🧐বিষয়ঃ শয়তানের আয়াত/স্যাটানিক ভার্সেস/গারানীক কাহিনী
✍️লিখেছেনঃ এম ডি আলী
✍️লিখেছেনঃ এম ডি আলী
🔷ভূমিকাঃ খগেনদের অন্যতম গোঁজামিল মাস্টার সালমান রুশদীর কথা অনেকেই হয়ত জানেন না । প্রাণীটি অনেক পরিশ্রম করে জোড়াতালি দিয়ে ইসলামকে ভুল প্রমান করার চেষ্টা করেছে কিন্তু সফল হয়নি । যেমন হিরো আলম হতে চেয়েছিল বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নায়ক কিন্তু হায় বেচারা! খগেন সালমান রুশদীর অবস্থাও অনেকটা তাই । অনেক অন্ধ বিশ্বাসী নাস্তিক বলে কে কি মতামত দিল অথবা কে কি করলো সেটি নিয়ে নাস্তিক ধর্ম ডিল করে না অথচ এরাই আবার খগেন সালমান রুশদীর পক্ষে বরং তার মিথ্যাচারের পক্ষে সাফাই গাইতে ভুল করে না ! হাস্যকর লাগে আমার কাছে । কথায় আছে চোরের মায়ের বড় গলা !
সালমান রুশদীর মিথ্যাচারের জন্য আমি মোটেও অবাক নই কারন কুরআন যা বলে সেটার বিপরীত কর্ম করাই নাস্তিক ধর্মের অন্যতম মূল শিক্ষা । যেমনঃ সুরা বাকারা ২:৪২ = তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিও না এবং জানা সত্ত্বেও সত্যকে তোমরা গোপন করো না। এই আয়াতের বিপরীত কাজ যেমন সকল নাস্তিকদের জেনে বুঝেই মিথ্যা মিশাতে হবেই এবং জানা সত্ত্বেও তারা সত্যকে গোপন করবেই এটাই নাস্তিকদের ধর্মের শিক্ষা কারন তারা বিশ্বাস করে কুরআন নাকি বর্বর নাউজুবিল্লাহ । এখন আপনি মিথ্যাবাদীদের দলে থাকবেন নাকি সত্যবাদীদের দলে থাকবেন সেটি আপনার ব্যাক্তিস্বাধীনতা । শেষ পর্যন্ত পড়ুন সত্য জানুন ।
📣গারানীকের বিস্তারিত কাহিনীঃ
ইবনু শিহাব (রহ) হতে বর্ণিত আছে যে সূরা নাজম অবতীর্ণ হল এবং মুশরিকরা বলছিল যদি এই লোকটি তথা হযরত মুহাম্মদ (সা) আমাদের দেবতাগুলির বর্ণনা ভাল ভাষায় করতো তবে তো আমরা তাকে ও তার সাথীদের ছেড়ে দিতাম । কিন্তু তার অবস্থান তো এই যে সে তার ধর্মের বিরোধী ইহুদী ও খৃষ্টানদের চেয়ে বেশি খারাপ ভাষায় আমাদের দেবতাগুলির বর্ণনা দিচ্ছে এবং তাদেরকে গালি দিচ্ছে । ঐ সময় রাসুল (সা) ও তার সাহাবীদের কঠিন বিপদের মধ্যে ফেলে দেয়া হয়েছিল । মুশরিকদের হিদায়াত লাভ তিনি কামনা করছিলেন । যখন তিনি সূরা নাজম তিলওয়াত শুরু করেন এবং "তোমরা কি ভেবে দেখেছ লাত উজ্জা ও মানাত সম্পর্কে" পর্যন্ত পাঠ করেন তখন শয়তান দেবতাদের নাম উচ্চারনের সময় তার পবিত্র যুবানে কিছু কথা প্রক্ষিপ্ত করে । যথা "তোমরা কি ভেবে দেখেছ লাত উজ্জা ও মানাত সম্পর্কে যাদের থেকে সুপারিশের আশা করা যায়" - এটি ছিল শয়তানের ছন্দযুক্ত ভাষা । প্রত্যেক মুশরিকের অন্তরে এই কালেমা বসে যায় । প্রত্যেকের তা মুখস্ত হয়ে যায় । শেষ পর্যন্ত এটা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে যে হযরত মুহাম্মদ (সা) নিজের পূর্ব ধর্ম হতে ফিরে এসেছেন । যখন রাসুল (সা) সূরা নাজমের তিলওয়াত শেষ করে সিজদা করেন তখন সমস্ত মুসলমান ও মুশরিকরাও সিজদায় পড়ে যায় । ওয়ালীদ ইবনু মুগীরা অত্যন্ত বৃদ্ধ ছিল বলে সে এক মুষ্টি মাটি নিয়ে ওটা কপালে ঠেকিয়ে দেয় । সবাই বিস্মিত হয়ে যায় । কেননা রাসুল (সা) দুটো দলই সিজদায় ছিল । মুসলমানরা বিস্মিত ছিলেন এই কারনে যে মুশরিকরা আল্লাহর উপর ইমান আনে নাই এটা তারা ভালরূপেই জানতেন । অথচ কি করে তারা রাসুল (সা) ও মুসলমানদের সাথে সিজদা করলো ? শয়তান যে শব্দগুলি মুশরিকদের কানে ফুঁকে দিয়েছিল মুসলমানরা তা শুনতেই পান নাই । এ দিকে তাদের অন্তর খোলা ছিল । কেননা শয়তান শব্দের মধ্যে শব্দ এমনভাবে মিলিয়ে দেয় যে মুশরিকরা তাতে পার্থক্য করতে পারছিল না । সে তো তাদের মনে এই দৃঢ় বিশ্বাস জন্মিয়ে দিয়েছিল যে , স্বয়ং রাসুল (সা) এই সূরারই এই দুটো আয়াত পাঠ করেছেন । সুতরাং প্রকৃত পক্ষে মুশরিকরা তাদের দেবতাগুলিকেই সিজদা করেছিল । শয়তান এই ঘটনাকে এমনভাবে ছড়িয়ে দেয় যে এ খবর হাবশায় পৌঁছে গিয়েছিল । হযরত উসমান ইবনু মাযউন (রা) এবং তার সাথীরা যখন শুনতে পান যে , মক্কাবাসীরা মুসলমান হয়ে গেছে, এমনকি তারা রাসুল (সা) সাথে নামায পড়ছে এবং ওয়ালিদ ইবনু মুগীরা অধিক বুড়ো হওয়ার কারনে এক মুষ্টি মাটি উঠিয়ে নিয়ে তার মাথায় ঠেকিয়েছে এবং মুসলমানরা এখন পূর্ণ শান্তি ও নিরাপত্তা সাথে রয়েছে তখন তারা সেখান থেকে মক্কায় ফিরে আসার স্থির সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন । অতপর তারা খুশি মনে মক্কায় ফিরে আসেন । তাদের মক্কায় পৌছার পূর্বেই আল্লাহ তা"লা শয়তানের ঐ শব্দগুলির রহস্য খুলে দিয়েছিলেন এবং তা সরিয়ে ফেলে স্বীয় কালামকে রক্ষিত রেখেছিলেন । ফলে মুশরিকদের শত্রুতার অগ্নি আরও বেশি প্রজ্বলিত হয়ে উঠেছিল তারা মুসলমানদের উপর নতুন বিপদ আপদের বৃষ্টি বর্ষণ শুরু করে দিয়েছিল । আরেক ভাবে বর্ণিত হয়েছে যেমন কাতাদা (রহ) বলেন যে মাকামে ইবরাহীমের (আ) পাশে নামাযরত অবস্থায় রাসুল (সা) একটু তন্দ্রা এসে যায় এবং ঐ সময় শয়তান তাঁর যুবান মুবারকে এই কথা প্রক্ষিপ্ত করে এবং তাঁর যুবান দিয়ে বেরিয়ে যায় যে দেবতাদের সুপারিশের আশা করা যায় , মুশরিকরা এই কথাগুলি লুফে নেয় এবং শয়তান এটা ছড়িয়ে দেয় । তখন এই আয়াত অবতীর্ণ হয় (সূরা হজ ২২:৫৩,৫৪) এবং শয়তান লাঞ্ছিত হয়ে হয়।
☢️গারানীকের ঘটনাটি আরও বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছেঃ
* তাফসীরে ইবনে কাসীর, ১৪ খণ্ড , ৪৯০ থেকে ৪৯৪ পৃষ্ঠায়, ডঃ মুজিবুর রহমান অনুবাদকৃত ।
* তাফসীরে জালালাইন, ৪ খণ্ড, ৩৯৫ থেকে ৩৯৬ পৃষ্ঠায় ।
* তাফসীরে ইবনে আবাস, ২ খণ্ড , ৩৮৭ থেকে ৩৮৮ পৃষ্ঠায় ।
* তাফহীমূল কুরআন , সূরা হজের ব্যাখ্যা ।
* তাফসীরে আনওয়ারুল কুরআন, ৪ খণ্ড, ২৫০ থেকে ২৫১ পৃষ্ঠায় ।
* তাফসীর ফী যিলাযিল কুরআন, ১৩ খণ্ড, ২৪৬ থেকে ২৫০ পৃষ্ঠায় ।
* তাফসীরে মাযহারী, ৮ খণ্ড, ১৫৯ থেকে ১৬৪ পৃষ্ঠায় ।
* তাফসীরে আহসানুল বয়ান , পৃষ্ঠা ৫৯১ ।
* তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ , সূরা হজ ২২:৫৩,৫৪ ব্যাখ্যায় ।
* তাফসীরে আবু বকর জাকারিয়া, সূরা হজ ২২:৫৩,৫৪ ব্যাখ্যায় ।
* তাফসীরে জালালাইন, ৪ খণ্ড, ৩৯৫ থেকে ৩৯৬ পৃষ্ঠায় ।
* তাফসীরে ইবনে আবাস, ২ খণ্ড , ৩৮৭ থেকে ৩৮৮ পৃষ্ঠায় ।
* তাফহীমূল কুরআন , সূরা হজের ব্যাখ্যা ।
* তাফসীরে আনওয়ারুল কুরআন, ৪ খণ্ড, ২৫০ থেকে ২৫১ পৃষ্ঠায় ।
* তাফসীর ফী যিলাযিল কুরআন, ১৩ খণ্ড, ২৪৬ থেকে ২৫০ পৃষ্ঠায় ।
* তাফসীরে মাযহারী, ৮ খণ্ড, ১৫৯ থেকে ১৬৪ পৃষ্ঠায় ।
* তাফসীরে আহসানুল বয়ান , পৃষ্ঠা ৫৯১ ।
* তাফসীরে ফাতহুল মাজিদ , সূরা হজ ২২:৫৩,৫৪ ব্যাখ্যায় ।
* তাফসীরে আবু বকর জাকারিয়া, সূরা হজ ২২:৫৩,৫৪ ব্যাখ্যায় ।
👍>প্রশ্ন উত্তর পর্ব<👈
⛔️প্রশ্ন ১ = গারানীকের ঘটনার বিশুদ্ধতা বিষয়ে বিখ্যাত মুসলিম গবেষকরা কি বলেন ?
🆗উত্তরঃ তাফহীমূল কুরআন, সূরা হজ ২২:৫৩,৫৪, পৃষ্ঠা ২১৮ থেকে ২২২ বলা হয়েছেঃ ইবনে কাসীর ,বাইহাকী, কাযী আইয়ায, ইবনে খুযাইমা, কাযী আবু বকর ইবনুল আরাবী, ইমাম রাযী, কুরতুবী, বদরুদ্দীন আইনী, শাওকানী, আল্লামা আলুসী প্রমুখ মহোদয়গণ এই ঘটনাকে সম্পূর্ণ মিথ্যা গণ্য করেন । ইবনে কাসীর বলেন যতগুলো সনদের মাধ্যমে এ হাদিসটি বর্ণনা করা হয়েছে সবগুলোই মুরসাল ও মুনকাতে । কোন সহিহ মুত্তাসিল সনদের মাধ্যমে এ হাদিস আমি পাইনি । বাইহাকী বলেন হাদিস বিচারের যথার্থ পদ্ধতিতে এ ঘটনাটি প্রমাণিত নয় । কাযী আইয়ায বলে এর দুর্বলতা এখান থেকেই সুস্পষ্ট যে সিহাহ সিত্তার লেখকদের একজনও নিজের গ্রন্থে একে স্থান দেননি এবং কোন সহিহ মুত্তাসিল ত্রুটিযুক্ত সনদ সহকারে নির্ভরযোগ্য রাবীদের মাধ্যমেও এটি বর্ণিত হয়নি । ইমাম রাযী , কাযী আবু বকর ও আলুসী এর উপর বিস্তারিত আলোচনা করে শক্তিশালী যুক্তির ভিত্তিতে একে প্রত্যাখ্যান করেছেন । কিন্তু অন্যদিকে হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানীর মতো উচ্চস্তরের মুহাদ্দিস, আবু বকর জাসসাসের ন্যায় খ্যাতিমান ফকীহ, যামাখশারীর মতো যুক্তিবাদী মুফাসসির এবং ইবনে জারীররের ন্যায় তাফসীর, ইতিহাস ও ফিকাহর ইমাম একে সহিহ বলে স্বীকার করেন এবং একেই আলোচ্য আয়াতের ব্যাখ্যা গণ্য করেন ।
ডঃ মুজিবুর রহমান অনুবাদকৃত, তাফসীরে ইবনে কাসীর ১৪ খণ্ড , ৪৯০ থেকে ৪৯৪ পৃষ্ঠায় বিস্তারিত বলা হয়েছেঃ এটা মুসনাদে ইবনু আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে । ইমাম ইবনু জারীর ও এটা বর্ণনা করেছেন । এটা মুরসাল । মুসনাদে বাযযারেও এটা উল্লিখিত হওয়ার পরে রয়েছে যে শুধু এই সনদেই এটা মুত্তাসিলরুপে বর্ণিত হয়েছে । শুধু উমাইয়া ইবনু খালেদের মধ্যমেই এটা মুত্তাসিল হয়েছে । তিনি প্রসিদ্ধ ও বিশ্বাসযোগ্য বর্ণনাকারী । শুধু কালবীর পন্থাতেই এটা বর্ণিত হয়েছে । ইবনু আবি হাতিম (রহ) এটাকে দুটি সনদে গ্রহন করেছেন । কিন্তু দুটোই মুরসাল । ইবনু জারীরও মুরসাল রূপেই বর্ণনা করেছেন । গারানীকের এই রেওয়ায়েতটি মুরসাল । ইমাম বায়হাকীর (রহ) "কিতাবুল দালায়েলিন নবুওয়াহ" নামক গ্রন্থেও এ রেওয়ায়েতটি এনেছেন । ইমাম মুহাম্মদ ইবনু ইসহাকও (রহ) এটাকে স্বীয় "সীরাত" গ্রন্থে আনয়ন করেছেন । কিন্তু এই সব সনদই মুরসাল ও মুনকাতা ।
তাফসীরে জালালাইন ৪ খণ্ড, ৩৯৬ পৃষ্ঠাঃ গারানীকে কাহিনী অধিকাংশ মুহাদ্দিসের নিকট ঠিক নয় । কেউ কেউ এটাকে মওজু বলেছেন এবং নাস্তিক ও ইসলাম বিদ্বেষীদের আবিষ্কৃত আখ্যা দিয়েছেন । যে সকল ব্যাক্তি এ ঘটনাকে কিছুটা গুরুত্ব দিয়েছেন বা ধর্তব্য করেছেন । সে ক্ষেত্রে এর জাহেরী শব্দ দ্বারা যে সকল সন্দেহ কুরআন ও হাদিসের অকাট্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে । সেগুলোর বিভিন্ন উত্তর দেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়টি অতি স্পষ্ট যে এ (সূরা হজ ২২:৫৩,৫৪) আয়াতের ব্যাখ্যা এ ঘটনার উপর সীমাবদ্ধ নয় । ইমাম বায়হাকী (রহ) এ ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন বর্ণনা সূত্রে এ ঘটনা মোটেই স্বীকৃত নয় । ইমাম ইবনে খুযাইমা (রহ) বলেন এ কাহিনী কোন নাস্তিকদের উদ্ভাবিত ।
তাফসীরে ফী যিলাযিল কুরআন, ১৩ খণ্ড, ২৪৬ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছেঃ গারানীকের বিষয়ক বিস্তারিত বিবরণ একমাত্র ইবনে আবি হাতেমের বর্ণনা থেকে জানা যায় । ইবনে শিহাব নামের এক ব্যাক্তি হতে বিস্তারিত জানা যায় কিন্তু এই ব্যাক্তি সাহাবী কিনা তার কোন হদীস নাই ।
তাফসীরে ফী যিলযিল কুরআন ১৩ খণ্ড, ২৪৮, ২৪৯ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছেঃ হাদিস বেত্তারা সম্মিলিতভাবে বলেছেন সিহাহ সিত্তার প্রণেতাদের কেউই এই হাদিসটি রেওয়াতের করেনি আর যারা এটা রেওয়ায়েত করেছেন তারাও রাসুল (সা) পর্যন্ত বর্ণনা ধারা পৌঁচেছে বলে দাবি করেননি অর্থাৎ তারা এটাকে মুত্তাসীল হাদিস বলেননি । এ কাল্পনিক হাদিসটিকে কেন্দ্র করে প্রাচ্যের কিছু উর্বর মস্তিষ্ক ব্যাক্তি এবং এ দ্বীনকে দোষারোপকারী কিছু ব্যাক্তি অনেক কিছু কল্পনার জাল বুনেছে এবং মনে করেছে সে এভাবে ইসলামের এই শাশ্বত জীবন সিস্টেমকে সংশয়পূর্ণ করে তোলা যাবে - কিন্তু তাদের এই দিবা স্বপ্ন কোন দিন সফল হয়নি আর কোন দিন হবেও না। ব্যাধিগ্রস্ত কিছু অন্তর ছাড়া এসব বাজে কথায় কেউই কোন দিন কান দেয়নি আর এটাকে কোন দিন আলোচনার কোন বিষয়বস্তু হিসেবেও মনে করা হয়নি । আল কুরআন থেকে যা জানা যায় তাতে এ কথা বেশ বুঝা যায় যে রাসুল (সা) এর জীবনে এই ধরণের ঘটনা কোন দিন ঘটেনি এবং এ ঘটনাটি আলোচ্য আয়াতের কোন শানে নুযূলও নয় ।
তাফসীরে আহসানুল বয়ান , ৫৯১ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে গারানীকের ঘটনা কেউ কেউ বর্ণনা করে থাকেন । কিন্তু সত্যানুসন্ধানী উলামাদের কাছে তার কোন অস্তিত্ব নেই।
তাফসীরে ফাতহুল মাজীদ , সূরা হজ , ২২:৫৩,৫৪ আয়াতের ব্যাখ্যায় গারানীক বিষয়ে দশটি বর্ণনা নিয়ে এসেছেন শায়েখ আলবানী (রহ) এবং সে সকল বর্ণনার ত্রুটি উল্লেখপূর্বক বাতিল বলে আখ্যায়িত করেছেন ।
⛔️প্রশ্ন ২ = নবীজি (সা) এর রক্ষক যখন আল্লাহ তা"লা স্বয়ং,তখন কি করে শয়তানের বানী মহান আল্লাহর পবিত্র কালামের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে ?
🆗উত্তরঃ আল্লাহ নিজেই কুরআনে উত্তর দিয়েছেন > সুরা হাজ্জ্ব ২২:৫২,৫৩ = আমি আপনার পূর্বে যে সমস্ত রাসূল ও নবী প্রেরণ করেছি, তারা যখনই কিছু কল্পনা করেছে, তখনই শয়তান তাদের কল্পনায় কিছু মিশ্রণ করে দিয়েছে। অতঃপর আল্লাহ দূর করে দেন শয়তান যা মিশ্রণ করে। এরপর আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহকে সু-প্রতিষ্ঠিত করেন এবং আল্লাহ জ্ঞানময়, প্রজ্ঞাময়। এ কারণে যে, শয়তান যা মিশ্রণ করে, তিনি তা পরীক্ষাস্বরূপ করে দেন, তাদের জন্যে, যাদের অন্তরে রোগ আছে এবং যারা পাষাণহৃদয়। গোনাহগাররা দূরবর্তী বিরোধিতায় লিপ্ত আছে।
সুরা শু’য়ারা ২৬:২১০,২১১ = এই কোরআন শয়তানরা অবতীর্ণ করেনি। তারা এ কাজের উপযুক্ত নয় এবং তাদের ক্ষমতাও নেই ।
সুরা তাকভীর ৮১:২৫ = কুরআন বিতাড়িত শয়তানের বানী নয়।
সুরা শু’য়ারা ২৬:২১০,২১১ = এই কোরআন শয়তানরা অবতীর্ণ করেনি। তারা এ কাজের উপযুক্ত নয় এবং তাদের ক্ষমতাও নেই ।
সুরা তাকভীর ৮১:২৫ = কুরআন বিতাড়িত শয়তানের বানী নয়।
সুরা হিজর ১৫:৯ = আমি (আল্লাহ) স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক ।
সুরা ইয়া-সীন ৩৬:৫ = কুরআন পরাক্রমশালী পরম দয়ালু আল্লাহর তরফ থেকে অবতীর্ণ।
সুরা হা-মীম ৪১:৪২ = কুরআনে মিথ্যার প্রভাব নেই, সামনের দিক থেকেও নেই এবং পেছন দিক থেকেও নেই। এটা প্রজ্ঞাময়, প্রশংসিত আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।
সুরা হাক্বকাহ ৬৯:৪৩ = কুরআন বিশ্বপালনকর্তার কাছ থেকে অবতীর্ণ।
সুরা কিয়ামা’ত ৭৫:১৭ = এর সংরক্ষণ ও পাঠ আল্লাহরই দায়িত্ব।
সুরা ইয়া-সীন ৩৬:৫ = কুরআন পরাক্রমশালী পরম দয়ালু আল্লাহর তরফ থেকে অবতীর্ণ।
সুরা হা-মীম ৪১:৪২ = কুরআনে মিথ্যার প্রভাব নেই, সামনের দিক থেকেও নেই এবং পেছন দিক থেকেও নেই। এটা প্রজ্ঞাময়, প্রশংসিত আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ।
সুরা হাক্বকাহ ৬৯:৪৩ = কুরআন বিশ্বপালনকর্তার কাছ থেকে অবতীর্ণ।
সুরা কিয়ামা’ত ৭৫:১৭ = এর সংরক্ষণ ও পাঠ আল্লাহরই দায়িত্ব।
ড মুজিবুর রহমান অনুবাদকৃত, তাফসীরে ইবনে কাসীর ১৪ খণ্ড, ৪৯২ পৃষ্ঠায় ইমাম বাগাভী (রহ) জবাব দিয়েছেন । মূলত শয়তান ঐ শব্দগুলি লোকদের কানে নিক্ষেপ করে এবং তাদের মধ্যে এই খেয়াল জাগিয়ে দেয় যে এই শব্দগুলি রাসুল (সা) এর পবিত্র মুখ দিয়ে বের হয়েছে । প্রকৃত পক্ষে এরুপ ছিল না । এটা ছিল শুধু শয়তানী কাজ কারবার । এটা রাসুল (সা) এর মুখের আওয়াজ মোটেই ছিল না। এসব ব্যাপারে সর্বাধিক সঠিক জ্ঞানের অধিকারী একমাত্র আল্লাহ ।
ড মুজিবুর রহমান অনুবাদকৃত, তাফসীরে ইবনে কাসীর ১৪ খণ্ড, ৪৯৩ পৃষ্ঠায় মুসলিম গবেষক কাযী আইয়াযও (রহ) "কিতাবুল শিফা" গ্রন্থে একটি জবাব লিখেছেন যে মহান আল্লাহ বলেন আমি তোমার আগে সব রাসুল বা নবী পাঠিয়েছি তাদের কেউ যখনই কিছু আকাঙ্খা করেছে তখনই শয়তান তার আকাঙ্খায় কিছু প্রক্ষিপ্ত করেছে । এর দ্বারা রাসুল (সা) কে সান্ত্বনা দেয়া হয়েছে যে তার এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনই কারন নেই । কেননা তার আগের নবী রাসুলদেরও এরুপ ঘটনা ঘটেছিল । অর্থাৎ শয়তানের এসব কর্মে যেন নবীজি চিন্তায় না ভুগেন কারন আল্লাহ নিজেই শয়তানের সব কাজ ধ্বংস করে দিয়েছেন ।
তাফসীরে ফী যিলাযিল কুরআন ১৩ খণ্ড, ২৪৮ পৃষ্ঠায় আছে আল্লাহ যখন তাঁর ফয়সালার কথা জানিয়ে দিলেন এবং রাসুল (সা) এর কথাকে শয়তানের সে ছন্দময় কথা থেকে মুক্ত করলেন তখন মোশরেকরা আবারো তাদের ভুল পথে এবং মুসলমানদের বিরোধিতায় ফিরে গেলো বরং আগের থেকে আরও বেশি কঠিন হয়ে গেলো তাদের বিরোধি ভূমিকা ।
খেয়াল করুণ শয়তান কিন্তু তার খগনামীতে সফল হয়নি যদি হত তাহলে উপরের প্রশ্নটি যৌক্তিক হত কিন্তু যেখানে আল্লাহ নিজে শয়তানের সেই খগনামী ধ্বংস করে দিয়েছেন সেখানে উপরের প্রশ্নটিই বাতিল ও ভুল । শয়তান কিছুক্ষণের জন্য ধোঁকা দিয়েছে এরপর আল্লাহও সেটা ধ্বংস করে দিয়েছেন কিয়ামত পর্যন্ত । শয়তান ধোঁকা দিবে ওকে এই স্বাধীনতা দেয়াই হয়েছে আগে । মজার ব্যাপার হল যাদের জ্ঞান কম এবং ইসলামের অন্ধ বিদ্বেষী এ টাইপের মানুষরাই এই সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলাম বিষয়ে ভুল ব্যাখ্যা করে লোকদের ধোঁকা দেয়ার চেষ্টা করে । যেখানে আল্লাহ নিজে শয়তানের মিশ্রণ নষ্ট করে দিয়েছেন সেখানে শয়তান কিভাবে ধোঁকা দিয়ে সফল হল এই প্রশ্নই বাতিল । কুরআন সম্পূর্ণ শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্ত । এটাই সত্যি ও চূড়ান্ত কথা।
⛔️প্রশ্ন ৩ = নিচের হাদিসটি থেকে জানা যায়, সুরা নাজমের আয়াত আবৃত্তি করার পরে শুধু মুসলিমগণই নয়, মুশরিকরাও নবী মুহাম্মদের (সা) সাথে তাঁর অনুসরণ করে সকলে সিজদা করলো। কিন্তু সেই সময়ে তো মুহাম্মদ (সা)এর সাথে মুশরিকদের চরম দ্বন্দ্ব এবং শত্রুতা চলছে। কী এমন হলো, যার ফলে নবী মুহাম্মদ (সা) এবং তাঁর অনুসারীরা, সেই সাথে মুশরিকরাও তাঁরই সাথে একত্রে কোরআনের একটি সুরার সাথে আল্লাহর উদ্দেশ্যে সিজদা করলো? এমন কী ঘটে গেল? এরকম তো হওয়ার কথা নয়। ভেবে দেখুন, এত বড় আশ্চর্য ঘটনা কীভাবে ঘটে?
ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৪৮৬২ , সহিহ হাদিসঃ ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সূরাহ নাজমের মধ্যে সাজদাহ্ করলেন এবং তাঁর সঙ্গে মুসলিম, মুশরিক, জিন ও মানব সবাই সাজদাহ্ করল। আইয়ুব (রহ.)-এর সূত্রে ইব্রাহীম ইব্নু তাহ্মান (রহ.) উপরোক্ত বর্ণনার অনুসরণ করেছেন; তবে ইব্নু উলাইয়াহ (রহ.) আইয়ূব (রহ.)-এর সূত্রে ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর কথা উল্লেখ করেননি।
ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৪৮৬৩ , সহিহ হাদিসঃ আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, সাজদাহর আয়াত সম্বলিত অবতীর্ণ হওয়া সর্বপ্রথম সূরাহ হলো আন-নাজম। এ সূরার মধ্যে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাজদাহ্ করলেন এবং সাজদাহ্ করল তাঁর পেছনের সকল লোক। তবে এক ব্যক্তিকে আমি দেখলাম, এক মুঠ মাটি হাতে তুলে তাতে সাজদাহ্ করছে। এরপর আমি তাকে কাফের অবস্থায় নিহত হতে দেখেছি। সে হল ‘উমাইয়াহ ইব্নু খাল্ফ।
ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৪৮৬২ , সহিহ হাদিসঃ ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সূরাহ নাজমের মধ্যে সাজদাহ্ করলেন এবং তাঁর সঙ্গে মুসলিম, মুশরিক, জিন ও মানব সবাই সাজদাহ্ করল। আইয়ুব (রহ.)-এর সূত্রে ইব্রাহীম ইব্নু তাহ্মান (রহ.) উপরোক্ত বর্ণনার অনুসরণ করেছেন; তবে ইব্নু উলাইয়াহ (রহ.) আইয়ূব (রহ.)-এর সূত্রে ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর কথা উল্লেখ করেননি।
ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৪৮৬৩ , সহিহ হাদিসঃ আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, সাজদাহর আয়াত সম্বলিত অবতীর্ণ হওয়া সর্বপ্রথম সূরাহ হলো আন-নাজম। এ সূরার মধ্যে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাজদাহ্ করলেন এবং সাজদাহ্ করল তাঁর পেছনের সকল লোক। তবে এক ব্যক্তিকে আমি দেখলাম, এক মুঠ মাটি হাতে তুলে তাতে সাজদাহ্ করছে। এরপর আমি তাকে কাফের অবস্থায় নিহত হতে দেখেছি। সে হল ‘উমাইয়াহ ইব্নু খাল্ফ।
🆗উত্তরঃ খুবই সহজ প্রশ্ন আর দুইভাবে উত্তর দেয়া যায় । প্রথম হল > সহজ নসরুল বারী শরহে সহীহ বুখারী, ৯ খণ্ড, ৬২০ পৃষ্ঠায় মুশরিকদের সিজদাহ করার কারন বর্ণনা করেছেন হযরত শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলবি (রহ) । তিনি লিখেন, সে সময় আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল । তাই সকলেই ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় সিজদাহ দিতে বাধ্য হয়েছিল । কিন্তু এক হতভাগা যার অন্তর ছিল মোহর করা । সে সিজদাহ করলো না । কিন্তু সেও জমি থেকে মাটি নিয়ে অল্প পরিমান কপালে লাগাল । সে বলল আমার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট । বিস্তারিত দেখুন ফাওয়ায়েদে উসমানি, সূরা নাজম । - প্রশ্নকর্তা নিজেই যেহেতু স্বীকার করেছেন এটি আশ্চর্য ঘটনা সুতরাং কুরআনের মোজেজা বলতে আমারও দ্বিমত নেই অর্থাৎ এটি আসলেই আশ্চর্য ঘটনা ।
দ্বিতীয় উত্তর হচ্ছে > উপরের বর্ণিত গারানীক কাহিনী থেকে । যেই সব গবেষকগণ এই ঘটনাকে বিশুদ্ধ বলতে চেয়েছেন তাঁদের দৃষ্টিতে এই প্রশ্নের উত্তর হল নবীজির (সা) মুখ থেকে কিছুক্ষণের জন্য কাফেরদের দেবতাদের প্রশংসা বের হয়ে যায় শয়তানের ধোঁকায় আর কাফেররা মনে করে নবীজি (সা) মনে হয় তাদের দেবতাদের মেনে নিয়েছেন, আসলে তা নয় । সুতরাং কাফেররা না বুঝেই সিজদা দিয়েছিল এরপরে অবশ্য জিবরাইল ফেরশতা নবীজিকে এই বিষয়ে জানানোর পরে তিনি কাফেরদের সেটি জানায় আর এতে উগ্র কাফেররা আরও ভয়ংকর হয়ে উঠে নবীজির প্রতি । তাছাড়া নবীজি (সা) কে না জিজ্ঞাসা করেই কাফেররা সিজদা দেয় আর এটি ছড়িয়ে দিয়েছিল সেহেতু বুঝা যায় যে কাফেররা না বুঝেই এই কাজ করে তাই এখানে কাফেরদের অজ্ঞতা দায়ী কারন নবীজি (সা) কাফেরদের সিজদা দিতে বলেননি অথবা নবীজি ওদেরকে বলেননি যে তোমরা এটি ছড়াও । বরং আল্লাহ তাঁর ফেরেশতা জিবরাইল (আ) কে দিয়ে নবীজি (সা) কে সংশোধন করলে তিনি সেটা প্রকাশ করেন আর তাতে কাফেররা আরও ক্ষেপে যায় । সুতরাং অজ্ঞতার কারনে না বুঝেই কাফেররা সিজদা দেয় ।
⛔️প্রশ্ন ৪ = শয়তানের এই আয়াতটি নিয়ে যে মুসলিম স্কলারগণ বিব্রত ছিলেন, তা পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় একটি হাদিস থেকে। দেখুন, একটি সহিহ হাদিসে বর্ণিত আছে, ইবনু আব্বাস (রা) কোরআনের আয়াতের লাত শব্দের অর্থ বানিয়েছিলেন, একজন ব্যক্তি। দাবি করা হয়েছে, সেই ব্যক্তি যিনি হাজীদের জন্য ছাতু গুলাতো, এখানে দেবী লাত নয়- তার কথা বলা হয়েছে। অথচ, সহজেই বোঝা যায়, এখানে লাত এবং উজ্জা বলতে কী বোঝানো হয়েছে। এটি কি সাহাবীর ভুল ব্যাখ্যা নয় ? যেমনঃ ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ৪৮৫৯ , সহিহ হাদিসঃ ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি আল্লাহ্র বাণী اللاَّتَ وَالْعُزَّى এর ব্যাখ্যায় বলেন, এখানে ‘লাত’ বলে এ ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে, যে হাজীদের জন্য ছাতু গুলত।
🆗উত্তরঃ ইসলাম বিষয়ে পড়াশোনা নেই বলেই এমন হাস্যকর শিশুসুলভ প্রশ্ন করেছেন তারা । মুসলিম গবেষকগণ মোটেও বিব্রত ছিলেন না বরং তারা এই ঘটনাকে একেবারেই সাধারন মনে করতেন এমনকি কিছু কিছু গবেষকতো এই কাহিনীকে কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন বলেও মত দিয়েছেন । সুতরাং কোন মুসলিম স্কলারগন এই কাহিনী নিয়ে মোটেও বিব্রত ছিলেন না । "মুসলিম স্কলারগণ এই ঘটনা নিয়ে বিব্রত ছিলেন" এটি সমকামীদের একটি মূর্খতাময় ভয়ংকর মিথ্যাচার ।
এখন আসি প্রশ্নের দ্বিতীয় অংশে সেখানে আরও মিথ্যাচার করা হয়েছে । হযরত আব্বাস (রা) নাকি অর্থ বানিয়েছেন ! হাহাহাহা । আসলে যে প্রাণী ক্লাস ওয়ানে তিনবার ফেইল করে সে এই টাইপের জালিয়াতি করবেই এটি স্বাভাবিক । হযরত আব্বাস (রা) একদম সঠিক ব্যাখ্যাই করেছেন । কেন এই ব্যাখ্যা করেছেন সেটি স্পষ্ট বলা আছে সহজ নসরুল বারী শরহে সহীহ বুখারীর খণ্ড ৯ , ৬১৮ পৃষ্ঠায় । কুরআনের আয়াত "তোমরা কি ভেবে দেখেছ লাত ও উজ্জা সম্বন্ধে" - হযরত আব্বাস (সা) বলেন এখানে লাত বলে এক ব্যাক্তিকে বুঝানো হয়েছে , যে হাজীদের জন্য ছাতু গুলত । কুরআনের আয়াতের সাথে হাদিসের স্পষ্ট মিল রয়েছে । লাত ছিল একজন মানুষ । যার নাম ছিল আমর ইবনে লুহাই । অনেকে বলেন তার নাম রাবীআ ইবনে হারিসা । সে হজের মৌসুমে তায়েফ কিংবা মক্কায় একটি পাথরের পাশে বসতো ও সেখানে ছাতু এবং ঘি মিশ্রিত করে হাজীদেরকে আপ্যায়ন করতো । সে দীর্ঘদিন বেঁচেছিল । যখন সে মারা যায় তখন তার সৃতি হিসেবে ওই পাথরকে তারা মূর্তির রুপ দিয়ে পূজা করতে শুরু করলো । আর এ পাথরের নাম রেখে দিল লাত । বলা হয়, যে তার ছাতু খেত সে মোটা হত বিধায় তার সৃতিস্বরূপ ওই পাথরকে পূজা করতে শুরু করলো ।
পাঠক স্পষ্ট বুঝাই যাচ্ছে যে কুরআনের আয়াতে লাত বলতে এমন এক দেবতার কথা বলা হয়েছে যাকে অমুসলিমরা পূজা করতো এবং এই লাত একজন মানুষ ছিল । সুতরাং হযরত আব্বাস (রা) যেই ব্যাখ্যা করেছেন সেটি নিঃসন্দেহে স্পষ্ট এবং সঠিক ব্যাখ্যা তিনি নিজ থেকে কোন অর্থ বানাননি বরং নাস্তিক ধর্মের অন্ধ বিশ্বাসীরা হযরত আব্বাস (রা) কে নিয়ে মিথ্যাচার এবং মর্মান্তিক জালিয়াতি করেছে যা খুবই দুঃখজনক ।
⛔️প্রশ্ন ৫ = শয়তানের প্ররোচনায় আয়াত নাজিল হয়ে থাকলে, সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি যেটি ওঠে, তা হচ্ছে, নবী মুহাম্মদ (সা) কী কে আল্লাহর ফেরেশতা আর কে শয়তান, তার পার্থক্য বুঝতেন না? এমনও তো হতে পারে, সেই প্রথম যেদিন জিব্রাইলের আবির্ভাব হয়েছিল, সেই আসলে শয়তান ছিল। পুরো কুরআনই আসলে শয়তানের আয়াত। মাঝখানে সত্যিকারের আল্লাহ দুইটি সঠিক সুরা নাজিল করতে পেরেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে শয়তান আবার সেই আয়াতদুটি সংশোধন করে দিয়েছিলেন। অর্থাৎ, আমি বোঝাতে চাচ্ছি, আমরা কীভাবে শতভাগ নিশ্চিত হবো যে, যেই আল্লাহকে মুসলমানগণ সাড়ে ১৪০০ বছর ধরে উপাসনা করছে, সে আসলে শয়তান আর যাকে তারা শয়তান ভাবছে, সেই আসলে আল্লাহ কিনা। এরকম নিশ্চিতভাবে বোঝার উপায় কী? যেখানে খোদ নবী মুহাম্মদই ধোঁকা খেয়ে গিয়েছিলেন, সেখানে ধোঁকাটি আরো বড় কিনা, রিভার্স ধোঁকা কিনা, আমাদের নিশ্চিত হওয়ার উপায় কী?
🆗উত্তরঃ নিশ্চিত হবার উপায় স্বয়ং আল কুরআন । কুরআনই বলেছে সকল প্রকার মিথ্যা হতে কুরআন মুক্ত । নাস্তিক অন্ধ বিশ্বাসীরা দাবি করতে চাইছে শয়তান বেশি শক্তিশালী আল্লাহর থেকে তাহলে প্রশ্ন হল সুরা বাকারা ২:৩৪ = এবং যখন আমি আল্লাহ হযরত আদম (আঃ)-কে সেজদা করার জন্য ফেরেশতাগণকে নির্দেশ দিলাম, তখনই ইবলীস ব্যতীত সবাই সিজদা করলো। সে (নির্দেশ) পালন করতে অস্বীকার করল এবং অহংকার প্রদর্শন করল। ফলে সে কাফেরদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেল। ইবলিশ নিজেকে কেন কাফের হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারল না ? ইবলিশ কেন অনন্তকাল জান্নাতে থাকতে পারল না ? সুতরাং আমি বোঝাতে চাচ্ছি যেখানে আল্লাহ সর্বশক্তিমান সেখানে শয়তানের কাছে তিনি পরাজয় স্বীকার করবেন এটি হাস্যকর কথা । আর কুরআন শয়তান নাজিল কেন করবে ? এর উত্তর কুরআন হাদিস থেকেই সমকামীদের উত্তর দিতে বলব আমি । রাসুল (সা) ধোঁকা খাননি বরং খেতে ধরেছিল কিন্তু আল্লাহ সেই ধোঁকা থেকে তাঁকে রক্ষা করেন । সুতরাং শয়তান থেকে নবীজি ধোঁকা খেয়েছেন এবং আবার ধোঁকা খেতে পারে এসব দাবি ভ্রান্ত এবং ভুলে ভরা দাবি ।
আসলে নাস্তিকরাও জানে যে তাদের এই প্রশ্ন কতটা দুর্বল ও শিশুময় আর শয়তানের অপরাধের জন্য আল্লাহ শয়তানকে জাহান্নাম দিবেন । সুরা বাকারা ২:৩৯ = আর যারা কুফুরি করেছে এবং আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে তারাই আগুনের অধিবাসী, তারা সেখানে স্থায়ী হবে ।
মজার ব্যাপার হল উপরের প্রশ্নর একটি লাইনেই কিন্তু সব উত্তর রয়েছে । লাইনটি হল "মাঝখানে সত্যিকারের আল্লাহ দুইটি সঠিক সুরা নাজিল করতে পেরেছিলেন" আর আপনারা হয়ত ভুলে গেছিলেন আল্লাহ নিজেই শয়তানের সেই শয়তানী সব নষ্ট করে দেয়। আল্লাহ নিজে যেখানে কুরআনে বলেছেন শয়তানের এই কাজ তিনি নষ্ট করে দিয়েছেন সেখানে আপনাদের উপরের প্রশ্নটিই ধ্বংস হয়ে গেছে । আল্লাহ নিজেই বলেছেনঃ সুরা হিজর ১৫:৯ = আমি (আল্লাহ) স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক। সুতরাং আল্লাহ নিজে কুরআন রক্ষা করবেন সেখানে নবীজির ধোঁকা খাওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না ।
মজার ব্যাপার হল উপরের প্রশ্নর একটি লাইনেই কিন্তু সব উত্তর রয়েছে । লাইনটি হল "মাঝখানে সত্যিকারের আল্লাহ দুইটি সঠিক সুরা নাজিল করতে পেরেছিলেন" আর আপনারা হয়ত ভুলে গেছিলেন আল্লাহ নিজেই শয়তানের সেই শয়তানী সব নষ্ট করে দেয়। আল্লাহ নিজে যেখানে কুরআনে বলেছেন শয়তানের এই কাজ তিনি নষ্ট করে দিয়েছেন সেখানে আপনাদের উপরের প্রশ্নটিই ধ্বংস হয়ে গেছে । আল্লাহ নিজেই বলেছেনঃ সুরা হিজর ১৫:৯ = আমি (আল্লাহ) স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক। সুতরাং আল্লাহ নিজে কুরআন রক্ষা করবেন সেখানে নবীজির ধোঁকা খাওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না ।
নবীজি মুহাম্মদ (সা) জিবরাইলকে দেখেছিলেন > যেমন ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিস ৬ , সহিহ হাদিসঃ ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল। রমাযানে তিনি আরো অধিক দানশীল হতেন, যখন জিবরারীল (আঃ) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। আর রমাযানের প্রতি রাতেই জিবরীল (‘আঃ) তাঁর সাথে দেখা করতেন এবং তারা একে অপরকে কুরআন তিলাওয়াত করে শোনাতেন। নিশ্চয়ই আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রহমতের বায়ু অপেক্ষাও অধিক দানশীল ছিলেন।
নবীজি মুহাম্মদ (সা) শয়তানকেও দেখেছিলেন > ihadis.com, সহিহ বুখারি , হাদিসঃ ৪৬১ , সহিহ হাদিসঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ গত রাতে একটা অবাধ্য জ্বিন হঠাৎ আমার সামনে প্রকাশ পেল। রাবী বলেন, অথবা তিনি অনুরূপ কোন কথা বলেছেন, যেন সে আমার সালাতে বাধা সৃষ্টি করে। কিন্তু আল্লাহ আমাকে তার উপর ক্ষমতা দিলেন। আমি ইচ্ছা করেছিলাম যে, তাকে মসজিদের খুঁটিঁর সাথে বেঁধে রাখি, যাতে ভোর বেলা তোমরা সবাই তাকে দেখতে পাও। কিন্তু তখন আমার ভাই সুলায়মান (‘আঃ)–এর এই উক্তি আমার স্মরণ হলো, “হে প্রভু! আমাকে এমন রাজত্ব দান কর, যার অধিকারী আমার পরে আর কেউ না হয়”- (সূরা সোয়াদ ৩৮/৩৫)। (বর্ণনাকারী) রাওহ্ (রহঃ) বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেই শয়তানটিকে অপমানিত করে ছেড়ে দিলেন।
সুতরাং নবীজি মুহাম্মদ (সা) শয়তান আর জিবরাইল ফেরেশতার মাঝে পার্থক্য করতে পারতেন না এই দাবি ভুল । নবীজি (সা) নামাজের মধ্যে তন্দ্রার মধ্যেই শয়তান সেই ধোঁকা দেয় যদিও এরপরেই আল্লাহ সেটি নষ্ট করে দেয় ।
⛔️প্রশ্ন ৬ = শয়তান ওহী নিয়ে আসতেন ?
যেমন ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৫৪৪১ , সহিহ হাদিসঃ আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘ঘণ্টা হলো শাইতানের বাঁশি’।
ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ২ , সহিহ হাদিসঃ উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ হারিস ইব্নু হিশাম (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনার নিকট ওয়াহী কিরূপে আসে?’ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ [কোন কোন সময় তা ঘন্টা বাজার মত আমার নিকট আসে। আর এটি-ই আমার উপর সবচেয়ে বেদনাদায়ক হয় এবং তা শেষ হতেই মালাক (ফেরেশতা) যা বলেন তা আমি মুখস্ত করে নেই, আবার কখনো মালাক মানুষের রূপ ধারণ করে আমার সাথে কথা বলেন। তিনি যা বলেন আমি তা মুখস্ত করে নেই।] ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি তীব্র শীতের সময় ওয়াহী নাযিলরত অবস্থায় তাঁকে দেখেছি। ওয়াহী শেষ হলেই তাঁর ললাট হতে ঘাম ঝরে পড়তো।
যেখানে নবী নিজেই বলেছেন ঘণ্টা শয়তানের বাঁশি আর নবীর (সা) কাছে ওহী আসে ঘণ্টার মত তাহলে শয়তান কি ওহী আনছে না ?
যেমন ihadis.com, সহিহ মুসলিম, হাদিসঃ ৫৪৪১ , সহিহ হাদিসঃ আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘ঘণ্টা হলো শাইতানের বাঁশি’।
ihadis.com, সহিহ বুখারি, হাদিসঃ ২ , সহিহ হাদিসঃ উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ হারিস ইব্নু হিশাম (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনার নিকট ওয়াহী কিরূপে আসে?’ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ [কোন কোন সময় তা ঘন্টা বাজার মত আমার নিকট আসে। আর এটি-ই আমার উপর সবচেয়ে বেদনাদায়ক হয় এবং তা শেষ হতেই মালাক (ফেরেশতা) যা বলেন তা আমি মুখস্ত করে নেই, আবার কখনো মালাক মানুষের রূপ ধারণ করে আমার সাথে কথা বলেন। তিনি যা বলেন আমি তা মুখস্ত করে নেই।] ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি তীব্র শীতের সময় ওয়াহী নাযিলরত অবস্থায় তাঁকে দেখেছি। ওয়াহী শেষ হলেই তাঁর ললাট হতে ঘাম ঝরে পড়তো।
যেখানে নবী নিজেই বলেছেন ঘণ্টা শয়তানের বাঁশি আর নবীর (সা) কাছে ওহী আসে ঘণ্টার মত তাহলে শয়তান কি ওহী আনছে না ?
🆗উত্তরঃ শয়তান যদি ওহী নিয়ে আসতই তাহলে শয়তান কখনোই আল্লাহকে মানতে বলতো না । বরং আল্লাহ যা বলেছেন সেটার বিপরীত কাজই করতে বলতো শয়তান, যেমনটি সে করেছে, যদিও সফল হয়নি । সুতরাং শয়তান ওহী নিয়ে আসে এই অভিযোগ বাতিল এবং ভুল।
"ঘণ্টা বাজার মত মনে হওয়া" আর "স্বয়ং ঘণ্টা" দুটি শব্দ এবং অর্থই আলাদা । সেখানে অন্ধ বিশ্বাসী নাস্তিকরা কিভাবে এই দুটোকে এক করে মিলিয়ে মিথ্যাচার করলো সেটি বিশাল প্রশ্নর দাবি রাখে । আরও সহজে বিষয়টি বুঝুন । যেই হাদিসে নবীজি (সা) বলেছেন যে ঘণ্টা বাজার মত ওহী আসে এই ওহী যে শয়তানের ওহী এই কথা কি নবীজি (সা) বলেছেন ? উত্তর হচ্ছে না । সুতরাং যেহেতু নবীজি (সা) এমন কিছুই বলেননি সেহেতু শয়তান ওহী নিয়ে আসতো এই দাবি বাতিল এবং মিথ্যা কথা ।
সিগারেটের ধোয়াও ধোয়া আর রোগীকে অক্সিজেন দেয় সেটাও ধোয়া কিন্তু দুটোই আলাদা যদিও দুটোই ধোয়া । ইসলামে সিগারেটের ধোয়া হারাম ক্ষতিকর এবং রোগীকে অক্সিজেন দেয় এই ধোয়া জায়েজ ঠিক একই ভাবে ওহী নাযিলের সময় কেমন হত এটি বুঝানোর জন্য ঘণ্টার আওয়াজের উদাহরণ নবীজি দিয়েছেন এটি নিঃসন্দেহে সত্য কিন্তু এটি শয়তানের ঘণ্টার মত নয় । শীতের সকালের সাধারন মুখের ধোয়াও ধোয়া আর বিড়িখোরের মুখের ধোয়াও ধোয়া কিন্তু এই দুটোতে পার্থক্য আছে । প্রশ্ন হল নবীজি মুহাম্মদ (সা) কি বলেছেন যে তাঁর কাছে শয়তানের ঘণ্টার মত ওহী আসে ? উত্তর হচ্ছে না । সুতরাং শয়তান ওহী নিয়ে আসে এটি বাতিল দাবি ।
নবীজি (সা) এর কাছে "ঘণ্টাধ্বনির ন্যায় ওহী আসে" এই কথাটি উদাহরণ বা উপমা হিসেবে বলা হয়েছে । অথচ ঘণ্টার আওয়াজ খুবই নিন্দনীয় । যা করতে রাসুল (সা) নিষেধ করেছেন । এক বর্ণনায় আছে, যে কাফেলায় ঘণ্টি থাকে তার সাথে রহমতের ফেরেশতা থাকে না । কিন্তু যেহেতু উপরে সেই হাদিসে উপমার কারন স্পষ্ট, এটি হল ধারাবাহিক ও অবিরত হতে থাকা এজন্য কোন অসুবিধা নেই । এ ধরনের বহু উপমা হাদিসে রয়েছে । যদি কেউ বলে অমুক ব্যাক্তি সিংহের ন্যায়, তখন সর্ববিষয়ে উপমা দান উদ্দেশ্য হয় না বরং উপমা দানের একটি বিশেষ গুন থাকে । অর্থাৎ বীরত্ব । একইভাবে এই হাদিসেও উপমার কারন ধর্তব্য অর্থাৎ রাসুলের কাছে ওহী আসে ঘণ্টাধ্বনির ন্যায় কিন্তু এরমানে এই না যে শয়তান ওহী নিয়ে আসে । আশা করি বুঝতে পেরেছেন । বিস্তারিত জানতে দেখুন নসরুল বারী শরহে সহীহ বুখারী, ১ খণ্ড, ১৬০ ও ১৬১ পৃষ্ঠায় ।
⛔️প্রশ্ন ৭ = তর্কের খাতিরে ধরে নিচ্ছি, নবীর কাছে আল্লাহর ওহীই আসতো। কিন্তু মহাবিশ্বের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহ পাকের ওহী সামান্য এক সৃষ্টি শয়তান উল্টেপাল্টে দিচ্ছে, ভুলভাল ঢুকিয়ে দিচ্ছে, এই কথা কী মেনে নেয়া যায়? আল্লাহ পাকের সিকিউরিটি সিস্টেম কী এতটাই দুর্বল ছিল?
🆗উত্তরঃ আল্লাহর সিকিউরিটি সিস্টেম দুর্বল তখনই প্রমাণিত হত যদি শয়তান তার শয়তানীতে সফল হত কিন্তু যেহেতু সে সফল হয়নি সেহেতু আল্লাহর সিকিউরিটি সিস্টেম দুর্বল এই কথা ভিত্তিহীন । আর শয়তান এইটুকুও করতে পারছে কারন আল্লাহ ওকে এই সুযোগটুকু দিয়েছে কারন এটি আল্লাহর পরীক্ষা বান্দার প্রতি । আল্লাহ নিজেই যখন কুরআনে স্পষ্ট বলেছেন সেখানে আর কোন কথা থাকে না । যেমন সুরা হাজ্জ্ব ২২:৫৩ = শয়তান যা মিশ্রণ করে, তিনি তা পরীক্ষাস্বরূপ করে দেন, তাদের জন্যে, যাদের অন্তরে রোগ আছে এবং যারা পাষাণহৃদয়। গোনাহগাররা দূরবর্তী বিরোধিতায় লিপ্ত আছে।
⛔️প্রশ্ন ৮ = শয়তানের ধোঁকা দূর করতে আল্লাহ কেন অনেক সময় নিয়েছিলেন ?
🆗উত্তরঃ মোটেও অনেক সময় নেননি বরং উক্ত ঘটনা মনোযোগ দিয়ে পড়লে জানা যায় নবীজি (সা) যখন সাময়িক শয়তানের ধোঁকার স্বীকার হন ঠিক তখনই আল্লাহ জিবরাইল ফেরেশতার মাধ্যমে তা ঠিক করে দেন । কিন্তু পিছনে সেসব উগ্র কাফেররা উপস্থিত ও যারা শুনেছিল ছিল নবীজি (সা) তাদের সংশোধনের আগেই তারা না জেনেই ছড়িয়ে দেয় ফলে ব্যাপারটা গুজবে পরিণত হয় । সুতরাং আল্লাহ শয়তানের ধোঁকা দূর করতে সময় নিয়েছিলেন এটি মিথ্যা কথা ।
🆓> নাস্তিক ধর্মের আলোকে মুক্তমনা জবাব <🆓
স্রষ্টা নেই , পরকাল নেই , নবী রাসুল বলে কিছু নেই , শয়তান বলে কিছুই নেই এসব নাস্তিক ধর্মের মূল বিশ্বাসের পিলার । কিন্তু নাস্তিকরা বিশ্বাস করে "কুরআনে নাকি শয়তানের আয়াত আছে" ! আচ্ছা এই কথা তারা বিশ্বাস করলে এর উপর ভিত্তি করে অভিযোগ করলে তারা নাস্তিক হয় কিভাবে ? আপনারা কি তসলিমা দাদির কিতাব পড়ে টাইম মেশিন আবিস্কার করে শয়তানের সাক্ষাৎ পেয়েছেন ? ইসলামের দেয়া সুত্র না মেনে নিজেরাই শয়তানকে স্বীকার করার সুত্র আবিষ্কার করছেন নাকি ?
নাস্তিকতার একটি বিখ্যাত সংজ্ঞা হলঃ নাস্তিকতা হল প্রমানের অভাবে স্রস্টাকে অবিশ্বাস করে এবং স্রষ্টা বিষয়ে সকল কিছুই প্রমানের অভাবে বাতিল বলে ঘোষণা করে একেই নাস্তিক্যবাদ বলে । মানুষ কে কি করলো , কি করবে নাকি করবে না , মানুষ তার জীবন কিভাবে চালাবে , কি করবে এসব নিয়ে নাস্তিক্যবাদ ডিল করে না । - এই সংজ্ঞার সুত্র সামনে রেখে নিঃসন্দেহে বলাই যায় "কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে" এই দাবি ভুলে ভরাই নয় শুধু বরং এই বিষয়ে প্রকৃত নাস্তিক্যবাদ কোন কথাই বলে না বা বলতে দেয় না এটাই সংজ্ঞার সুত্র থেকে জানা যায় । নাস্তিকতার বিশ্বাসে যেহেতু স্রষ্টাকেই অস্বীকার করে সেখানে তারা শয়তানকে স্বীকার করে তারপরে আবার কুরআনকে শয়তানের আয়াত বলে বিশ্বাস করা একেবারেই অযৌক্তিক এবং হাস্যকর ও ভ্রান্ত দাবি । "কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে" একজন সত্যবাদী নাস্তিক কখনোই এই মিথ্যা দাবি স্বীকার করতেই পারেন না ।
শয়তানকে অবিশ্বাস করে নাস্তিক ধর্মের অনুসারীরা > তাহলে "কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে" এটা কিভাবে বিশ্বাস করে ? যদি বিশ্বাস না করে তাহলে এই অভিযোগ অবিশ্বাসযোগ্য বাতিল , আর যদি বিশ্বাস করে তাহলে সে নাস্তিক ধর্মের অনুসারী থাকে না , এর সমাধান কি?
বিখ্যাত গবেষক , চিন্তাবিদ এবং নাস্তিক ধর্ম প্রচারক ডা হুমায়ূন আজাদ স্যার তার বিখ্যাত "আমার অবিশ্বাস" কিতাবের ভূমিকার শেষের দিকে ফতোয়া দিয়েছেন যে, মানুষের জন্যে যা ক্ষতিকর , সেগুলোর শুরুতেই রয়েছে বিশ্বাস, বিশ্বাস সত্যের বিরোধী, বিশ্বাসের কাজ অসত্যকে অস্তিত্বশীল করা , বিশ্বাস থেকে কখনো জ্ঞানের বিকাশ ঘটে না, জ্ঞানের বিকাশ ঘটে অবিশ্বাস থেকে, প্রথাগত সিদ্ধান্ত দ্বিধাহীনভাবে না মেনে তা পরীক্ষা করার উৎসাহ থেকে । - এই ফতোয়াকে সামনে রেখে আমরা নাস্তিকদের সকল অভিযোগ বিশ্বাস করব না বরং অবিশ্বাস করব তাহলে আমাদের জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে ।তাই পাঠক আমার সাথে সাথে বলুন আমরা অবিশ্বাস করি অর্থাৎ আমরা বিশ্বাস করি না যে "কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে" "নবীজি মুহাম্মদ (সা) এর কাছে শয়তান ওহী নিয়ে আসে" "আল্লাহর সিকিউরিটি সিস্টেম দুর্বল" "নবীজি শয়তানের থেকে রিভার্স ধোঁকা খেতে পারে" ইত্যাদি ইত্যাদি এবং ইত্যাদি নাস্তিকদের অভিযোগ আমরা বিশ্বাস করি না , করি অবিশ্বাস । বিখ্যাত নাস্তিক ধর্ম প্রচারক ডঃ হুমায়ূন আজাদ স্যার এর ফতোয়া অনুযায়ী আমাদের জ্ঞান এখন বৃদ্ধি পাবে ইনশা আল্লাহ ।
বিখ্যাত গবেষক , চিন্তাবিদ এবং নাস্তিক ধর্ম প্রচারক ডা হুমায়ূন আজাদ স্যার তার বিখ্যাত "আমার অবিশ্বাস" কিতাবের ১৭ পৃষ্ঠায় ফতোয়া দিয়েছেন যে > তবে সব কিছুই নিরর্থক, জগত পরিপূর্ণ নিরর্থকতায়, রবীন্দ্রনাথও নিরর্থক, আইনস্টাইনও নিরর্থক, ওই গোলাপও নিরর্থক, ভোরের শিশিরও নিরর্থক, কেননা সব কিছুরই পরিনতি বিনাশ । - এই ফতোয়ার সুত্র থেকে স্পষ্ট পরিস্কার হয় যে "কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে" "নবীজি মুহাম্মদ (সা) এর কাছে শয়তান ওহী নিয়ে আসতো" "আল্লাহর সিকিউরিটি সিস্টেম দুর্বল" ইত্যাদি সমস্ত অভিযোগও অর্থহীন অর্থাৎ নিরর্থক আর যেটা নিরর্থক সেগুলা বাতিল এবং ভিত্তিহীন । তাই নাস্তিকদের সকল অভিযোগ নিরর্থক ও ভিত্তিহীন ।
বিখ্যাত গবেষক , চিন্তাবিদ এবং নাস্তিক ধর্ম প্রচারক ডা হুমায়ূন আজাদ স্যার তার বিখ্যাত "আমার অবিশ্বাস" কিতাবের ১০১ নং পৃষ্ঠায় ফতোয়া দিয়েছেন "যে শয়তান কোথাও নেই" । সুতরাং নাস্তিক ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী যেহেতু শয়তান কোথাও নেই সেখানে নাস্তিকদের "কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে" সহ ইত্যাদি দাবিও চমৎকার স্টাইলে ভুল প্রমাণিত হয়েছে ।
✅পরিশেষে আমাদের দাবি ও প্রশ্নঃ🆗
১/ গারানীকের ঘটনাকে কিছু গবেষক সহিহ বললেও অধিকাংশই বলেছেন বাতিল ও ভ্রান্ত ।
২/ কুরআনে বিন্দুমাত্রও শয়তানের আয়াত নেই ।
৩/ শয়তান নবীজির তন্দ্রার সুযোগ নিয়ে কিছু সময়ের জন্য ধোঁকা দিতে পারলেও আল্লাহ সেটি সম্পূর্ণ নষ্ট করে দেয় । সুতরাং শয়তানের চক্রান্ত আল্লাহ নষ্ট করে দেন।
৪/ শয়তানের এই ধোঁকাকে আল্লাহ বান্দার জন্য পরীক্ষাস্বরূপ করেছেন ।
৫/ নবীজি মুহাম্মদ (সা) এর কাছে শয়তান কোন ওহী নিয়ে আসেনি ।
৬/ নাস্তিক ধর্মের আলোকেই "কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে" এই অভিযোগ মিথ্যা এবং বাতিল প্রমাণিত কারন নাস্তিক ধর্মে শয়তানের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করা হয় ।
৭/ সমকামীতায় বিশ্বাসী খগেন সালমান রুশদী একজন মিথ্যুক এবং ধোঁকাবাজের মাস্টার ।
৮/ নবীজি মুহাম্মদ (সা) এর কাছে ওহী আসতো ঘণ্টা বাজার মত এই "ওহী আসার ঘণ্টা" যে শয়তানের সেটার প্রমান কি অর্থাৎ নবীজি (সা) কি বলেছেন যে আমার কাছে যেই ওহী আসে সেটা শয়তানের ওহী ?
৯/ শয়তানকে অবিশ্বাস করে নাস্তিক ধর্মের অনুসারীরা তাহলে "কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে" এটা কিভাবে বিশ্বাস করে ? যদি বিশ্বাস না করে তাহলে এই অভিযোগ অবিশ্বাসযোগ্য তাই বাতিল , আর যদি বিশ্বাস করে তাহলে সে নাস্তিক ধর্মের অনুসারী থাকে না,এর সমাধান কি ? ইসলামকে নিয়ে মিথ্যাচার করার জন্য শয়তানের উপর বিশ্বাস আনা কি নাস্তিক ধর্মে জায়েজ ? কে জায়েজ করেছে এবং কেন করেছে কিসের ভিত্তিতে করেছে ? সেটি যে সত্য সেটার প্রমান কি ? ক্ষেত্র বিশেষে কেন শয়তানের অস্তিত্বকে বিশ্বাস করা হয় নাস্তিক ধর্মে ?
১০/ আল্লাহর সিকুউরিটি সিস্টেম মোটেও দুর্বল নয় । যদি দুর্বল হত তাহলে আল্লাহ শয়তানের ধোঁকা নষ্ট কিভাবে করলো ?
১১/ শয়তান কি তার ধোঁকায় সফল হয়েছিল ? আল্লাহ কি তার ধোঁকা নষ্ট করেনি ?
১২/ নবীজি (সা) কি বলেছেন তার কাছে শয়তান ওহী নিয়ে আসে ? কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে এই কথা নবীজি (সা) বলেছেন ?
১৩/ সাহাবীরা কি বলেছেন যে কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে ? অথবা নবীজির কাছে শয়তান ওহী নিয়ে আসে ?
১৪/ ইসলামের বড় বড় গবেষকগণ কি বলেছেন শয়তান ওহী নিয়ে আসে নবীজির কাছে ? কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে এই কথা নবীজি (সা) বলেছেন ?
১৫/ নবীজি মুহাম্মদ (সা) যদি ইচ্ছা করেই দেবতাদের প্রশংসা করেন কাফেরদের খুশি করার জন্য তাহলে তিনি এরপরে আবার কেন তাদের বিরুদ্ধে বলতে গেলেন , যেখানে কাফেরদের বিরুদ্ধে যাওয়ার সাথে সাথেই সন্ত্রাসী কাফেররা নবীজির (সা) ও তার সাথীদের উপর আরও খেপে যায় ? এবং নির্যাতন করতে সামনে আসে ।
১৬/ অন্ধ বিশ্বাসী নাস্তিকরা কি সন্ত্রাসী কাফেরদের উগ্রতাকে কি সমর্থন করে ?
১৭/ ইসলাম তথা নবী মুহাম্মদ (সা) এবং তাঁর সাথীদের সবাইকে সন্ত্রাসী কাফেররা হত্যা করতে চেয়েছিল এখন এই কাফেরদে কি সমকামীরা সমর্থন করে ?
১৮/ বিখ্যাত নাস্তিক ধর্ম প্রচারক হুমায়ূন আজাদ স্যার যখন সব কিছুকেই নিরর্থক বলে ঘোষণা দিলেন সেখানে আপনাদের "কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে" এই দাবি কিভাবে নিরর্থক হয় না ? হুমায়ূন আজাদ স্যার কি তাহলে ভুল ফতোয়া দিয়েছেন ? কিভাবে এবং কেন ? আপনি কিভাবে নির্ণয় করবেন যে তিনি ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন ?
১৯/ বিখ্যাত নাস্তিক ধর্ম প্রচারক হুমায়ূন আজাদ স্যার যখন ফতোয়া দিলেন শয়তান কোথাও নেই সেখানে কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে এই দাবি কিভাবে সত্য হয় ? বিবর্তনবাদ সত্য হলে যেমন এক বাঘ যদি হরিণকে ভক্ষন করে এখানে ন্যায় অন্যায় বলে কিছুই নেই সেখানে আপনি কিভাবে হুমায়ূন আজাদ স্যারকে ভুল বলবেন ? বিবর্তনে বাঘ, হরিণ, বিলাই আপনি হুমায়ূন আজাদ সবাই এক । এখন নাস্তিক ধর্ম কি সমাধান দেয় এবং কেন দেয় ?
২০/ সুতরাং কুরআনে কোন শয়তানের আয়াত নেই , নবীজি মুহাম্মদ (সা) কে আল্লাহ নিজে রক্ষা করেছেন শয়তান হতে এটাই চূড়ান্ত ও বিশুদ্ধ সত্য কথা ।
২/ কুরআনে বিন্দুমাত্রও শয়তানের আয়াত নেই ।
৩/ শয়তান নবীজির তন্দ্রার সুযোগ নিয়ে কিছু সময়ের জন্য ধোঁকা দিতে পারলেও আল্লাহ সেটি সম্পূর্ণ নষ্ট করে দেয় । সুতরাং শয়তানের চক্রান্ত আল্লাহ নষ্ট করে দেন।
৪/ শয়তানের এই ধোঁকাকে আল্লাহ বান্দার জন্য পরীক্ষাস্বরূপ করেছেন ।
৫/ নবীজি মুহাম্মদ (সা) এর কাছে শয়তান কোন ওহী নিয়ে আসেনি ।
৬/ নাস্তিক ধর্মের আলোকেই "কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে" এই অভিযোগ মিথ্যা এবং বাতিল প্রমাণিত কারন নাস্তিক ধর্মে শয়তানের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করা হয় ।
৭/ সমকামীতায় বিশ্বাসী খগেন সালমান রুশদী একজন মিথ্যুক এবং ধোঁকাবাজের মাস্টার ।
৮/ নবীজি মুহাম্মদ (সা) এর কাছে ওহী আসতো ঘণ্টা বাজার মত এই "ওহী আসার ঘণ্টা" যে শয়তানের সেটার প্রমান কি অর্থাৎ নবীজি (সা) কি বলেছেন যে আমার কাছে যেই ওহী আসে সেটা শয়তানের ওহী ?
৯/ শয়তানকে অবিশ্বাস করে নাস্তিক ধর্মের অনুসারীরা তাহলে "কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে" এটা কিভাবে বিশ্বাস করে ? যদি বিশ্বাস না করে তাহলে এই অভিযোগ অবিশ্বাসযোগ্য তাই বাতিল , আর যদি বিশ্বাস করে তাহলে সে নাস্তিক ধর্মের অনুসারী থাকে না,এর সমাধান কি ? ইসলামকে নিয়ে মিথ্যাচার করার জন্য শয়তানের উপর বিশ্বাস আনা কি নাস্তিক ধর্মে জায়েজ ? কে জায়েজ করেছে এবং কেন করেছে কিসের ভিত্তিতে করেছে ? সেটি যে সত্য সেটার প্রমান কি ? ক্ষেত্র বিশেষে কেন শয়তানের অস্তিত্বকে বিশ্বাস করা হয় নাস্তিক ধর্মে ?
১০/ আল্লাহর সিকুউরিটি সিস্টেম মোটেও দুর্বল নয় । যদি দুর্বল হত তাহলে আল্লাহ শয়তানের ধোঁকা নষ্ট কিভাবে করলো ?
১১/ শয়তান কি তার ধোঁকায় সফল হয়েছিল ? আল্লাহ কি তার ধোঁকা নষ্ট করেনি ?
১২/ নবীজি (সা) কি বলেছেন তার কাছে শয়তান ওহী নিয়ে আসে ? কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে এই কথা নবীজি (সা) বলেছেন ?
১৩/ সাহাবীরা কি বলেছেন যে কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে ? অথবা নবীজির কাছে শয়তান ওহী নিয়ে আসে ?
১৪/ ইসলামের বড় বড় গবেষকগণ কি বলেছেন শয়তান ওহী নিয়ে আসে নবীজির কাছে ? কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে এই কথা নবীজি (সা) বলেছেন ?
১৫/ নবীজি মুহাম্মদ (সা) যদি ইচ্ছা করেই দেবতাদের প্রশংসা করেন কাফেরদের খুশি করার জন্য তাহলে তিনি এরপরে আবার কেন তাদের বিরুদ্ধে বলতে গেলেন , যেখানে কাফেরদের বিরুদ্ধে যাওয়ার সাথে সাথেই সন্ত্রাসী কাফেররা নবীজির (সা) ও তার সাথীদের উপর আরও খেপে যায় ? এবং নির্যাতন করতে সামনে আসে ।
১৬/ অন্ধ বিশ্বাসী নাস্তিকরা কি সন্ত্রাসী কাফেরদের উগ্রতাকে কি সমর্থন করে ?
১৭/ ইসলাম তথা নবী মুহাম্মদ (সা) এবং তাঁর সাথীদের সবাইকে সন্ত্রাসী কাফেররা হত্যা করতে চেয়েছিল এখন এই কাফেরদে কি সমকামীরা সমর্থন করে ?
১৮/ বিখ্যাত নাস্তিক ধর্ম প্রচারক হুমায়ূন আজাদ স্যার যখন সব কিছুকেই নিরর্থক বলে ঘোষণা দিলেন সেখানে আপনাদের "কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে" এই দাবি কিভাবে নিরর্থক হয় না ? হুমায়ূন আজাদ স্যার কি তাহলে ভুল ফতোয়া দিয়েছেন ? কিভাবে এবং কেন ? আপনি কিভাবে নির্ণয় করবেন যে তিনি ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন ?
১৯/ বিখ্যাত নাস্তিক ধর্ম প্রচারক হুমায়ূন আজাদ স্যার যখন ফতোয়া দিলেন শয়তান কোথাও নেই সেখানে কুরআনে শয়তানের আয়াত আছে এই দাবি কিভাবে সত্য হয় ? বিবর্তনবাদ সত্য হলে যেমন এক বাঘ যদি হরিণকে ভক্ষন করে এখানে ন্যায় অন্যায় বলে কিছুই নেই সেখানে আপনি কিভাবে হুমায়ূন আজাদ স্যারকে ভুল বলবেন ? বিবর্তনে বাঘ, হরিণ, বিলাই আপনি হুমায়ূন আজাদ সবাই এক । এখন নাস্তিক ধর্ম কি সমাধান দেয় এবং কেন দেয় ?
২০/ সুতরাং কুরআনে কোন শয়তানের আয়াত নেই , নবীজি মুহাম্মদ (সা) কে আল্লাহ নিজে রক্ষা করেছেন শয়তান হতে এটাই চূড়ান্ত ও বিশুদ্ধ সত্য কথা ।
: