একজন মুক্তমনা নারীর আর্তনাদ

Post a Comment

একজন মুক্তমনা নারীর আর্তনাদ
মুল কথাঃ বেগম তেরেসা
সম্পাদনাঃ এম ডি আলী

আমি বেগম তেরেসা । মর্ডান পরিবারে জন্মেছি , মর্ডান কেমন সেটা আমার থেকে আপনারাই ভাল বিশ্লেষণ করতে পারবেন ।
কথিত মুক্তমনা , বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাসী - এমন কতক ইসলাম বিদ্বেষীর লেখা পড়ে , আমিও আপনাদের মতন ইসলাম বিদ্বেষী ছিলাম দীর্ঘ সতেরো বছর। প্রত্যেক দিন আমি ইসলামের বিরুদ্ধে পোস্ট না করলে অথবা শেয়ার না দিলে আমার সকালের নাস্তা ভাল লাগত না । আমার বাবা একজন ধনী মানুষ ছিলেন কিন্তু ধর্মের ব্যাপারে তার আগ্রহ একেবারেই নেই বললেও চলে আর আমার মাও ছিলেন একজন কট্টর নাস্তিক। আমার পিতা মাতা ইসলাম বিদ্বেষী না থাকলেও আমি কট্টর ইসলাম বিদ্বেষী ছিলাম , ইসলামকে প্রচুর ঘৃণা করতাম ।

আপনারা হয়ত এখন ভাবছেন আমার মত একজন কট্টর ইসলাম বিদ্বেষী কিভাবে নাস্তিকতা ত্যাগ করলাম ! আসলে আমি নাস্তিক ধর্ম ত্যাগ করেছি কথাটি বলতেই বেশি পছন্দ করি অথবা সাচ্ছন্দবোধ করি কারন নাস্তিকতা একটি ধর্মের নাম। ধর্ম শব্দের শাব্দিক অর্থ আমরা সবাই জানি "ধারন করা" তাই আপনি নাস্তিকতাকে যদি ধারন না করেন তাহলে আপনি নাস্তিক হতে পারলেন না যেহেতু আপনি নাস্তিকতা ধারন করেন তাই আপনি চাইলেও নাস্তিকতা একটি ধর্ম আর না চাইলেও নাস্তিক একটি ধর্মের নাম । যদি আপনি বলেন আপনি নাস্তিকতা ধারন করেন না এর মানে আপনি নাস্তিক ধর্ম বিশ্বাস করেন না যেহেতু আপনি নাস্তিক ধর্ম বিশ্বাস করেন না তাই আপনি নাস্তিক ধর্মের অনুসারী হতে পারলেন না ।

আমি যখন ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক ছিলাম তখন যেই টপিক নিয়ে সব থেকে বেশি মুসলিমদের আক্রমণ করতাম তা হল নারী অধিকার। আমি মনে প্রানে বিশ্বাস করতাম ইসলাম নারীদের কোন অধিকার দেয় নি । আমি বিশ্বাস করতাম একজন পুরুষ এবং একজন নারী দুইজনেই সমান । একজন পুরুষ যেই কাজ পারে একজন নারীও সেটা অবশ্যই পারে । নারী পুরুষের কোন ভেদাভেদ নেই। ধর্ম নামক যন্ত্র নারী পুরুষকে ভিন্ন দুই জগতে ভাগ করে দিয়েছে আর ইসলাম নারীদের বন্ধী করেছে কালো রঙে! আমি ঘুরে ফিরেই এসব যুক্তি আর আমার বিশ্বাস মুসলিমদের উপর প্রয়োগ করতাম, কখনো ছেলে আইডি দিয়ে আবার কখনো মেয়ে আইডি দিয়ে - আমার প্রচুর ফেইক আইডি ছিল - কারন আমি দেখাতে চাইতাম যে আমাদের সংখ্যা মুসলিমদের চেয়ে বেশি । এটি একটি চালাকি যা সব ইসলাম বিদ্বেষীরাই করে থাকে ।

চাকরি থেকে বাসায় এসে আমি গোসল না করেই হটাত ঘুমিয়ে যাই। খুবই ক্লান্ত ছিলাম সেদিন । স্বপ্নে দেখি এক বুড়ো মহিলা আমাকে ডাকছেন এক নদীর কিনারায় , আমি তার কাছে যেতে ভয় পাচ্ছি কারন আমি তাকে এর আগে কখনো দেখি নাই ! নদীর কিনারায় এত সুন্দর সাদা কবুতর আমি কখনো দেখি নি । ঐ বয়স্ক মহিলা আমাকে বলছে যে মা তুমি কি কি পেয়েছ ? আমি তার প্রশ্নের উত্তরে বললাম মানে............ আমার স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল , আমার কপালে তখন ঘাম বের হচ্ছিল তখনও আমি কিন্তু এর হেতু কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না।

কত মুসলিমদের যুক্তি দিয়ে হারিয়েছি , আমার সাথে কেউই যুক্তি দিয়ে পারে নি এসব কথা ভাবতে ভাবতে হটাত কেমন যেন আমার মাঝে অহংকার চলে এল আমিও চিন্তা করলাম থাক অহংকার করা ঠিক না , এই আমার মনে একটি প্রশ্ন এল , মনে হল যেন আমার মাঠায় কেউ আঘাত দিয়ে প্রশ্নটি রেখে গিয়ে কেউ উড়ে চলে গিয়েছে। আপনি হয়ত বিশ্বাস করবেন না, হয়ত আপনি এই প্রশ্ন শোনার জন্য নিজেকে তৈরি করেননি , আমি জানি।
নাস্তিক ধর্মে নারী অধিকার কি কি ? নাস্তিক ধর্ম একটি নারীকে কি দিয়েছে ? রাষ্ট্রীয় ভাবে একজন নারীকে কি মর্যাদা দিয়েছে ? নাস্তিক ধর্মে নারীকে কোন চোখে দেখা হয় ? এখানে একটি কথা বলে রাখি , আমার মনে যতই ইসলামের সত্যতার পক্ষে প্রশ্ন বা প্রমান আসত না কেন আমি সেদিকে খেয়াল না দিয়ে নাস্তিক ধর্মের প্রতিই আমার দুর্বলতা ছিল প্রচুর । তাই নাস্তিক ধর্মের বিরুদ্ধে কোন প্রমান আমি সহ্য করতে পারতাম না যদিও সেটি শক্তিশালী প্রমান হক না কেন ? আমি যেভাবেই হক নাস্তিক ধর্মকে সত্য প্রমান করতে চাইতাম এর জন্য যদি আমাকে মিথ্যা বলতে হত সেটাও করতাম এটি সকল কট্টর নাস্তিকরাই করে কিন্তু কেউ মুখে স্বীকার করে না ।

কেন জানি আমার মন চাচ্ছিল যে আসলেও এইবার নাস্তিক ধর্মের নারী অধিকার নিয়ে গবেষণা করি , চিন্তা করি , ভাবতে থাকি । নাস্তিক ধর্মের অনুসারীরা দাবি করেন যে নাস্তিকরাই নারী অধিকারের পক্ষে , নারীদের মুক্তি দিয়েছে এই নাস্তিক ধর্ম ইত্যাদি ইত্যাদি । আসলেও এসব দাবি আসলেও কতটুকু বাস্তব সত্য সেটি আমি যাচাই করে দেখব এইবার । আমার বিরুদ্ধেও যদি যায় তারপরেও আমি এইবার সত্য খুজেই তবে নিঃশ্বাসের স্বাদ নিবই । আমার ভিতরে কেমন যেন অজানা সত্যর পিপাসা ব্যাপকতা প্রসার লাভ করলো । আমি জানি আপনার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে , আমি যখন আমার প্রশ্নের উত্তর সন্ধান করতে লাগলাম তখন বুঝতে পারলাম নাস্তিক ধর্মে নারীদের একটি অধিকারও প্রদান করা হয়নি , বিন্দু মাত্র কোন মর্যাদা ও অগ্রাধিকার দেয়া হয় নি । আপনি এখন তিতা সত্য পড়ছেন তো তাই আপনার হয়ত কষ্ট লাগছে কিন্তু আপনি যদি সত্যবাদী হন তাহলে আমার মত আপনাকেও সত্য গ্রহণ করার বিবেক থাকতে হবে । আমি সত্য কথা বলেই যাব এতে যদি আপনারা আমাকে মন্দ বলেন আমার কিছুই করার নেই ।

গত দুই সপ্তাহ আগে আমার মা আরেক নাস্তিক পুরুষের সাথে চলে গিয়েছেন। আমার বাবা আমার মাকে যখন বলেছিলেন আমি তোমাকে ভালবাসি, তোমার জন্য আমি কত কিছু করলাম আর তুমি এভাবে আমাকে রেখে অন্য পুরুষের সাথে চলে যাচ্ছ , তুমি এই অন্যায় কাজ করতে পারো না । আমার মা তখন আমার বাবাকে কি জবাব দিয়েছিল জানেন ? আহ ! সেই জবাব এর দৃশ্য দেখার আগেই যদি আমি এই দুনিয়া ছেড়ে অন্য জগতে চলে যেতে পারতাম এটাই আমার জন্য মঙ্গল হত । আমার মা তখন আমার বাবাকে অহংকার আর তাচ্ছিল্যতার সাথে বলেছিল তুমি আমাকে বাধা দেয়ার কে ? আমি আমার ব্যাক্তি স্বাধীনতার অধিকার ভোগ করবো , আমি মুক্তমনা আমার মুক্ত মনা চেয়েছে তাই চলে যাব আমি আর তোমার সাথে থাকব না । তুমি আমাকে বাধা দিতে পারো না কারন আমার স্বাধীনতায় তোমার মন প্রবেশ করবে না । তোমার প্রতি আমার আর কোন ভালবাসা নেই । আমার কাছে ওকে বেশি ভাল লেগেছে তাই তোমাকে আমি ছেড়ে দিলাম ।আসলে আমার বাবার থেকে ঐ লোকটি বেশি ধনী ছিল তাই । আমার মনে হালকা বাতাস বইছিল, তখনই বুঝতে পারলাম নাস্তিক ধর্ম দিয়ে সুন্দর পরিবার তৈরি করা সম্ভব না তবে একটি সুন্দর পরিবার ধ্বংস করতে যথেষ্ট ।

আমার বাবার কান্না দেখে আমারও চোখে টপ টপ বৃষ্টি পরছিল । আমার কষ্ট আপনি মনে অনুভব করতে চেষ্টা করুন , কল্পনা করুন তো একটি সুখের পরিবারে কিভাবে আগুন ধরে গেল । আমার কষ্ট বুঝার মত মন আপনার আছে কি পাঠক ? আপনার মত আমিও তো ইসলাম বিদ্বেষী ছিলাম , কিন্তু এই নাস্তিক ধর্ম বা আপনাদের নাস্তিকতা আমার মত একজন নারীকে কি দিল ? বলুন, এখন আমি জানি আমার মায়ের উত্তর ঠিক হয়নি । কিন্তু আমার মা যে অন্যায় করেছেন এই কথা বলার শক্তি পুরো নাস্তিক জগত রাখে না । কেন জানেন ? কারন আমার মা একজন ব্যাক্তি স্বাধীনতায় বিশ্বাসী নারী ছিলেন । আমার মা একজন মুক্তমনা নারী ছিলেন । কিন্তু আমার বাবার হাহাকার এর স্বাধীনতার জন্য কে কথা বলবে ? কেউই না , কেউই নেই - আমার মত একজন নারীর মনের অবস্থা বুঝার চেষ্টা করুন । আমি তো আমার বাবাকে ভালবাসি ।

আমি সিদ্ধান্ত নেই । যেই নাস্তিক ধর্ম দিয়ে একটি পরিবার সুন্দর ভাবে চলতে পারে না আমি একজন নারী হয়ে সেই নাস্তিকতার অন্ধ বিশ্বাস গ্রহন করতে পারি না। আমার পক্ষে সম্ভব না আর এই বিশ্বাসে অটল থাকা। একজন বিবেকবান নারী কখনো নাস্তিকতায় বিশ্বাস আনতেই পারে না । যদি তার মাঝে আমার মায়ের গুনাবলি থাকে তাহলে এখানে আমার আর কিছুই বলার নেই ।

নাস্তিক ধর্ম নিয়ে যখন প্রচুর পড়াশোনা শুরু করলাম । নাস্তিকতা সম্পর্কে যত ভিতরে প্রবেশ করতে থাকলাম আমি আশ্চর্য হলাম যখন জানতে পারলামঃ একজন নাস্তিক সন্তান তার নাস্তিক মায়ের সাথে সেক্স করতে পারবে যদি তার মায়ের সম্মতি থাকে। একজন নাস্তিক পিতা তার নাস্তিক ছেলের সাথে সমকামীতা করতে পারবে, যদি সম্মতি থাকে । এখানেই শেষ নয় একজন নাস্তিক মাতা তার নাস্তিক মেয়ের সাথে লেজবিয়ান হতে পারবে সম্মতিতে ।এমনকি নাস্তিক পিতা তার মেয়ের সাথে , নাস্তিক ভাই তার বোনের সাথে সম্মতি সেক্স নাস্তিক ধর্মে বৈধ - আপনি কল্পনা করুন তো ! জানি আমার মত আপনারও ঘৃণা লাগছে ।
আপনি ভাবুন যখন আমি নাস্তিকতা সম্পর্কে প্রথম এই সত্য কথা সমূহ জেনেছি আমার মনে কত ঘৃণা লেগেছিল । আপনার মত আমারও ঘৃণা লেগেছিল যখন আমি নাস্তিক ধর্ম সম্পর্কে সত্য ও সঠিক তথ্য উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম । ---নারীকে পর্দায় , স্বামী ও সন্তানদের সেবাযত্ন , পরিবারকে সময় দিতে বলা ইসলামই আমার কাছে অনেক ভাল , নাস্তিক ধর্মের চেয়ে ।

হে আমার বোন তুমিও আমার মত আগের আচরণ তথা ইসলামকে নিয়ে এখনো গালাগালি করো, হে বোন আমার তুমি কি পারবে আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে, হে আমার বোন তুমি কি পারবে নাস্তিক নারীদের অধিকার দিতে ? হে আমার বোন তুমি কি পারবে একটি আদর্শ নাস্তিক পরিবার গড়ে তুলতে যেখানে ইসলামের আদর্শ থাকবে না ? - আমি আমার জীবনের পরোয়া করি না , সত্যের পক্ষে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আমি থাকব , তারপরেও বলছি আমার প্রশ্নের উত্তর দেও হে বোন আমার ।
* ধরুন একজন নাস্তিক নারীর অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ । এমনকি তার পরিবারের কেউই নাই । কিন্তু তার নাস্তিক স্বামী ধনী - হটাত একদিন তার স্বামী তাকে ডিভোর্স দিয়ে অন্য নাস্তিক নারীর সাথে বসবাস করলো - এখন ঐ অসহায় নারীর দায়িত্ব কে নিবে ? এখানে অসহায় নারীকে কেন অধিকার বঞ্চিত করা হয়েছে যেখানে তার স্বামী মুক্তমনা তথা বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাসী ? নাস্তিক ধর্মে এর সমাধান কি ?

* আমার নাস্তিক মা বলে তার কাছে থাকতে , নাস্তিক স্ত্রী বলে তার কাছে থাকতে তারা দুইজনেই মুক্তমনা এখন আমি কিভাবে কাকে ছেড়ে কার কাছে থাকব ? আমি চাই দুইজনেই আমাকে নিয়ে আনন্দে থাক। মার কাছে গেলে স্ত্রী স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে , আবার স্ত্রীর কাছে গেলে মায়ের স্বাধীনতায় আঘাত পাচ্ছে - আবার মা ও স্ত্রীর সম্পর্ক ভাল না - নাস্তিক ধর্মে এখানে কিভাবে সমাধান দিবে ? ইসলাম আমাকে এমন পরিস্থিতিতে স্ত্রীকে ছেড়ে মায়ের কাছে থাকতে বলে । যেহেতু মায়ের বেশি মর্যাদা তাই ইসলাম আমাকে মায়ের কাছেই থাকতে বলে । মাকে কষ্ট দিলে আল্লাহ্‌ বেজার হবেন । কিন্তু এটি তো ইসলামিক সমাধান । আমি তো নাস্তিক । তাই আমাকে নাস্তিক ধর্ম দিয়ে এই সমাধান দিতে হবে ?

* ধরুন নাস্তিক ভাই ও বোনের মধ্যে সম্মতিতে সহবাস হল । বোনের পেটে বাচ্চা এসেছে । বাচ্চার বয়স ধরুন ২ বছর । নাস্তিক ভাই বলল এই বাচ্চার দায়িত্ব আমি নিব না - এখন আপনি নাস্তিক ধর্ম দিয়ে সমাধান দিন ? এখানে উক্ত নাস্তিকের মুক্তমনা মনের কথা বাধা কেন দিবেন আপনি ? যদি না দেন তাহলে নাস্তিক বোনের সন্তানের কি হবে ???

* নাস্তিক সন্তানের সাথে মায়ের সম্মতিতে সহবাস হল। এখন মায়ের পেট থেকে বাচ্চা সন্তান জন্ম নিল- এই মায়ের সন্তানের ব্যাপারে নাস্তিক ধর্ম কি বলে ? সন্তান কিভাবে নিজ মায়ের সাথে সহবাস করে বাচ্চা জন্ম দেয় , বা উক্ত বাচ্চার পরিচয় কিভাবে হবে ? নাস্তিক ধর্ম এই বিষয়ে কি বলে ?

* একজন নাস্তিক নারী ৫০ হাজার টাকা আরেক নাস্তিক নারীর কাছে আমানত রেখেছে । কিন্তু যার কাছে আমানত রেখেছিল সে ঐ টাকা সমূহ খেয়ানত করেছে । যখন সে জানতে পারল যে তার টাকা খেয়ানত হয়েছে এবং সে যখন ঐ নাস্তিক নারীর কাছে তার টাকা চাইতে গেল তখন জবাবে সে নাস্তিক নারী বলল আমার মন চেয়েছে তাই আমি ঐ ৫০ হাজার টাকা নিজের প্রয়োজনে শেষ করে দিয়েছে আমি আর ঐ টাকা তোমাকে দিতে পারব না এবং এটি যে অন্যায় তুমি আমাকে প্রমান করে দেও ? কারন নাস্তিকতা মানে হল "স্রস্টায় অবিশ্বাস" এর সাথে টাকা আমানত অথবা খেয়ানতের কোন সম্পর্ক নাই - আপনি এখানে কিভাবে সমাধান দিবেন নাস্তিক ধর্ম দিয়ে ?

হে বোন আমার তুমি হয়ত চিন্তা করছ যে এসব ঘটনা তো আমরা বাস্তবে দেখি না , আচ্ছা তুমি কি দুনিয়ার সব নাস্তিকদের পরিবার সম্পর্কে জেনে গিয়েছ তুমি কি সবাইকে চিন ? উত্তর হচ্ছে না । যেই ধর্মে নাস্তিক মেয়ে তার নাস্তিক পিতার সাথে সম্মতিতে সেক্স করাকে বৈধ বলে ঘোষণা দেয় সেই ধর্মে তুমি থাকো , আমি মানা করছি না কিন্তু আমার প্রশ্ন তুমি এড়িয়ে যেও না । সত্য খুব তিতা কিন্তু একবার হজম করতে পারলে তোমার কাছে মিষ্টি লাগবে । সুতরাং নাস্তিক মানে হচ্ছে "স্রস্টায় অবিশ্বাস" - এখন এই সংজ্ঞা দিয়ে তুমি আমাকে নিচের প্রশ্ন বুঝিয়ে দেওঃ

১/ নাস্তিক ধর্মে মেয়ে তার নাস্তিক পিতার সম্পত্তির ভাগ কি পাবে ? কেন পাবে ? সম্পত্তি তো পিতার এখানে মেয়ে কোন অধিকারে পাবে ?

২/ নাস্তিক পিতা যদি সম্পত্তি দিতে অস্বীকার করে তাহলে মেয়ে কি এখানে পিতার মুক্তচিন্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারবে ? যদি পারে তাহলে এখানে পিতার মুক্ত চিন্তায় বাধা দেওয়ার মেয়ে কে ?

৩/ যদি পিতা সব সম্পত্তি মেয়েকে না দিয়ে সব ছেলেকে দিয়ে দেয় এখানে মেয়ে কেন অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে যেখানে পিতা তার স্বাধীন সম্পত্তি তার ইচ্ছা মত ছেলে সব দিয়েছেন ? নাস্তিক ধর্ম এখানে কি বলবে ?

৪/ একজন নাস্তিক নারী ইচ্ছা করলে উলঙ্গ মানে লেংটা হয়ে রাস্তায় চলাফেরা করতে পারবে কোন নাস্তিক পুরুষ সম্মতিতে থাকলে রাস্তায়ই সহবাস করবে সম্মতি না থাকলে করবে না - নাস্তিক ধর্মের সব পুরুষেরা নারীর ঐ লেংটা হয়ে চলার ইচ্ছার অধিকারের পক্ষে কিন্তু আপনি কি নারী হয়ে একজন মানুষ হয়ে সেভাবে রাস্তায় চলাফেরা করতে পারবেন ? যদি বলেন পারবেন তাহলে এখানে আপনার কথা তারাই বিবেচনা করবে যারা সভ্য !

৫/ "নাস্তিক ধর্মে নারী অধিকার" নিয়ে কি কোন বই লেখা আছে , থাকলে সেটির নাম কি ? ধরুন একজন নাস্তিক দাবি করলো ঐ বই সে মানে না কারন নাস্তিক ধর্মের সংজ্ঞা কখনো নারী অধিকার নিয়ে কথা বলে না - আপনি কিভাবে এই নাস্তিকের মুক্তমনার বিরুদ্ধে যুক্তি দিবেন এবং কেন ?

মনে করতে পারেন যে আপনাকে আমি ইসলাম গ্রহণ করতে বলছি - মোটেও না । আপনি আমার মত একজন নারী , চিন্তাশীল এবং আপনার মধ্যেও বুদ্ধি আছে আমি জানি । একজন নারীই আরেক নারীর কষ্ট বুঝতে পারে । তাই আপনাকে বলছি - আমার প্রথমে অনেক কষ্ট লেগেছিল যে আমি যে ভাবতাম যে

নাস্তিকতা মানে মানবতা , এরা নারীদের পক্ষে আসলে এসব কথা ভুয়া এবং ডাহা মিথ্যা কথা । আমি সত্যকে মেনে নিয়েছি । আপনি আপনার নাস্তিক ধর্ম নিয়েই খুশি থাকুন আমার কোন অভিযোগ নেই কিন্তু আপনার বিবেকের দরজায় আমার প্রশ্ন আমি রেখে গেলাম বোন ।

নাস্তিকতা নিয়ে সত্য বলার কারনে যদি আপনাদের থেকে আমাকে গালি খেতে হয় এরপরেও আমি সেটি মাথা পেতে নিব - আমার কোন অভিযোগ নেই । কারন যে সব পুরুষরা বোরখা পড়ার স্বাধীনতা নারীদের দিতে চায় না তারা নারীদের বিকিনি পরার অধিকার নিয়ে কোন উদ্দেশ্যে কথা বলে তা আমার বুঝা হয়ে গেছে ।

= যেই নাস্তিক ধর্ম নিজের মায়ের সাথে নিজের সন্তানের সহবাসের অনুমতি দেয় - এই নাস্তিক ধর্ম আমি চাই না ।
= যেই নাস্তিক ধর্ম মুসলিম এবং ইসলামকে গালাগালি করতে উৎসাহ দেয় - এমন নাস্তিক ধর্ম আমি চাই না ।
= যেই নাস্তিক ধর্ম মাতা ও মেয়েকে লেসবিয়ান হতে শিক্ষা দেয় - আমি এই অধিকার চাই না ।
= যেই নাস্তিক ধর্ম মেয়েদেরকে রাস্তায় বিকিনি পরাকে নারী স্বাধীনতা ঘোষণা দেয় - আমি এই নারী অধিকার চাই না ।
= যারা বোরখা পরে - এটি তাদের ব্যাক্তিস্বাধীনতা । বোরখা যারা পরে এমন নারীদের যারা গালি দেয় - নাস্তিক ধর্ম উৎসাহ দেয় - আমি এমন নারী বিরোধী নাস্তিক ধর্ম চাই না।
= যেই নাস্তিক ধর্ম পিতা তার মেয়ের সাথে সম্মতিতে সহবাস করে বাচ্চা জন্ম দিতে পারবে - আমি এমন বর্বর নাস্তিক ধর্ম চাই না ।
= যেই নাস্তিক ধর্ম নারীর অর্থনৈতিক অধিকার নিয়ে কথা বলার শক্তি রাখে না - আমি এমন নারী অধিকার চাই না ।
= যেই নাস্তিক ধর্মে বলা হয় পতিতা করা বৈধ - আমি এমন নাস্তিক নারী অধিকার চাই না ।
= ধর্ষণ করা একটি অপরাধ - এই অপরাধ যে আসলেও একটি অপরাধ - এটি নাস্তিকতার সংজ্ঞা দিয়ে নির্ণয় করা যায় না - সুতরাং আমি এমন নাস্তিক ধর্ম চাই না যে ধর্ম অপরাধ সনাক্ত করতে অক্ষম ।

পরিশেষে এটাই আপনিও তো আমার মত একজন নারী । আপনি তো চিন্তাশীল , বুদ্ধিমান, আপনি তো জ্ঞানী তাই আপনি কি পারবেন আমার আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে নাকি আমাকে আপনি বর্বর বলে গালি দিবেন যেভাবে ইসলাম বিদ্বেষীরা গালাগালি করে ।

আমার কোন রাগ নাই আপনাদের প্রতি , আমার কোন ক্ষোভ নেই আপনাদের প্রতি । আমার শুধু এটাই ইচ্ছা যে সবাই চিন্তা করতে শিখুক , সত্য বুঝতে শিখুক , সঠিক ভাবে নিজেকে জানুক । সেই বুড়ো মহিলা কি বলেছিল! কি পেয়েছি আমি , সেটি আপনাদের বুঝাতে পারলাম না - এর জন্য আমি ক্ষমা চাচ্চি আপনাদের থেকে ।
কুরানের একটি আয়াত দিয়ে আমার লিখা আজকে শেষ করবঃ
সুরা হুজরাত ৪৯:১৭= ইসলাম গ্রহণ করে মানুষ নিজেকেই অনুগৃহীত করে ।

Related Posts

: