বিষয়ঃ "আমার অবিশ্বাস" কিতাব পড়ে সংশয় এবং মুক্তমনা প্রশ্ন (পার্ট ১)
🌐 লিখেছেনঃ এম ডি আলী
📶ভূমিকাঃ প্রথমে একটি বিখ্যাত কবিতার লাইন দিয়ে আমার কথা শুরু করব । সেটি হলঃ বরং দ্বিমত হও , আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্ধায় । বরং বিক্ষত হও প্রশ্নের পাথরে । বরং বুদ্ধির নখে শান দেও , প্রতিবাদ করো , অন্তত আর যাই করো , সমস্ত কোথায় অনায়াসে সম্মতি দিও না । আমি মুক্তমনে চিন্তা করলাম এই কবিতা আমাকে হয়ত "নাস্তিক ধর্ম" সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান আহরণে ব্যাপক সাহায্য করবে । এরপরেই আমি নাস্তিক ধর্মের বিখ্যাত কিতাব "আমার অবিশ্বাস" বইখানা অধ্যায়ন করি । তাছাড়া অনেক নাস্তিকতায় বিশ্বাসী লোকেরাও মানুষদের এই কিতাবখানা পড়তে বলে এবং উৎসাহিত করে , তো আমিও পড়লাম । শুধু পড়িইনি বরং একাধিক বার শুরু থেকে শেষ করেছি আলহামদুলিল্লাহ ।
আমি এই কিতাব এতবার পড়েছি ততবার মনে হয় কোন খগেনও এই কিতাব পড়ে নাই কিন্তু এই বই পড়ে আমার মনে প্রচুর প্রশ্ন আসতে থাকে আমি চিন্তা করলাম এসব প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করব না কারন অনলাইনের নাস্তিকরা আমাকে গালাগালি করবে মূর্খ বলে গালি দিবে, আমি নাস্তিক ধর্ম জানি না ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি বলে আমাকে অপমান করবে ।
তারপরেও আমি স্থির থাকিনি কারন সত্য আমাকে জানাতেই হবে , কারন সত্য প্রচার ও প্রসার করা আমার ব্যাক্তি স্বাধীনতা এবং মুক্তমনে প্রশ্ন করাও আমার অধিকার এখন এই প্রশ্ন করা নিয়ে কেউ যদি আমাকে নিয়ে গালি দেয় আমাকে নিয়ে তামাশা করে আমার কিছুই আসে যায় না বরং আমি দৃঢ়তার সাথেই দাবি করছি তারা যদি এরকম করে তাহলে বুঝতে হবে তারা মুক্তমনাদের বিরুদ্ধে , তারা বাক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে , তারা ব্যাক্তি স্বাধীনতার বিরুদ্ধে , তারা যৌক্তিক প্রশ্ন করার বিরুদ্ধে , তারা সত্যর বিরুদ্ধে, তারা প্রশ্নের বিরুদ্ধে । অনেকে তো আবার এটাও বলতে শোনা যায় যুক্তি আর প্রশ্নেই মুক্তি! আর নিচের সকল প্রশ্ন আমি নাস্তিকতার দৃষ্টিতেই করেছি এবং মুক্তমনেই প্রশ্ন করেছি ।
যাই হোক আমার সংশয় দিল এবং জিজ্ঞাসা যদি নাস্তিক ধর্ম দিয়ে সমাধান দিতে পারে আমি আপনাদের বিশ্বাসে বিশ্বাসী হব - যদি এটাই একমাত্র মুক্তির পথ হয়। কিন্তু বিশ্বাস করুন আর নাই করুন কিতাবটি শেষ পর্যন্ত পড়ার পড় নাস্তিক ধর্মের প্রতি আমার আস্থা, ভরসা সব নষ্ট হয়ে গেছে, কেন নষ্ট হয়েছে সেটা এই পর্বর সব পড়লে বুঝতে পারবেন ।
✅ শুরু হলঃ
🚫+ "আমার অবিশ্বাস" বইয়ের ভূমিকার শেষের দিকে লেখা আছেঃ মানুষের জন্যে যা ক্ষতিকর , সেগুলোর শুরুতেই রয়েছে বিশ্বাস, বিশ্বাস সত্যের বিরোধী, বিশ্বাসের কাজ অসত্যকে অস্তিত্বশীল করা , বিশ্বাস থেকে কখনো জ্ঞানের বিকাশ ঘটে না, জ্ঞানের বিকাশ ঘটে অবিশ্বাস থেকে, প্রথাগত সিদ্ধান্ত দ্বিধাহীনভাবে না মেনে তা পরীক্ষা করার উৎসাহ থেকে ।
😎 মুক্তমনা প্রশ্ন ১ = বিশ্বাস ক্ষতিকর । তাহলে আমরা কেন আপনার এই কথা বিশ্বাস করব ? কিসের ভিত্তিতে প্রমান করব আপনার এই কথা সঠিক ? যেহেতু বিশ্বাস থেকে জ্ঞানের বিকাশ ঘটে না । আমরা যদি আপনার কথা অবিশ্বাস করি তাহকে আপনার ফতোয়া অনুযায়ী আমাদের জ্ঞান বিকশিত হবে না কেন , কিভাবে ? জ্ঞান নিজে কি জ্ঞানী ? জ্ঞান কেথা থেকে আসে ? সর্ব প্রথম জ্ঞানের অস্তিত্ব কিভাবে আসে এবং কেন ? বিবর্তনবাদ সত্য হলে মানুষের জন্য জ্ঞান কেন দরকার যেখানে গরু ছাগলের জ্ঞান দরকার হয় না ? আপনি কেন জ্ঞানে বিশ্বাস করেন ? যদি বলেন "হ্যাঁ" তাহলে আপনি নিজেও বিশ্বাসী হয়ে গেলেন আর বিশ্বাস তো খারাপ (আপনার ফতোয়া অনুযায়ী) আর যদি বলেন "না" তাহলে আপনি তো জ্ঞানেই অবিশ্বাসী, তাহলে জ্ঞান বিকশিত করার ভ্রান্ত ফতোয়াটাই কেন পেশ করলেন ? আপনার এসব ফতোয়া আমরা কেন বিশ্বাস করব এবং অবিশ্বাস করব না কেন?
🚫+ "আমার অবিশ্বাস" অধ্যায়ঃ আমার ইন্দ্রিয়গুলো , প্রথম পরিচ্ছেদ , ১৩ পৃষ্ঠাঃ মানুষ হয়ে জন্মে আমি সুখী, বেশ ভাল লাগে আমার , অন্য কোন প্রাণী , এমন কি বস্তু রঙিন প্রজাপতি বা সুন্দরবনের বাঘ বা শান্ত গরু বা নির্বিকার মোঘ বা মাছ বা সাপ বা ছোট পিঁপড়ে বা আমগাছ বা শিমুল বা ঘাস বা পাথরও যদি হতাম , তাহলেও খারাপ লাগতো না , বেশ লাগতো আর যদি কখনোই জন্ম না নিতাম, কিছুই না হতাম , তাহলেও খারাপ লাগতো না । তখন আমি জানতামই না জন্ম আর পৃথিবী কাকে বলে , যেমন এসব জানবো না যখন মরে যাবো ।
😎মুক্তমনা প্রশ্ন ২ = "মানুষ হয়ে যে আপনি সুখী" এর প্রমান কি , কিসের ভিত্তিতে সত্য এই কথা এবং কেন ? সুখ নিজে কি সুখী, কিভাবে ও কেন ? সুখ সর্ব প্রথম কথা থেকে অস্তিত্বে এসেছে , ও কেন এবং কিভাবে এসেছেন ? আগেই কোথায় ছিল ? আপনি গরু ছাগল ভেড়া শুকর কুকুর হলেও যে আপনার খারাপ লাগতো না , এটি আগেই কিসের ভিত্তিতে বিশ্বাস করলেন এবং কেন ও কিভাবে? মানুষ আপনার এই কথা কেন অবিশ্বাস করবে না ? আর আপনি জন্ম না নিলে, কিছুই না হলেও খারাপ লাগতো না , এটা কিভাবে জন্ম না নিয়েই অগ্রিম বিশ্বাস করলেন ? সাধারনত আমরা জানি "ভাল-খারাপ" ব্যাপারটা তখনই আসে যখন মানুষ বেঁচে থাকে অথবা নীতিমালা থাকে কিন্তু আপনি জন্মই যখন হবেন না তখন আপনি কিসের ভিত্তিতে, মাধ্যমে বুঝতে পারবেন যে আপনার খারাপ লাগছে না ? এটি কিভাবে অন্ধ বিশ্বাস হয় না ?আর আপনি মরে গেলেই যে জানবেন না পৃথিবী বলে কিছু আছে সেটার প্রমান কি , যুক্তি কি , আমরা কেন আপনার সেই যুক্তিতে বিশ্বাস করবো ? এই কথা অবিশ্বাস করলে কেন আমাদের জ্ঞান বিকশিত হবে না ?
🚫+ "আমার অবিশ্বাস" অধ্যায়ঃ আমার ইন্দ্রিয়গুলো , প্রথম পরিচ্ছেদ , ১৩ পৃষ্ঠাঃ মরে যাওয়ার পর কখনোই জানবো না যে আমি জন্ম নিয়েছিলাম , পৃথিবীতে ছিলাম , আমার ভাল লাগতো ভোরের আকাশ , শ্রাবনের মেঘ , হেমন্ত , নদী বা নারী , কখনোই জানবো না আমি কবিতা পড়েছিলাম, এমনকি লিখেছিলামও , কেপে উঠেছিলাম কামনায়, আজস্র বার তৃপ্ত করেছিলাম আমার কামনা এবং বহুবার পরিতৃপ্ত করতে পারিনি ।
😎মুক্তমনা প্রশ্ন ৩ = জানা-অজানা দুটি বিষয় তখনই আসে যখন মানুষ উপলব্ধি করতে পারে কিন্তু আপনি যখন মারা যাবেন তখন কিভাবে জানতে পারবেন না যে আপনি কখনোই ছিলেন না , অথবা ছিলেন ? এই বিশ্বাসের ভিত্তি কি এবং কেন ও কিভাবে ভুল না ? আপনার ভোরের আকাশ ভাল লাগে আরও অনেক কিছুই ভাল লাগে তো সেটার প্রমান কি ? আপনি কিসের ভিত্তিতে মুক্তমনাদের কাছে প্রমান করবেন যে আপনার ভাল লাগে সেসব ? সেই সত্য জানার পারফেক্ট মানদণ্ড কি ?এটা অবিশ্বাস করলে কি কারো জ্ঞান বিকশিত হওয়ার রাস্তায় বাধা পড়বে, কিভাবে এবং কেন ? এসব দাবি কি অন্ধ বিশ্বাস না কিভাবে ? আপনি কামনায় কেপে উঠেন কেন ? এর কারন কোন কার্যকারণে ? কামনার অস্তিত্বের প্রমান কিসের ভিত্তিতে প্রমাণিত ? এর শুরু কোথায় এবং কেন ? আপনি নিজেকে কিভাবে তৃপ্ত করেছিলেন ? আর আপনি যে তৃপ্তি পেয়েছেন সেটা কিভাবে মুক্তমনারা বুঝবে কারন তারা তো আপনার তৃপ্তিতে তৃপ্তি হয়নি ! তাহলে ? আপনি কাকে বহুবার তৃপ্ত করতে পারেননি , নিজেকে নাকি অন্য কাউকে সেটা পরিস্কার করে বলেননি কেন ? যাকে আপনি পরিতৃপ্ত করতে পারেননি সে কি আপনার প্রতি কোন অভিযোগ করেছে ? ডাক্তার দেখান নাই ? আপনি কি এর জন্য শরমিন্দা ?
🚫+ "আমার অবিশ্বাস" প্রথম পরিচ্ছেদ,অধ্যায়ঃ আমার ইন্দ্রিয়গুলো , পৃষ্ঠা ১৩ = জন্মের আগে যেমন শুন্য ছিলাম, মরে যাওয়ার পর পর আমার কাছে আমি সম্পূর্ণ শুন্য হয়ে যাবো । আমার সূচনার আগের অধ্যায় অন্ধকার , সমাপ্তির পরের পরিচ্ছদও অন্ধকার । দুই অন্ধকারের মধ্যে ক্ষণিক আলোর ঝিলিক আমি । এই ঝিলিকটুকু আমার ভাল লাগে । আমার আগের ও পরের অন্ধকার সম্পর্কে যে আমি জানি না , তা নয়:ওই অন্ধকারকে রহস্যময় বলে ভেবে আমি বিভোর নই, আমি জানি আগে কি ছিল। আমার পরে কি হবে , আমি জানি আমি কোন মহাপরিকল্পনা নই, কোন মহাপরিকল্পনার অংশ নই । আমাকে কেউ তার মহাপরিকল্পনা অনুসারে সৃষ্টি করেনি, একরাশ প্রাকৃতিক ক্রিয়ার ফলে আমি জন্মেছি, অন্য একরাশ প্রাকৃতিক ক্রিয়াকলাপের ফলে আমি মরে যাবো, থাকবো না , যেমন কেউ থাকবে না , কিছু থাকবে না - এ সম্পর্কে সন্দেহ পোষণের কোন কারন আমি দেখি না ।
😎মুক্তমনা প্রশ্ন ৪ = জন্মের আগে আপনি শুন্য ছিলেন কেন ও কিভাবে ? শুন্যই বা কেন ছিল ? সেখান থেকে আপনাকে আসতে হবেই বা কেন ? শুন্য থেকে কেন ও কিভাবে জন্ম ও মৃত্যুর সৃষ্টি হতে পারে ? কিভাবে নিজে নিজেই তৈরি হল এসব ? সে সৃষ্টি করেছে ? আপনার শুরুর আগের অধ্যায় অন্ধকার ছিল - আপনি কিভাবে বিনা প্রমাণে বিশ্বাস করলেন ? আর সেই অন্ধকার কোথা থেকে অস্তিত্বে এসেছে এবং কেন ? দুই অন্ধকারের মধ্য থেকে আলোর ঝলকানি কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে ও কেন ? আপনি কোন প্রমান দেননি কেন এর পক্ষে ? মৃত্যুর পরে পরকাল আছে ইত্যাদি এসব মুসলিমরা বললে আপনারা তাদেরকে অন্ধ বিশ্বাসী বলে গালাগালি করেন তাহলে আপনি যে দাবি করলেন আপনি কোন মহাপরিকল্পনার অংশ না , আপনাকে কেউই সৃষ্টি করেনি , মৃত্যুর পর কিছুই হবে না - এসব দাবির প্রমান কি ? সেটা কিসের ভিত্তিতে আমরা অবিশ্বাস করব না এবং কেন ? একই কারনে আপনাকে অন্ধ বিশ্বাসী বলে গালি দেয়া হবে না কেন ? কারন আপনি কোন প্রমান দেখাতে পারেননি । আপনি কিসের ভিত্তিতে জানলেন যে আপনাকে কেউ সৃষ্টি করে নাই ? বিনা প্রমাণে এই কথা বিশ্বাস করা কি অন্ধ বিশ্বাস নয় ? কেন ? প্রকৃতি অস্তিত্ব কিভাবে এসেছেন , সেটার কারন কোন কার্যকারণে ? প্রকৃতিকে কে সৃষ্টি করেছে , তাকে কে সৃষ্টি করেছে ? কেন একরাশ প্রকৃতির ক্রিয়াকলাপের ফলে মানুষের জন্ম ও মৃত্যু হবে ? প্রকৃতি কিভাবে এই সিস্টেম শুন থেকে শুরু করেছে ? সেটার মাধ্যম কি আর সেই মাধ্যমের কারন কোন কার্যকারণে ? আপনি কিসের ওপর বিশ্বাস রেখে বলেছেন যে আপনার ফতোয়ায় কোন সন্দেহ নেই ? এই ফতোয়া কি আমাদেরকে অন্ধ বিশ্বাসীর দিকে ধাবিত করছে না ? আপনার এসব ফতোয়া আমরা অবিশ্বাস করলে আমাদের জ্ঞান বিকশিত হতে বাধা হবে কেন কারন বিশ্বাস তো খারাপ আপনার ফতোয়া অনুযায়ী ?
🚫+ "আমার অবিশ্বাস" পৃষ্ঠা ১৪ = দোয়েল চড়ুই দেখে সুখ পাই । রাষ্ট্রপতির মুখের থেকে চড়ুইর মুখ অনেক সুন্দর, উলঙ্গ শিশুরা, ওদের পরার কিছুই নেই, মাঘের শীতে পাতার আগুনের উম নিচ্ছে দেখে সুখ পাই, সুখ পেয়ে নিজেকে অপরাধী বোধ করি ।
😎মুক্তমনা প্রশ্ন ৫ = উলঙ্গ লেংটা শিশুদের দেখে আপনি সুখ পান কেন ? এটা কি একটি রোগ না ? যাকে ডাক্তারদের ভাষায় পিডোফিলিয়া বলা হয় । তাছাড়া আপনি লেংটা শিশুদের দেখে সুখ পান তাহলে নিজেকে অপরাধী কেন মনে করবেন ? অবশ্যই আপনি আপনার এই রোগ নিয়ে চিন্তিত ! আপনি কি সেই শিশুদের লেংটা অবস্থাতেই দেখছিলেন আর সুখ নিচ্ছিলেন নাকি তাদের বস্রের জন্য কিছু করেছিলেন ? আসলে আপনি কি করেছিলেন তাদের উপকারের জন্য ? আপনি "আমার অবিশ্বাস" কিতাবের ১৫ পৃষ্ঠায় লিখেছেন কান আপনাকে সুখী করেছে বিপুলভাবে । প্রশ্ন হল কান কেন সৃষ্টি করা হয়েছে ? কান কোন শক্তির জন্য মানুষকে শুনতে সাহায্য করে ? মানুষকে এই শোনার ক্ষমতা দিয়ে কানের কি লাভ ? শুন্য থেকে এমন একটি অঙ্গ কেন সৃষ্টি হল যার কারনে মানুষ শুনতে পারবে ? প্রকৃতি এমন সিস্টেম কেন দিতে পারল না যে মানুষ একই সাথে চোখ দিয়ে দেখবে আর চোখ দিয়েই শুনবে ? কান মানুষকে শোনানোর যোগ্যতা কিভাবে পেল ও কেন ?
🚫+ "আমার অবিশ্বাস" পৃষ্ঠাঃ ১৪ = আমার ইন্দ্রিয়গুলোর মধ্যে চোখ দুটিই শ্রেষ্ঠ - এ দুটি দিয়ে আমি দূর থেকে ভেতরে টেনে আনি দৃশ্যের পর দৃশ্য , সৌন্দর্যের পর সৌন্দর্য । অন্য কোন ইন্দ্রিয় দিয়ে এভাবে টানতে পারি না বাহিরকে ।
😎মুক্তমনা প্রশ্ন ৬ = শ্রেষ্ঠ চোখ দুটি কে আপনাকে দিয়েছে এবং কেন ? চোখ কিভাবে শুন্য থেকে নিজেই তৈরি হয়েছে ? চোখের মাঝে দূরের জিনিস কাছে এনে দেখার এই সিস্টেম কিভাবে নিজে নিজে সৃষ্টি হল এবং কেন ? প্রকৃতি কেন অন্য ইন্দ্রিয়কে এই সিস্টেমে শুন্য থেকে তৈরি করলো না ? সৌন্দর্য কিভাবে ও কেন শুন্য থেকেই তৈরি হল ? সৌন্দর্য প্রথম কেরকম ছিল এবং কেন ও কিভাবে ?
🚫+ "আমার অবিশ্বাস" পৃষ্ঠা ১৫ = যখন শিশু ছিলাম, কিশোর হয়ে উঠেছি যখন , তখনও আমি সব কিছু চুষে দেখতে চেয়েছি । আজো অনেক কিছু চুষে আর চেখে দেখতে ইচ্ছে করে । ছেলেবেলা ভরে ইচ্ছে হতো চুলোর লাল আগুনের টুকরোগুলোকে চুষে দেখতে, ওগুলো লাল গোলাপের থেকেও লাল হয়ে জ্বলজ্বল করতো , সূর্যাস্তকেও চুষে স্বাদ নিতে ইচ্ছে হতো, কয়েক বছর আগে সারা সন্ধ্যা চুষতে চিবুতে ইচ্ছে হয়েছিল চুইংগামের মত এক তরুণীকে । চারপাশে ছড়িয়ে আছে যে জগত , তার স্বাদ আছে , টক মিষ্টি ঝাল তেতো বিষাক্ত স্বাদ, আমি তার স্বাদ নিয়ে সুখী হয়েছি । তা ছাড়া "আমার অবিশ্বাস" বইয়ের ১৬ পৃষ্ঠায় লেখা আছেঃ কোনো কোনো নারী দেখলে ছুঁতে ইচ্ছে করে, কিন্তু ছুই না । সব ছোঁয়া অনুমোদিত নয় । ওষ্ঠ দিয়ে ছোঁয়া নিবিড়তম ছোঁয়া , আমি যা কিছু ওষ্ঠ দিয়ে ছিয়েছি তারাই আমাকে সুখী করেছে সবচেয়ে বেশি । আমাদের সমাজে ছোঁয়া খুবই নিষিদ্ধ ব্যাপার । আমরা খুব কম মানুষকেই ছুঁতে পারি , খুব কম মানুষকেই ছোঁয়ার অধিকার আছে আমাদের । ছোঁয়া এখানে পাপ । কোন নারী যদি কোন পুরুষকে ছোয় , কোন পুরুষ যদি কোন নারীকে ছোয়, তাতে সূর্য খসে পড়ে না , আকাশে হুলুস্থল শুরু হয়ে যায় না কিন্তু আমরা মনে করি মহাজগত তাতে খেপে উঠেছে । আবার "আমার অবিশ্বাস" ১৫২ পৃষ্ঠায় লেখা আছেঃ আরও কিছুকাল আমি নক্ষত্র দেখতে চাই, নারী দেখতে চাই , শিশির ছুঁতে চাই , ঘাসের গন্ধ পেতে চাই .......
😎মুক্তমনা প্রশ্ন ৭ = উপরের লেখা থেকে মানুষ আপনার চরিত্র সম্পর্কে স্পষ্ট বুঝে গেছে । যাই হক , আপনার কি কিশোর বয়সে এতই গাধা ছিলেন যে আপনি আগুনকে চুষতে চেয়েছিলেন ? আগুন যে চুষা যায় না এই সামান্য ব্যাপার আপনাকে কেউই শিক্ষায় দেয়নি কেন ? আগুনের আবার টুকরোও থাকে? বাহ ! আগুন কি শক্ত পদার্থ ? সূর্যাস্তকেও চুষতে চাইতেন ! হাস্যকর স্যার । সূর্যাস্ত কি ভিটামিন টাইপ খাবার যে আপনি ললিপোপের মত চুষতে চাইতেন ? এতই মূর্খ ছিলেন ? নারীর প্রতি কি আপনার বিন্দুমাত্র সম্মান নেই কেন ? আপনি কিভাবে সারা সন্ধ্যা একটি তরুণীকে চুষতে চেয়েছিলেন ? ছিঃ ছিঃ ছিঃ ! আপনি নারীকে ছুঁতে চান সেটা কেমন ছোঁয়া সেটা পাঠক বুঝে গেছেন আপনি নারীকে দেখতে চান সেটা কেমন দেখা সেটাও পাঠক জেনে গেছে । কিন্তু প্রশ্ন হল আপনি যে নারীকে দেখতে চান ছুঁতে চান এবং চুইংগামেতর মত চুষতে চাবাতে চান এটি কি ধর্ষণ করার দিকে মানুষকে উৎসাহিত করছে না ? কিভাবে ? আপনার চরিত্র এত উন্নত মানের ! আপনার খগেন মুরিদদের তাইলে কি অবস্থা ? হায় হায় । "নাস্তিক ধর্ম" নারী অধিকারের বিরুদ্ধে এটি এখনো কিভাবে প্রমাণিত হয় না ?
🚫+ "আমার অবিশ্বাস" ১৭ পৃষ্ঠা = তবে সব কিছুই নিরর্থক, জগত পরিপূর্ণ নিরর্থকতায়, রবীন্দ্রনাথ নিরর্থক , আইনস্টাইন নিরর্থক, ওই গোলাপও নিরর্থক, ভোরের শিশিরও নিরর্থক, তরুণীর চুম্বনও নিরর্থক, দীর্ঘ সুখকর সংগমও নিরর্থক, রাষ্ট্রপতি নিরর্থক, কেননা সব কিছুরই পরিনতি বিনাশ ।
😎মুক্তমনা প্রশ্ন ৮ = আপনার এই বিখ্যাত ফতোয়া অনুযায়ী "আমার অবিশ্বাস" কিতাবটি পুরাপুরি বাতিল বা নিরর্থক হিসেবে প্রমাণিত হবে না কেন এবং কিভাবে ? আপনি রবিন্দ্রনাথ, আইনস্টাইন এনাদের মত বিখ্যাত মানুষের নাম উল্লেখ করে এদের নিরর্থক দাবি করেছেন কিন্তু আপনার নাম কেন উল্লেক করেননি ? আপনি কেন আপনার নিজের নাম উল্লেখ করে দাবি করেননি যে আপনিও অর্থহীন একজন ? আপনার সব কথা , আপনার সব যুক্তি অর্থহীন , এই কথা কেন স্পষ্ট করে আপনার বইতে লিখলেন না ? "নাস্তিক ধর্ম" পুরাটাই বাতিল হবে না কেন আপনার ফতোয়া অনুযায়ী কারন শেষ পরিনতি বিনাশ ? শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যত অভিযোগ পরা হয়েছে ইসলামের প্রতি এবং সামনে যত অভিযোগ করা হবে , সব সব সব বাতিল অর্থহীন প্রমাণিত হবে না কেন আপনার ফতোয়া অনুযায়ী ? মানুষের মনে প্রশ্নই বা আসে কেন আর সত্য জেনেই বা কি লাভ যেহেতু আমাদের সবাইকেই মৃত্যুবরন করতে হবে ? সত্য জেনে লাভ কি ? আমার সকল প্রশ্নের উত্তর কোন নাস্তিক দিতে চাইলে সেটাও অর্থহীন হিসেবে প্রমাণিত হবে না কেন ? আর তার অর্থহীন উত্তর আমি কেনই বা মানতে যাবো?
🚫+ "আমার অবিশ্বাস" ১৮ পৃষ্ঠাঃ এই যে আমি বেঁচে আছি, বেঁচে থেকে সুখ পাচ্ছি । আমি মরে যাবো, এই হাস্যকর নিরর্থকতাকে কিভাবে অর্থপূর্ণ করে তুলতে পারি ? আমার জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলার কখন পূর্বনির্ধারিত উপায় নেই । কোন পবিত্র বা অপবিত্র বই বা কোন মহাপুরুষ বা প্রবর্তক আমাকে পথ দেখাতে পারেন না । তাঁরা খুঁজেছেন নিজেদের পথ , নিজেদের জীবনকে তাৎপর্যপূর্ণ করার পথঃ আমি তাদের পথে চলতে পারি না । আমি খুজতে চাই আমার পথ । নিজের জীবনকে তাৎপর্যপূর্ণ করার দায়িত্ব সম্পূর্ণরুপে আমার নিজের ।
😎মুক্তমনা প্রশ্ন ৯ = আপনার জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলার কখন পূর্বনির্ধারিত উপায় নেই তাহলে এখানে নীতিনৈতিকতা অস্তিত্বকে অবিশ্বাস করে মানুষকে অন্যায় কাজে উৎসাহ দেয়া হল না কিভাবে ? আপনার এই ফতোয়া কোন খগেন চোর যদি ফলো করে আর তাকে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় চুরি করা খারাপ আর সে যদি যুক্তি দেয় চুরি করা খারাপ না কারন জীবন অর্থহীন আমি চুরি করে ধনী হবো এটাই আমার অর্থপূর্ণ কথা তাহলে আপনার ফতোয়া কিভাবে সে চোরের যুক্তি খণ্ডন করবে এবং কেন ? আপনি যদি নিজেই নিজের পথ চলতে চান তাহলে এই কিতাব লিখে কেন মানুষকে উৎসাহ দিলেন ? কেন তারা আপনার লেখার কথা মেনে চলবে ? কেন তারা আপনার বলা রাস্তায় চলবে ? আপনার পথ যে সঠিক এবং সত্য পথ সেটা কিভাবে বিশ্বাস করব এবং কেন ? সেটার ভিত্তি কি ? নিজের জীবনকে তাৎপর্যপূর্ণ করার দায়িত্ব সম্পূর্ণরুপে আমার নিজের তাহলে একই কথা যদি কোন ডাকাত বলে যে ডাকাতি করে আমার জীবন আমি তাৎপর্যপূর্ণ করবো তাহলে আপনার ফতোয়া অনুযায়ী সে ভুল কেন হবে এবং কিভাবে ? আপনার এই ফতোয়া প্রয়োগ করে কিভাবে সমাজের অপরাধ বন্ধ করবেন এবং কেন ? তারাই বা কেন আপনার ফতোয়া মানবে ?
🚫+ "আমার অবিশ্বাস" ১৯ পৃষ্ঠাঃ আমরা এই নিরর্থক পুনরাবৃত্তি থেকে একটুও এগোইনি , কামু বলেছেন আমাদের জীবন একই রোববারের পর সোমবার, সোমবারের পর মঙ্গলবার, মঙ্গলবারের পর বুধবার, একই নিরর্থক পুনরাবৃত্তি । এই নিরর্থকতার মুখোমুখি কিভাবে দাড়াতে পারি ? কামুর মতে একটিই সত্যিকার দার্শনিক সমস্যা রয়েছে তা হচ্ছে আত্মহত্যা । জীবন কি যাপন করার উপযুক্ত ? বেঁচে থাকার কি কোন মানে হয় ? কোন অর্থ কি আছে নিরুদ্দেশ যাত্রা লেখার বা মহাকাশে নভোযান পাঠানোর বা নারীর নগ্ন স্তন চুম্বনের বা জন্মদানের? ...................মানুষের প্রশ্নের শেষ নেই , হাজার হাজার প্রশ্ন তার , সেগুলোর কোন উত্তর নেই । মানুষ চায় সমাধান , কিন্তু সমাধান চাইতে গিয়েই মানুষ জাগিয়ে তোলে নিরর্থকতা । মানুষ যখন জীবনের অর্থ খুজতে চায় , বুঝতে চায় জীবনের অর্থ কি , তখন সে মুখোমুখি হয় নিরর্থকতার । জীবনের কোন অর্থ নেই । কোন মহৎ উদ্দেশ্য নেই । সুধীন্দ্রনাথ যেমন বলেছেন তার সার কথা পিশাচের উপজীব্য হওয়া।
😎মুক্তমনা প্রশ্নঃ ১০ = দুনিয়ার সমস্ত নাস্তিকরা তাদের সব সম্পদ , টাকা পয়সা এক করে তারা সবাই গরীবদের দিয়ে সকলেই আত্মহত্যা করে না কেন ? এতে দুনিয়ার মানুষ কমবে মানবতা জেগে উঠবে , এমন কেন হয় না ? আপনার ফতোয়া অনুযায়ী কেউ যদি ধর্ষণ করে অপরাধ থেকে বাঁচার জন্য আত্মহত্যা করে তাহলে সেটা অন্যায় হবে কেন ? আপনি দেখি নারীকামীতা ছাড়া কিছুই বুঝেন না কারন আপনি নারীকে সম্মান দিতে জানেন না কেন ? আপনি কেন কামুর ফতোয়া বর্ণনা করেছেন ? যেখানে আপনি বলেছেন আপনি অন্য কারো দেখানো পথে চলবেন না আবার কামুর ফতোয়া মেনে তার দেখানো পথে কিভাবে বিশ্বাস করতে পারেন ? এটি কি পরস্পর বৈপরীত্য কথা নয় ? প্রশ্নের উত্তর আপনার জানা নেই এর মানে কি সেটার উত্তর নেই ? প্রশ্নের উত্তর জানতে গিয়ে সত্য জেনে গেলে সেটা কিভাবে নিরর্থক হয় ? জীবনের কোন মহৎ উদ্দেশ্য নেই তাহলে একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে সম্মান করবে কেন ? জীবনের কোন উদ্দেশ্য এই তাহলে একজন মানুষ মানবতার কাজ কিভাবে ও কেন করবে ? কেন সে আরেকজন মানুষকে সাহায্য করবে ? জীবনের কোন উদ্দেশ্য নেই তাহলে ভাল খারাপের মানদণ্ড কিভাবে চলাচল করবে , এবং কেন ? জীবনের কোন মহৎ উদ্দেশ্য নেই তাহলে কেন নাস্তিকরা চায় দুনিয়া থেকে সকল ধর্ম বিদায় নিক এবং নাস্তিক ধর্মই সকলেই বিশ্বাস করুক ? কেন নাস্তিকরা তাদের নাস্তিক ধর্ম মানুষকে বুঝাতে আসে , কেন? "আমার অবিশ্বাস" ২০ পৃষ্ঠায় বলেছেন প্রত্যেকের খুঁজে বের করতে হয় নিজের পথ , তৈরি করতে হয় নিজের রাস্তা । তাহলে আমরা কেন সুধীন্দ্রনাথ এর দেখানো রাস্তায় হাঁটবো যেখানে আপনি বলেছেন নিজের জীবনকে তাৎপর্যপূর্ণ করার দায়িত্ব সম্পূর্ণরুপে আমার নিজের ?
: