প্লুরালিজম কী?

Post a Comment

[প্লুরালিজম এখন একটি বৈশ্বিক শব্দ। অনেকেই এই ধরনের চিন্তা ও আনুসঙ্গিক বিষয়কে বর্তমান সময়ের উত্তাল বিশ্বে শান্তি আনয়নে, হিংসা-জিঘাংসা নিরসনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করেন। এই লেখাটি প্লুরালিজম ডট অর্গ ওয়েবসাইট থেকে নেয়া প্লুরালিজমের ইন্ট্রুডাকশন সেকশনের ভাবানুবাদ]

প্লুরালিজমের আইডিয়াটা মূলত প্রথম এসেছিলো ১৯৯০ সালের দিকে হার্ভার্ড কলেজের প্রফেসর তার স্টুডেন্টদের নিয়ে মাল্টিপল রিলিজিয়ন নিয়ে কাজ করার সময়। ১৯৯৭ সালে পর এইটা একটা রূপ পায় আমেরিকাতে। বিগত কয়েক বছর ধরে এইটা থিওলজিস্টদের কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে।

১) প্লুরালিজম শুনতে হয়ত মনোলিজম টাইপের শব্দের বিপরীত শোনায়। শাব্দিক অর্থটা এমন হলেও, আসলে এটা কেবল ধর্মীয় চেতনার বৈচিত্র্যকে বুঝায় না। এই টার্মিনোলজিটা সময়ে প্রয়োজনেই এসেছে। মূলত প্রতিটি ধর্মীয় চেতনার গোষ্ঠির মাঝে নিজ নিজ চিন্তাধারার ব্যাপারে প্রকটতা কাজ করে। কেবলমাত্র নিজেদের নিয়েই থাকার ফলে কোন বৈচিত্র্যকেই তারা মেনে নেয় না, আর অন্য চেতনার মানুষদের সাথে কোন কথাবার্তাও হয়না। তাই, প্লুরালিজম কেবল বৈচিত্র্যকে গ্রহণ করাই না, বরং আগ্রহী হয়ে এগিয়ে গিয়ে অন্য ধর্ম চেতনা আর বিশ্বাসকে জানতে চাওয়ার মাধ্যমে চলমান অস্থিরতা আর গোঁড়ামির সংকট কমানোর একটা আইডিয়া প্লুরালিজম।

২) প্রতিটা ধর্মবিশ্বাস ভিন্ন ভিন্ন চেতনার প্রতিফলন হলেও, তাদের মাঝে কিছু মূল সাদৃশ্য আছে। তাই, প্লুরালিজমের আরেক নাম হলো এই বিশ্বাসগুলোর মাঝে যেসব মিল আছে -- তাদের খুঁজে বের করা। সাধারণত সবাই আধা-সত্য জিনিসের উপরে বিশ্বাস করে বসে থাকে, অজ্ঞানতার কারণে কেবল অন্য ধর্মের প্রতি বিরূপ হতে থাকে। এই সংহতি বা সহ্য ক্ষমতাকে বাড়ানো সমগ্র বিশ্বের প্রেক্ষাপটে খুবই দরকারি। তাই ধর্মগুলোর নিজেদের মধ্যে বিশ্বাসসমূহের জ্ঞানের শেয়ারিং এখানে গুরুত্বপূর্ণ।

৩) যদিও ধর্ম থেকে ধর্ম আলাদা বিশ্বাসের উপরে দাঁড়ানো, তবু এখানে সাদৃশ্যগুলোর উপরে ভিত্তি করে দেখা যায় যে নিজেদের চাওয়াগুলো এক পর্যায়ে একই থাকে। অনেক বেশি পার্থক্য সত্বেও এই সাদৃশ্যের চেতনাকে লালন করে পরস্পর সম্পর্ক উন্নয়নটা প্লুরালিজমের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

৪) প্লুরালিজম মূলত বিভিন্ন ধর্মের চেতনার মানুষদের মাঝে কথাবার্তা ও ডায়লোগকে বুঝায়। অর্থাৎ, কেবলমাত্র নিজের ধর্মকে নিয়ে জেনে বসে থাকা নয়, বরং পারস্পরিক জ্ঞান শেয়ার করার মাধ্যমে অন্যের বিশ্বাসকে গ্রহণ করাই না, বরং নিজেদের উদ্যোগে তাদের সাথে মিলগুলো খুঁজে প্রকৃত উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে পথ চলা হলো প্লুরালিজম।

রেফারেন্স:

# ওয়েবসাইট - http://pluralism.org/pages/pluralism/what_is_pluralism
[ইউটিউব ভিডিও] -  www.youtube.com/watch?v=XgW3vP7p3no
[বই] Quest for Meaning - Developing the philosophy of Pluralism : Tariq Ramadan

Related Posts

: