স্রষ্টার অস্তিত্ব নেই-এই অন্ধবিশ্বাস কেন?

Post a Comment

 


📛বিষয়ঃস্রষ্টার অস্তিত্ব নেই-এই অন্ধবিশ্বাস কেন?
✍লিখেছেনঃএমডি আলী।
নাস্তিকরা অনেক সময় নিজেদেরকে নিজেদের দাবীর পক্ষে প্রমান দেওয়ার থেকে রক্ষা করার জন্য একটি অতি চালাকির কাণ্ড করে।যে আগে দাবী করবে প্রমান সেই আগে দিবে।দাবীর দায়ভার তার,আমার না-প্রশ্ন হচ্ছে এই দাবী কে আগে করেছে? নাস্তিকরা। তাহলে প্রথমে আগে দাবী করলেই যদি আগে প্রমান দিতে হয় তাহলে এই দাবী যে করেছে আগে সেই প্রমান দিক যে স্রষ্টার অস্তিত্ব নেই?এটাই তো বেশি যৌক্তিক।স্রষ্টার অস্তিত্ব আছে এর স্বপক্ষে ব্যাপক প্রমান যুক্তি ছিল,আছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত থাকবেই।কিন্তু সেসব প্রমান একটিও অন্ধবিশ্বাসী নাস্তিকরা স্বীকার করে না কারন তালগাছ আমার যে!
সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের পক্ষে নাস্তিকরা যেমন যৌক্তিক সন্দেহের উর্ধে প্রমান চায় একই প্রমান স্রস্টার অস্তিত্ব নেই- আমিও ওদের কাছে এ দাবীর পক্ষে একই প্রমান চাই কারন নাস্তিকরা চরম বিশ্বাস করে “স্রষ্টার অস্তিত্ব নেই” এই দাবী যৌক্তিক সন্দেহের উর্ধে। তাই এটার পক্ষে প্রমান থাকা দরকার কি না?
স্রষ্টার অস্তিত্ব নেই-এটি কি একটি দাবী?যদি উত্তর হয় ‘হ্যাঁ’ তাহলে নাস্তিকদের উচিত এর স্বপক্ষে এমন প্রমান পেশ করা যেই প্রমান হবে যৌক্তিক সংশয়ের উর্ধে।যদি উত্তর হয় ‘না’ তাহলে যেটা স্বয়ং দাবী করারই যোগ্যতা রাখে না সেটার পক্ষে কথা বলা কতটুকু যৌক্তিক নাস্তিকদের?
স্রষ্টার অস্তিত্ব আছে- এই দাবীর পক্ষে অন্ধবিশ্বাসী নাস্তিকরা যেই প্রমান চায় আমিও স্রষ্টার অস্তিত্ব নেই- এই দাবীর পক্ষে একই প্রমান চাই?অর্থাৎ নাস্তিকরা আমাদের কাছে যেহেতু এমন প্রমান চেয়েছে যার থেকে প্রমান হবে স্রষ্টা আছেন এর মানে নাস্তিকদের কাছে নিশ্চিত এমন প্রমান আছে যে উনার অস্তিত্ব নেই?সেই প্রমানটিই আমি চাইছি?আজ পর্যন্ত দিতে পেরেছে ওরা? আমাদেরকে সন্তুষ্ট করতে পেরেছে সেই প্রমান দিয়ে?
রিচার্ড ডকিন্স, স্যাম হ্যারিস, লরেন্স ক্রাউস এবং লুলামরা নাস্তিক স্টিফেন হকিংদের মতো নাস্তিক বিজ্ঞানীরা কিসের ভিত্তিতে দাবী করে স্রষ্টার অস্তিত্ব নেই?সেই ভিত্তি কি সঠিক? সেই প্রমান কি যৌক্তিক সন্দেহের উর্ধে? কি সেসব প্রমান? প্রমানের সিস্টেম কি? পদ্ধতি কি? সূত্র কি?একই সিস্টেমের প্রমান দিয়ে যদি স্রষ্টার অস্তিত্ব সত্য হয় তাহলে কি নাস্তিকরা সেটা সত্য বলে বিশ্বাস করবে? নাকি নাস্তিকরা আসলে নাস্তিক বিজ্ঞানীদেরকে অন্ধবিশ্বাস করে?এটাই কি মুক্তমনা? এটাই কি সততা নাস্তিকদের?
সব বিজ্ঞানীরাই নাস্তিক হয় না।এমন অনেক বিজ্ঞানী আছে যারা আস্তিক।যারা স্বীকার করেন মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা আছেন। এখানে নাস্তিকরা একটি প্রশ্ন করতে পারে যে খৃস্টান বিজ্ঞানী আছে যারা মানে যিশু সৃষ্টিকর্তা তাহলে মুসলিমরা কি সেই যিশুকে স্রষ্টা বলে মানবে?এসব গাধাদের প্রশ্নের জবাবে আমি বলতে চাই যে মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা আছেন এই দাবীর পক্ষে সকল আস্তিকরাই এক।সেই সৃষ্টিকর্তাকে কে কি নামে ডাকবে সেটা ভিন্ন বিষয় এবং এই বিষয় সৃষ্টিকর্তা নেই সেটা প্রমান করে না বোঝা গেছে?স্রষ্টা আছেন এটা সকল আস্তিকদের দাবী।
সব বিজ্ঞানীরাই কি নাস্তিক?না। তাহলে বিজ্ঞানের দোহাই দিয়ে আমাদেরকে নাস্তিক্যধর্ম গ্রহন করতে বলা কতটুকু যৌক্তিক?নাস্তিকরা অনেক সময় বলে থাকে হিন্দু,খৃস্টান,শিক,ইসলাম ইত্যাদি ধর্ম মানুষকে বিবেধ করে, করে বৈষম্য তাই সব ধর্ম ত্যাগ করা উচিত।এই একই যুক্তিতে সব বিজ্ঞানীরা কি এক? উত্তর হচ্ছে না। তাহলে বিজ্ঞানীরা যেখানে সবাই এক না সেখানে বিজ্ঞান আমাদেরকে কিভাবে এক করবে? তাহলে কি বিজ্ঞানকে বাদ দিতে হবে নাস্তিকদের সেই যুক্তিতে?বিজ্ঞানকে কন্ট্রোল করে কিন্তু বিজ্ঞানীরাই।বিজ্ঞানী মানুষদের ছাড়া বিজ্ঞান কিভাবে চলবে?বিজ্ঞানকে অন্ধবিশ্বাস করা যায়?নাস্তিকরা করে কেন?
মহাবিশ্ব কেউ বানায় নাই এই বিশ্বাস করে নাস্তিক আবার প্রশ্ন করে স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করেছে? হাস্যকর ওদের চেতনা যেটা 404 error। মহাবিশ্ব কেউ বানায় নাই এটা মানতে পারলে স্রষ্টাকে কেউ বানায় নাই এটা স্বীকার করতে এতো কষ্ট লাগে কেন?
স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করেছে? এই প্রশ্নটি অনেকটা এরকম যেমন রাঁধুনিকে কে রান্না করেছে? ড্রাইভার কে ড্রাইভ করছে?লেখককে কে লিখেছে? টাইপার কে টাইপ করছে? বুদ্ধিমান হলে নিজেরাই আশা করি বুঝতে পেরেছেন।আমি আর ব্যাখ্যা করলাম না।
👉💨অস্তিত্ব প্রমানের কথামালাঃ
আমরা কি সব কিছুই চোখে দেখে বিশ্বাস করি?না।তাহলে কিসের ভিত্তিতে আসলে বিশ্বাস করি? এই “ভিত্তি” একেক রকম হতে পারে।একেক জনের কাছে একেক রকম। কেউ নাস্তিক বিজ্ঞানী নামক মানুষদেরদের কথা পেলেই মেনে নেয় আবার কেউ সত্যবাদীদের কথা পেলেই মেনে নেয়। আবার কেউ নিজের বন্ধুরা বলেছে তাই মেনে নেয়।ভিন্ন ভিন্ন রকম ভিত্তি তাই না?হুম।এখন নাস্তিকরা আসলে কেমন প্রমান চায় স্রস্টার অস্তিত্বের পক্ষে সেটা এক ব্যাপক প্রশ্নের ব্যাপার।
নাস্তিকদেরকে আমি যখন প্রশ্ন করি আপনাদের কাছে প্রমান কাকে বলে?প্রমানের ভিত্তি কি ? প্রমানের ভিত্তি যে চুরান্ত সত্য হবে সেটা কে নির্ণয় করবে? সেই মানুষের কথা কি সবাই বিশ্বাস করবে? কেন করবে? আপনার কাছে যেটা প্রমান আমার কাছে সেটা প্রমান নাও হতে পারে এই ক্ষেত্রে নাস্তিক্যধর্ম কি বলে?সবার বিবেক তো এক নয়? - এসব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের আজ পর্যন্ত কোন যৌক্তিক উত্তর নাস্তিকরা আমাকে দিতে পারেনি।আমি এখন পর্যন্ত অপেক্ষায় আছি।
আমি আজকে এমন কিছু দিক আলোকপাত করতে চাচ্ছি যা আমরা সরাসরি দেখি না কিন্তু তারপরেও সেসব কাজের এফেক্ট অথবা ফলাফল বা যোগসূত্র দেখে সেসবের অস্তিত্ব মেনে নেই।এফেক্ট দিয়েই সেসব জিনিসের অস্তিত্ব প্রমানিত হয়। কিন্তু আমরা সেই অস্তিত্বকে নিয়ে মাতামাতি করি না কারণ এফেক্টই প্রমান করে দেয় সেই জিনিসের অস্তিত্ব আছে।
========
“দেশপ্রেম”
========
সম্পূর্ণ অদৃশ্য একটি জিনিস।বলতে পারেন দেশ তো দৃশ্যমান। হ্যাঁ ,কিন্তু প্রেম তো অদৃশ্য তাই না।দেশপ্রেম বিষয়টি সম্পূর্ণ অদৃশ্য একটি বিষয় বা জিনিস বা বস্তু যাই বলি না কেন এটার অস্তিত্ব আছে।খেয়াল করুন আপনি দেশপ্রেমকে সরাসরি প্রমান করতে পারবেন না কিছু নিদর্শন দেখে,কিছু চিহ্ন দেখে দেশপ্রেমের অস্তিত্ব বুঝতে পারবেন।কি সেই সব নিদর্শন বা চিহ্ন? দেশের ক্ষতি করবে না,দেশের আইন মানবেন,দেশের সংবিধান মানবেন,দেশের উন্নয়নের কথা ভাববে,দেশের কষ্টে নিজে কষ্ট পাবেন ইত্যাদির সমষ্টি হচ্ছে দেশপ্রেম।তাই তো?হ্যাঁ।
এখন কেউ যদি বলে দেশপ্রেমের অস্তিত্ব প্রমান করার জন্য যেই নিদর্শন অথবা এফেক্ট দেয়া হয়েছে সেসব আমি প্রমান হিসেবে মানি না তাহলে কি হবে? বুঝতে হবে সেই লোক মানসিক রোগী অথবা দেশদ্রোহী। এখানে একটি কথা বলে রাখি দেশের দেশদ্রোহীরা কিন্তু দেশপ্রেমের অস্তিত্বে বিশ্বাসী না যদি হতো তাহলে আর দেশদ্রোহী হতো না।পয়েন্টটি মনে রাইখেন।
==============
"চিন্তা,চেতনা,অনুভুতি"
==============
এসবের অস্তিত্ব আমরা কিভাবে বুঝি?দেশপ্রেম নিয়ে আমার লেখাটি সঠিক ভাবে বুঝতে পারা আপনার চিন্তা করার প্রমান।চিন্তা করতে পেরেছেন কারণ আপনার মধ্যে চেতনা রয়েছে এবং চিন্তা ও চেতনা সঠিক ভাবে করতে পেরেছেন কারণ আপনার মধ্যে অনুভুতি আছে।বুঝতে পেরেছেন আশাকরি কারন এগুলো সহজ বিষয়।এখন কেউ যদি বলে আমাকে চিন্তা,চেতনার,অনুভুতির সরাসরি প্রমান দেও নাহলে আমি এসব মানি না তাহলে আমরা কি বুঝবো?লোকটি মানসিক ভারসাম্যহীন।ডাক্তারের সঠিক চিকিৎসা পেলে সে সুস্থ হবে।
যেসব নাস্তিকরা আত্মায় বিশ্বাস করে না তারাই আবার বিবেক,বুদ্ধি,চিন্তা,চেতনা,অনুভব নামক অদৃশ্যে বিশ্বাস করে যা হাস্যকর লাগে আমার কাছে। যেই যুক্তিতে আত্মা অস্বীকার করে অন্ধবিশ্বাসী নাস্তিকরা সেই একই যুক্তিতে আবার বিবেক,বুদ্ধি,চিন্তা,চেতনা,অনুভবে কিভাবে বিশ্বাস করে? আমি আশ্চর্য হই এসব নাস্তিক নামক মানসিক রোগীদের দেখে।এদের সুচিকিৎসা কে করবে?কে এদের পাশে দাঁড়াবে এবং মানবতার হাত বাড়িয়ে দিবে?
তাহলে বুঝা যাচ্ছে সত্য বিষয়কে বুঝতে পারা চিন্তার অস্তিত্ব প্রমান করে।চিন্তা করা প্রমান করে চেতনার অস্তিত্ব আছে আবার চেতনার অস্তিত্ব আছে প্রমান করে অনুভুব করতে পারা।এখন কারো অনুভুতি করার শক্তি নষ্ট হয়ে গেলে এরমানে এই না যে চিন্তা-চেতনা বা অনুভুতির অস্তিত্ব নেই।বুদ্ধিমান সবাই একমত আমার সাথে।সামনে আগাই কথা।
=======
"ভালবাসা"
=======
এটার অস্তিত্ব কিভাবে প্রমান করা যায়?ধরুন আপনি আপনার মাকে ভালবাসেন।সেটা সরাসরি প্রমান করা কিন্তু সম্ভব না।কিছু চিহ্ন দেখে বুঝা সম্ভব যে আপনি আপনার মাকে ভালবাসেন।যেমন আপনি আপনার মায়ের সব কথা শুনেন,উনার সেবা যত্ন করেন,উনার প্রশংসা করেন,উনাকে কষ্ট দেন না ইত্যাদি মায়ের প্রতি ভালবাসার লক্ষণ।কিন্তু এসব চিহ্ন ছাড়া সরাসরি “মায়ের প্রতি ভালবাসাকে”প্রমান করা সম্ভব না। এসব চিহ্ন কেউ অস্বীকার করলে সে আসলে আদর্শ সন্তান হওয়ার যোগ্যতা রাখে না।
নাস্তিক্যধর্মের সূত্রে নিজ মাকে ভালবাসা আর নিজ স্ত্রীকে ভালবাসা আমাদের চিন্তা কিভাবে পার্থক্য করে? কোনো কি কেমিক্যাল আছে পার্থক্য করার? এই বোধ আমাদেরকে কে দিয়েছে? কেন এই বোধ থাকা দরকার? পুরুষ পুরুষ সমকামীতা যদি নাস্তিকদের কাছে বৈধ হয় তাহলে নাস্তিক সন্তান তার নাস্তিক বাবার সাথে সমকামীতা কেন করতে পারবে না? কোনো নাস্তিক যদি এসবের পার্থক্য না করে তাহলে সে কিসের ভিত্তিতে অনৈতিক বলে গণ্য হবে? সেই সূত্র গুলোর চুরান্ত রুপ কেমন?
ধরুন একজন নাস্তিক ছেলে একটি নাস্তিক মেয়েকে প্রপোজ করলো। আমি তোমাকে ভালবাসি। সেই নাস্তিক মেয়েটি বললো আমি এসব ভালবাসায়-টালোবাসায় বিশ্বাস করি না কারন এসবের অস্তিত্ব বৈজ্ঞানিক ল্যাবে গবেষণা করে প্রমান করা যায় না।মুমিনরা আমাকে এতো যুক্তি-প্রমান দিয়ে স্রষ্টার অস্তিত্বের প্রমান দিয়েছে সেটাই স্বীকার করতে চাই না আবার তোমার ভালবাসার যুক্তি-প্রমান মানতে যাবো কোন দুঃখে? ভালবাসার অস্তিত্বে বিশ্বাস স্রেফ অন্ধ বিশ্বাস।আমি মুক্তমনা নারীবাদী এসবে বিশ্বাস করি না।-নাস্তিক ছেলেটি ঠিক কি কি প্রমান দিয়ে মেয়েটিকে বুঝাবে?
কি, হাস্যকর না নাস্তিকদের অবস্থা? হাহাহা ।
=============
“নৈতিকতা,মানবতা”
=============
এসব কিন্তু অদৃশ্য।পাগল,মানসিক রোগী বা সন্ত্রাসী ছাড়া কখনো কেউ কিন্তু এসব বলবে না যে আমরা এসবের অস্তিত্বে বিশ্বাস করি না।এসবের অস্তিত্ব সরাসরি প্রমান করা যায় না। কিছু অবাক করা প্রশ্ন করি। কেউ কি বলতে পারবেন নৈতিকতা দেখতে কেমন?সাদা নাকি কালো?নৈতিকতা-মানবতা পুরুষ নাকি মহিলা নাকি অন্য লিঙ্গের?নৈতিকতা কি আপেল নাকি কাঁঠাল গাছ?মানবতার স্বাদ কি মুরগীর গোস্তের মতো টেস্ট নাকি ঝাল?পয়েন্ট বুঝতে পেরেছেন আশাকরি।
কিন্তু কিছু নিদর্শন বা চিহ্নের সাহায্যে নৈতিকতা-মানবতার অস্তিত্ব আছে এটা বুঝা যায়।এসবের অস্তিত্বের প্রমান কি?মানুষের সাথে ভাল আচরণ করা,সব সময় সত্য কথা বলা,গরীবদের সাহায্য করা,রোগীর সেবা করা ইত্যাদি নৈতিকতা এবং মানবতার অস্তিত্বের প্রমান। এখন এসব নিদর্শন ছাড়া বা চিহ্ন ছাড়া কেউ কি সরাসরি নৈতিকতা ও মানবতার অস্তিত্ব প্রমান করতে পারবেন?নাস্তিকরা পারবে?এখন কেউ যদি এসব চিহ্ন না মানে তাহলে বুঝতে হবে সে মানুষ হওয়ার যোগ্যতাই রাখে না বরং তার পূর্বপুরুষ বান্দর ছিল সেটা নিজ নৈতিক দায়িত্বে বুঝে নিতে হবে।
===========
“মহাবিশ্বের স্রস্টা”
===========
উপরের যৌক্তিক কথামালা আপনাদের বোধগম্য হলে স্রস্টার অস্তিত্বকে বুঝা এখন একেবারেই সহজ হবে।স্রস্টার অস্তিত্ব কিভাবে প্রমান হবে? এটা প্রমান করার কিছু চিহ্ন আছে,নিদর্শন আছে আর তা হচ্ছে সৃষ্টি।সৃষ্টিকে দেখেই স্রষ্টার অস্তিত্বের প্রমান পাওয়া যায়।আমাদের মহাবিশ্ব যেই নিয়মে চলছে সেই নিয়ম এক সেকেন্ডের জন্য হেরফের হলে পুরো মহাবিশ্ব ধ্বংস হয়ে যাবে।এখন,এই মুহূর্তে মধ্যকর্ষণ শক্তি কেন নিয়ন্ত্রণে আছে?কেন এই শক্তির বিস্ফোরণ হচ্ছে না যাতে নেগেটিভ আরেকটি মধ্যকর্ষণ শক্তির আবিস্কার হয় এবং এতে মানুষ পাখির মত এমনে এমনেই কোন কিছুর সাহায্য ছাড়াই আকাশে উড়তে পারবে?একে কে নিয়ন্ত্রণ করছেন?এটার সহজ উত্তর হচ্ছে মধ্যকর্ষণ শক্তিকে যে সৃষ্টি করেছেন উনিই এই শক্তিকে এভাবে বানিয়েছেন এবং উনিই পুরো মহাবিশ্ব নিয়ন্ত্রণ করছেন। স্রস্টা আছেন বলেই তো মহাবিশ্ব নামক এফেক্ট হয়েছে,হচ্ছে এই সহজ বিষয় বুঝতে এতো কষ্ট লাগে কেন নাস্তিক অন্ধবিশ্বাসীদের?ওরা কি যুক্তি বুঝে না?ওদের কি বিবেক নেই?ওদের কি সত্য স্বীকার করতে কষ্ট লাগে? ওরা কি বুদ্ধির অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না? নাকি আরজ আলী ব্রেনে এসব কথার বদ হজম হয়?কোনটা? ওরা অন্ধবিশ্বাস থেকে কবে মুক্তি পাবে?নাকি দেশদ্রোহীরা দেশের অস্তিত্বে বিশ্বাসী নয় ঠিক যেমন স্রস্টাদ্রোহীরা স্রস্টার অস্তিত্বে বিশ্বাসী নয়?
এখন নাস্তিকরা যদি মানসিক রোগীদের মতো বলে মহাবিশ্ব এমনে এমনেই সৃষ্টি হয়েছে,মধ্যকর্ষণ শক্তি এমনে এমনেই সৃষ্টি হয়েছে,এমনেই নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে।এটাই মুক্তচিন্তা,এটাই বাকস্বাধীনতা।তাহলে একই ধরনের কথা অন্য ভাবে কোনো মানসিক রোগী যদি বলে যেমনঃ দেশদ্রোহীতাই প্রকৃত দেশপ্রেম,মিথ্যা বলাই প্রকৃত সততা,নিজ মাকে বিনা কারনে ঘৃণা করাটাই আসলে মায়ের প্রতি আসল ভালবাসা,মিথ্যাচার করাটাই আসল বিবেকবোধ,মানুষকে বিপদে ফেলাটাই আসল চেতনার অনুভূতি,দুর্নীতি করাটাই আসল মানবতা,চুরি করে নিজেকে ধনী করাটাই আসল পরিশ্রম,ঘুষ খাওয়াই মুক্তমনা চেতনা ইত্যাদি তাহলে কি নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে বৈধ হবে? একই যুক্তির প্রয়োগ হচ্ছে না উভয় স্থানে? হ্যাঁ ।
বুঝতে হবে আসল নিদর্শন বা চিহ্ন বাদ দিয়ে যখনই আপনি কিছু ব্যাখ্যা করতে যাবেন ভুল করবেন।এই ভুলটাই মানুষের মতো দেখতে কিছু নাস্তিক করে,ইচ্ছা করেই ভুলটি করে।স্রস্টার অস্তিত্বের প্রমানে আমরা হাজার হাজার যুক্তি প্রমান চিহ্ন আমরা দিয়েছি,দিচ্ছি কিন্তু এরপরেও নাস্তিকদের তালগাছ আমার টাইপ একটি মনোভাব।এই অন্ধবিশ্বাস থেকে নাস্তিকরা মুক্ত হতে পারেই না।তখন আর আমার বুঝতে বাকি নেই যে,এরা যে বলে আমাদের ব্রেন কেমিক্যাল রিয়েকশনের ফলাফল সেটা আসলেই এদের ক্ষেত্রে সতি কারণ নাহলে এরা নিজেদের স্রস্টাকে অনুভব করতে পারবে না কেন?স্রষ্টাকে স্বীকার করতে পারবে না কেন? সত্য জানার যোগ্যতা এদের নষ্ট হয়ে গেছে কেন? বিবেককে এরা ইসলাম আর মুসলিমদের গালাগালি করার ক্ষেত্রে প্রয়োগ না করে যদি ইসলামকে সঠিক ভাবে জানার চেষ্টা করতো তাহলে কি এমন মাতলামি এরা করতো? এরা মিথ্যুক হয়ে এতো আনন্দ পায় কেন? অমানবিকতাই কি নাস্তিক্যধর্মের আদর্শ?
💚কুরআন চিন্তাশীল মানুষদের কি বলে?
কুরআন আমাদেরকে কিছু চমৎকার যুক্তি পেশ করেছে যা আমাদেরকে স্রস্টার অস্তিত্বের দিকে দারুণ প্রভাবিত করে।যারা অসুস্থ এবং যারা সত্য অনুভব করতে পারে না তারা এই যুক্তি অনুধাবন করতে পারবে না।কি সেই যুক্তি?
আল্লাহ বলেনঃতারা কি আপনা-আপনিই সৃজিত হয়ে গেছে, না তারা নিজেরাই স্রষ্টা? না তারা নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছে? বরং তারা বিশ্বাস করে না। তাদের কাছে কি আপনার পালনকর্তার ভান্ডার রয়েছে, না তারাই সবকিছুর তত্ত্বাবধায়ক? -সুরা তুর ৫২:৩৫,৩৬,৩৭।
আমাদের এই মহাবিশ্ব এমনে এমনে সৃষ্টি হতেই পারে না।এক্সিডেন্ট অথবা বিস্ফোরণ থেকে কোন কিছু সৃষ্টি হয় নাকি ধ্বংস হয়? একজন বিবেকবান যৌক্তিক মানুষও এটা বিশ্বাস করবে যে এক্সিডেন্ট বা বিস্ফোরণ থেকে কোন কিছুই তৈরি হতে পারে না এবং এটা বাস্তব ভিত্তিক বিশ্বাস আমাদের।যেমনঃধরুন একটি বিমান আর একটি গাড়ী এক্সিডেন্ট হলো এখন এই এক্সিডেন্ট বা দুর্ঘটনায় কি একটি ১০০ তালার 5 star হোটেল তৈরি হয়ে যাবে? যদি হাজার হাজার বছর সময় দেয়া হয় তাহলে কি এমনে এমনেই হয়ে যাবে? তাহলে মুল যেই প্রশ্ন সেটা হচ্ছে কি এমন শক্তি কাজ করেছে যা দুর্ঘটনার বিস্ফোরণে এত সুন্দর মহাবিশ্বকে অস্তিত্বে নিয়ে এসেছে?
আল্লাহ বলেনঃতোমরা যে বীজ বপন কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি? তোমরা তাকে উৎপন্ন কর, না আমি উৎপন্নকারী ? - সুরা ওয়াকিয়া ৫৬:৬৩,৬৪।

একটি খেজুরের বীজ কখনো লাগিয়েছেন?দেখবেন কত সুন্দর করে ধিরে ধিরে সেখান থেকে আরেকটি খেজুরের গাছ সৃষ্টি হয় এবং সেখান থেকে খেজুর।চিন্তা করার বিষয় হচ্ছে খেজুরের বীজে কিন্তু আরেকটি খেজুর থাকে না কিন্তু সেটা মাটিতে পুতে দিলে কয়কেদিন বাদ সেখান থেকে আরেকটি খেজুরের গাছ সৃষ্টি হয়। এমনে এমনেই এই সুন্দর সিস্টেম তৈরি হয়ে গেছে? এমনে এমনেই সিস্টেম তৈরি হওয়ার দরকার হলো কেন? একমাত্র আল্লাহই এটা সৃষ্টি করেছেন।সন্দেহ নাই।
নাস্তিকরা এটার কি ব্যাখ্যা দিবে?যেই ব্যাখ্যাই দেক না কেন সেটা কি গ্রহনযোগ্য?নাস্তিকরা ধরেই নিয়েছে এটা কেউ বানায় নাই অথচ এটা নাস্তিকদের অন্ধবিশ্বাস। নাস্তিকরা একটি ভ্রান্ত কথা বলে এই মহাবিশ্ব সৃষ্টিতে স্রস্টার প্রয়োজন নেই।প্রশ্ন হচ্ছে “প্রয়োজনের অস্তিত্ব” কাকে বলে?এই সংজ্ঞা কে দিয়েছে?নাস্তিকরা কোন মানুষের সংজ্ঞা নিয়েছে?সেই সংজ্ঞা কি বিশ্বাসযোগ্য?যদি মহাবিশ্ব সৃষ্টিতে স্রস্টার প্রয়োজন না হয় তাহলে স্বয়ং “প্রয়োজনের” এটা কেন প্রয়োজন হলো যে মহাবিশ্বকে শুন্য থেকেই প্রয়োজনে আসতে হয়েছে?
নাস্তিকদের অযৌক্তিক ব্যাখ্যা আসলে অন্ধবিশ্বাসের ফসল।মহাবিশ্ব স্রস্টা বানায় নাই এই অন্ধবিশ্বাস থেকে নাস্তিকরা কখনই মুক্ত হতে পারে নাই।যেদিন মুক্ত হতে পারবে সেদিন প্রকৃত মুক্তমনা হতে পারবে। না হলে আজীবন মুলার মত মনে ঝুলবে আর এই অন্ধ বিশ্বাস পুষবে আর ডারুউইন দাদার কথা গাধার মত বিশ্বাস করবে। সভ্য এবং প্রগতিশীল মানুষদের এখনই সময় সচেতন হবার।
আল্লাহ বলেনঃযমিনে বিভিন্ন শস্য ক্ষেত্র রয়েছে-একটি অপরটির সাথে সংলগ্ন এবং আঙ্গুরের বাগান আছে আর শস্য ও খেজুর রয়েছে-একটির মূল অপরটির সাথে মিলিত এবং কতক মিলিত নয়। এগুলো কে একই পানি দ্বারা সেচ করা হয়। আর আমি স্বাদে একটিকে অপরটির চাইতে উৎকৃষ্টতর করে দেই। এগুলোর মধ্যে নিদর্শণ রয়েছে তাদের জন্য যারা চিন্তা ভাবনা করে।– সুরা রাদ ১৩:৪।
এই আয়াত চমৎকার ভাবে আমাদেরকে চিন্তা করতে বলছে,ভাবতে বলছে,আমাদের চেতনাকে প্রয়োগ করতে বলছে। আপনি একটি বাগান তৈরি করলেন।সেখানে বিভিন্ন ফল চাষ করলেন।সেখানে আম গাছ,কাঁঠাল গাছ,তরমুজ গাছ,খেজুর গাছ আছে।এসব ফলের মধ্যে যেই স্বাদ সেই স্বাদ কি মাটিতে ছিল আগে? সেই স্বাদ কথা থেকে এলো?সেই স্বাদ কে দিলো?কি দরকার ছিল এসব ফলের মধ্যে স্বাদ দেয়ার?এতো বড় মহাবিশ্ব দুর্ঘটনায় সৃষ্টি হতে পারলে আর সামান্য খেজুরের বীজ থেকে দুর্ঘটনায় তরমুজ ফল হতে পারে না কেন?কখনো কি এসব নিয়ে আমরা মুক্তচিন্তা করেছি?ওরা করেছে মুক্তচিন্তা?
আল্লাহ বলেছেনঃপৃথিবীতে বিশ্বাসী মানুষের জন্যে (বিশ্বাসের) বহু নিদর্শন ছড়িয়ে আছে। খোদ তোমাদের মাঝেও আছে।তবু কি তোমরা তোমাদের চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগাবে না? -সূরা যারিয়াত ৫১:২০,২১।
আমাদের দেহে আল্লাহর নিদর্শন বা চিহ্ন আছে।আমরা জন্ম গ্রহন করি,এরপরে কিশোর,এরপরে যুবক,এরপরে বুড় এরপরে আবার আমাদের মৃত্যু হয়।এই সুত্র কেন সৃষ্টি হয়েছে? দুর্ঘটনায় যদি এতো কিছু সৃষ্টি হতে পারলো তাহলে দুর্ঘটনায় এই সুত্র উল্টো হতে পারলো না কেন?দুর্ঘটনায় এমন হতে পারতো যে হটাত কয়েক বছর জন্ম হয়েই বৃদ্ধ এরপরে যুবক,এরপরে কিশোর এরপরে শিশু এরপরে মৃত্যু, এমন হয় না কেন দুর্ঘটনায়? এই সুত্র কে নিয়ন্ত্রণ করছে?আমাদের কাছে এসবের সহজ উত্তর আছে।আল্লাহই শুরুতে যেমন এসব এই সুত্র দিয়েছেন সেটা এখন তেমনই আছে।আল্লাহ এই সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ করছে বলেই সেটা পরিবর্তন হচ্ছে না।
আসলে অন্ধবিশ্বাসী নাস্তিকরা স্রস্টা বিদ্বেষী।স্রষ্টার অস্তিত্বকে ওরা ইচ্ছা করেই অস্বীকার করে।সৃষ্টি দিয়ে নাস্তিকরা স্রষ্টাকে অস্বীকার করতে চায় যা আসলে সম্ভব না বরং সৃষ্টি দিয়ে স্রস্টাকেই প্রমান করা সহজ বরং প্রমানিত সত্য এবং এটাই সত্য।স্রস্টার অস্তিত্বের ব্যাপারটি যৌক্তিক সন্দেহের উর্ধে।
💚মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর কথা দিয়েই আজকের ইতি টানছিঃ
আল্লাহ বলেনঃ সত্য তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে আগত। অতএব, যার ইচ্ছা, বিশ্বাস স্থাপন করুক এবং যার ইচ্ছা অমান্য করুক। আমি জালেমদের জন্যে অগ্নি প্রস্তুত করে রেখেছি, যার বেষ্টনী তাদের কে পরিবেষ্টন করে থাকবে। যদি তারা পানীয় প্রার্থনা করে, তবে পুঁজের ন্যায় পানীয় দেয়া হবে যা তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে। কত নিকৃষ্ট পানীয় এবং খুবই মন্দ আশ্রয়। -সুরা কাহফ ১৮:২৯।

Related Posts

: