভিশাপ দেয়া অথবা সেটার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া এবং সেটার সমালোচনা করা মোটেও দোষের কিছু নয় অথবা ব্যাক্তিগত কিছু নয় বরং সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান করাকেই বুঝায় । "অন্যায় ভাবে নির্যাতনকারী মানুষের ফলাফল ভাল হয় না বরং ধ্বংস অনিবার্য" এই উপদেশ মনে রাখার জন্য যদি কোন মানুষ মাঝে মাঝে এই উপদেশ মুলক বানী পাঠ করে সেটা মোটেও অন্যায় কিছু নয় বরং প্রশংসনীয় ব্যাপার বটে ।
যারা কেবল স্কুলে পড়াশোনা করেছেন তারাও খুব ভাল করেই জানেন যে ছোটবেলায় আমাদের সম্মানিত শিক্ষকরা আমাদের উপদেশ দিতেন যে, কখনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া যাবে না , যারা সম্পদকে অন্যায়ভাবে অর্জন করে এবং এই সম্পদ দিয়ে অন্যায় , অবিচার করে এই টাইপের মানুষদের জন্য ফলাফল ভাল হয় না , এদেরকে সভ্য মানুষ ঘৃণার চোখেই দেখে এরা অভিশাপ পাবার যোগ্য । তাই আমাদেরকে ভাল মানুষ হতে হবে , মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করতে হবে তাহলেই আমরা মানবতাবাদী হতে পারব । এখানে সকলেই বুঝে গেছেন উপদেশে যা বলা হয়েছে ।
এখন আসি মূল পয়েন্টেঃ
সুরা লাহাব ১১১:১ থেকে ৫ = আবু লাহাবের হস্তদ্বয় ধ্বংস হোক এবং ধ্বংস হোক সে নিজে । কোন কাজে আসেনি তার ধন-সম্পদ ও যা সে উপার্জন করেছে । সত্বরই সে প্রবেশ করবে লেলিহান অগ্নিতে এবং তার স্ত্রীও-যে ইন্ধন বহন করে । তার গলদেশে খর্জুরের রশি নিয়ে ।
ihadis.com, সহিহ বুখারি , হাদিসঃ ৪৮০১ , সহিহ হাদিসঃ ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদিন সাফা পাহাড়ে আরোহণ করে ‘ইয়া সাবাহাহ’ বলে সবাইকে ডাক দিলেন। কুরাইশগণ তাঁর কাছে জমায়েত হয়ে বলল, তোমার ব্যাপার কী? তিনি বললেন, তোমরা বল তো, আমি যদি তোমাদের বলি যে, শত্রুবাহিনী সকাল বা সন্ধ্যায় তোমাদের উপর আক্রমণ করতে প্রস্তুত, তবে কি তোমরা আমার এ কথা বিশ্বাস করবে? তারা বলল, নিশ্চয়ই। তিনি বললেন, আমি তোমাদের জন্য এক আসন্ন কঠিন শাস্তি সম্পর্কে ভয় প্রদর্শন করছি। এ কথা শুনে আবূ লাহাব বলল, তোমার ধ্বংস হোক। এই জন্যই কি আমাদেরকে জমায়েত করেছিলে? তখন আল্লাহ্ সুরা লাহাব নাজিল করেন............
উগ্র খগেন আবু লাহাবের ভয়ংকর অপরাধ সমূহঃ
ড মুজিবুর রহমান অনুবাদকৃত, তাফসীরে ইবনে কাসীর ১৮ খণ্ড, ৩১২ পৃষ্ঠাঃ আবু লাহাব সে ছিল রাসুল (সা)এর নিকৃষ্টতম শত্রু । সব সময় সে তাঁকে কষ্ট দেয়ার জন্য এবং তাঁর ক্ষতি সাধনের জন্য সচেষ্ট থাকতো ।
ড মুজিবুর রহমান অনুবাদকৃত, তাফসীরে ইবনে কাসীর ১৮ খণ্ড, ৩১৩ পৃষ্ঠাঃ আবু লাহাবের স্ত্রীর কাছে একটি সুন্দর গলার মালা ছিল, সে বলতো আমি এই মালা বিক্রি করে তা মুহাম্মদ (সা)এর বিরোধিতায় ব্যয় করবো ।
তাফসীরে জালালাইন, ৭ খণ্ড , ৬০৬ পৃষ্ঠা এবং তাফসীরে রুহুল মা"আনীঃ নবী (সা) তাঁর চাচা আবু লাহাবকে তাওহীদের দাওয়াত দিলে সে পাথর ছুড়ে মারত ।
তাফসীরে জালালাইন, ৭ খণ্ড , ৬০৭ পৃষ্ঠাঃ হযরত ইবনে আব্বাস (রা) বলেন, আবু লাহাব মানুষকে এই বলে রাসুল (সা) থেকে বিরত রাখতো যে মুহাম্মদ জাদুকর। যেহেতু সে গোত্রের সর্দার ছিল, সেহেতু তারা রাসুল (সা) এর সাথে সাক্ষাৎ না করেই চলে যেত । সমাজে সে না ছিল দোষী, না ছিল অভিযুক্ত । পিতার মত সবাই তাঁকে সম্মান করতো । যখন এ সুরা সবু লাহাব অবতীর্ণ হয় তখন সে শুনে রাগে, ক্ষোভে বিরোধিতা শুরু করল । তখন থেকে সে দোষী এবং অভিযুক্ত বলে সমাজে পরিচিত হল। তারপর থেকে সে যে কোন কথা রাসুল (সা) এর ব্যাপারে বলতো কেউই কান দিত না । অতএব তার সকল আশা দুরাশায় পরিণত হল । কাঙ্ক্ষিত বস্তু লাভ করতে পারল না । হযরত আতা (রা) বলেন আবু লাহাবের ধারনা ছিল তার হাত বিজয়ী , সে মুহাম্মদ (সা) কে মক্কা থেকে বের করে দিবে কিন্তু তা হয়নি , সে নিজেই ধ্বংস হয়ে গেছে । ............ আবু লাহাব একজন ইসলামের বিরাট শত্রু ছিল । স্বজাতির ধর্মকে প্রাধান্য দিয়ে গিয়ে ইসলামকে অস্বীকার করেছিল। আমাদের প্রিয় নবী (সা) তাকে ইসলাম গ্রহন করানোর জন্য বহু চেষ্টা করেও সফল হননি । অবশেষে আল্লাহ তা"লা তাকে লানত করলেন । রাসুল (সা) ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছিল এবং আবু লাহাব পিছন দিক থেকে পাথর নিক্ষেপ করছিল এমতাবস্থায় মোহাম্মদ (সা)এর পিছন দিক রক্তাক্ত হয়ে গিয়েছিল ।
তাফসীরে জালালাইন, ৭ খণ্ড , ৬০৮ পৃষ্ঠাঃ আবু লাহাব ছিল কৃপণ লোক । সে কৃপণতার দ্বারা বহু সম্পদ সঞ্চয় করেছিল । বদর যুদ্ধে মুসলমানদের বিজয় ও কাফেরদের চরম পরাজয়য়ের কথা শুনে আবু লাহাব যার পর নাই শোকাভিভূত, মর্মাহত ও ব্যাথিত হয়ে পড়েছিল। যে কারনে সে এমন রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ল যে , সে রোগ হতে আর নিষ্কৃতি লাভ করেনি । তার দেহে এক প্রকার ফুসকুড়ি যা বসন্ত গোটার ন্যায় ছিল , তা সাংঘাতিকভাবে দেখা দিল । আরবে এ রোগকে সংক্রামক রোগ ভাবা হত । এ রোগে দেখা দেওয়ার সাথে সাথেই কেউ তার ধারে কাছে আসল না । ফলে রোগযন্ত্রণায় ধুকে ধুকে নিজের ঘরেই মরে রইলো । কয়েকদিন পর্যন্ত লাশ পড়ে থাকার দরুন তা পচে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হল , তখন প্রতিবেশী লোকজন দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে তার এক ছেলের নিকট অভিযোগ দিল । এ সময় এক ছেলে কয়েকজন হাবশী ভাড়া করলো । তারা নাক মুখ বন্ধ করে লাঠি দ্বারা লাশটি গড়িয়ে গড়িয়ে একটি কুয়া খনন করে এবং তাতে ফেলে দিয়ে মাটি ও পাথর কুচা দ্বারা কুয়াটির মুখ বন্ধ করে দিল ।
তাফসীরে জালালাইন, ৭ খণ্ড , ৬০৮ পৃষ্ঠাঃ "সুরা লাহাব" অবতীর্ণ হলে আবু লাহাব রাগান্বিত হয়ে আপন পুত্র ওতবা ও ওতায়বাকে বলে তোমাদের বিবাহ বন্ধনে মুহাম্মদের যে দুই কন্যা রোকাইয়া ও উম্মে কুলছুম রয়েছে তাদের এক্ষণই তালাক দিয়ে দেও , নাইলে আমি তোমাদের মুখ দেখবো না, তখন কাফেরদের সাথে বিবাহ সিদ্ধ ছিল । তারা পিতার আদেশ মোতাবেক রাসুল (সা)এর সামনে গিয়ে তালাক প্রদান করে । ওতায়বা উম্মে কুলছুমকে তালাক প্রদান করে রাসুল (সা)কে অনেক গালাগালি করে আর রাসুলের মুখের দিকে ফিরে থুথু নিক্ষেপ করে কিন্তু মুখমণ্ডলে তা পরেনি ।
তাফসীরে জালালাইন, ৭ খণ্ড , ৬০৮,৬০৯ পৃষ্ঠাঃ আবু লাহাবের স্ত্রী নবী (সা) কে প্রচুর ঘৃণা করতেন এবং নবী (সা) নামে মিথ্যা এবং উগ্র টাইপ কবিতা রচনা করতেন । আবু লাহাবের স্ত্রী চোগলখুরি করতেন একের সাথে অন্যের ঝগড়া লাগিয়ে দিতেন মিথ্যা বলে । রাসুল (সা) কষ্ট দেওয়ার জন্য অনেক পরিশ্রম করেছেন এই মহিলা ।
ই,ফাঃ তাফসীরে ইবনে আব্বাস, ৩ খণ্ড, ৭২১ পৃষ্ঠাঃ আবু লাহাবের স্ত্রী সে সর্বদাই মুসলিম এবং কাফেরদের মাঝে চুগলী করে বেড়াতো । সে কাটা সংগ্রহ করে রাখতো এবং তা নবী (সা)এর মসজিদে যাওয়ার পথে কাটা বিছিয়ে রাখতো এবং মুসলিমদের যেই রাস্তায় চলাচল করতো সেখানেও কাটা বিছিয়ে রাখতো এই নারী ।
তাফসীরে ওসমানী, ৭ খণ্ড , ৪৪২ পৃষ্ঠাঃ নবী মুহাম্মদ (সা) যখন ইসলামের কথা মানুষের কাছে পেশ করতেন তখন এই আবু লাহাব পাথর নিক্ষেপ করতো এবং নবীজির পা মুবারক রক্তাক্ত হয়ে যেত ।
তাফসীরে ওসমানী, ৭ খণ্ড , ৪৪৩ পৃষ্ঠাঃ আবু লাহাবের স্ত্রী উম্মে জামিলা ধনী হওয়া সত্ত্বেও কৃপণ ছিল । সে এতই নিচ ছিল যে জঙ্গল থেকে কাঠ আহরন করতো এবং নবীর পথে কাটা বিছাত যাতে চলাচল করতে নবী মুহাম্মদ (সা) এবং তাঁর কাছে গনাগমনকারীদের আসতে কষ্ট হয়।
একটি ছোট প্রশ্ন উদয় হয় তা হলঃ আল্লাহ চেয়েছেন বলেই আবু লাহাব ও তার স্ত্রী ইসলাম গ্রহন করতে পারেনি সুতরাং এখানে তাহলে আল্লাহর দোষ?
উত্তর খুবই সোজা । মূল কথা হল আল্লাহ জানতেন বলেই তিনি সুরা লাহাব লিখে রেখেছেন , তিনি লিখেছেন বলে যে তারা ইসলাম গ্রহন করেনি ব্যাপারটা সেটা নয় ।
আল্লাহ ভবিষ্যৎ জ্ঞান রাখেনঃ
সূরা নামল ২৭:৬৫ = আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া আসমান-যমীনে অন্য কেউ অদৃশ্যের জ্ঞান রাখেনা। এবং তারা জানে না কখন তারা উত্থিত হবে।
সুরা আন‘আম ৬:৫৯ = অদৃশ্যের চাবিকাঠি কেবল আল্লাহর নিকট রয়েছে, তিনি ছাড়া অন্য কেউ জানেনা।
উদাহরণঃ কেউ যদি নিজের ইচ্ছায় খাদ্য না খায় তবে সে ক্ষুধার্ত হবে এবং কষ্ট ভোগ করবে। এখন আমি আমার এক সাথীকে বললাম যদি তুমি না খাউ তবে তুমি ক্ষুধার্ত হবে ফলে কষ্ট তোমাকে ভোগ করতেই হবে। এটা সত্য এটা হবেই।যদি ঐ বন্ধু এই সত্য কথা জানার পরেও না খায় তবে তো তার ক্ষুধা ও কষ্ট লাগবেই ।এর মানে এই না যে সে আমার কথার কারনেই ক্ষুধা ও কষ্ট পেল অর্থাৎ সে তার নিজের মূর্খতার কারনেই ক্ষুধা ও কষ্ট ভোগ করল কারন সে জানার পরেও খাদ্য খায় নি। কেউ যদি বলে আমি বলার কারনেই ঐ সাথীর ক্ষুধা ও কষ্ট লাগছে তাহলে এটা যেমন ভুল তেমনি আল্লাহ আবু লাহাব ও তার স্ত্রীকে কেও প্রচুর সতর্ক করেছেন নবী মুহাম্মদ (সা) দ্বারা তারা মানেনি আর আল্লাহ জানতেন যে তারা মানবে না তাই তিনি আমাদেরকে সতর্ক করতে আগেই লিখে দিয়েছেন ।
এখন আবু লাহাব ও তার স্ত্রী যদি সত্যকে না মানে তবে সে ধ্বংস হবেই আর আবু লাহাব ও তার স্ত্রী আল্লাহ্র কথা সত্য জেনেও মানেনি, অস্বীকার করেছে এবং আল্লাহ জানতেন যে তারা দুইজনেই কেউই ইসলামে ফিরে আসবে না এর জন্যই তিনি আমাদের উপদেশের জন্য আগেই কুরআনে মজেজা স্বরূপ তাদের পরিনতি লিখে দিয়েছেন । এখানে কোনভাবেই আল্লাহ দোষী হয় না বরং আল্লাহ বলেছেন সুরা নাজম ৫৩:৩৯,৪০ = মানুষ শুধু তাই পায় যা সে অর্জন করে এবং তার কর্ম শীঘ্রই তাকে দেখানো হবে।
ঐ বন্ধু যেমন সত্য কথা জেনেও খাদ্য, না গ্রহন করার ফলে সে যে ক্ষুধার কষ্ট পেল সে অসুস্থ হয়ে পরবে । আমরাও যেন জেনে বুঝে আল্লাহকে অস্বীকার না করি তাই আল্লাহ আমাদেরকে এটা মনে রাখার জন্যই নামাজে "সুরা লাহাব" পড়ার আদেশ করেছেন, আবু লাহাবের মত আমরাও সত্যকে জানার পরেও অস্বীকার না করি। আশা করি জবাব পেয়েছেন ।
কুরআনের মজেজাঃ
১/ আবু লাহাব জানত এবং সে ইচ্ছা করলেই পারতো যে আমি ইসলামের গ্রহনের নাটক করব আর কুরআনের আয়াত ভুল প্রমান করবো কিন্তু এরকম কিছুই ঘটেনি ।
২/ আবু লাহাবের স্ত্রীও জানত "সুরা লাহাব" সম্পর্কে । ইসলাম গ্রহন করেনি সেও । ইচ্ছা করলে সেও পারতো ইসলাম গ্রহনের নাটক করে কুরআনকে ভুল প্রমান করার কিন্তু এরকম কিছুই হয়নি ।
৩/ কুরআন আগে কিভাবে দাবি করল যে তারা কেউই ইসলাম গ্রহন করবে না, এটাই ফাইনাল ? এর একটাই উত্তর আর তা হল একমাত্র আল্লাহই ভবিষ্যতের খবর জানেন এবং সেই অনুযায়ী তিনি আগেই এই খবর জানিয়ে দিয়েছেন আমাদের ।
৪/ নবী (সা) তো নিশ্চিত ভাবে ভবিষ্যতের খবর জানতেন না বরং আল্লাহই তাঁকে জানিয়ে দিতেন । যারা বলেন কুরআন নবী মুহাম্মদ (সা) লিখেছেন তারা উত্তর দিন কিভাবে নবী (সা) নিশ্চিত হল যে আবু লাহাব আর তার স্ত্রী কখনোই ইসলাম গ্রহন করবেন না ?
৫/ আবু লাহাবের ধন সম্পদ তার কোন কাজে আসবে না এই তথ্য নবী মুহাম্মদ (সা) জানলেন কিভাবে ?
৬/ এই ঘটনা থেকেও স্পষ্ট প্রমান হয় যে কুরআন আল্লাহর বানী কারন আল্লাহ ছাড়া কারো পক্ষেই ভবিষ্যৎ জানা পসিবল না ।
"সুরা লাহাব" থেকে আমরা যা শিখতে পারি তা হলঃ
১/ মানুষের সাথে কখনো খারাপ আচরণ করতে হয় না ।
২/ মানুষকে কখনো গালাগালি করতে হয় না ।
৩/ আত্মীয়তা সম্পর্ক নষ্ট করতে হয় না ।
৪/ চোগলখরী করে একজনের সাথে অন্যজনের দণ্ড লাগিয়ে দেয়া ঠিক না ।
৫/ ধন সম্পদ থাকতে তা থেকে কিছু গরীব অসহায় এতীমদের দান করা উচিত ।
৬/ কৃপণা করা ঠিক না ।
৭/ মতের বিরুদ্ধে গেলেই তার রাস্তায় কাটা বিছিয়ে দেয়া ঠিক না ।
৮/ কারো মুখে রাগ করে হলেও থু থু দেয়া ঠিক না ।
৯/ কাউকে অন্যায়ভাবে পাথর নিক্ষেপ করা ঠিক না ।
১০/ কাউকে অন্যায়ভাবে রক্তাক্ত করা উচিত নয় ।
১১/ ধৈর্য ধারন করা উত্তম একটি কাজ ।
১২/ ভাল বন্ধু নির্বাচন করা ।
১৩/ মানুষকে সম্মান করা ।
কিছু প্রশ্নঃ
১/ খগেনরা বেশির ভাগ প্রশ্ন করে আল্লাহ কেন আবু লাহাবকে অভিশাপ দিলেন , আচ্ছা আবু লাহাব কি ভাল মানুষ ছিল, কিভাবে ?
২/ আবু লাহাব মূর্তি পুজা করতো এখন খগেনরা কি আবু লাহাবের এই পুজার পক্ষে ?
৩/ নবী মুহাম্মদ (সা) তাঁর বাক স্বাধীনতার অধিকারে ইসলামের দাওয়াত দিত আর আবু লাহাব সেই অধিকারে বাধা দিত , নাস্তিকরা কি আবু লাহাবের এই অন্যায়কাজের পক্ষে ?
৪/ আবু লাহাবের স্ত্রী নবী (সা) ও মুসলিমদের রাস্তায় কাটা বিছিয়ে দিত , এটি কি ভাল কাজ নাকি অন্যায় কাজ ?
৫/ আবু লাহাব এবং তার স্ত্রীর সমস্ত ভয়াবহ অপরাধ সামনে রাখলে একটাই বিষয় ফুটে উঠে যে তারা অনেক বড় মাপের অপরাধী ছিল এখন তাদের এই অন্যায়কে সামনে রেখে যদি কেউ তাদের অভিশাপ দেয় , এটি কিভাবে গালাগালি হয় ?
৬/ আবু লাহাব এবং তার স্ত্রী ধনী হওয়া সত্ত্বেও তারা ছিল কিপটা , নাস্তিকরা কি এই কিপটাদের ভাল বলবেন নাকি কি বলবেন ?
৭/ আবু লাহাব নবী মুহাম্মদ (সা) কে পাথর নিক্ষেপ করে তার পা মোবারক রক্তাক্ত করে দিয়েছিল , এটি কি ভাল কাজ নাকি অন্যায় কাজ ?
৮/ বিনা কারনে নবীজির দুই মেয়েকে তালাক দিতে বলেছিল আবু লাহাব এটি কি ভাল কাজ ?
৯/ আবু লাহাব এবং তার স্ত্রী কিভাবে সুন্দর চরিত্রের মানুষ হয় নাস্তিক ধর্মের আলোকে ব্যাখ্যা করুন ?
১০/ নবী মুহাম্মদ (সা) কিভাবে জানলেন যে তারা তাদের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জীবনেও ইসলাম গ্রহণ করবেন না ?
সুতরাং পরিশেষে উপরের সমস্ত তথ্য প্রমান হাতে রেখে আমরা দাবি করলামঃ
১/ আবু লাহাব এবং তার স্ত্রী উগ্রপন্থী ছিলেন ।
২/ তারা দুইজনেই বাক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিলেন ।
৩/ তারা দুইজনেই নবী মুহাম্মদ (সা) সহ তার সাথীদের ধ্বংস কামনা করতেন ।
৪/ নবী মুহাম্মদ (সা) যখন বাক স্বাধীনতার অধিকারে ইসলামের দাওয়াত পেশ করতেন তখন আবু লাহাব পাথর নিক্ষেপ করতেন ।
৫/ উগ্র আবু লাহাব "নবী মুহাম্মদ (সা)কে জাদুকর" বলে দাবি করতেন কিন্তু খগেনদের মত কোন প্রমান আজ পর্যন্ত সে বা তার অনুসারীরা দিতে পারেনি।
৬/ আবু লাহাবের স্ত্রী নবী (সা) এবং মুসলিমদের যাতায়াত রাস্তায় কাটা বিছিয়ে দিত ।
৭/ আবু লাহাবের এক পুত্র নবী (সা)এর মুখের দিকে ফিরে বিনা কারনে থু থু নিক্ষেপ করেছিল এবং বিনা কারনে নবীজির কন্যাদের তালাক প্রদান করেছিল ।
৮/ আল্লাহ আমাদেরকে উপদেশ দেওয়ার জন্যই "সুরা লাহাব" অবতীর্ণ করেছেন ।
৯/ এই সুরা দ্বারা প্রমান হয় যে কুরআন আল্লাহর বানী ।
১০ / সুতরাং সুরা লাহাবকে মোটেও গালাগালি করা হয়নি বরং সত্যের পক্ষে কথা বলা হয়েছে আর অন্যায়ের বিরুদ্ধে সমালোচনা করা হয়েছে ।
: