(৫১২)
শবে বরাত বিদাত কিনা সেইটা নিয়া নানান রকমের আলাপ-আলোচনা থাকলেও হালুয়া খাওয়া যে বিদাত না সেইটা নিয়া উলামারা একমত। যত খুশি হালুয়া খান!
(৫১৩)
বিদায় তো তারই সুন্দর হয়, যার অবস্থান থাকে অর্থপূর্ণ। সুন্দর বিদায় মানে কি আর আড়ম্বর, জাঁকজমক, ঢাকঢোল? সুন্দর বিদায় হলো যতটুকু থাকা হলো, ততটুকুতে নিজ জীবনের অর্থ খুঁজে পাওয়া, রবের স্মরণ, ভালোবাসার মানুষদের অশ্রু। চাইলেই কি আর যাবার আয়োজন সুন্দর করতে পারে সবাই? সে তো তারই হয়, যার কাজ হয় সুন্দর।
(৫১৪)
যে মানুষটির কথা ভাবলে মনে হতো, তিনি এই দেশের মুসলিম সমাজের তীব্র মতপার্থক্যের ফলে সৃষ্ট অরাজকতাকে কমিয়ে একীভূত করবেন -- সেই মানুষটি আমাদের বড্ড অসহায় করে ফেলে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেছেন। ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর একজন ব্যতিক্রমধর্মী আলেম ছিলেন। আল্লাহ তার এই বান্দাকে যেন জান্নাতের পেয়ালার পানি করান। আমরা একের পর এক মহান মানুষদের হারিয়ে ফেলছি নানান ভাবে। আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন। [১১ মে, ২০১৬]
(৫১৫)
তবু পৃথিবীতে ভালোবাসা রয়ে যাবে।
হয়ত কেউ জীবনের যন্ত্রণায়, রোগের দংশনে বিদায় নেবে জগতসংসার ছেড়ে রবের কাছে, কেউ তারে বিদায় দিয়ে পড়ে থাকবে আমৃত্যু যুদ্ধে। এই কষ্টকর বৃত্তে তবু ভালোবাসা জয়ী হয়। রক্ত-জ্বালা-যন্ত্রণা-শংকা পেরিয়ে মানব হৃদয় প্রেমে ডুবে।
ভালোবাসুন পৃথিবীবাসীকে। দয়াময় আল্লাহ আপনায় ভালোবাসবেন। এ জগত পেরিয়ে অনন্ত জগতে পাবেন আনন্দভরা অভ্যর্থনা! ভালোবাসা-দয়া বৃথা যায় না...
(৫১৬)
করোনাভাইরাসের প্রকোপে হঠাৎ চোখের সামনে অনেক অন্যায় দেখতে পাচ্ছি স্পষ্টভাবে, পুরোনো অন্যায়ের বীজ থেকে মহীরুহ হবার কিছু দৃষ্টান্ত। কষ্ট লাগে, খারাপ লাগে, অসহায়ও লাগে। কিন্তু মনে রাখা উচিত কি নয় যে এত এত সৃষ্টি, ধ্বংস, সভ্যতা-সংস্কৃতি, রাজত্ব-বিচার, শক্তি ও প্রতাপ এগুলো একদমই মানুষের ব্যক্তি যোগ্যতা না। একদমই 'কিছু সংখ্যক' লোকেরও অর্জন না। কারোই কোনো শক্তি নাই, কারোই কোনো 'যোগ্যতা' দিয়ে কিছু ঘটে যায় না।
জীবনে দেখলাম এত অসাধারণ মানুষগুলো, কী অবহেলায় খরচ হয়ে গেলো। এত নিকৃষ্ট মানুষগুলো, কত ক্ষমতা-অর্থ কব্জা করে দাপুটে সময় কাটালো। অথচ, আগের মানুষদের একজনের তুলনায় এরা লক্ষ-কোটিজন একত্রিত হলেও কোন মূল্যই নেই। এই বিচারও দেখার সময় এই জগত না, এর পরের একটা জগত আছে, সেখানে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার হয়। আমরা হয়ত চোখে সেটাই দেখবো, যেগুলা আপাত ক্ষমতা, ষড়যন্ত্র, লড়াই দিয়ে লোকে জিতবে। কিন্তু এরাও খুব খুব অল্প সময়েই শেষ হয়ে যাবে।
কে থাকে দীর্ঘ সময়? কেউ না। হয়ত আমরা চাই, আমাদের চাওয়ার মতন করে 'অন্যায়ের ধ্বংস' হোক। কিন্তু আল্লাহ ত সব কিছুর একটা নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়েছেন। তিনিই পরম ক্ষমতাবান। আর কেউ নেই। এই মহামারীর সময়ে অসহায়ত্বের এই গূঢ়তম উপলব্ধি হয়ত আমাদের প্রতি রবের পক্ষ থেকে উপহার। দিনশেষে যেকোনো উপায়েই হোক, আমরা মাটিতেই মিশে যাবো। যে যা করবো, তা সাথে নিয়ে যাবো...
১৮ এপ্রিল, ২০২০
ঢাকা, বাংলাদেশ।
: