আমাদের দেশের অধিকাংশ ছেলেমেয়েরাই তাদের নিজের ভেতরের দেয়ালগুলোতে নিজেদের বন্দী করে রাখে। তাদের বন্দী থাকতে হয়, বন্দী হতে শেখানো হয় ছোট থেকেই। লোকে কী বলবে, তারা কী বলবে ভাবতে ভাবতে নষ্ট হয়ে যায় হৃদয়ের ভেতরের জৈবিক রসায়ন। ধর্মের দোহাই দিয়ে বেঁধে রাখতে চায় অনেকে।
ধর্ম কী কেবলই কিছু আচার-অনুষ্ঠান? আমরা কি জানিনা অনেক বড় আলেমদের সর্বাগ্রে জাহান্নামে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হবে মর্মে সতর্কবাণীর কথা? আমরা কি জানিনা উশকো-খুশকো অভাবী-দীন-হীন লোকের হাত আল্লাহর খুব পছন্দ হবার কথা? বাহিরে মোরা ভদ্র বড়, ভেতরে শুধুই পশু। বাহিরের আচ্ছাদন আর লেবাসের সৌষ্ঠবের প্রতি আগ্রহ তো বুকের ভেতরের রসায়নকে নষ্ট করে ফেলেছে।
বহিরাবরণে ভদ্রলোক/ধার্মিক/ভদ্রমহিলা/শিক্ষিত অথচ বুকের মাঝে নেই মানবিক বোধ। অনেকগুলো ডিগ্রি পাশ দিয়ে আসা ডাক্তার সাহেব এক মিনিট কথা বলতে চাইছেন না রোগীর সাথে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে স্মার্ট আর ইয়াং ছেলেটা ঘুষি বাগিয়ে দিলো রিকসাওয়ালা ছেলেটাকে, ভেবে দেখা যায় না ছেলেটা কতটা কষ্টে রিকসা নিয়ে বের হয়েছে, শরীর দিয়ে টেনেছে এই যানটি--জীবনের প্রয়োজনে? এই চলমান সমাজে মনুষ্যত্ব লুকিয়েছে শব্দের খোলসে, মানুষের হৃদয় কেবলই শূণ্য। হৃদয়গুলোতে লোভ, হিংসা, ক্রোধ, অহংকার এবং সর্বোপরি ক্ষমতার লালসা।
কবে ভালোবাসা ফিরে আসবে আবার? হৃদয়ে হৃদয়ে...
কবে ভালোবাসা পাবে গাছের পাতা, পাখি, প্রাণী; ভালোবাসা পাবে চলতি পথের পথিক। ভালোবাসা পাবে অসহায়, আহত হৃদয়ের মানুষগুলো। ভালোবাসা তো পারে বদলে দিতে সবকিছু। আসলে, যা ভালো লাগে করতে হয়। বাইরে দেখতে যেমনটি লাগে, নিজেরা যেন তেমনটিই হই। নিজেরা যেমন, তেমনটি যেন লোকে মনে করে। কী লাভ তীব্র বৈপরিত্যের মাঝে সদা বসবাসে?
[২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫]
: