🎙বিষয়ঃ যীশু ঈশ্বর হতেই পারে না কারন তিনি মানুষ ছিলেন।
✍ লিখেছেনঃ এম ডি আলী।
বাইবেল যারা বিশ্বাস করেন তারা অনেকেই এটা দাবি করে থাকেন যে যীশু ঈশ্বর হতে পারে অথবা যীশুই ঈশ্বর। কিন্তু বাইবেল গবেষণা করলে আমরা দেখতে পাই যীশু আসলে ঈশ্বর হতেই পারেন না কারণ তিনি মানুষ ছিলেন। এর পক্ষে আমি অনেক প্রমান পেশ করতে পারি।
👉কেননা আমি ঈশ্বর, মানুষ নই; আমি তোমাদের মধ্যবর্তী সেই পবিত্রজন।” [হোশেয়, ১১/৯]
👉“ঈশ্বর তো মানুষ নন যে, মিথ্যা বলবেন; তিনি মানুষের সন্তান ও নন যে, অনুশোচনা করিবেন।” [গণনাপুস্তক, ২৩/১৯]
👉 “আর ইহাই অনন্ত জীবন যে, তাহারা তোমাকে, একমাত্র সত্যময় ঈশ্বরকে, এবং তুমি যাঁহাকে পাঠাইয়াছ, তাঁহাকে, যীশু খ্রীষ্টকে, জানিতে পায়।” (যোহন ১৭:৩)
👉 যা ঘটেছিল তা দেখার ও শোনার পর যোহনের কোনো সন্দেহই ছিল না যে, যিশু ঈশ্বরের দ্বারা প্রেরিত হয়েছিলেন। (যোহন ১:৩২-৩৪)
👉 যিশু ছিলেন কোমল উষ্ণতা ও গভীর অনুভূতিসম্পন্ন একজন ব্যক্তি। ফলে অন্যেরা দেখেছিল যে, তাঁর কাছে সহজেই যাওয়া যায় ও তিনি সদয়। এমনকী শিশুরাও তাঁর কাছে স্বচ্ছন্দবোধ করত। (মার্ক ১০:১৩-১৬)
উপরোক্ত উদ্ধৃতিগুলো থেকে আমরা বুঝতে পারলাম যে ঈশ্বর মানুষ নন। তাই বলা যায়, বাইবেলের ঈশ্বর স্পষ্ট বলে দিয়েছেন যে তিনি নিজে মানুষ নন কিন্তু যীশু? আচ্ছা, যীশু বাইবেলে নিজের সম্পর্কে কি বলেছেন একটু দেখা যাক:
👉“আপনারা আমাকে হত্যা করতে চাইছেন, একজন মানুষ যে আপনাদেরকে সত্য বলেছে, যা আমি ঈশ্বরের কাছ থেকে জেনেছি; কিন্তু ইব্রাহিম এই রকম করেন নি।” [যোহন, ৮/৪০]
[বিদ্র: আমি সাধারণত বাইবেলের উদ্ধৃতিগুলো নিজে অনুবাদ না করে বাংলা বাইবেলের অনুবাদ অনুসরণ করি, কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে যে ‘যোহন ৮/৪০’ তে ‘a man’ যথা ‘একজন মানুষ’ অংশটুকু অনুবাদে তারা বাদ দিয়ে দিয়েছে তাই এই উদ্ধৃতিটি নিজে অনুবাদ করলাম।]
👉“হে ইস্রায়েলের লোকেরা এই কথা শুনুন। নাসরতের যীশু অলৌকিক, পরাক্রম ও চিহ্ন কাজের মাধ্যমে আপনাদের কাছে ঈশ্বর থেকে অনুমোদিত মানুষ, তাঁর মাধ্যমে ঈশ্বর আপনাদের মধ্য এই সমস্ত কাজ করেছেন, যেমন আপনারা সবাই জানেন।” [প্রেরিত, ২/২২]
উপরোক্ত উদ্ধৃতিগুলো থেকে আমরা বুঝতে পারি যে যীশু একজন মানুষ ছিলেন যেখানে ঈশ্বর মানুষ নন। আরও লক্ষ্যণীয় যে, মানুষ বুঝাতে গ্রীক ভাষায় ব্যবহৃত শব্দ হলো ‘এনথ্রোপোস’, এবং এ থেকেই এনথ্রোপোলজি শব্দটির উৎপত্তি যা মূলত মানব সংক্রান্ত পড়ালেখা। গ্রীক ভাষায় এনথ্রোপোস শব্দটি ব্যবহার করা হয় ঈশ্বর ও মানুষের মাঝে পার্থক্য করতে।
এখানে যীশু নিজেকে বুঝাতে যে শব্দ ব্যবহার করেছেন তাও এনথ্রোপস এবং এটি তাকে স্পষ্টতই ঈশ্বর থেকে আলাদা করে চিহ্নিত করে। অল্প কথায় বলতে গেলে, যখন কাউকে এনথ্রোপস বলা হয় তার অর্থ দাঁড়ায় সে ঈশ্বর নয়, ঈশ্বর থেকে আলাদা অন্যদের মতোই সাধারণ মানুষ। সুতরাং, যীশু ঈশ্বর নন।
আমার কিছু প্রশ্নঃ
১/ যীশু যদি ঈশ্বর হয়ে দুনিয়াতে আসেন তাহলে আসমানে কোন ঈশ্বর অবস্থান করবেন?
২/ যীশু কি এমন কিছু বলেছে " আমি একমাত্র ঈশ্বর আমি মানুষ নই"?
৩/ ঈশ্বর কিভাবে মানুষের মত হতে পারে এটা কি ঈশ্বরের মর্যাদার বিরুদ্ধে নয়?
৪/ আমি বাইবেল থেকে দেখিয়েছি ঈশ্বর মানুষ নন তাহলে খ্রিস্টান সাহেবরা যে দাবি করে বাইবেলের অন্য উদ্ধৃতি দিয়ে যে ঈশ্বর মানুষ হতে পারেন তবে এটা কি পরস্পর বৈপরীত্য নয়? প্রথমটা নাকি সেকেন্ডটা?
৫/ সাধারণত আমরা জানি ১+১= ২ হবে কখনোই এক হবে না তাহলে খ্রিস্টান সাহেবরা যে দাবি করেন স্রষ্টা সৃষ্টি একই এটাও গাণিতিকভাবে ভুল? কারন স্রষ্টার সৃষ্টি সম্পূর্ণ আলাদা?
৬/ যীশু যদি ঈশ্বর হয় তাহলে অন্যান্য প্রেরিত নবীরাও খ্রিস্টানদের দৃষ্টিতে ঈশ্বর হবে না কেন? কারন ঈশ্বর তো অন্যান্য নবী পাঠিয়েছেন দুনিয়াতে তারাও কি ঈশ্বর?
৭/ ঈশ্বরকি যীশু কে সৃষ্টি করেছেন? যদি উত্তর হয় য়েস হয় তাহলে ঈশ্বর তো তার নিজেকে সৃষ্টি করেছেন, যেহেতু যীশুও ঈশ্বর আর আগে থেকেই উপস্থিত থাকলে তাকে আবার সৃষ্টি কিভাবে করতে হবে নতুন করে? উত্তর যদি no হয় তাহলে ঈশ্বর আর যীশু সম্পূর্ণ আলাদা যুক্তি তাই বলে।
৮/ ঈশ্বর যদি ক্ষমতাবান হয় তাহলে যীশুর মৃত্যু হয় কিভাবে?
৯/ ঈশ্বরের কি যৌন ক্ষমতা কম ছিল যে, মাত্র তিনি যীশুর মতো একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিলেন? ঈশ্বর আর সন্তান জন্ম দিতে পারেন না কেন?
: