ইসলাম নারীদের অন্যায়ভাবে প্রহার করার অনুমতি দেয় ?

Post a Comment


প্রশ্নঃ ইসলাম নারীদের অন্যায়ভাবে প্রহার করার অনুমতি দেয় ?
🖊লিখেছেনঃ এম ডি আলী
উত্তরঃ কুরআনের যেই আয়াত দিয়ে নাস্তিক অন্ধ বিশ্বাসীরা মিথ্যাচার ভুল ব্যাখ্যা করে সেটা হলঃ
* সুরা নিসা ৪:৩৪,৩৫ = পুরুষরা নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল।এই কারনে যে, আল্লাহ্‌ তাদের একের ওপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু তারা নিজেদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে । সুতরাং পুণ্যবতী নারীরা অনুগত তারা লোক চক্ষুর অন্তরালে তার হিফাজত করে আল্লাহ্‌র হিফাজত অনুসারে । স্ত্রীদের মধ্যে তোমরা যাদের অবাধ্যতার আশংকা করো তাদের ভাল উপদেশ দেও। তারপরে তাদের বিছানা ত্যাগ করো , শেষে তাদের প্রহার করো, এরপর যদি তারা তোমাদের আনুগত্য করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কোন পথ অনুসন্ধান করো না । নিশ্চয় আল্লাহ্‌ উচ্চ মর্যাদাশীল মহান । যদি তাদের মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হওয়ার মত পরিস্থিতিরই আশঙ্কা কর, তবে স্বামীর পরিবার থেকে একজন এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন সালিস নিযুক্ত করবে । তারা উভয়ের মীমাংসা চাইলে আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সবকিছু অবহিত।
📶চারটি অপশন পেলাম অথবা স্পষ্ট যা জানতে পারলামঃ
১/ আল্লাহ্‌ পুরুষদের দায়িত্ব দিয়েছেন তার স্ত্রীদের জন্য সমস্ত কিছুর ব্যবস্থা করতে এবং একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন কারন আয়াতেই বলা আছে যে যেহেতু পুরুষরা নিজেদের সম্পদ খরচ করে পরিবারের জন্য । অর্থাৎ একটি পরিবারে সব অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি ইসলাম পুরুষকে দিয়েছেন এই দিক থেকে আল্লাহ্‌ পুরুষদের নারী থেকে মর্যাদা বেশি দিয়েছেন এর মানে এই না যে নারীদের এখানে ছোট করা হয়েছে । আরও কারন বলা যায় যেমন পুরুষরা ভারি কাজ বহন করতে পারে কিন্তু নারীরা সেটা পারে না এই দিক থেকে পুরুষরা এগিয়ে কিন্তু ভুল বুঝলে হবে না, যে নারীদের ছোট করা হয়েছে বরং আল্লাহ পরিবারের দায়িত্ব বণ্টন করে দিয়েছেন ।
২/ পুণ্যবান নারীরা আল্লাহ্‌র আইন মানবে আর তারা পর্দা করবে নিজেদের রক্ষা করবে যেভাবে আল্লাহ্‌ তাদের বলেছেন।
৩/ স্ত্রীদের মধ্যে অবাধ্যতার আশংকা তথা - ধরুন আপনার স্ত্রী পরকীয়া করে অথবা মদে নেশায়, গাঞ্জা বিড়িতে আসক্ত এবং আপনি তাকে উপদেশ দিলেন যে এইসব নাস্তিক ধর্মে হালাল আর আমরা হলাম মুসলিম আমাদের ইসলামে ধর্মে এইসব হালাল না নিষেধ, তুমি এইসব অবৈধ কাজ করতে পারো না । এখন আপনার স্ত্রী আপনার ভাল কথা মানছেন না । এখন আপনি কি করবেন ? আপনি যা করবেন তা হলঃ
* প্রথমে তাকে ভাল উপদেশ দিয়ে বুঝাতে হবে ।
* এরপরে কাজ না হলে বিছানা ত্যাগ করতে হবে অর্থাৎ এক সাথে ঘুমাবেন না ।
* এরপরেও যদি কাজ না হয় তাহলে তখন শেষে আপনি হালকা প্রহার করতে পারেন।
* এরপরেও কাজ না হলে দুই পক্ষের পরিবার এনে বিচার বিবেচনা করে সমস্যা সমাধান করতে হবে।
৪/ এত ভয়ংকর অপরাধের জন্য তাকে হালকা প্রহার করলেন এরপরেও যদি কাজ না হয় তাহলে বিচারক আনবেন অর্থাৎ দুই পক্ষের অভিভাবক এনে বিচার করে সমাধান করবেন ।
⚫️প্রশ্নঃ স্ত্রীর অবাধ্যতার পরিসীমা কতটুকু ?
🆗উত্তরঃ স্ত্রীর অবাধ্যতা হওয়া অর্থাৎ যদি স্ত্রী পরকীয়া করে, মদের নেশায় আসক্ত থাকে , বিড়িখোর হয় , সন্তানদের আদর্শ হতে শিক্ষা না দেয়, বিনা কারনে স্বামীকে ঘৃণা করে , পরিবারের দায়িত্ব পালন না করে , আল্লাহর হুকুম পালন করে না তাহলে স্ত্রী অবাধ্য বলে নির্ণীত হবে। নিচের তথ্য সমূহ মনোযোগ দিয়ে পড়ুন ।
ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ২৮৪০ ,সহিহ হাদিসঃ নবীজি (সা) বলেছেনঃ তোমরা স্ত্রীলোকদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর। তোমরা তাদেরকে আল্লাহর আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছ এবং আল্লাহর কালিমার মাধ্যমে তাদের লজ্জাস্থান নিজেদের জন্য হালাল করেছ। তাদের উপরে তোমাদের অধিকার এই যে, তারা যেন তোমাদের শয্যায় এমন কোন লোককে আশ্রয় না দেয় যাকে তোমরা অপছন্দ কর। যদি তারা এরূপ করে, তবে হালকাভাবে প্রহার কর। আর তোমাদের উপর তাদের ন্যায়সঙ্গত ভরণ-পোষণের ও পোশাক-পরিচ্ছদের হাক্ব রয়েছে।
ihadis.com, জামে আত তিরমিজি, হাদিসঃ ১১৬৩ , নির্ণীত নয়ঃ সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। তোমাদের নিকট তারা বন্দীর মত। তাছাড়া তোমাদের আর কোন অধিকার নেই তাদের উপর, কিন্তু তারা যদি সুস্পষ্ট চরিত্রহীনতায় লিপ্ত হয় (তবে ভিন্ন কথা)। তারা যদি তাই করে তাহলে তাদের বিছনাকে আলাদা করে দাও এবং সামান্য প্রহার কর, মারাত্মক প্রহার নয়। যদি তারা তোমাদের অনুগত হয় তাহলে তাদেরকে নির্যাতনের অজুহাত খুঁজতে যেও না। জেনে রাখ! তোমাদের যেমন তোমাদের স্ত্রীদের প্রতি অধিকার আছে, তাদেরও তোমাদের প্রতি ঠিক সেরকমই অধিকার আছে। তাদের প্রতি তোমাদের অধিকার এই যে, তোমরা যাদেরকে পছন্দ কর না তারা যেন সেসব লোককে দিয়ে তোমাদের বিছানা পদদলিত না করায় এবং যেসব লোককে তোমরা মন্দ বলে জান তাদেরকে যেন অন্দর মহলে ঢুকার অনুমতি না দেয়। জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যে, তোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। > "তোমাদের নিকট তারা বন্দীর মত বলতে" একজন স্ত্রী যে স্বামীর দায়িত্ব আবদ্ধ অথবা যে বন্ধন সেই কথাই বুঝানো হয়েছে ।
* তাফসীরে ফী যিলাযিল কুরআন, খণ্ড ৪, ১৪৯ পৃষ্ঠাঃ কোন স্ত্রীর মধ্যে যখন আনুগত্যহীনতা ও বিদ্রোহাত্মক মনোভাব দেখা দেবে এবং বুঝা যাবে কোন অবস্থাতেই সে আনুগত্য স্বীকার করবে প্রস্তুত নয় একমাত্র তখনই পরিবারকে চরম ধ্বংস থেকে রক্ষার উদ্দেশ্যে কিছু শাস্তিমূলক ব্যাবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে এবং সেগুলো প্রয়োগ করতে হবে পর্যায়ক্রমে অর্থাৎ সূরা নিসা ৪:৩৪ অনুযায়ী । কিন্তু মনে রাখতে হবে এসব সিস্টেম একমাত্র সংশোধনী প্রচেষ্টা হিসেবেই গ্রহন করতে হবে, বিদ্রোহাত্মক ব্যাবহার ও কার্যকলাপের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য নয় ।
* তাফসীরে ফী যিলাযিল কুরআন, ৪ খণ্ড, ১৫১ ও ১৫২ পৃষ্ঠাঃ সূরা নিসা ৪:৩৪ = "স্ত্রীদেরকে প্রহার করো" ব্যাকের এ শেষ কথাটির অর্থ ভাল করে বুঝতে হলে পূর্ববর্তী দুটি প্রক্রিয়ার অর্থ ও উদ্দেশ্যের সাথে মিলিয়েই তাকে বুঝতে হবে । প্রতিশোধ গ্রহণের উদ্দেশ্যে শাস্তি দান বা ব্যাক্তিগত কারো তৃপ্তি লাভ করার জন্যে নয় , এ প্রক্রিয়া অবলম্বন । স্ত্রীকে বশীভূত করার উদ্দেশ্যে লাঞ্ছিত করা ও অবমাননার জন্যেও নয়। এ পদক্ষেপ দ্বারা এটাও চাওয়া হয়নি যে একজন স্ত্রী তার স্বামীর সাথে থেকে সন্তুষ্ট নয় , তবুও জবরদস্তি করে সেই স্বামীর সাথে জীবন যাপন করতে তাকে বাধ্য করা হবে । এ মারধর করার উদ্দেশ্য হবে আদব শেখানো , যেমন উদাহরণ স্বরূপ কোন মরুব্বি ব্যাক্তি আদব শেখানোর উদ্দেশ্যে মারেন বা কোন বাপ সন্তানদেরকে আদব - কায়দা শেখানোর জন্যে মারধর করেন অথবা আদব কায়দা শেখানোর জন্যে কোন শিক্ষক তার ছাত্রদেরকে মারধর করেন ।
* তাফসীরে আনওয়ারুল কুরআন, ১ খণ্ড, ৬২৬ পৃষ্ঠাঃ যদি স্ত্রী নিজের অবাধ্যতা ও দুষ্কর্ম থেকে ফিরে না আসে তাহলে তৃতীয় পর্যায়ে সাধারনভাবে মারধর করারও অনুমতি রয়েছে । আর তার সীমা হল এই যে শরীরে যেন সে মারধরের প্রতিক্রিয়া কিংবা জখম না হয় কিন্তু পর্যায়ের শাস্তি দানকেও রাসুলে করীম (সা) পছন্দ করেননি বরং তিনি বলেছেন ভাল লোক এমন করে না ।
সুতরাং স্ত্রীর অবাধ্য হওয়ার পরিসীমা উপরের তথ্য অনুযায়ী আমরা পেলাম যথাক্রমে যদি স্ত্রী স্বামীর সাথে শত্রুতামি করে, মদ খায়, গাজা খায়, ইয়াবা খায়, পরকীয়া করে, আল্লাহর কথা অমান্য করে, বড়দের সম্মান করে না , ছোটদের স্নেহ করে না , নিজের সন্তানদের ভাল কিছু শিখায় না এসব অপরাধের ক্ষেত্রে ইসলাম স্বামীকে তার স্ত্রীকে হালকা প্রহারের অনুমতি দেয় কিন্তু বিচারক এনে উক্ত সমস্যা সমাধান করাই নবীজি (সা) বেশি উৎসাহ দিয়েছেন ।
⚫️প্রশ্নঃ প্রহার করার সিমানা কতটুকু ?
🆗উত্তরঃ প্রহার করাটা হল অপশনাল একটি সিস্টেম। কেউ যদি ইচ্ছা করে সে এই প্রহার না করেও পরামর্শ করে সমাধান করতে পারে এটিও ইসলামের একটি আইন তবে প্রহার করতে চাইলে সেটি একেবারেই হালকা হবে এটাই ইসলামের শর্ত। ইসলাম বিদ্বেষী সমকামীরা এই শর্ত কখনোই আপনাকে বলতে চাইবে না যে স্ত্রীর ভয়ংকর অপরাধের জন্যও ইসলাম হালকা প্রহার করতে বলে । প্রমান নিচে দেয়া হয়েছে ।
* ই,ফাঃ সহিহ বুখারি, ৮/৪৭৬ পৃষ্ঠা, অনুচ্ছেদঃ স্ত্রীদের প্রহার করা নিন্দনীয় কাজ এবং আল্লাহ্‌ বলেন প্রয়োজনে তাদেরকে মৃদু প্রহার করো ।
* তাফসীরে ইবনে আব্বাস, ১ খণ্ড, ২৩৩ পৃষ্ঠাঃ প্রহার করা অর্থাৎ এমন প্রহার যা তেমন অত্যধিক পীড়াদায়ক এবং ক্ষতদায়ক না হয় ।
ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিস ২৮৪০ , সহিহ হাদিসঃ নবী (সা) বলেছেনঃ তোমরা স্ত্রীলোকের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো , তোমরা তাদেরকে আল্লাহ্‌র আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছ এবং আল্লাহ্‌র কালিমার মাধ্যমে তাদের লজ্জাস্থান নিজেদের জন্য হালাল করেছ । তাদের উপরে তোমাদের অধিকার এই যে, তারা যেন তোমাদের বিছানায় এমন কোন লোকের আশ্রয় না দেয় যাকে তোমরা অপছন্দ করো । যদি তারা এরুপ করে তবে হালকাভাবে প্রহার করো।
* ই,ফাঃ সহিহ বুখারি, ৮/ ৪৭৭ পৃষ্ঠাঃ নবী (সা) বলেন তোমরা কেউ নিজ স্ত্রীদের গোলামের মত প্রহার করো না, কেননা দিন শেষে তার সাথে তো মিলিত হবে ।
ihadis.com, আবু দাউদ, হাদিসঃ ২১৪২, সহিহ হাদিসঃ নবী মুহাম্মদ (সা) বলেন, স্ত্রীদের মুখমণ্ডলে মারবে না , তাকে গালমন্দ করবে না এবং পৃথক রাখতে চাইলে ঘরের মদ্ধেই রাখবে ।
ihadis.com, আবু দাউদ, হাদিসঃ ২১৪৩, সহিহ হাদিসঃ নবী মুহাম্মদ (সা) বলেছেন স্ত্রীদের মারবে না এবং গালমন্দ করবে না ।
ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ২১৪২, হাসান সহিহঃ হাকীম ইবনু মু’আবিয়াহ আল-কুশাইরী (রহঃ) হতে তার পিতা থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একদা আমি বলি, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমাদের কারো উপর তার স্ত্রীর কি হক রয়েছে? তিনি বললেনঃ “তুমি যখন আহার করবে তাকেও আহার করাবে। তুমি পোশাক পরিধান করলে তাকেও পোশাক দিবে। তার মুখমণ্ডলে মারবে না, তাকে গালমন্দ করবে না এবং পৃথক রাখতে হলে ঘরের মধ্যেই রাখবে।
ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ১৪২ , সহিহ হাদিসঃ ইবনু সাবরাহ (রা) বলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমার একজন স্ত্রী আছে। সে অশ্লীলভাষী। তিনি বললেনঃ তাহলে তাকে ত্বালাক দাও। লাক্বীত্ব বলেন, আমার সাহচর্যে সে দীর্ঘ দিন অতিবাহিত করেছে এবং তার গর্ভজাত আমার একটি সন্তানও রয়েছে। তিনি বললেনঃ তবে তাকে উপদেশ দাও। তার মাঝে কল্যাণ থাকলে সে উপদেশ গ্রহন করবে। জেনে রাখ, নিজের জীবন সঙ্গিণীকে ক্রীতদাসীদের মত প্রহার করবে না।
ihadis.com, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ১৯৮৩, সহিহ হাদিসঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভাষণ দিলেন, অতঃপর মহিলাদের উল্লেখ করে তাদের ব্যাপারে লোকজনকে উপদেশ দিলেন। তিনি বলেনঃ তোমাদের কেউ কেন তার স্ত্রীকে দাসীর মত বেত্রাঘাত করে? অথচ দিনের শেষেই সে আবার তাঁর শয্যাসংগী হয়! - আরও মজার ব্যাপার হল এই হাদিসের উপরেই অধ্যায় আনা হয়েছে যে "স্ত্রীদের প্রহার করা নিকৃষ্ট কাজ" ।
iahadis.com, আবু দাউদ, হাদিসঃ ২১৪৬, সহিহ হাদিসঃ ইয়াস ইবনু ‘আবদুল্লাহ্‌ ইবনু আবূ যুবাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা আল্লাহ্‌-র দাসীদেরকে মারবে না। অতঃপর ‘উমার (রাঃ) এসে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট এসে বললেন, মহিলারা তাদের স্বামীদের অবাধ্য হচ্ছে। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে মৃদু আঘাত করার অনুমতি দিলেন। অতঃপর অনেক মহিলা এসে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রীদের কাছে তাদের স্বামীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করলো। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ মুহাম্মাদের পরিবারের কাছে অনেক মহিলা তাদের স্বামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে এসেছে। সুতরাং যারা স্ত্রীদেরকে প্রহার করে তারা তোমাদের মধ্যে উত্তম নয়।
* তাফহীমুল কুরআন, সুরা নিসা, ১৩০ পৃষ্ঠাঃ নবী (সা) যেখানেই স্ত্রীদের মারার অনুমতি দিয়েছেন , সেখানেই তা দিয়েছেন একান্ত অনিচ্ছা সহকারে এবং লাচার হয়েই। আবার তারপরেও একে অপছন্দ করেছেন । তবুও কোন কোন স্ত্রী এমন হয়ে থাকে যাদেরকে মারধর না করলে সোজা থাকে না । এ অবস্থায় নবী (সা) নির্দেশ হচ্ছে তাদের মুখে বা চেহারায় মেরো না , নির্দয়ভাবে মেরো না এবং এমন জিনিস দিয়ে মেরো না, যা শরীরে দাগ রেখে যায় ।
* তাফসীরে জালালাইন, ১ খণ্ড, ৮১৪ পৃষ্ঠাঃ যে স্ত্রী ভদ্রতাসুলভ সতর্কীকরণ দ্বারা দুরস্ত বা সংশোধিত না হয় অর্থাৎ আগের বলা পদ্ধতিতে যদি অবাধ্য স্ত্রী সংশোধন না হয় - তবে তাকে তৃতীয় পর্যায়ে হালকা প্রহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে । স্বামী তাকে হালকা প্রহার করতে পারবে যাতে শরীরে কোন রকম চিহ্ন না পড়ে আর চেহারায় তো সম্পূর্ণ রুপে প্রহার নিষিদ্ধ । হালকা প্রহারের যদিও অনুমতি রয়েছে কিন্তু এর সাথে সাথে একথাও বিবৃত হয়েছে যে অর্থাৎ ভদ্র, ভাল লোকেরা তাদের স্ত্রীদের প্রহার করেবে না এবং হুজুরে পাক (সা) তার স্ত্রীকে প্রহার করেছেন বলে পবিত্র কুরআনে ও হাদিসে কোন প্রমান পাওয়া যায় না ।
* তাফসীরে ওসমানী, ১ খণ্ড, ৪২৫ ও ৪২৬ পৃষ্ঠাঃ কোন নারী স্বামীর সাথে অসদাচরণ করলে প্রথম পর্যায়ে স্বামী তাকে মুখে বুঝাবে , তাতে কাজ না হলে দ্বিতীয় পর্যায়ে একই গৃহে ভিন্ন শয্যায় থাকতে দিবে । এতেই কোন ফল না পেলে তৃতীয় পর্যায়ে তাকে মারবে । তবে এমনভাবে মারবে না , যাতে মারার চিহ্ন থাকে, সকল অপরাধেরই পর্যায় ও স্তর আছে । তদনুযায়ী শাসনেরও অনুমতি আছে । আয়াতে এর তিনটি পর্যায় ধারাবাহিকভাবে উল্লেখ করা হয়েছে । মার পিট হচ্ছে সর্বশেষ পর্যায় । সামান্য অপরাধের জন্য মারবে না, অবশ্য অপরাধ গুরতর হলে তা ভিন্ন কথা । এমন আঘাত করবে না , যার চিহ্ন বর্তমান থাকে । ......... সামান্য অপরাধের জন্য শেষ পর্যায়ের শাস্তি দেওয়া শুরু করবে না । বরং সকল অপরাধেরই একটি সীমা আছে, আছে একটি শাস্তিও ।
⚫️প্রশ্নঃ স্বামী যদি খারাপ হয় অথবা অন্যায় কাজ করে স্ত্রী কি স্বামীকে প্রহার করতে পারবে ?
🆗উত্তরঃ সাধারনত মহিলা একজন পুরুষ থেকে শারীরিকভাবে শক্তিশালী কম হয় । এটা সবাই জানে এবং মানেও এর বাস্তব প্রমান ক্রিকেট খেলা এবং ফুটবল খেলা নারী পুরুষ একত্রে খেলে না । অথবা যেসব খেয়ায় শক্তি বেশি লাগে সেসব খেলায় নারী পুরুষ আলাদা আলাদাই খেলে । এটা আমরা সবাই জানি । এখন স্বামী যদি মদ,গাঞ্জা, নেশা অথবা পরকীয়ায় আসক্ত থাকে তাহলে স্ত্রী যদি স্বামীকে প্রহার করে আর স্বামী যেহেতু খারাপ তাই সেও তো স্ত্রীকে আরও বেশি নির্যাতন করবে তাই স্ত্রীর সেফটির জন্য স্ত্রী স্বামীকে প্রহার করবে না । এটা বেস্ট । তবে স্বামী যদি স্ত্রীকে অপরাধমূলক কোন কাজ করতে বলে তাহলে স্ত্রী সেই স্বামীর কথা মানতে বাধ্য নয় ।
ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৭৪২৮, সহিহ হাদিসঃ আম্মাজান আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিতঃ আল্লাহর বাণীঃ “কোন সহধর্মিণী যদি তার স্বামীর দুর্ব্যবহার ও উপেক্ষার আশঙ্কা করে, তবে স্বামী-স্ত্রী যদি সমঝোতা করতে চায় তাদের কোন দোষ নেই এবং সমঝোতা (সন্ধি) সর্বাবস্থায়ই উত্তম”- (সূরাহ্ আন্ নিসা ৪ : ১২৮) তিনি এর ব্যাখ্যায় বলেন, এ আয়াতটি ঐ মহিলাদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে, যে এমন একজন পুরুষের কাছে ছিল, যার সাহচর্যে সে দীর্ঘদিন ছিল। এখন সে তাকে তালাক দিতে চায়। আর মহিলা বলে, আমাকে তালাক দিও না বরং আমাকে তোমার সাথে থাকতে দাও। তবে তোমার জন্য আমার পক্ষ হতে অন্য স্ত্রী গ্রহণের অনুমতি থাকল। এ প্রসঙ্গে উপরোল্লিখিত আয়াতটি অবতীর্ণ হয়।
ই,ফাঃ সহিহ বুখারি, ৮/ ৪৭৭, অনুচ্ছেদ ২৫১৮, অবৈধ কাজে স্ত্রী স্বামীর আনুগত্য করবে না এবং ৪৮২৫ নং হাদিসে আছে এক মহিলাকে তার স্বামী শরিয়ত বিরোধী কাজ করতে বলায় , রাসুল (সা) ঐ নারীকে সেটা পালন করতে নিষেধ করেন ।
সুরা নিসা ৪:৩৫ = যদি তোমরা উভয়য়ের মধ্যে বিচ্ছেদের আশংকা করো তাহলে স্বামীর পরিবার থেকে একজন বিচারক এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন বিচারক পাঠাও যদি তারা মীমাংসা চায় তাহলে আল্লাহ্‌ উভয়ের মধ্যে মিল করে দেবেন । নিশ্চয় আল্লাহ্‌ সর্বজ্ঞানী ।
ihadis.com, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ১২৭৫, সহিহ হাদিসঃ নবীজি মুহাম্মদ (সা) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ অন্যায় কাজ হতে দেখলে এবং তার হাত দিয়ে তা প্রতিহত করার সামর্থ্য থাকলে সে যেন তা নিজ হাতে প্রতিহত করে। তার সেই সামর্থ্য না থাকলে সে যেন মুখের ভাষায় তা প্রতিহত (বা প্রতিবাদ) করে। যদি মুখের ভাষায় প্রতিহত করার সামর্থ্য তার না থাকে তবে সে যেন তার অন্তরে তা প্রতিহত করে। এটা ঈমানের খুবই নিম্নস্তর।
সুতরাং খারাপ স্বামীকে স্ত্রী খারাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকার উপদেশ দিতে পারে স্বামীর সাথে অভিমানও করতে পারে কিন্তু যদি স্বামী মারাত্মক খারাপ হয় তাহলে স্ত্রী সেই খারাপ স্বামীকে মারবে না কারন যদি মারে তাহলে সেও পাল্টা মার খাবে যেহেতু তার স্বামী ভাল না তাই স্ত্রীর জন্য বিচারক এর কাছে যাওয়াই উত্তম হবে । কিন্তু অনেক সময় এরকম অবস্থা হয় যে খারাপ স্বামী মদ খেয়ে এসে স্ত্রীকে প্রচুর নির্যাতন করছে এমনকি তা স্ত্রীর জীবনের জন্য খুবই ভয়ংকর । হ্যাঁ, এরকম অবস্থায় স্ত্রী নিজের জীবনকে রক্ষা করার জন্য যা পদক্ষপ নিবে সেটি ইসলাম এলাও করে।
⚫️প্রশ্নঃ একজন আদর্শ স্বামী তার স্ত্রীর সাথে কেমন আচরণ করবে ?
🆗উত্তরঃ সুন্দর আচরণ করবে । যেমনঃ
* সুরা তাওবা ৯:৭১ = আর ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একে অপরের সহায়ক। তারা ভাল কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ থেকে বিরত রাখে। নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে। এদেরই উপর আল্লাহ তা'আলা দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশীল, সুকৌশলী।
* সুরা নিসা ৪:১৯ = তোমরা তাদের (স্ত্রীদের) সাথে সদ্ভাবে জীবনযাপন কর। আর তোমরা তাদের অপছন্দ করো তবে এমনও হতে পারে যে, তোমরা কোন কিছুকে অপছন্দ করছ আর আল্লাহ্‌ তাতে অনেক কল্যাণ রাখবেন ।
* সুরা আরাফ ৭:৫৬ = দুনিয়াতে শান্তি স্থাপনের পর তোমরা তাতে বিপর্যয় ঘটিও না ।
* সুরা বাকারা ২:১৯৫ = তোমরা নিজেদের জীবন ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিও না আর মানুষের সাথে ভাল ব্যাবহার করো , নিশ্চয় আল্লাহ্‌ভাল ব্যাবহারকারীদের ভালবাসেন ।
*ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৬০৩৯, সহিহ হাদিসঃ এক লোক আয়েশা (রা) কে জিজ্ঞেস করেন, নবী (সা) নিজ গৃহে কি কাজ করতেন ? তিনি বলেন, তিনি পারিবারিক কাজকর্মে বাস্ত থাকতেন । যখন সালাতের সময় উপস্থিত হত তখন উঠে সালাতে চলে যেতেন।
ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৫৬, সহিহ হাদিসঃ রাসুল (সা) বলেছেনঃ ‘তুমি আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে যা-ই ব্যয় করো না কেন, তোমাকে তার প্রতিদান নিশ্চিতরূপে প্রদান করা হবে। এমনকি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যা তুলে দাও, তারও।’
ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৩৫৫৯ এবং ৬০৩৫, সহিহ হাদিসঃ আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন নবী (সা) স্বভাবগত ভাবে অশালীন কথা বলতেন না,ইচ্ছা করে তিনি অশালীন কথা বলতেন না,অশ্লীল ভাষী ও অসদাচরণের অধিকারী ছিলেন না । তিনি বলতেন, তোমাদের মধ্যে যার স্বভাব চরিত্র উত্তম সেই তোমাদের মধ্যে সর্ব উত্তম।
ihadis.com, জামে আত তিরমিজি, হাদিস নং ২২৬৩, সহিহ হাদিসঃ নবী (সা) বলেন, সেই লোক তোমাদের মধ্যে সবচাইতে উত্তম যার নিকট কল্যাণ কামনা করা যায় এবং যার ক্ষতি হতে মুক্ত থাকা যায়। আর সেই লোক তোমাদের মধ্যে সবচাইতে নিকৃষ্ট যার নিকট কল্যাণের আশা করা যায় না এবং যার ক্ষতি হতেও নিরাপদ থাকা যায় না।
ihadis.com, আদাবুল মুফরাদ, হাদিসঃ ১৮৪, সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি অপরকে প্রহার করলে, কিয়ামতের দিন তার থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করা হবে ।
ihadis.com, শামায়েলে তিরমিজি, হাদিসঃ ২৬৬, সহিহ হাদিসঃ আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একমাত্র আল্লাহর পথে জিহাদ ছাড়া কখনো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় হাত দ্বারা (ইচ্ছাকৃতভাবে) কাউকে প্রহার করেননি এবং কোন দাস-দাসী বা স্ত্রীলোককেও প্রহার করেননি।
ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ২১৪৪, সহিহ হাদিসঃ মু’আবিয়াহ্‌ আল-কুশাইরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, একদা আমি রাসূলল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বললাম, আমাদের স্ত্রীদের (হক) সম্পর্কে আপনি কি বলেন? তিনি বললেনঃ তোমরা যা খাবে তাদেরকেও তাই খাওয়াবে এবং তোমরা যা পরবে, তাদেরকেও তা পরিধান করাবে। তাদেরকে প্রহার করবে না এবং গালিগালাজ করবে না।
ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ২১৪৬, সহিহ হাদিসঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা আল্লাহ্‌-র দাসীদেরকে মারবে না। অতঃপর ‘উমার (রাঃ) এসে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট এসে বললেন, মহিলারা তাদের স্বামীদের অবাধ্য হচ্ছে। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে মৃদু আঘাত করার অনুমতি দিলেন। অতঃপর অনেক মহিলা এসে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর স্ত্রীদের কাছে তাদের স্বামীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করলো। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ মুহাম্মাদের পরিবারের কাছে অনেক মহিলা তাদের স্বামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে এসেছে। সুতরাং যারা স্ত্রীদেরকে প্রহার করে তারা তোমাদের মধ্যে উত্তম নয়।
ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ২১৪৩, হাসান সহিহঃ বাহয ইবনে হাকীম (রাঃ) তার পিতার হতে তার দাদা থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ একদা আমি বলি, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমরা আমাদের স্ত্রীদের কোন স্থানে সঙ্গম করবো, আর কোন স্থান বর্জন করবো? তিনি বললেনঃ তুমি যেভাবে ইচ্ছে করো তোমার ফসল উৎপাদন স্থানে (সম্মুখের লজ্জাস্থানে) সঙ্গম করো। আর তুমি যখন খাবে তাকেও খাওয়াবে এবং তুমি পরিধান করলে তাকেও পরিধান করাবে। তাকে গালমন্দ করবে না এবং মারবে না। ইমামা আবু দাউদ (রহঃ) বর্ণনা করেছেন, শু’বাহ বর্ণনা করেছেন, যখন তুমি খাবে তাকেও খাওয়াবে, আর যখন তুমি পরিধান করবে, তখন তাকেও পরাবে।
ihadis.com, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিসঃ ১৯৮৪, সহিহ হাদিসঃ আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনও তাঁর কোন খাদেমকে অথবা তাঁর কোন স্ত্রীকে মারপিট করেননি এবং নিজ হাতে অপর কাউকেও প্রহার করেননি।
ihadis.com, আদাবুল মুফরাদ, হাদিসঃ ১৫৬, সহিহ হাদিসঃ নবী (সাঃ) বলেনঃ তোমরা দাওয়াত দানকারীর ডাকে সাড়া দিও, উপহারাদি ফেরত দিও না এবং মুসলমানদেরকে প্রহার করো না।
ihadis.com, আদাবুল মুফরাদ, হাদিসঃ ১৮৫, সহিহ হাদিসঃ নবী (সাঃ) বলেনঃ কোন ব্যক্তি কাউকে অন্যায়ভাবে প্রহার করলে, কিয়ামতের দিন তার থেকে এর প্রতিশোধ গ্রহণ করা হবে ।
ihadis.com, সুনানে আবু দাউদ, হাদিসঃ ২১৪৫, হাসান হাদিসঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি তোমরা স্ত্রীদের অবাধ্য হওয়ার আশংকা করো, তাহলে তাদেরকে তোমাদের বিছানা থেকে পৃথক করে দাও। হাম্মাদ (রহঃ) বলেন, অর্থাৎ তাদের সাথে সহবাস বর্জন করো।
ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৫২০৪, সহিহ হাদিসঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা কেউ নিজ স্ত্রীদেরকে গোলামের মত প্রহার করো না। কেননা, দিনের শেষে তার সঙ্গে তো মিলিত হবে। - এই হাদিসের উপরে অধ্যায়ের নাম হলঃ স্ত্রীদের প্রহার করা নিন্দনীয় কাজ এবং আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেনঃ (প্রয়োজনে) “তাদেরকে মৃদু প্রহার কর।” (সূরাহ আন-নিসাঃ ৪/৩৪)
* সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং ৪১৭৭, সহিহ হাদিসঃ নবী (সা) বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যাক্তি সর্বশ্রেষ্ঠ যে তার পরিবারের কাছে ভাল।
⚫️প্রশ্নঃ ড মুজিবুর রহমান অনুবাদকৃত, তাফসীরে ইবনে কাসীরের, ৪ খণ্ড, ৩৮৬ ও ৩৮৭ পৃষ্ঠায় বুখারি ও মুসলিম শরীফে নবীজি (সা) বলেছেন যখন কোন লোক তার স্ত্রীকে বিছানায় আহ্বান করে এবং সে অস্বীকার করে তখন সকাল পর্যন্ত ফেরেশতাগণ তাকে অভিশাপ দিতে থাকে। তাই এখানে হচ্ছে - এরুপ অবাধ্য নারীদেরকে প্রথমে বুঝাতে চেষ্টা করো অথবা বিছানা হতে পৃথক রাখো । হযরত ইবনে আব্বাস (রা) বলেন অর্থাৎ শয়ন তো বিছানার উপরেই করাবে কিন্তু পার্শ্ব পরিবর্তন করে থাকবে এবং সঙ্গম করবে না । তার সাথে কথা বলাও বন্ধ রাখতে পারো এবং স্ত্রী জন্য এটাই হচ্ছে বড় শাস্তি । কোন কোন তাফসীরকারকের মতে তাকে পার্শ্বে শুতেও দেবে না । => প্রশ্ন হল এখানে স্বামীর সাথে সঙ্গম না করাকে অবাধ্য কাজ বলা হয়েছে তাহলে এখান থেকে কি বুঝা যায় যে স্বামী ইচ্ছা করলে জবরদস্তি সঙ্গম করবে এবং এর জন্য প্রহার করতে পারবে ?
🆗উত্তরঃ প্রশ্নকর্তা আগের লেখা কেন দেখালেন না ? অর্থাৎ সূরা নিসা ৪:৩৪ ভাবার্থ তাফসীরে ইবনে কাসীরের, ৪ খণ্ড, ৩৮৬ পৃষ্ঠায় বলাই হয়েছে যে আল্লাহ তা"লা বলেন যেসব নারীর দুষ্টামিকে তোমরা ভয় করো অর্থাৎ যারা তোমাদের উপরে হতে চায় । তোমাদের অবাদ্ধতাচরন করে, তোমাদেরকে গুরুত্ব দেয় না এবং তোমাদের প্রতি শত্রুতা পোষণ করে । তাদেরকে তোমরা প্রথমে মুখে উপদেশ প্রদান করো, নানা প্রকারে তাদের অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি করো, স্বামীর অধিকারের কথা তাদেরকে বুঝিয়ে দাও । তাদেরকে বল - দেখো স্বামীর এত অধিকার রয়েছে যে রাসুল (সা) বলেছেন যদি কাউকে আমি এ নির্দেশ দিতে পারতাম যে সে আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সিজদাহ করবে তবে নারীকে নির্দেশ দিতাম যে সে যেন তার স্বামীকে সিজদা করে কেনন তার উপর সবচেয়ে বড় হক তারই রয়েছে ।
এখান থেকে স্পষ্ট বুঝাই যাচ্ছে যে কোন অবাধ্য স্ত্রী অর্থাৎ স্বামীর উপরে হতে চায় মানে অহংকার করে এবং স্বামীকে গুরুত্ব দেয় না সাথে স্বামীর সাথে শত্রুতাও করে এবং স্বামীর আহ্বানে বিনা কারনে রাজি হয় না এই টাইপের অসৎ স্ত্রীদের প্রথমে বুঝাতে হবে এরপরে না মানলে বিছানা ত্যাগ করতে হবে এরপরেও কাজ না হলে তাকে হালকা প্রহার করা যাবে । তবে রাসুল (সা) যেহেতু কখনো স্ত্রীদের মারে নাই তাই একজন আদর্শ স্বামী হিসেবে স্ত্রীদের মারা উত্তম কাজ নয় বরং পরামর্শ করে এসব সমস্যা সমাধান করাই উত্তম ।
পাঠক লেখাটি মনোযোগ দিয়ে আবার পড়েন । যেখানে ইবনে আব্বাস (রা) নিজেই বলছেন যে সঙ্গম করবে না সেখানে স্বামী জবরদস্তি করে স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করবে এবং এর জন্য সঙ্গম করার জন্য প্রহার করবে এরকম কিছুই তো তাফসীরে ইবনে কাসীরে বলাই হচ্ছে না । স্ত্রী যদি বিনা কারনে স্বামীর সাথে সঙ্গম করতে মানা করে এটি অবশ্যই অন্যায় হবে কারন স্বামী স্ত্রী যৌন সঙ্গম এটি পবিত্র একটি সম্পর্ক । স্ত্রী যদি তার স্বামীর সাথে ইচ্ছা করেই সঙ্গম করতে না চায় এর মানে তো হল সে তার স্বামীকে ভালবাসে না । এটি অবশ্যই অপরাধ । এই ক্ষেত্রে একজন আদর্শ স্বামী তার স্ত্রীকে বুঝাবে অথবা কথা বলাও বন্ধ করতে পারে অভিমান করতে পারে এবং এরপরেও যদি স্ত্রী না বুঝে অর্থাৎ সে তার স্বামীর সাথে বিনা কারনে সঙ্গম করবে না এই ক্ষেত্রে তার স্বামী তাকে হালকা প্রহার করলে করতে পারে কিন্তু জবরদস্তি করে স্বামী তার স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করবে এটি অবশ্যই ইসলামের আইন বিরোধী । তাছাড়া রাসুল (সা) যেহেতু বলেছেন কোন ভাল মানুষ তার স্ত্রীকে মারে না তাই একজন আদর্শ স্বামী তার স্ত্রীকে মারবে না বরং পরামর্শ করে সমাধান করার চেষ্টা করবে ।
আপনি যদি ড মুজিবুর রহমান অনুবাদকৃত, তাফসীরে ইবনে কাসীর ৪ খণ্ড, ৩৮৫ থেকে ৩৯১ পৃষ্ঠা পড়েন । স্পষ্ট বুঝে যাবেন যে অবাধ্য খারাপ স্ত্রীকে প্রহার করা যাবে কিন্তু সেটি হালকা প্রহার এবং জবরদস্তি করে স্বামী তার স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করতে পারবে না এটাই ইসলামের আদর্শ ।
⚫️প্রশ্নঃ ইসলাম বিদ্বেষীরা কুরআনের সূরা নিসা ৪:৩৪ আয়াত নিয়ে কেন অভিযোগ করে ?
🆗উত্তরঃ আপনার প্রথমে বুঝতে হবে নাস্তিক ধর্মের পরিবার নীতিমালা কেমন । নাস্তিক ধর্মে বিয়ে কোন গুরুত্বপূর্ণ কিছুই নয় বরং সম্মতি হলেই যা ইচ্ছা তাই করা যাবে । তারপরেও ধরুন বিয়ে হয়েছে দুই নাস্তিকের মধ্যে । এখন নারী নাস্তিক যদি অন্য পুরুষের সাথে পরকীয়া করে অথবা পতিতাবৃত্তি করে তাহলে নাস্তিক স্বামী তার নাস্তিক স্ত্রীকে বাধা দিবে না কারন উভয় ব্যাক্তি স্বাধীনতায় বিশ্বাসী । একটি নাস্তিক পরিবারে স্বামী বা স্ত্রী যেই হক যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে । ইচ্ছা করলে মদ, গাজা , ইয়াবা, পরকীয়া এমন কি নিজের বিছানায় অন্য নাস্তিক পুরুষ এনে নাস্তিক স্ত্রী মুক্তমনে ফ্রি সঙ্গমও করতে পারবে সম্মতিতে এতে তার নাস্তিক স্বামী বাধা দিবে না । এটাই নাস্তিক ধর্মের শিক্ষা । এই টাইপের যাদের আদর্শ তারা কুরআনের আয়াত নিয়ে অভিযোগ করবে এটি স্বাভাবিক । প্রমান হল নাস্তিক ধর্মের বিখ্যাত প্রচারক অভিজিৎ রায় তিনি তার বিখ্যাত কিতাব "সমকামিতা" ৮৭ নং পৃষ্ঠায় একটি নাস্তিক পরিবারের ঘটনা উল্লেখ করেছেন । হ্যাভলক এলিসের স্ত্রী ছিলেন সমকামি । এলিসের স্ত্রী এডিথ লীজ ছিলেন নারীবাদী কবি । তার অন্য চার বোনেরা ছিলেন আবার সবাই অবিবাহিত । তারা পারস্পারিকভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেও দুইজনেই সাড়াজীবন মুক্ত সম্পর্কে আস্থাশীল ছিলেন এবং একে অন্যের যৌন স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতেন না । যৌনতার ব্যাপারে তারা ছিলেন সমস্ত সামাজিক সংস্কারের উর্ধে।
👍উপরের সমস্ত বিশুদ্ধ তথ্য প্রমান থেকে আমরা যা শিখতে পেলামঃ
১/ ইসলাম পুরুষকে কঠিন দায়িত্ব বেশি দিয়েছে তাই এই দিক থেকে নারী থেকে পুরুষদের মর্যাদা বেশি ।
২/ উত্তম চরিত্রের বা ভাল চরিত্রের নারীরাই আল্লাহ্‌র আইন মানে । তারা তাদের নিজদের রক্ষা করে আল্লাহ্‌ আইন অনুযায়ী।
৩/ যদি কারো স্ত্রী অন্যায় করে তাহলে তাকে প্রথমে বুঝানো, এরপরে কাজ না হলে বিছানা আলাদা করা এরপরেও কাজ না হলে স্ত্রীকে অপরাধ থেকে ফিরানোর জন্য হালকা প্রহার করা ।
৪/ অন্যায় ভাবে স্ত্রীকে মারতে ইসলাম নিষেধ করে । বরং বড় অপরাধ ।
৫/ স্ত্রীদের গালে মারা নিষেধ , তাদেরকে গালি দেয়া নিষেধ । শুধু অপরাধ সংশোধনের জন্য হালকা প্রহার করতে বলে ইসলাম ।
৬/ যারা স্ত্রীদের অন্যায়ভাবে মারে অথবা নির্যাতন করে তারা ইসলামের দৃষ্টিতে ভাল মানুষ না তাদের শাস্তি হবে ।
৭/ স্বামী খারাপ হলে স্ত্রী নিজের সেফটির জন্য স্বামীর সাথে মারামারি করবে না বরং বিচার ডাকবে এবং সেই বিচার অবশ্যই নিরপেক্ষ হতে হবেই । হ্যাঁ যদি স্বামী স্ত্রীকে নির্যাতন অত্যাচার করে এই ক্ষেত্রে স্ত্রী অবশ্যই স্ত্রী নিজেকে সেফ করবে যেভাবেই হক ।
৮/ স্বামী অপরাধজনিত কোন কাজ করতে বললে স্ত্রী সেটা অবশ্যই পালন করবে না ।
৯/ যেহেতু নাস্তিক ধর্মে মদ , গাঞ্জা , বিড়ি সেবন, পরকীয়া এসব বৈধ তাই তারা ইসলামকে ঘৃণা করে বরং ইসলাম কেন এইসব নিষেধ করলো এর জন্য তারা ইসলামকে সব সময় গালাগালি করতেই থাকে - যা অমানবিক বটে ! অথচ নাস্তিক ধর্মে যা বৈধ করা হয়েছে তা কতটুকু অমানবিক সেটা কিন্তু সভ্য মানুষ আমরা যারা আছি তারা সবই বুঝতে পারি ।
১০/ নারী নির্যাতন ইসলামে নিষেধ।
১১/ একজন নারী যদি অপরাধ করে সেটা থেকে ফিরানোর জন্য তাকে হালকা প্রহার কেন অপরাধ হবে ?
১২/ নাস্তিক ধর্মে একটি পরিবার সুন্দর হতে হলে কি কি করতে হবে, কেন করতে হবে এবং কি কি করতে হবে না, কেন করতে হবে ? নাস্তিক ধর্মে পরিবার নীতি কে তৈরি করবে এবং কেন তৈরি করবে ? সকল নাস্তিক কেন তার তৈরি করা আইন মানতে বাধ্য হবে ? কোন নাস্তিক যদি কোন পরিবারের আইন নির্ধারণ করে দেয় সে কিসের ভিত্তিতে তা নির্ণয় করবে ? বিবর্তনে কি পরিবারের কোন আইন আছে ? তো নাস্তিকদের কেন এই আইন লাগবে কারন বিবর্তন আকিদা বিশ্বাস অনুযায়ী নাস্তিক মানুষ আর চতুষ্পদ প্রাণী তো একই । নাস্তিক ধর্ম এসব সমস্যা কিভাবে সমাধান দেয় এবং কেন ও কিভাবে ব্যাখ্যা করে ?

Related Posts

: