স্রষ্টা নিজেই কি নাস্তিক?

Post a Comment

⛔ প্রশ্নঃ স্রস্টা নিজেই কি নাস্তিক?
✅ উত্তর দিচ্ছেন > ✍ এম ডি আলী।

ভুমিকাঃ আমার এই লেখার দুটো সাইড।একটা হচ্ছে ইসলামের আলোকে উত্তর এটা মুসলিমদের জন্য নাস্তিকদের জন্য নয়।আরেকটা হচ্ছে নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে নাস্তিকদের জবাব। এটা নাস্তিকদের জন্য।

💐 ইসলামের আলোকে উত্তরঃ

কুরআনের একটা আয়াতই নাস্তিকদের অন্ধবিশ্বাসময় যুক্তিকে ধ্বংস করে দেয়।

* সুরা কাহফ ১৮ঃ২৬ = আল্লাহই তা ভালো জানেন, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর অজ্ঞাত বিষয়ের জ্ঞান তারই। তিনি কত সুন্দর দ্রষ্টা ও শ্রোতা।

এই আয়াত অনুপাতে আল্লাহ যেহেতু সবই জানেন। তাই মহাবিশ্বে আল্লাহ ছাড়া আর কেউই স্রস্টা নেই সেটাও আল্লাহই জানেন সেহেতু আল্লাহ নিজেই এই মহাবিশ্বের একমাত্র স্রস্টা। স্রস্টা নাস্তিক এই কথাটি ভুল প্রমান করেছে আয়াতটি।

এ ছাড়া

* সুরা ইখলাস ১১২ঃ৪ = তিনিই আল্লাহ, একক। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি। আর তার সমতুল্য কেউ নেই।

সুরা বাকারা ২ঃ২৫৫ = তিনিই) আল্লাহ, যিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং ঘুমও নয়। সবই তাঁর, আসমান ও জমিনের মধ্যে যা কিছু রয়েছে। কে আছ এমন- যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? (চোখের সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানের সীমা থেকে কোনো কিছুকেই তারা পরিবেষ্টিত করতে পারবে না, কিন্তু ‘হ্যাঁ’, তিনি যতটুকু ইচ্ছা করেন তা ছাড়া। সমগ্র আসমান এবং জমিনকে পরিবেষ্টিত করে আছে তাঁর সিংহাসন। আর সেগুলোকে ধারণ (নিয়ন্ত্রণ) করা তাঁর জন্য কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।

উপরের আয়াত আমাদেরকে আল্লাহর পরিচয় শিখাচ্ছে। এটা বলছে না যে আল্লাহ নাস্তিক তাই মুসলিমরাও নাস্তিক হয়ে যাও। মাইন্ড ইট। মহানবী (সা) থেকে শুরু করে উনার সাহাবারা আরও যারা গবেষক রয়েছেন কেউই এসব বাজে ভ্রান্ত ধারনা আমাদেরকে শিখাননি বরং কুরআন সুন্নাহ আমাদেরকে আল্লাহ বিষয় যেই সুত্র সেট করে দিয়েছে সেটার বাইরে আমরা মুসলিমরা এক চুল পরিমানও সরবো না। ইসলাম আল্লাহর পরিচয় বিষয় যা বিলিভ রাখতে বলেছে আমরা মুসলিমরাও তাই রাখবো এবং রাখলাম আলহামদুলিল্লাহ।

👉 আল্লাহর বিষয় জানতে কুরআনের এই আয়াত গুলো পড়াশোনা করুনঃ সুরা শুরা ৪২ঃ১১ > সুরা নিসা ৪ঃ৫৮ > সুরা: হজ্জ ২২ঃ৬১ > সুরা: তওবা ৯ঃ১০৫ > সুরা আলাক ৯৬ঃ১৪।

♓ নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে উত্তরঃ

অন্ধবিশ্বাসী নাস্তিকরা যখন স্রস্টার অস্তিত্বকে অস্বীকার করতে পারে না,বাতিল প্রমান করতে পারেনা,ভুল প্রমান করতে পারে না ঠিক তখনই একটা মিথ্যা, ভুল, ভুয়া, কুযুক্তি বলে বসে আর তা হলোঃ

মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা নিজেই একজন নাস্তিক। তিনি বলেন আমাকে কেউ সৃষ্টি করেনি, আমার কোন সৃষ্টিকর্তা নেই। একই কথা নাস্তিকরা বললেই দোষ।

এসব যুক্তি নাস্তিক সমকামীরা দিবে না তো কারা দিবে আপনারাই বলুন? চলুন নাস্তিকদের দুর্বল যুক্তিকে ফ্লাশ করে দেই।

যখনই কোন নাস্তিক উপরে দেয়া যুক্তি পেশ করবে সাথে সাথে সে আস্তিক হয়ে যাবে যদি সে তার নিজের যুক্তির প্রতি বিলিভ করে তাহলে। কারন সে যুক্তি দেয়ার সাথে সাথে স্রস্টাকে তো মেনেই নিচ্ছে সাথে সাথে স্রস্টার কথাকেও সে মেনে নিচ্ছে। স্রস্টার একত্ববাদকে মেনে নিচ্ছে।

এখন স্রস্টার দেয়া কথা, অস্তিত্ব এসব যদি মেনে নেয় তাহলে সেকেন্ডে যে প্রশ্ন আসবে সেটা হচ্ছে স্রস্টা কি আমাদেরকে নাস্তিক হতে বলেছে কোথাও? উত্তর হচ্ছে না। এই সহজ বিষয় একটা বাচ্চাও বুঝবে।

তাহলে স্রস্টা যেখানে আমাদেরকে নাস্তিক হতে বলেন নাই সেখানে আমরা কেন নাস্তিক হবো? নাস্তিক হওয়ায় যৌক্তিকতা নেই বরং আস্তিক হওয়াতেই বরং যৌক্তিকতা।

নাস্তিকতা মানে স্রস্টার অস্তিত্বে অবিশ্বাস। তাই মহাবিশ্বের স্রস্টা অন্য স্রস্টায় বিশ্বাসী না তাই মহাবিশ্বের স্রস্টা নিজেই নাস্তিক - এই ভ্রান্ত কথাটি ঠিক তেমনই যেমন কেউ যুক্তি দিচ্ছে - এক মানুষ অন্য মানুষের গায়ে লাগতে পারে আর বাতাসও মানুষের গায়ে লাগতে পারে তাই বাতাসও মানুষ। আবার গাছ দাঁড়িয়ে থাকতে পারে আর মানুষও দাঁড়িয়ে থাকতে পারে সুতরাং গাছও মানুষ। আবার মাছ পানিতে সাতার কাটতে সক্ষম আবার মানুষও সক্ষম, তাই মাছও মানুষ।

এই ধরনের গোজামিল মার্কা যুক্তি যেমন মিথ্যা কথা ঠিক তেমনই ভাবে ওই কথাটিও ভুয়া ও ভুল কথা।

নাস্তিকতা অর্থ হচ্ছে স্রস্টার অস্তিত্বে অবিশ্বাস। আমি নাস্তিকদেরকে বলবো, আপনি যে বিলিভ করলেন "মহাবিশ্বের স্রস্টা নিজেই নাস্তিক" তাহলে নাস্তিকতার অর্থের সুত্র দিয়ে প্রমান করুন এই মহাবিশ্বের একজন স্রস্টা আছেন তাকে সব নাস্তিকরাই মেনে নিয়েছে কিন্তু সেই স্রস্টা নাস্তিক দেখে, নাস্তিকরাও নাস্তিক। প্রমান করুন।পারবেন?চেষ্টা করতে থাকুন।

পরিশেষে নাস্তিকদের অন্ধবিশ্বাসময় যুক্তিকে সামনে রেখে আমি কিছু মুক্তমনা সহজ প্রশ্ন নাস্তিকদের সমীপে করবো।

💠 প্রশ্ন গুলো হচ্ছেঃ

১/ নাস্তিকতার অর্থ ঠিক থাকলে মহাবিশ্বের স্রস্টা আছে এটা একজন নাস্তিক নাস্তিকতার থেকে কিভাবে বিলিভ করতে পারে?

২/ যুক্তির খাতিরে ধরে নিলাম "মহাবিশ্বের স্রস্টা নাস্তিক" কিন্তু এই কথা নাস্তিকরা যদি মেনেই নেয় তাহলে সে নাস্তিক থাকে কিভাবে? যদি না মানে তাহলে যে কথা নাস্তিকতার আলোকেই ঠিক না সেটা নাস্তিকরা কেন বলে আর মানুষকে ধোকা দেয়?এই প্রতারণা শেষ হবে কবে? নাস্তিকরা মানুষের সাথে মিথ্যা কথা বলা কবে বন্ধ করবে?

৩/ স্রস্টা নাস্তিক তাই নাস্তিকরাও নাস্তিক এই কথা নাস্তিক্যধর্মের দৃষ্টিতে মিথ্যা হবে না কেন?

৪/ স্রস্টার কথা মেনে নাস্তিকরা যদি নাস্তিক হতে পারে তাহলে একই স্রস্টার কথা মেনে নাস্তিকরা মুসলিম হয়ে যায় না কেন? স্রস্টার এক কথা মানবে আরেক কথা মানবে না কেন?

৫/ কোন বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে প্রমান করেছে যে মহাবিশ্বে একজন স্রস্টা আছে যিনি নাস্তিক? সব নাস্তিকরা কি এই গবেষণায় এরকম হয়েছে? সেটা কোথায়?

৬/ বাই দ্যা ওয়ে! হিন্দু ও খ্রিস্টান ধর্ম অনুপাতে নাস্তিকদের এই যুক্তি তো আগেই ইন্তেকাল করেছে কারন এসব ধর্ম মতে তো ৩৩ কোটি স্রস্টা আর তিনজন স্রস্টাকে মানা হয় তাহলে স্রস্টা নাস্তিকদের যুক্তি অনুপাতে আর নাস্তিক থাকছে না তাই এই যুক্তি দিয়ে কেউ যদি দাবি করে যেহেতু স্রস্টারা আস্তিক তাই নাস্তিকদেরকেও উচিত এই মুহুর্তে স্রস্টাদের মতো আস্তিক হয়ে যাওয়া তাহলে কি এই যুক্তি নাস্তিকরা মানবে? আস্তিক হয়ে যাবে?

৭/ স্রস্টা নিজে মানেন যে তিনিই একমাত্র এই মহাবিশ্বের স্রস্টা তাহলে স্রস্টা নাস্তিক হয় কিভাবে নাস্তিকদের যুক্তিতে?কারন নাস্তিক সেই যে স্রস্টার অস্তিত্বকে স্বীকার করেনা। উত্তর কি দিবেন নাস্তিক দাদা?

Related Posts

: