গল্পঃ- ঈদ শপিং
"মার্কেটে গিয়ে একটা দোকানে ঢুকলাম।
এবং দোকানদার কাকুকে বললামঃ--
>এই যে কাকু আয়না আছে......??(আমি)
.
>হুম আছে....?
.
>কোনটি দেখাব বাবা...? (দোকানদার)
.
>আরে দামিটাই দেখান....(আমি)
.
>এই নেন বাবা.....
"আয়নাটা নিয়েই মিচকে শয়তানের মত একটা
হাসি দিলাম।
বুঝলাম তেলিসামাদের মত লাগে।
দেখলাম মাথার চুলগুলো এলোমেলো আছে।
তাই আবার বললামঃ--
.
>কাকু চিরুনি আছে....??(আমি)
.
>হুম বাবা আছে তো, দিব নাকি..??(দোকানদ
ার)
.
>আরে দাওনা। এত জিজ্ঞেস করার কি আছে..?
(আমি)
.
>কোনটা দিব বাবা....?
.
>আরে এক্কেবারে পারফেক্টটা দেন তো...?
.
>এই নেন বাবা....(দোকানদার)
.
"চিরুনি টা হাতে নিয়ে মাথার এলোমেলো
চুলগুলো ঠিক করে নিলাম।
তারপর দোকানদার কাকুকে বললামঃ--
.
>কাকু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই নেন আপনার আয়না আর চিরুনি।
.
>মানে কি বাবা, তুমি আয়না এবং চিরুনি
কিনবে না....?(দোকানদার)
.
>আরেহ আমি পাগল নাকি....?এত বড় মার্কেটে
এসেছি কি আয়না আর চিরুনি কিনার জন্য....
.
>তাইলে এতক্ষণ.....
.
>আরেহ মিয়া সহজ কথা বুঝ না। আমার চুলগুলা
ঠিক আছে কি না সেটা তো দেখা লাগব তাই
তোমার জিনিস গুলি কাজে লাগাইলাম।
(আমি)
.
দোকানদার কাকু আমার কথা শুনে আহাম্মক হয়ে
গেলো।
সেখান থেকে চলে আসলাম।
শরীরে অনেক ঘাম বের হচ্ছে।
সাথে ঘামের গন্ধ তো আছেই।
একটু সামনে এগিয়ে যেতেই দেখি একলোক
পারফিউম এবং বিভিন্ন রকমের সেন্ট বিক্রি
করছে।
এটাই আমার ঘামের দুর্গন্ধ দূর করার সেরা সুযোগ।
সাতপাঁচ না ভেবে দোকানির কাছে গিয়ে
বললামঃ--
.
>এই যে ভাই এমন একটা পারফিউম দেখাও, যে
পারফিউম এর মূল্য তোমার দোকানে অনেক
বেশি দামি(আমি)
.
>এই নেন স্যার.....
এটার প্রাইজ ১৫০০ টাকা, এটাই আমার
দোকানের সব চাইতে বেশি দামি পারফিউম।
"দোকানদারের মনে মনে আনন্দের বন্যা বয়ে
যাচ্ছে।
ভাবছে এতদিন পরে একজন মনের মত ক্রেতা
পেল।
.
>ভাইয়া এটা কি গায়ে মেরে দেখতে
পারি...?
অর্থাৎ ঘ্রাণটা দেখব আরকি।(আমি)
.
>অবশ্যই স্যার দেখেন।(দোকানদার)
.
"তারপর পারফিউমটা শার্ট এর চারপাশ
মাড়লাম।
মেরে বললামঃ--
.
>ঠিক আছে ঘ্রাণ টা মন্দ না।আরেকটা দেখান
তো....?(আমি)
.
>এই নেন স্যার, এটা আপনি নিলে বারশো
টাকা রাখব সেই ঘ্রাণ (দোকানদার)
.
>তাই... দেখি আপনার কথা সত্য না মিথ্যা....?
.
>দেখেন স্যার দেখেন, মন ভরে দেখেন।
(দোকানদার)
.
তারপর শরীরের প্রতিটি কোণে ভালো করে
মেরে নিলাম।
এরপর দোকানদারকে উদ্দেশ্য করে ববললামঃ--
.
>এই নেও ভাই তোমার পারফিউম ভালোই
লাগলো।(আমি)
.
>হাহাহাহ, কি বলেন স্যার? আমার দোকানের
সব জিনিস গুলাই ভালো।(দোকানদার)
.
>ওহহ তাই? খুব ভালো। তো আপনার দেশের
বাড়িটা যেনো কোথায়??(আমি)
.
>আমার দেশের বাড়ি বরিশালে স্যার।
.
>লেখা পড়া করেন নাই....?
.
>না স্যার পড়াশোনা মাথায় ঢুকে না।তাই
ব্যবসা করছি।
.
>খুব ভালো খুব ভালো, মন্দ না।
আর হ্যা আপনার চেহারাটাও অসম।এরপর
কথাগুলো কত সহিহ সুদ্ধ।
আমি আপনার কথা শুনে মুগ্ধ। আচ্ছা এখন আসি
ভাই।
আমার আবার আরেক জায়গাতে যেতে হবে।
(আমি)
.
>সে কি বলছেন স্যার...? পারফিউম নিবেন না??
(দোকানদার)
.
>কি?
.
>পারফিউম...
.
>আরে মিয়া কি ভাবছ আমায়? আমাকে দেখে
কি ফকিন্নির পোলা মনে হয়?? তোমার এত কম
দামের পারফিউম কিনবো এই আমি?
আমার কি টাকা পয়সার কম পরছে নাকি?
একটু ভালো করে কথা বললাম বলে মাথায় উঠে
নাচতে চাও....?(আমি)
.
>স্যার....
.
>আরেহ ধুর মিয়া আর কথাই বলবে না।
মেজাজ টাই খারাপ করে দিয়েছ। ধুর আর এক
মুহূর্ত এখানে থাকা যাচ্ছে না। (আমি)
"এই কথাটি বলে শেষ করতেই দেখি,
দোকানদারের মুখটা জিলাপির মত তেরবেকা
হয়ে গেলো।
চলে আসলাম সেখান থেকে।
নিউ মার্কেট এর ভিতরে ঢুকলাম।
শরীর থেকে পারফিউম এর ঘ্রাণ ছড়িয়ে
পরেছে আমার আশেপাশের দোকান গুলোতে।
সবাই মার্কেটে নেওয়ার জন্য টানাটানি
করছে।
অবশেষে এক লোকের দোকানে ঢুকলাম।
.
>স্যার আপনার কি লাগব শুধু বলেন।(দোকানদার)
.
(মনে মনে বললাম, লাগলেই কি পাওয়া যাবে?)
.
>এইযে শার্টটা আছে লাল রঙের এটা দেখান
তো...(একটা শার্ট দেখিয়ে বললাম)
.
>এই নেন স্যার, আপনার পছন্দ আছে একদম।
এটা আমাদের দোকানের সব চাইতে সেরা
কম্পানির শার্ট।(দোকানদার)
.
>তাই.....
"শার্ট টা হাতে নিয়ে আপসোস করছি। আর মনে
মনে গান গাইছি।
হাইরে শার্ট তুই যদি আমার হইতি রে।
ও শার্ট রে পড়তাম আমি তোরে...
কত যত্নে রাখতাম তোরে,
কতো..যত্নে রাখতাম তোরে.
দেখিত লোকে।
তুই যদি আমার হইতি রে...
.
>স্যার কি ভাবছেন এত....?(দোকানদার)
.
>ভাবছি শার্ট যে ছোট আমার গায়ে লাগবে
কি না....??(আমি)
.
>স্যার একেবারে পারফেক্ট হয়ে লাগবে...
.
>তাই দেখিত....
.
>দেখেন স্যার দেখেন....(দোকানদার)
"শার্ট টা গায়ে পরে নিলাম। সেইরকম
ম্যাচিং হয়ে লাগছে।
মনে মনে ভাবছি একটা সেলফি তুললে কেমন
হয়....?
.
>আচ্ছা ভাই একটা কথা বলি...?(আমি)
.
>জ্বী স্যার বলেন.......
.
>আপনার শার্ট টা দিয়ে একটা সেলফি তুলে
আমার গার্লফ্রেন্ড কে দেখাইতাম।
ওর যদি পছন্দ হয় তাইলে তো....
.
>অবশ্যই আপনার যতখুশি ছবি তুলেন।
ভাবির নিশ্চয় পছন্দ হবে।
"এরপর মোবাইল টা বের করে উড়াধুরা ছবি তুলা
শুরু করলাম।
.
গার্লফেন্ডের নাম করে হুদাই মোবাইলে
কিছুক্ষণ টিপাটিপি করলাম।
তারপর দোকানদার কে বললামঃ--
.
>ভাই আপনার ভাবি তো আমার ইচ্ছে টাই
মেরে ফেললো...?
.
>কেনো ভাই কি বলছেন ভাবি...?(দোকানদার)
.
>বলল যে এই ঈদে নাকি পাঞ্জাবি না কিনলে
নাকি আমার সাথে ব্রেকআপ করবে..(আমি)
.
>হাহাহাহ, তাই নাকি.....?
সমস্যা কিসের? আমাদের দোকানের সবচাইতে
সেরা পাঞ্জাবি টা আপনাকে দেখাচ্ছি।
.
"এই বলে দোকানি আমাকে একটা লাল রঙের
পাঞ্জাবি বের করে দিল।
"আমি এটাও পরে কয়েকটি ছবি তুললাম।
তারপর মোবাইলে এলার্ম সেট করলাম।
দুই মিনিট পরেই মোবাইলে রিংটোন ভেজে
উঠবে।
"দোকানদার কে বললামঃ-
.
>ভাই আপনাদের দোকানের কাপড় গুলা না
সবগুলাই অসাধারন। (আমি)
.
>কি যে বলেন স্যার..? আপনার জন্য তো এইসব
কিছুই না।......
.
>তা অবশ্যই ঠিক বলেছন.
"কথাটি বলে শেষ করতেই এলার্ম রিংটোন টা
ভেজে উঠলোঃ-
.
>এক মিনিট ভাই একটা ফোন আসছে....(আমি)
.
>ওকে স্যার...ওকে।
এরপর ফোনটা কানে নিয়ে কবিলার অভিনয় শুরু
করলামঃ-
"হ্যা বল মামা.....
কোন দরকার নাকি....?
.
>------
"কি বলছ....?
.
>------
আরেহ বাবা তুমি এমন কি অপরাধ করছ যে
তোমার এই অপরাধে এখুনি পঞ্চাশ হাজার
টাকা দেওয়া লাগব।
.
>------
.
>আচ্ছা বল তুমি এখন কোথায় আছে আমি এখুনি
আসছি....
.
>-------
.
>ও নিচে, আচ্ছা ঠিক আছে আমি পাঁচমিনিটের
ভিতরে আসতেছি।
.
"ফোনটা কেটে দোকানদার কে বললামঃ-
>এই নেন ভাই আপনার পাঞ্জাবি।
আমাকে এখুনি যেতে হবে।(আমি)
.
>স্যার পাঞ্জাবি নিবেন না??(দোকানদার)
.
>এই মিয়া আপনার মাথায় কি কোন গিলু নাই
নাকি....?
শোনেন নাই ফোনে কি কথা বলছি আজব মানুষ
তো তুমি....(আমি)
.
একটুপর মামা সত্যিই কল দিলঃ-
ফোনটা ধরতেই......
.
>ঐ চাকরের বাইচ্চা চাকর, তুই আমার শার্ট আর
পেন্ট নিয়ে কোথায় বের হইছিস??(মামা)
.
>এইতো মামা একটু অপেক্ষা কর আমি এখুনি
মিজানের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আসছি।
.
>কি কিসের মিজান..?আর কিসের টাকা?
কি বলছিস এইসব...?তুই তাড়াতাড়ি আয়।
আমার শার্ট নিয়ে এক জায়গাতে যাওয়া
লাগব।
.
>আচ্ছা ঠিক আছে আমি আসছি তো আর মাত্র দুই
মিনিট এর পথ।(আমি)
.
>এই মিয়া আপনার পাঞ্জাবি রাখবেন নাকি
নিয়ে যাব সাথে......?(আমি)
.
"এই বলে দোকানদার কে আবুল বানিয়ে
মার্কেট থেকে চলে আসলাম।
"মামার পেন্ট আর শার্ট খুলে আমার লুঙ্গী টা
পড়ে....
ফেসবুক টা ওপেন করলাম।
"দেখলাম মায়মুনা এক্টিব আছে।
ভাবলাম এখুনি সেইরকম সুযোগ চাপা মারারঃ-
"নক করলামঃ-
.
>হিলু মেরে পেয়ারে পেয়ার বাবুনি জানের
জান কলিজার কলিজা..
.
>কিরে হারামি, আজকে মনে এত আনন্দ কেন..?
(মায়মুনা)
.
>আরেহ আনন্দ কি আর এমনি এমনি করছি..?
প্রায় দশ হাজার টাকা খরচ করে শপিং করে
আসলাম।
এই দেখ পাঞ্জাবি শার্ট আর কত কি কিনলাম
(আমি)
ফটো গুলা দিয়ে ওর বলতেই ও বলে উঠলোঃ-
.
>ওমা তাই....?তোকে না একদম হিরোদের মত
লাগছে রে.....
.
>হ্যা বুঝতেই হবে আমি কার হিরো....??(লজ্জায়
টয় টম্ভুর)
.
>ওলে ওলে আমার বাবুটা লজ্জা পাচ্ছে....
আমার সোনা আমার জান উম্মাহ.....
.
>(লজ্জা পেলাম)
এরপর লুঙীটা নিয়ে মোবাইলে একটা ডিজে
গান ছেড়ে দিলাম।
তারপর কয়েকমিনিট লুঙ্গী ডান্স দিলাম।
______সমাপ্ত....
: