"আমার অবিশ্বাস" কিতাব পড়ে সংশয় এবং মুক্তমনা প্রশ্ন (পার্ট ২)

Post a Comment


🤔বিষয়ঃ "আমার অবিশ্বাস" কিতাব পড়ে সংশয় এবং মুক্তমনা প্রশ্ন (পার্ট ২)
✍️লিখেছেনঃ এম ডি আলী।
ℹ️ভূমিকাঃ সত্য যে কঠিন, কঠিনেরে ভালবাসিলাম সে কখনও করেনা বঞ্চনা । কথাটি আমার কাছে খুব ভাল লেগেছে । কারন সত্য খুবই কঠিন । সেই কঠিনের অনুভূতি আপনি অনুভব করতে পারবেন তখনই যখন 'নাস্তিক ধর্মকে' প্রশ্নের পাথরে বিক্ষত করতে পারবেন । যেমন সুষুপ্ত পাঠকের একটি ফতোয়া আছে "প্রশ্নেই মুক্তি" । এই ফতোয়া অনলাইনের ছোট-বড় সকল সমকামী 'নাস্তিক ধর্ম' প্রচারকরা মনে প্রানে বিশ্বাস করেন। কিন্তু আমি যখন তাদেরকে প্রশ্ন করি যে ভাই আপনাদেরকে প্রশ্ন করলে আপনারা তো উত্তর দিতে পারেন না বরং ত্যানা প্যাঁচান, তখন তারা আমাকে নিয়ে পার্সোনাল এটাক করে । মূলত তারা নিজেরাও মনস্তাত্ত্বিকভাবে লজ্জিত তাদের এই 'নাস্তিক ধর্ম' নিয়ে । আমি আমার আগের পর্বে 'আমার অবিশ্বাস' কিতাব পড়ে যে নাস্তিক ধর্ম নিয়ে সংশয়বাদী হয়ে গিয়েছি এবং প্রশ্ন করেছিলাম মুক্তমনে সেগুলো এখন পর্যন্ত কোন সমকামী উত্তর দেয়নি বরং আমাকে নিয়ে অনেকে তো গালাগালিও পর্যন্ত করেছে তবে আমি মোটেও তাদের এসবে চিন্তিত নয় কারন সভ্য চিন্তাশীল মানুষ আমার প্রশ্ন পড়ছেন ।
তারা জানেন আমার প্রশ্নের গভীরতা কত বিশাল আর নিখুঁত । নাস্তিক্যবাদই মানবধর্ম, নাস্তিক ধর্ম মুক্তির পথ , দুনিয়াতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবে একমাত্র এই নাস্তিক ধর্ম < > যারা এইসব কথা বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে এনেছেন আর অনলাইনে নিজেদের শ্রেষ্ঠ মানবতাবাদী হিসেবে দাবি করেন তারা আমার নিচের সকল মুক্তমনা প্রশ্ন সমূহ 'নাস্তিক ধর্ম' দিয়ে সমাধান করে দিন । আমি আবার >নাস্তিক ধর্ম< গ্রহন করে আপনাদের দলে যোগ দিব ইনশাআল্লাহ ।
তাই তো কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেছিলেন বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখ দ্বিতীয় বিদ্যায়। বরং বিক্ষত হও প্রশ্নের পাথরে। বরং বুদ্ধির নখে শান দাও, প্রতিবাদ করো। অন্তত আর যাই করো, সমস্ত কথায় অনায়াসে সম্মতি দিও না। কেননা, সমস্ত কথা যারা অনায়াসে মেনে নেয়, তারা আর কিছুই করে না,তারা আত্মবিনাশের পথ পরিস্কার করে।
আমার প্রিয় পাঠকেরা আপনাদেরকে ঐ কবির কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে আর 'নাস্তিক ধর্ম'কে প্রচুর প্রশ্ন করবেন আর নিজেকে বিক্ষত করবেন সেই প্রশ্নের পাথরে । আর অনলাইনের সস্তা সমকামীরা আপনার প্রশ্নের উত্তর দিবে ত্যানা প্যাঁচিয়ে তাই অনায়াসে সম্মতি দিবেন না আপনিও, কারন সমস্ত কথা যারা অনায়াসে মেনে নেয়, তারা আর কিছুই করে না,তারা আত্মবিনাশের পথ পরিস্কার করে। হে আমার পাঠকবৃন্দ সব সময় মনে রাখবেন জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট মুক্তি সেখানে অসম্ভব.। পাঠক 'আমার অবিশ্বাস' কিতাবের ফতোয়া সমূহ মনোযোগ দিয়ে পড়বেন তাহলে আমার প্রশ্নের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে আপনাদের জন্য সুবিধা হবে ব্যাপক। আমার সব প্রশ্ন মুক্তমনেরই প্রশ্ন । এখন এই প্রশ্ন করার জন্য কোন সমকামী নাস্তিক যদি আমাকে হুমকিও দেয় তাতেও আমার ভয় নেই কারন সত্যকে আমি ভালবেসেছি এবং মৃত্যু পর্যন্ত সত্যর পক্ষে আমি থাকব ইনশাআল্লাহ । আসুন সকল পাঠক এক হয়ে আজকে আমরা বিখ্যাত 'নাস্তিক ধর্ম' প্রচারক মরহুম হুমায়ূন আজাদ স্যারের ফেমাস কিতাব "আমার অবিশ্বাস" থেকে সংশয় মন নিয়ে প্রশ্ন করি আর নিজেদেরকে সেই প্রশ্নের পাথরে বিক্ষত করি ।
🔵প্রথম পর্বটি পড়ে নিবেনঃ

https://omukderkotha1.blogspot.com/2019/12/blog-post.html

➡️প্রশ্নের পাথরঃ

🔺=> 'আমার অবিশ্বাস' ২০ নং পৃষ্ঠাঃ মানুষ অভিনয় করে যেতে থাকে, কিন্তু একদিন মঞ্চ ভেঙ্গে পড়ে । জীবনের ক্লান্তিকর পুনরাবৃত্তির চমৎকার বর্ণনা দিয়েছেন কামু এভাবেঃ জাগরণ, গাড়ি, চার ঘণ্টা কাজ, আহার, নিদ্রা , এবং সোমবার , মঙ্গলবাদ, ব্রধবার বৃহস্পতিবার, শুক্রবার এবং শনিবার একই তালে পুরাবৃত্ত - এই পথেই চলা অধিকাংশ সময় । কিন্তু একদিন দেখা দেয় 'কেন' । তখন সব কিছু মনে হতে থাকে অবসার্ড, নিরর্থক । এই নিরর্থকতার উদ্ভব ঘটে আমাদের চৈতন্য ও বিশ্বের মধ্যে যখন ঘটে সংঘর্ষ । মানুষ , কামু মনে করেন, এই নিরর্থকতাকে এড়াতে পারে না যতোদিন সে বেঁচে থাকে, তাই তাঁর মতে, অস্তিত্ব হচ্ছে 'চূড়ান্ত আশাহীনতা' । মানুষ এই নিরর্থকতাকে অতিক্রম করার কোনো উপায় দেখে না, কেননা বেঁচে থাকাই হচ্ছে নিরর্থকতা । সুধীন্দ্রনাথ এ পরিস্থিতির কথাই বলেছিলেন । 'মৃত্যু কেবল মৃত্যুই ধ্রুবসখা/ যাতনা কেবল যাতনা সুচির সাথীর হাহাকারে । এই নিরর্থকতার থেকে মুক্তির এক উপায় হল মৃত্যু: মৃত্যু পারে নিরর্থকতার সমাপ্তি ঘটাতে । তাই আত্মহত্যা একটি উপায় নিরর্থকতা থেকে মুক্তির।
মুক্তমনা প্রশ্ন ১১ = একজন মা তার সন্তানদের ভালবাসেন এটি কি আপনার মতে অভিনয় ? দুনিয়ার সকল মানুষ যা করছে সব অভিনয় হবে কেন ? একদিন এই মঞ্চ যে ভেঙ্গে যাবে সেটি কে ভাংবে ? কেন ভাংবে, কিভাবে ভাংবে ? কারা ভাংবে ? কি দিয়ে ভাংবে ? আপনি যে দাবি করলেন সবাই অভিনয় করছে , আপনি এসব বলার কে ? আপনি একজন মানুষ, আপনার কথা অন্য সকল মানুষ মানবে কেন , বিশ্বাস করবে কেন ? মানুষ অভিনয় করে যেতে থাকে তাহলে আপনি নিজেও কি এই কিতাব লিখে আমাদের সাথে অভিনয় করছেন না, কিভাবে ? আপনার এই লেখা যদি অভিনয় হয় তাহলে এটার ভিত্তি থাকে কিভাবে কারন এটিও তো এক সময় ভেংগে যাবে তাহলে ? আর যদি গুরুত্বপূর্ণ না হয় তাহলে এই কথা আপনি কেনই বা লিখলেন যেন মানুষ বিশ্বাস করে ? কামুর বর্ণনা আপনি কোন যুক্তিতে লিখলেন ? কামু কি সত্যর মাপকাঠি ? 'চার ঘণ্টা' এই শব্দর অস্তিত্ব কি আপনি প্রমান করতে পারবেন ? কি দিয়ে প্রমান করবেন ? যা দিয়ে প্রমান করবেন সেগুলা কি প্রমানের যোগ্য? নিদ্রা শুন্য থেকে কিভাবে সৃষ্টি হল , কেন সৃষ্টি হল , কিভাবে সৃষ্টি হল ? শুন্য থেকেই বা কেন নিদ্রার সৃষ্টি হওয়া দরকার হল , অন্যভাবে কেন সৃষ্টি হল না ? সোমবার , মঙ্গলবাদ, ব্রধবার বৃহস্পতিবার, শুক্রবার এবং শনিবার এসবের অস্তিত্ব আপনি কিভাবে প্রমান করতে পারবেন ? এসব বিশ্বাস করে কি মানুষ ভাইরাস আক্রান্ত হচ্ছে না ? এসবকে বিশ্বাস কেন করতে হবে ? খেয়াল করুন মানুষ বিনা প্রমাণে এসব বিশ্বাস করছে ? আপনি বলেছেন এভাবেই নাকি সময় পথ চলে প্রশ্ন হল সময়ের কি হাত পা আছে যে চলে , এটি কি অবৈজ্ঞানিক কথা নয় ? কোন বিজ্ঞানী কি প্রমান করেছেন যে সময় চলে ? অথবা সময়ের অস্তিত্ব কি প্রমাণ করা সম্ভব, কি দিয়ে প্রমান করবেন ? আমরা বিনাপ্রমাণে এসব সময় ও বারকে বিশ্বাস করে কি ভুল করছি না নাস্তিক ধর্মের দৃষ্টিতে ? চৈতন্য বা চেতনা কিভাবে ও কি দিয়ে প্রমান করা সম্ভব ? এসব কেন অদৃশ্যমান ? শুন্য থেকে চৈতন্য কিভাবে আমাদের কাছে আসলো ? দরকার কি ছিল ? সব কিছু যদি নিরর্থক হয় তাহলে তো আপনার এই লেখা সম্পূর্ণ অর্থহীন, যদি অর্থহীন হয় তাহলে আপনি কেন লিখলেন, এসব ভিত্তিহীন কথা ? আর আপনার লেখা যদি অর্থপূর্ণ হয় তাহলে আপনার আশা কিভাবে নিরর্থক হয় ? অস্তিত্বই কিভাবে আশাহীনতা হয় ? মানুষ এই নিরর্থকতাকে অতিক্রম করার কোনো উপায় দেখে না প্রশ্ন হল আপনি কি দুনিয়ার সব মানুষের সাথেই দেখা করে নিশ্চিত হয়েছেন যে তাদের কাছে আর কোন উপায় নেই ? আপনার এই কথা প্রমান আপনি করেননি তাহলে আপনার এই কথা অবিশ্বাসযোগ্য হবে না কেন ? বেঁচে থাকাই হচ্ছে নিরর্থকতা এই কথা স্বয়ং কি অর্থপূর্ণ ? যদি অর্থপূর্ণ হয় তাহলে আপনার দাবি নিরর্থক আর যদি নিরর্থক হয় তাহলে আপনার কথা অর্থপূর্ণ কিভাবে ও কি দিয়ে হল ? এই পরস্পর বৈপরীত্য আপনি কিভাবে নাস্তিক ধর্ম দিয়ে সমাধান করবেন ? সুধীন্দ্রনাথ এর কথা কেন বর্ণনা করলেন তিনি যে সত্য কথাই বলেছেন সেটার প্রমান কি দিয়ে করলেন ? একজন মানুষ আরেকজন মানুষের কথা কেন অবিশ্বাস করতে পারবে না ? অথবা সুধীন্দ্রনাথ এর কথা আপনি মানতে বাধ্য হলেন কেন ? আপনার কথা মেনে অনলাইনের সকল সমকামী কেন আত্মহত্যা করছে না , তারমানে তারা কি আপনার কথা বিশ্বাস করে না ? তারা কিভাবে সহিহ নাস্তিক হল ? আত্মহত্যা করাই যে সমাধান এটি আপনি বলার কে ? আত্মহত্যা একটি উপায় নিরর্থকতা থেকে মুক্তির আপনার এই কথা কি অর্থপূর্ণ ? যদি এটি অর্থপূর্ণ হয় তাহলে আপনার প্রথম কথা বাতিল আর যদি আপনার প্রথম কথা নিরর্থক হয় তাহলে আপনার প্রথম কথাই বাতিল হবে না কেন ? নাস্তিক ধর্মের যুক্তি দিয়ে সমাধান করুন ?
🔺=> 'আমার অবিশ্বাস' ২০ নং পৃষ্ঠাঃ তাহলে কি আমরা আত্মহত্যা করবো ? কামু, এবং সবাই বলবেন , না । আত্মহত্যা কোন সমাধান নয়। আত্মহত্যা করে নিরর্থক জীবনকে তাৎপর্যপূর্ণ করা সম্ভব নয়, তবে প্রত্যেক মানুষের জীবনেই কোনো কোনো মুহূর্ত আসে , যা তাকে আত্মহত্যা করার প্ররোচনা দেয়, কিন্তু সবাই আত্মহত্যা করে না, শুধু তারাই আত্মহত্যা করে বা সফল হয় আত্মহত্যায়, যারা হটাত জেগে ওঠা নিরর্থক প্ররোচনা কাটাতে পারে না, যেমন পারে নি জীবনানন্দের 'আট বছর আগের একদিন' - এর তরুন , যার জানালার পাশে দাঁড়িয়েছিল উটের গ্রীবার মতো এক নিস্তব্ধতা । আমি কয়েকবার আত্মহত্যাকে সমাধান হিশেবে বিবেচনা করেছি, এবং বাতিল করেছি, একবার একটি কবিতা লিখেছি ''ছাঁদ আরোহীর কাসিদা' নামে । রবীন্দ্রনাথ কি কখনো আত্মহত্যার কথা ভেবেছেন ? অবশ্যই ভেবেছেন, তাঁর প্রথম দিকের কাব্য গুলোতে এর নানা দাগ দেখতে পাই । আত্মহত্যা কোন সমাধান নয়, এটা একটি আস্তিত্ত্বিক পাপ । মানুষ তার নিজের ইচ্ছায় মরবে না, বেছে নেবে না স্বেচ্ছামৃত্যু । মানুষকে মরতে হবে মিটমাট না করে, জীবন আমাদের সুন্দর জীবন । তার কোন অর্থ নেই , অর্থের দরকার নেই, জীবনের অর্থ হচ্ছে জীবন , জীবনের অন্য অর্থ নেই বলেই জীবন সুন্দর ।
মুক্তমনা প্রশ্ন ১২ = প্রথমে আত্মহত্যাকে সমাধান হিশেবে বর্ণনা করে এরপরে নিজেই আবার সেটার বিপক্ষে ফতোয়া আনছেন এটি কি পরস্পর বৈপরীত্য নয় ? এটার সমাধান কি ? দুনিয়ার সব মানুষই নাকি কোন এক মুহূর্তে আত্মহত্যা করতে চায় প্রশ্ন হল আপনি কিভাবে দুনিয়ার সব মানুষের মনের খবর জেনে ফেললেন ? জীবানানন্দের কোন জাগার তরুন কি করেছে সেটি দিয়ে আমাদের কি ? সেই তরুন কি আমাদের আদর্শ হতে পারে ? আপনি আত্মহত্যাকে একবার সমাধান দিলেন আবার বাতিলও করলেন , ধরুন আপনি যখন আত্মহত্যাকে সমাধান দিলেন তখন ৪২০ জন নাস্তিক সমকামী আত্মহত্যা করলেন ঠিক পরের দিন আপনি আপনার আত্মহত্যা সমাধান নয় এই ফতোয়া দিলেন তখন যারা প্রথমে আত্মহত্যা করেছেন তাদের জীবন আপনি ধ্বংস করলেন এটি কিভাবে আপনি অমানবিক কাজ করলেন না ? তারা তো আত্মহত্যা করেছে ঠিকই কিন্তু আপনি যে পরে উল্টা ফতোয়া দিলেন সেটি তো তারা জানলেই পারলেন না এখানে 'যদির' কি সমাধান দিবে নাস্তিক ধর্ম ? রবীন্দ্রনাথ আত্মহত্যা করার কথা ভাবলে যে দুনিয়ার সকল মানুষই তাই ভাববে এই ওহী আপনার কাছে কে নাজিল করেছে জনাব ? প্রমান কি দিয়ে করলেন, কিভাবে করলেন ? মানুষ কিভাবে মরবে, নাকি মরবে না সেটি বলার আপনার কে ? আপনার কথা আমাদের কেন বিশ্বাস করতে হবে ? প্রথমে দাবি করলেন জীবনের কোন অর্থ নেই , অর্থের দরকার নেই আবার পরে দাবি করছেন জীবনের অর্থ হচ্ছে জীবন , এখানে আপনার প্রথম দাবি সত্য হলে দ্বিতীয় দাবি মিথ্যা , আর দ্বিতীয় দাবি সত্য হলে প্রথম দাবি মিথ্যা এই বৈপরীত্য সমাধান কি দিবেন আপনি ? আপনার আকিদা বিশ্বাস মতে জীবন যদি সুন্দর হয় তাহলে সেটি নিরর্থক হয় কিভাবে ? আপনি মানুষকে শুধু হতাশার দিকেই ফেলে দিচ্ছেন কেন ? আপনি কি চান না যে একজন মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে জীবন যাপন করুন ? এই বিষয় আপনার বিস্তারিত ফতোয়া নেই কেন ?
🔺=> 'আমার অবিশ্বাস' ২০ নং পৃষ্ঠাঃ কোনো পূর্বনির্ধারিত পথ নেই মানুষের জন্যে । কোনো গ্রন্থ পথ দেখাতে পারে না , কোনো মহাপুরুষ বা প্রবর্তক তার জন্যে পথ প্রস্তুত করতে পারেন না, ওই মহাপুরুষেরা তৈরি করেছেন নিজেদের পথ, অন্যদের নয় । প্রত্যেককে খুঁজে বের করতে হয় নিজেদের পথ, তৈরি করতে হয় নিজেদের রাস্তা, অনেকের পথ আমাকে আলোড়িত করেছে, অনেক গ্রন্থ আমাকে আলো দিয়েছে, কিন্তু আমি ওইসব পথে চলি নি, ওই আলোতে পথ দেখি নি ।
মুক্তমনা প্রশ্ন ১৩ = আপনার এই লেখাটি কি অন্যকে আলো দিতে পারে ? যদি পারে তাহলে আপনার নিজের কথাই ভুল আর যদি না পারে তাহলে আপনি নিজেও কেন এই কথা দ্বারা অন্যকে আলো দেখাতে চাইছেন ? অনলাইনের সমকামীরা ইসলামের বিরুদ্ধে যে মিথ্যাচার করে মানুষকে নাস্তিক ধর্মের দিকে দাওয়াত দিচ্ছে এবং দাবি করছে যে নাস্তিকতাই মানব ধর্ম । তাহলে তারা কি আপনার এই কথার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আপনাকে ছোট করছে না ? কোন গ্রন্থ পথ দেখাতে পারে না তাহলে সমকামীরা কেন অনলাইনে লেখা লিখি করে ? কারন তাদের এসব লেখা যুক্ত বইও অন্যকে পথ দেখাতে পারবে না , আপনার ফতোয়া অনুযায়ী তাদের সমস্ত লেখা এখনই বন্ধ করে দেয়া উচিৎ কিন্তু তারা তা করছে না কেন ? তারা কি আপনার থেকে নাস্তিক ধর্ম বেশি বুঝে ? সবাইকে খুঁজে বের করতে হবে নিজেদের পথ তাহলে আপনি এই বানী কেন অন্যকে বলছেন কারন এই বানী তো অন্যকে পথ দেখাতে পারবে না, শুধুই আপনাকেই পথ দেখাতে পারে , এটার সমাধান কি দিয়ে করবেন ? আপনাকে অনেক মানুষ আলোড়িত করেছে অথবা অনেক বই আলো দিয়েছে কিন্তু আপনি ঐসব পথে আলো দেখেন নি অর্থাৎ আপনার এই ফতোয়া মাফিক আমি যদি বলি নাস্তিক ধর্মের অন্ধ বিশ্বাসী সমকামীরা আমাকে অনেক পথ দেখিয়েছে , তাদের অনেক লেখা আমাকে আলোড়িত করেছে কিন্তু আমি সেসবে আলো দেখিনি শুধুই অন্ধকার দেখেছি, মিথ্যা দেখেছি, আমার সত্যের আলো দিয়ে, তাহলে আপনার ফতোয়া সরাসরি মেনে আমিও একই মাপকাঠি দিয়ে নাস্তিক ধর্ম এবং তাদের সকল লেখা অন্ধকার বলে দাবি করলাম এখন আমার এই কথা ভুল হয়েছে কিভাবে ? আপনি কি দিয়ে প্রমান করবেন যে আমার লেখা সত্য হয় নি ? আমার কথা ভুল হলে আপনার কথা কিভাবে সত্য হয় ? আপনার কথা সত্য হলে আমার কথা কিভাবে সত্য হয় না , নাস্তিক ধর্ম দিয়ে সমাধান দিন তো ?
🔺=> 'আমার অবিশ্বাস' ২১ নং পৃষ্ঠাঃ যদি আশা করি যে জীবনের নিরর্থকতাকে অতিক্রম করতে পারবো, তাহলে জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তুলি না, বরং আত্মহত্যা করি দার্শনিকভাবে । আশার প্রলোভন ভুললে কারো পক্ষে সৎ থাকা সম্ভব নয় , তখন সে পরিবৃত হয় মিথ্যা দিয়ে । কামুর অবসার্ড নায়ক সিসিফাসের মতো আমরাও ঘেন্না করি মৃত্যুকে, ভালবাসি জীবনকে, মৃত্যুকেই বরণ করতে হবে অবশেষে । তার কাছেই আত্মসমর্পণ করতেই হবে । মৃত্যু ছাড়া আর কিছু সম্পর্কেই আমরা নিশ্চিত নই ।
মুক্তমনা প্রশ্ন ১৪ = দার্শনিক ভাবে আপনি নিজে কেন প্রথমে আত্মহত্যা করলেন না অথবা আপনার মুরিদরা এই মহান কাজ কেন করলো না? তারমানে কি আপনাদের নিজেদের ফতোয়াই আপনারা অবিশ্বাস করছেন ? সত্য এবং মিথ্যা কাকে বলে ? এই সংজ্ঞা কে ঠিক করবে ? কেন ঠিক করবে ? কিভাবে ঠিক করবে ? কারা ঠিক করবে , কি দিয়ে ঠিক করবে? একজনের কাছে যা ভাল অন্যর কাছে তা অন্যায় আবার অন্যর কাছে যা অন্যায় আরেকজনের কাছে তা ভাল তাহলে এ ক্ষেত্রে সত্য মিথ্যা কে নির্ণয় করবে ? উদাহরণ আপনার এই কিতাব অনেক সমকামী অস্বীকার করে আবার অনেকে বাইবেল এর মত মনে করে, তাহলে এই ক্ষেত্রে সমাধান কি বা কে দেবে ? যুক্তি দিয়ে কি সত্য মিথ্যা যাচাই করা যায় ? কামুর অবসার্ড নায়ক সিসিফাস একজন মানুষ প্রাণী তার কথা কেন অন্য মানুষ বিশ্বাস করবে ? সে যা বলে তাই কি সত্য হয়ে যায় ? শুন্য থেকে মৃত্যু কিভাবে সৃষ্টি হল ? কেন ও কিভাবে সৃষ্টি হল ? কি দিয়ে সৃষ্টি হল? 'মৃত্যু ছাড়া আর কিছু সম্পর্কেই আমরা নিশ্চিত নই' এই কথার উপর আপনি সম্পূর্ণ নিশ্চিত হলেন কিসের ভিত্তিতে ? সেই মূল ভিত্তি কি যৌক্তিক ?
🔺=> 'আমার অবিশ্বাস' ২১ নং পৃষ্ঠাঃ আমরা ভয় পাই ওই চরম অন্ধকারকে , রবীন্দ্রনাথকে মনে পড়ে - যখন রোম্যান্টিককে চোখে দেখেছেন তখন প্রেমে পড়েছেন মৃত্যুর, কিন্তু বুড়ো বয়সে যখন সত্যিই মৃত্যু হানা দিতে থাকে তিনি ভয় পেতে থাকেন, তার কবিতা মৃত্যুর ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে । সিসিফাস নিয়তিকে মেনে নেয় শুধু নিয়তিকে অস্বীকার করার জন্যে, সে কখনো অসৎ নয়, সততা দিয়ে সে একরকমে তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলে তার জীবনকে । ওই তাৎপর্য নিরর্থকতাকে লুপ্ত করতে পারে না। তবে অস্বীকার করে তার কাছে আত্মসমর্পণ করতে । আমরা নিরর্থকতার মধ্যে বন্দী হয়ে আছি কিন্তু তা মেনে না নিয়ে, আপন পথ খুঁজে, তৈরি করে সার্থক করতে পারি নিজেদের । কোনো সার্থকতাই অবশ্য সার্থকতা নয়, সব কিছুই পরিশেষে নিরর্থক, অর্থপূর্ণ শুধু দুই অন্ধকারের মাঝখানের হটাত ঝলকানিটুকু ।
মুক্তমনা প্রশ্ন ১৫ = সকলেই নাকি ভয় পায় অন্ধকার নামক মৃত্যুকে প্রশ্ন হল আপনি কি দুনিয়ার সব মানুষকে জিজ্ঞাসা করে এরপরে নিশ্চিত হলেন যে সবাই মৃত্যুকে ভয় পায় ? আপনি নিজেই তো বলছেন আত্মহত্যার কথা বলেছেন , অনেকেই আত্মহত্যা করে তাহলে তারা কি মৃত্যুকে ভয় পাচ্ছে ? তারা যদি মৃত্যুকে ভয় না পায় তাহলে আপনি কিভাবে দাবি করছেন যে ''আমরা ভয় পাই ওই চরম অন্ধকারকে'' ? রবীন্দ্রনাথ এর কথার কি কোন মূল্য আছে অথবা নাস্তিক ধর্ম কি তার কথা ডিল করে ? "আমরা নিরর্থকতার মধ্যে বন্দী হয়ে আছি" দুনিয়ার সব মানুষকে আপনাকে বলেছে যে তারা অর্থহীন জগতে বন্দী আছে ? যদি বলে তাহলে সেটি কিভাবে সম্ভব কারন এই সময়ের মানুষের সাথে তো আপনার দেখাই হয়নি ? আর আগের সময়ে দুনিয়ার সব মানুষের সাথে দেখা করা কিভাবে পসিবল ? নাকি এটি অলৌকিক কিছু ? আপন পথ কিভাবে সন্ধান করা দরকার ? কেউ যদি এই প্রশ্নের উত্তর না জানে তাহলে সে কার থেকে জানবে ? কেন তার থেকে জানবে ? একজন মানুষ কি অন্য মানুষের পথ তৈরি করতে পারে , কারন বিবর্তন সত্য হলে যেমন বাঘ হরিণের জন্য কিছুই করে না তাহলে একজন মানুষ কেন অন্য মানুষকে পথ দেখাবে ? সব কিছুর পরিনতি যদি মৃত্যু হয় তাহলে দুই অন্ধকারের মাঝখানের হটাত ঝলকানিটুকু কিভাবে অর্থপূর্ণ হয় ? দুই অন্ধকারে যে আলো নেই সেটি আপনি কিসের মাধ্যমে নিশ্চিত জানতে পারলেন?
🔺=> 'আমার অবিশ্বাস' ২২ নং পৃষ্ঠাঃ বিশ্বাস কয়েক হাজার বছর ধরে দেখা দিয়েছে মহামারীরূপে, পৃথিবীর দীর্ঘস্থায়ী মহামারীর নাম বিশ্বাস । বিশ্বাস কাকে বলে ? আমরা কি বলি পিঁপড়েয় বিশ্বাস করি, সাপে বিশ্বাস করি, জলে বিশ্বাস করি বা বজ্রপাতে বা পদ্মানদীতে বিশ্বাস করি? এসব এবং এমন বহু ব্যাপারে বিশ্বাসের কথা উঠে না , কেননা এগুলো বাস্তব সত্য বা প্রমাণিত । যা সত্য , যা প্রমাণিত যা সম্পর্কে কোন সন্দেহ নেই তাতে বিশ্বাস করতে হয় না, কেউ আমরা বলি না যে আমি বিদ্যুৎে বিশ্বাস করি বা রোদে বিশ্বাস করি বা গাড়িতে বিশ্বাস করি । কেননা সত্য বা প্রমাণিত ব্যাপারে বিশ্বাস করতে হয় না , বিশ্বাস করতে হয় অসত্য, অপ্রমাণিত , সন্দেহজনক বিষয় । অসত্য অপ্রমাণিত কল্পিত ব্যাপারে আস্থা পোষণই হচ্ছে বিশ্বাস ।
মুক্তমনা প্রশ্ন ১৬ = আপনি যে এই কথা সমূহ লিখেছেন এসবের উপর কি আমি বিশ্বাস করব ? উত্তর যদি 'হ্যাঁ' হয় তাহলে আপনি নিজেই আমাদের মহামারীর দিকে দাওয়াত দিচ্ছেন, কেন ? উত্তর যদি 'না' হয় তাহলে আপনার নিজের কথাই যেখানে অবিশ্বাসযোগ্য সেখানে আপনার নিজের কথার গুরুত্ব কেন বিশ্বাসযোগ্য হবে ? আপনার এই লেখাটি পুরাটাই সন্দেহজনক কারন পিপড়ার নাম পিপড়া কে দিয়েছে প্রথম ? সে কোন প্রমানের ভিত্তিতে দাবি করেছে যে পিপড়ার নাম পিপড়াই হবে অন্য কোন নাম দেয়া যাবে না ? তার দেয়া নামেই কেন মানুষ পিপড়াকে পিপড়া বলে ডাকছে এটি কি সেই মানুষের অনুসরণ নয় ? এভাবে সাপ, জল , পদ্মানদী , বিদ্যুৎ , রোদ এগুলোর নাম কিসের ভিত্তিতে প্রমাণিত ? সেই প্রমান কে প্রথম পেশ করেছে ? কোন মানুষ যদি এসবের নাম ঠিক করে দিলেই সেটি প্রমান হয় তাহলে আমি যদি অনলাইনের সকল সস্তা সমকামীদের নাম দেই গরু, ছাগল , ভেড়া তাহলে কি এসব প্রমাণিত হবে ? আপনি যে দাবি করলেন 'বিশ্বাস করতে হয় অসত্য, অপ্রমাণিত , সন্দেহজনক বিষয়' এটি যে সত্য সেটার পক্ষে প্রমান কি ? আপনি আপনার বইতে একটি প্রমানও দেননি কিন্তু, কেন ? আপনি কিসের মাধ্যমে দাবি করলেন 'অসত্য অপ্রমাণিত কল্পিত ব্যাপারে আস্থা পোষণই হচ্ছে বিশ্বাস' ? আপনার এই কথা নিজে কি বিশ্বাসযোগ্য ? যদি বিশ্বাসযোগ্য হয় তাহলে তো আপনার নিজের কথাই অসত্য এবং অপ্রমাণিত হচ্ছে, এগুলোর সমাধান কি?
🔺=> 'আমার অবিশ্বাস' ২৯ নং পৃষ্ঠাঃ আকাশমণ্ডল কোনো বিশুদ্ধ পবিত্র স্থান নয়, তার সদস্যরাও কারো গৌরব প্রকাশ বা প্রচার করে না । এবং আমরা, আমাদের পৃথিবীও আকাশমণ্ডলেরই সদস্য । আমরাও ভ্রমন করে চলেছি সূর্যের চারদিকে - মহাজগতে ।
মুক্তমনা প্রশ্ন ১৭ = আপনি পুরো আকাশ ঘুরে কিভাবে বুঝলেন যে আকাশ কোন বিশুদ্ধ পবিত্র স্থান নেই ? শুন্য থেকে আকাশ কিভাবে সৃষ্টি হল ? কেন সৃষ্টি হল ? আমাদের পৃথিবীও আকাশমণ্ডলেরই সদস্য কেন ? শুন্য থেকে এই সদস্য কিভাবে গঠিত হল ? অন্য রকম হল না কেন সদস্যরা ? সূর্য কেন সৃষ্টি হল ? একটি শুন্য থেকে কিভাবে এত বড় সূর্য নিজে নিজেই তৈরি হল, কি দিয়ে তৈরি হল ? মহাবিশ্ব কেন সৃষ্টি হল ? মহাবিশ্ব কি নিজেই নিজের স্রষ্টা ? মহাবিশ্ব শুন্য থেকেই কেন সৃষ্টি হতেই হল ? মহাবিশ্ব কি হতে বের হয়েছে ? কোথায় প্রথম বের হয়েছিল , কখন তৈরি হয়েছিল ?
🔺=> 'আমার অবিশ্বাস' ২৯ নং পৃষ্ঠাঃ হেব্বইনবার্গ, বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী ও প্রথম তিন মিনিট ও চূড়ান্ত তত্ত্বের স্বপ্ন - এর লেখক, বলেছেন আমাদের চারপাশের পাথরগুলো যতোটুকু ঈশ্বরের গৌরব প্রচার করে নক্ষত্রগুলো তার থেকে একটুও কম বা একটুও বেশি প্রচার করে না ঈশ্বরের গৌরব । এগুলোর সাথে কোন সম্পর্ক নেই ঈশ্বরের , কোন দেবতার, আর সূর্য গ্রহ চাঁদ আলো বাতাস মেঘ বৃষ্টি কোন প্রভুর আশীর্বাদ নয় ।
মুক্তমনা প্রশ্ন ১৮ = আপনি বিনাপ্রমানে এই বিজ্ঞানীর ফতোয়া বিশ্বাস করে আপনিও কিভাবে মহামারীর স্বীকার হচ্ছেন না ? এই বিজ্ঞানীর কথায় কি দুনিয়ার সব বিজ্ঞানীরা একমত ? যদি 'হ্যাঁ' উত্তর হয় তাহলে সেটার প্রমান কি ? আর যদি 'না' উত্তর হয় তাহলে সেখানে বিজ্ঞানীরা তার কথায় একমত নয় আপনি সেই কথা কিভাবে বিনা প্রমাণে বিশ্বাস করছেন ? মানুষ আর পাথরের মধ্যে আপনি কি পার্থক্য বুঝেন, যদিও বিবর্তনে নাস্তিক ধর্মে এসব একই জিনিস অর্থাৎ উভয় দুর্ঘটনার ফসল ? আমাদের চারপাশে কোন পাথর ঈশ্বরের গৌরব প্রচার করেছে ? প্রমান দেন তো একটি ? আমি তো এমন কোন পাথর দেখিনি সে আমার কাছে এসে ঈশ্বরের দাওয়াত দিয়েছে ? সেটি কি অলৌকিক পাথর ? সমকামীরা কি সেই পাথরে বিশ্বাস করে ? পাথর যেমন অর্থহীন নক্ষত্র অর্থহীন তাহলে আপনার পুরো বইটিও তো অর্থহীন হবে না কেন ? সূর্য গ্রহ চাঁদ আলো বাতাস মেঘ বৃষ্টি এসব শুন্য থেকে এত পারফেক্ট কিভাবে সৃষ্টি হল ? না সৃষ্টি হলে কি হত ? এগুলো কি দিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ? কে সৃষ্টি করেছে ?
🔺=> 'আমার অবিশ্বাস' ২৯ নং পৃষ্ঠাঃ মোহগ্রস্ত নই আমি, আমি সৎ থাকতে চাই, সিসিফাসের মতো মেনে নিতে চাই জীবনের নিরর্থকতা এবং অস্বীকারও করতে চাই নিরর্থকতাকে । কিছুতেই বিভ্রান্ত হতে চাই না, মোহের কাছে সমর্পণ করতে চাই না নিজেকে । আমি জানি পথের শেষ মৃত্যুতে। সব কামনা ও সাধনার শেষে রয়েছে নির্বিকার মাটি ও ক্ষুধার্ত আগুন , কিন্তু আমি ভেঙ্গে পড়তে চাই না । রুপময় জীবনের শেষে মানুষের এই পরিনতিকে এক অপূর্ব কবিতায় পরিণত করেছিলেন জীবনানন্দ ।
মুক্তমনা প্রশ্ন ১৯ = আপনি আপনার "আমার অবিশ্বাস" কিতাবের ২৪ পৃষ্ঠায় বলেছেন পবিত্রতার কোনো বাস্তব রুপ নেই তাহলে এখন আমার প্রশ্ন হল 'মোহগ্রস্ত হওয়া আর না হওয়া' এটার বাস্তব অস্তিত্ব কেমন ? 'সৎ' এর বাস্তব রুপ কেরকম এবং কিভাবে এরকম ? সিসিফাস যাই বলেন সেটাই আপনি বিনা প্রমাণে কিভাবে বিশ্বাস করলেন, কেন করলেন ? সিসিফাস যদি চীনের সন্ত্রাসী নাস্তিকদের মত হত তাহলেও কি আপনি সেই সন্ত্রাস নাস্তিকের কথা মেনে নিতেন ? সিসিফাস কোন প্রমানের মাধ্যমে দাবি করেছে জীবন নিরর্থক ? এই প্রমানের কি ভিত্তি আছে ? এই ভিত্তি কে নির্ণয় করেছেন এবং কিসের মাধ্যমে সেই ভিত্তি সেট করেছেন, কারা করেছেন ? আপনি সিসিফাসের মতো মেনে নিতে চান জীবনের নিরর্থকতা আবার অস্বীকারও করতে চান এটি কি সংঘর্ষ বৈপরীত্য হচ্ছে না ? কেউ একই সাথে কিছু মেনে আবার একই সাথে সেটি অস্বীকার করে কিভাবে ? যাদের ব্রেন কাজ করে না তারা এরকম করতে পারেন কিন্তু একজন সুস্থ মানুষ কিভাবে তা বিশ্বাস করে ? আপনি আগে বলেছিলেন সবার নিজের পথ নিজেদেরই তৈরি করতে হবে তাহলে আপনি সিসিফাসের পথে কেন চলছেন ? সে যা বলেই সেটাই কি আপনি বিশ্বাস করেন ? সৎ কাকে বলে ? সৎ হওয়া কি যৌক্তিক ? বিবর্তনে একজন প্রাণী সৎ হয় না তাহলে একই প্রাণী মানুষ সৎ হবে কেন ? সৎ হওয়ার পিছনে যৌক্তিক কারন কি, যেখানে জীবনই নিরর্থক ? মোহগ্রস্ত সংজ্ঞা কে দিয়েছে ? তার কথার প্রমান কি ? মোহের কাছে সমর্পণ করা কেন খারাপ ? এটি যে খারাপ তা কে নির্ণয় করে দিয়েছে আপনাকে, প্রমান দেন ? বিবর্তনের আকিদা বিশ্বাস অনুযায়ী মোহের কাছে সমর্পণ করা কেন অন্যায় হবে যৌক্তিক ভাবে প্রমান করুন ? 'আমি জানি পথের শেষ মৃত্যুতে' এটার প্রমান কি ? মৃত্যুর পড়ে কিছুই নেই সেটি আপনি নিশ্চিত হলেন কোন প্রমানের ভিত্তিতে একই প্রমানের আলোকে যদি কেউ মৃত্যুর পরের জীবনে স্বীকার করে তাহলে সেটি ভুল হবে কিভাবে ? 'ক্ষুধার্ত আগুন' এই কথাটি কি বৈজ্ঞানিক ভাবে ভুল নয় ? আগুন কি মানুষের মত খায় অথবা ক্ষুধার্ত লাগে ? আগুনের আবার ক্ষুধা কিভাবে লাগে?জীবনানন্দ যাই বলবেন সেটিই কেন ভাল হবে ? আপনি অথবা আমরাই বা কেন তার মত একজন মানুষের কথা মানব ?
🔺=> 'আমার অবিশ্বাস' ২৯ নং পৃষ্ঠাঃ মৃত্যুর আগে তো আমরা অজস্র রুপ আর রসের ভেতর দিয়ে চলেছি । নির্জন খড়ের মাঠে পৌষের সন্ধায় আমরা হেঁটেছি । মাঠের পারে দেখেছি কুয়াশার ফুল ছড়িয়ে চলছে নদীর নরম নারী ।
মুক্তমনা প্রশ্ন ২০ = আপনারা এত কিছু থাকতে নারীর দিকেই কেন চোখ গেল ? তাও আবার তাদেরকে বলছেন নরম নারী আপনি কি তাদের দেহে হাত দিয়ে দেখেছিলেন যে তাদের দেহ নরম ছিল ? এর আগে আপনি সন্ধায় এক তরুণীকে চুইঙ্গামের মত চাবাতে চেয়েছিলেন এটি কি আপনাদের চরিত্র ? যে নারীদের দেখলে চুইঙ্গামের মত চাবাতে চান আর তাদের দেহ নিয়ে নরম নরম কথা বলেন ? আপনারা কি নারীদের সম্মান দিতে পারেন ? বিবর্তন সেগুলা এলাও করে না বলে নারীদেরকে আপনারা সম্মান করেন না ?

Related Posts

: