★আমি তখন, অর্নাস ১ম ইয়ারে, তখন আমাদের বাসায় নতুন ভারাটিয়া আসে, তাদের একটি ছেলে আছে নাম, নিরব, অর্নাস ফাইনাল ইয়ারে পড়ে, ছেলেটা খুব লাজুক, আমাকে দেখলেই লজ্জায় লাল হয়ে যায়, পাশ কেটে যতদূত তারাতারি পারে পালিয়ে যায়,আমি তার এত লজ্জা পাওয়ার কারন বুঝি না, আমি তো তার সাথে কখনো কথাও বলি নি, তবে এতো মেয়ে মানুষের মত লজ্জা পাওয়ার কি আছে। যতসব আবাল পোলাপাইন।
আজ দুইমাস পার হয়ে গেল, তাও তার সাথে একের থেকে দুইটি কথা বলতে পারি নি, মাঝে মাঝে ঝগড়া করার চেষ্টা করি, কিন্তু সে তো একটা মস্ত বড় আবাল, সে আর ঝগড়া করবে কি?
আজকে বিকালের ঘটনা, ভার্সিটি থেকে বাসায় ফিরছিলাম, বাসার সামনে আসতেই দেখি, পিছনে নিরব, হাতে একটা ডিমের খাচি, মাথায় একটা বুদ্ধি চাপলো, ভাবলাম একটা ডোজ দেওয়া যায়।
তাই তার সামনে সামনে হাটতে শুরু করলাম, বেচারা বেশ কয়েকবার, আমার সামনে যাওয়ার চেষ্টা করল কিন্তু, সেটা আর সম্ভব হলো না, শিরির কাছে আসতেই, তার সামনে কোমরে হাত দিয়ে দাড়িয়ে পরলাম,
নিরব ও থমকে দারালো, মুখে আতংক, ভয়ে বেচার মুখ খানা দেখার মত হয়েছে,
-চোখ পাকিয়ে বললাম, কি ব্যপার????
-কই, কোন ব্যপার নেই তো, (মুখ টা চুপসে গেছে দেখে কি যে মজা লাগছে, বলার মত না। আসলে আমি একটু দুষ্ট আছি, তবে বেশি না, আসলে দুষ্টামি করতে ভালো লাগে, তাই মাঝে মাঝে একটু একটু করি!!)
-আরেকটু কঠিন গলায় বললাম, তাহলে পিছে পিছে ঘুরছো কেন?
বেচারা তথবত খেয়ে গেছে, তোতলানো কন্ঠে কিছু একটা বলতে চাচ্ছে, ঠিকই বলতে পারছে না,
কি, ক ক ক করছো, থাম আমার কথা শুনো! বলেই একটা ধমক দিলাম।
নিরব, আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে, কিছু বলতে পারছে না,
আমি বলতে শুরু করলাম,
শুনো তুমি কিন্তু আমার পিছে পিছে, আর ঘুরবে না, আমার কিন্তু এসব ন্যাকামি একদম ভালো লাগে না? অসহ্য লাগে।
-আচ্ছা।
-আচ্ছা মানে? এর আগেও তোমাকে বলেছি, আমার পিছে ঘুরবে না, ঘুরবে না! তারপরও ঘোরো লজ্জা করে না,বকা শুনে? আর কিছু বললেই আচ্ছা।
-নিরব কি বলবে সেটা ঠিক ভেবে পাচ্ছে, না তাই চুপ করে আছে। কারন মিষ্টি তাকে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে,
এখন যদি নিরব বলে, কই আমি তো আপনার পিছে ঘুরি না! তবে এটা নিয়ে তুমুল ঝগড়া বাধিয়ে দেবে মেয়েটা।
এর আগেও বেশ কয়েকবার এ রকম কান্ড করেছে,
উপড়ে পড়ে ঝগড়া করেছে, আসলে মেয়েটার নাম, মিষ্টি না হয়ে টক, হলেই ভালো হতো, নামের সাথে মানাতো।
-কি ব্যাপার চুপ করে আছো কেন?
-আমার কিছু বলার নেই।
-কিছু বলার নেই মানে, সারাদিন পিছে পিছে ঘুরবা, ইনিয়ে বিনিয়ে কথা বলতে আসবা, আর এখন বলছো কিছুই বলার নেই?
-আমি কখন ইনিয়ে বিনিয়ে কথা বলতে আসলাম, আমি তো ডিম কিনতে গেছলাম।
এ্য,, ডিম কিনতে গেছিল,,, হাদারাম কোথাকার, ----নিরব, সাইডে একটু যাইগা পেয়ে, ঝরের বেগে দৌরে পালিয়ে গেল,
তার রাস্তা আটকাতে গিয়ে, কাধের সাথে খুব জোরে একটা ধাক্কা খেলাম, অবশ্য বেথাও পেয়েছি, তবে মজা লাগছে, তাকে একটু জালাতে পেরেছি বলে।
একটু পর, নিরব দের বাসায় গেলাম, বেচারার খোজ নিতে, গিয়েই দেখি আন্টি রান্না করছে,
-কেমন আছেন আন্টি?
-এইতো মা ভালো, তুমি কেমন আছো,
-আমিও ভালো আছি,
-সারাদিন কোথায় ছিলে, একা একা দম বন্ধ হয়ে মারা যাচ্ছিলাম। এখন তুমি এসেছো ভালো লাগছে।
আমি আন্টির কথায় একটু হাসলাম, আন্টি টা এতো ভালো, তবে সারাদিন বাচালের মত কথা বলে, এতে আমার যে খুব খারাপ লাগে তা নয়,বরং ভালোই লাগে।
আমার আম্মু মারা যাওয়ার পর খুব একা হয়ে গেছিলাম, তবে এখন আন্টি কে পেয়ে আম্মুকে ভুলতে বসেছি, বাবা সারাদিন ব্যবসার কাজে বাইরে থাকে, আর আমি সারাদিন আন্টির সাথে গল্প করে পার করে দেই। আর একটু যদি আন্টির আরাল হই, সেটারই কৈফত দিতে হয় আন্টির কাছে।
দেখো না, মা তোমার আঙ্কেল সারাদিন তার কাজ নিয়ে ব্যস্ত, বাসায় আসে, তাও হাতে ল্যাপটপ নিয়ে পড়ে থাকে, কথা বলার সময় টুকু নেই। আর তার ছেলে হয়েছে আরেক ব্যস্ত মানুষ, সারাদিন বই হাতে, নিয়ে পরে থাকে। ঘর থেকে বের হওয়ার সময় টুকু তার হাতে নেই, একবার ভাবলাম, নিরব এর তো পরিক্ষা শেষ, পড়াও শেষ। এবার হয়তো ফ্রি হবে। তা তো নইই, উল্টো আরো বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ল,
-আরো ব্যস্ত হয়ে গেল মানে??
-আর বলো না, পড়াশোনা শেষ করে বিদ্যসাগর হয়েছিস ভালো কথা, এবার একটু ঘর থেকে বের হ, ঘুরাঘুরি কর, ঘরকুনো হয়ে বসে আর কতদিন থাকবি? তার খালাতো বোনের বিয়ে, কতবার যে ফোন করেছে, তোমাকে বলে বোঝাতে পারব না, তার একই কথা, সে গিয়ে কি করবে, আর গেলেও আমার সাথে যাবে!
আচ্ছা তুমি আমাদের সাথে যাবে??
-যাবো না মানে অবশ্যই যাবো! অনেকদিন কোথাও বেরাতে যাই না। (এমনভাবে কথাটা বললাম যেন আমি তাদের পরিবারেই একজন আমাকে ছারাই তারা যাবে, আর আমি একাই বাসায় বসে থাকবো)
আচ্ছা, তাহলে তোমার বাবাকে বলো,
-আচ্ছা।
-তারপর কি হলো আন্টি! আবার ব্যস্ত হয়ে গেল কিভাবে?
আর বলো না, এবার আবার পড়া শুরু করলো, গল্প আর উপন্যাসের বই, দিন রাত চব্বিশ ঘন্টা বই পরে, ছেলেটা রাতে ঠিকভাবে ঘুমোতে পারে না,
ঘুমের ঘরেই পড়ে, আমি বেশ কয়েকবার আরি পেতে শুনেছি,
সকালে উঠেই আবার, বই। তুমি বিশ্বাস করবে না , ওর যত বই আছে সেগুলো বিক্রি করে, ৬ মাস অনায়াসে সংসার চালানো যাবে।
-বলেন কি আন্টি???
-কি আর বলবো তোমায়, ওর পরিক্ষা শেষ হয়েছে, ২ মাস! এই ২ মাসে ও শুধু, এিশ হাজার, টাকার বই কিনেছে,
-আন্টির কথা শুনে আমি আকাশ থেকে পড়লাম। --কি বলছেন আন্টি?
হুম ঠিকই বলছি,ওর ঘরে কি তুমি কখনো গিয়েছো??
-আমি মাথা নেরে বললাম, না। কখনো যাই নি?
-গেলে বুঝতে, এখানে বই আর সেখানে বই, যেদিকে তাকাবে, শুধু বই আর বই,
-কি সাংঘার্তিক???
-হুম সে জন্যই তো বলছি তুমি থাকলে একটু, একাকিত্ব দুর হয়, মন খুলে দুটো কথা বলতে পারি,
এবার আন্টির জন্য সত্তি সত্তি মায়া হচ্ছে, বেচারা আন্টি।
আচ্ছা, আন্টি সে কি ঘরে আছে?
না, ছাদে গেছে, তার নাকি মাথা ঝিমঝিম করছে, আচ্ছা তুমিই বলো তো এতো বই পড়লে মাথা ঝিমঝিম করবে নাতো কি করবে??
-হুম তা তো অবশ্যই।
সে এখন আবার চা খেতে চেয়েছিল, দেই নি। বলছি বই খেতে! কথাটা কি খারাপ বলেছি???
না আন্টি একদম ঠিক কথা বলেছেন,
আচ্ছা আন্টি আমি এখন যাই, একটু পড়ে আবার আসব?
-আচ্ছা এসো কিন্তু।
আমি চলে আসলাম, নিরব আর আমার জন্য দুটো চা বানিয়ে ছাদে চলে গেলাম, এখন অন্তত তাকে একা পাওয়া যাবে,
আমি ছাদে উঠতেই, বেচারা তারাহুরো করে, নেমে আসার চেষ্টা করছে, আমি দরজার দুই দিকে হাত দিয়ে রাস্তা আটকিয়ে রেখেছি,
এই একদম পালানোর চেষ্টা করবেন না,
- মানে??
যদি পালানোর চেষ্টা করেন, আমি কিন্তু চিৎকার করব??
-চিৎকার করবেন কেন??
-এমনি, চিৎকার করে বলব,আপনি আমাকে ছাদে একা পেয়ে!! তাই বলে ভোঁ ভো করে কাদতে শুরু করব।তাই সবাই বুঝে যাবে!!! বলে একটা ভিলেনি হাসি দিলাম।হাহাহা
- এ্যা,
-হুম,
-তো আমি এখন ছাদে থেকে কি করব??
বলছি, আগে চা, টা ধরুন,
ভয়ে ভয়ে হাত থেকে চা, টা নিল,
-কি ব্যপার, খাচ্ছেন না কেন? ভয় পাবেন না, বিষ দেই নি।
-না না ঠিক আছে! বলে ভয়ে ভয়ে চুমুক দিল,
-কেমন হয়েছে চা??
-খুব ভালো হয়েছে, আমি এখন আসি?
-কি, চা খাওয়া শেষ হয়েছে, আর বিদেয় হবে?? তা হবে না,
-তাহলে,
এখন আমার সাথে বসে গল্প করবেন!
-কেন!!!!
-এতো কেন কেন করবেন না তো, বিরক্ত লাগে,
-আচ্ছা
-এখন আমার কি মনে হচ্ছে যানেন?
-না, কি মনে হচ্ছে,
-মনে হচ্ছে তোমাকে খুন করি!!! কথায় কথায়, কেন আর, আচ্ছা। এই দুটো শব্দ যেন ২য় বার না শুনি।
-আচ্ছা,, বলেই জিব কামর দিল,
আমি আর না হেসে পারলাম না, সাথে নিরবও হেসে উঠল, ছেলেটার হাসি টা দারুন, এতোদিন শুনেছি মেয়েদের হাসি, সুন্দর হয়। এখন দেখছি ছেলেদের ও হয়। মেয়েদের হাসি দিয়ে যদি মুক্তা ঝরে, তাহলে এই ছেলের হাসিতে হিরা ঝরবে।
-আচ্ছা, কালকে আমাকে মার্কেটে নিয়ে যেতে পারবে।
-না,
-না কেন?
- এমনি কালকে আমার অনেক কাজ আছে এখন উঠি সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে।
- আচ্ছা উঠুন ভিতুর ডিম একটা। তবে কালকে নিয়ে যেতেই হবে।
★সকাল বেলা,
আন্টিকে গিয়ে ধরলাম, আন্টি আপনার ছেলেকে বলেন না আমার সাথে মার্কেটে যেতে?
আন্টি নিরব কে ডাকতে শুরু করলেন এমনভাবে ডাকছে মনে হচ্ছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ যুদ্ধ বাধিয়ে ফেলবেন।
নিরব একটু মিষ্টি সাথে মার্কেটে যা তো, বেচারি যাওয়ার লোক পাচ্ছে না আমার কাজ আছে নাহলে আমিই যেতাম।
- না আমি যেতে পারবো না আমার অনেক কাজ আছে।
- তোর আবার কিসের কাজ সারাদিন ঘরের মধ্যে বসে থাকা ছাড়া যেতে বলছি এক্ষুনি যা।
-না আমি পারব না.
-নিরব! (আন্টি এমনভাবে নিরবে দিকে তাকালেন দেখে আমারই ভয় করছে)
-যাচ্ছি তো।
- এইতো আমার লক্ষি ছেলে যা বাবা দেখেশুনে যাস।
-tnq...আন্টি।
- আন্টি আমার কথায় মুচকি হাসলেন। তবে নীরবকে দেখে মনে হচ্ছে বেচারা খুব রেগে আছে।
তাতে আমার কি!!!
আমি আর নিরব এখন রিকশায় বসে আছি, খুব ভাল লাগছে তার সাথে ঘুরতে। মনের মধ্যে হাজার feelings জন্ম নিচ্ছে তার একটু একটু ছোঁয়া মাতাল করে দিচ্ছে, আচ্ছা কাউকে ভালবাসলে কি এরকমই হয়,হয়ত হয় কিন্তু সেটা আমার অজানা, কিন্তু দুঃখের বিষয় যতবারই তার সাথে আমার গা লাগছে ততবার'ই সে সরে সরে বসছে।
- কি ব্যাপার এ রকম ছটফট ছটফট করছ কেন?
- না মানে??
-কি মানে মানে করছ, আচ্ছা চাচা আপনার রিকশা কি ছোট??
-না মামনি রিকশা তো এরকমই হয়!
আমি কি বলতে চেয়েছি নিরব সেটা বুঝতে পেরেছে তাই সোজা হয়ে চুপ করে বসে আছে।
-আচ্ছা তোমার মধ্যে কি কোনো ফিলিংস নেই নাকি পাশে একটা সুন্দরী মেয়ে বসে আছে তুমি ছটফট ছটফট করছে।
-না মানে।
-কি মানে মানে করছো, বলেই তার দিকে একটু গরম দৃষ্টীতে তাকালাম বেচারা খুব ভয় পেয়েছে, মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে।
আজকে মার্কেটে গিয়ে অনেক বেশী মার্কেট করলাম নিরব কে একটা টি-শার্ট কিনে দিয়েছি, খয়েরি কালারের, তার গায়ে খুব মানিয়েছে, র্টি-শার্ট টি।
আজকে অফিস থেকে বাবা আসার পর বাবাকে বললাম, আমি আন্টির সাথে বেড়াতে যাব বাবা খুব অল্পতেই রাজি হয়ে গেল, বলল যাবি তো যা অনেকদিন তো কোথাও ঘুরতে যাসনি ঘুরে আয় ভালো লাগবে, আমার বাবা যে কেন এরকম মাঝে মাঝে বুঝে উঠতে পারিনা, কখনো কোনো আবদার অপূর্ণ রাখে না, পৃথিবীতে যদি একটি ভালো বাবা থাকে তবে সেটা আমার বাবা।
★সকালবেলা
আমি আন্টি, আঙ্কেল আর হাবলু টা বের হয়েছি অনেক দূরের রাস্তা তাই খুব সকালে বের হয়েছি আমি আর নীরব সামনে আর আন্টি আর আঙ্কেলও আমাদের পিছনে বসেছে। টুকটাক কথা হচ্ছে আমাদের মাঝে যতটা হাবলু ভেবেছিলাম আসলে ততটা না কথা বলতে পারে।
বাস চলছে আপন মনে, আর আমরা জানালা দিয়ে তাকিয়ে বাইরে প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করছি খুব সুন্দর লাগছে আরও সুন্দর লাগছে কারণ পাশে হাবলু টা বসে আছে। হাবলু টা পাশে বসে থাকলে কেন যে এত ভালো লাগে বুঝি না।
একটু পর,
ঘুমোনোর ভান করে, তার কাধে মাথা রাখছি, যতবারই মাথা রাখছি, ততবারই, সে মাথা ধরে সোজা করে দিচ্ছে, এতে আমার যে বিরক্ত লাগছে তা নয়, বরং ভালোই লাগছে, কাছের মানুষের একটু ছোয়াও কিছু সময় অনেক ফিলিংসের জম্ম দেয়। এ রকম করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি, বুঝতেই পারি নি।
ঘুম ভাঙলো নিরবের ডাকে, উঠে দেখি নিরবের কাধে আমার মাথাটা এখনো আছে।
- কি মেমসাহেব ঘুম হলো?
-আমি মাথা নেরে সায় দিলাম,
-তো চলুন এবার যাওয়া যাক,
-হুম চলেন। একটি প্রশ্ন মনের মধ্যে জম্ম নিচ্ছে যে,নিরবের কাধে মাথা ছিল, কিন্তু সে কিছু বলল না,
-চলে আসলাম খালার বাসায়, অনেক বড় বাড়ি, বাড়ি ভর্তি মানুষ, সবাই নিরব কে নিয়ে কি হেস্তনেস্ত শুরু করে দিসে, বলে বোঝাতে পারব না, আমার খুব মায়া হচ্ছিল,বেচারার জন্য, দেখে মনে হচ্ছে কখন যেন দম বন্ধ হয়ে মারা যাবে, আবার হাসিও পাচ্ছিল।
আন্টি সবার সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন, একজন কে পেয়ে খুব ভালো লাগছে, সে হচ্ছে নিতু, বয়সে আমার থেকে দু বছরের ছোট, তবে কথায় খুব সেয়ানা, আসার পর থেকে বলে যাচ্ছে, আপু তুমি কিন্তু আমার সাথে শোবে, সারা রাত তোমার সাথে গল্প করব ?? এ কথাটা না হলেও সাত বার বলেছে,
রাতের খাওয়া শেষে আমি আর নিতু এক রুমে ঘুমিয়েছি, বেচারি সারা রাত ঘুমোতে দেয় নি, এমনি তে রাত ভোরে বকর বকর করছে, তার উপর আবার ঘুমের ঘরে, একবার গায়ের উপর হাত তুলে দেয় তো একবার পা তুলে দেয়, কি সমস্যাই যে পরেছি, বলতে পারছি না।
খুব সকালে ঘুম থেকে ডেকে তুলেছে নিতু, আমাকে নাকি নদী দেখাবে, সকাল বেলা নাকি নদীর আলাদা একটা সুন্দর্য থাকে, সেটাই দেখাবে।
আচ্ছা মিষ্টি আপু, যদি নিরব ভাইয়া কে ডেকে নিয়ে আসি তবে কেমন হবে?
-হুম ভালোই, হবে,
-ঠিক আছে, বলেই চলে গেল নিরবের রুমে,আমিও পিছে পিছে গেলাম। গিয়ে ডাক শুরু করে দিল,
এই নিরব ভাইয়া ওঠ ওঠ না, বলেই হাত ধরে টানাটানি শুরু করে দিল, কিন্তু বেচারার ঘুম ভাঙার কোন লক্ষনই নেই। একবার হাত ধরে টেনে বিছানার এ পাশে নিয়ে যাচ্ছে, তো আরেক বার ও পাশে, কিন্তু মহারাজ এতোই ঘুমে ব্যস্ত যে কিছুই ঠিক পাচ্ছে না।
নিতু বলল আমার বিশ্বাস, এর ঘরে যদি চোর ঢুকে লুঙ্গিও খুলে নিয়ে যায় তাও সে ঠিক পাবে না, বলেই খিলখিল করে হাসতে শুরু করল।
নিতু একটা উপায় কিন্তু আছে !!
-কি??? নিতুর মুখখানা চকচক করছে,
তোমার ভাই এর মুখে , একমগ পানি ঢেলে দাও দেখবে, কাজ হয়ে গেছে,
- গুড আইডিয়া, বলে এক দৌরে পানি নিয়ে আসল নিতু।
-কি দেবো??
-দেবে না মানে অবশ্যই দেবে,,,
-! নিতু, নিরবের মুখে পানি ঢেলে দিল,
ওমনি কাজ হয়ে গেল, নিরব ধচমচ করে উঠে চিৎকার করতে লাগলো, কে কে??
এই ভাইয়া চুপ কর, আমি, আমি দিয়েছি!
-কেন তুই এতো সকালে আমার মুখে পানি দিলি ক্যন?
-ওঠ ঘুরতে যাবো, নদীর পারে,
- what????
-ওয়াট ফোয়াট বলে লাভ নেই, চল, যেতেই হবে, বলে টানতে টানতে নিয়ে আসল নিতু।
আর এদিকে আমি দর্শক হয়ে, সুধু তাদের কান্ডকাখানা দেখছি।
তিনজন মাটির রাস্তা ধরে হাটছি, মাঝখানে নিতু, আর একপাসে আমি, আর অন্য পাশে নিরব,
নিতু বকবক করে যাচ্ছে, আমি আর নিরব সুধু হ্য না উওর দিচ্ছি।
হাঁটতে হাঁটতে নদীর কাছে চলে এসেছি খুব সুন্দর নদী নদীতে হালকা স্রোত বইছে এমন সময় নিতু বলে উঠলো মিষ্টি আপু নৌকা তে উঠবে আমি নৌকা চালাতে পারি।
আমিতো মিষ্টির কথায় পুরো অবাক বলে কি মেয়েটা সে নাকি নৌকা চালাতে পারে? নৌকায় ওঠার ইচ্ছে আমার কোনোভাবে ছিল না তারপরও মিষ্টির জোরে উঠৈ পরলাম।
ওদিকে নিরব বেচারা পড়েছে মহা সমস্যা সে কিছুতেই নৌকাতে উঠবে না, তারওপর আবার সাঁতার জানেনা, শেষ পর্যন্ত নিতুর জোরাজোরিতে উঠতে বাধ্য হলো।
নিতু নৌকা চালাচ্ছে খুব ভালোই চালাচ্ছে কিন্তু বিপত্তি ঘটল নদীর মাঝখানে গিয়ে নোকা কিছুতেই পারে ফেরাতে পারছে না, কি একটা সমস্যা সবার মধ্যেই কি এক আতঙ্ক। এখন কি হবে ওদিকে নৌকা স্রোতে বয়ে চলে যাচ্ছে, আর নিরব এদিকে চেচামেচি শুরু করে দিয়েছে, ভয়ে বেচারার মুখ খানা দেখার মতন হয়েছে, তবে আমার খুব আনন্দ লাগছে এর আগে এরকম পরিস্থিতির শিকার হয়নি। কিছু মানুষ মরবে জেনেও আনন্দে থাকে যেমন এখন আমি আছি।
নিরবঃআমি বারবার করে বললাম আমি নৌকায় উঠব না আমি সাঁতার জানি না, আর উনি হিরো হয়েছে, জোর করে আমাকে নৌকাতে তুলল এখন আমাকে বাঁচাবে কে? আল্লাহ রক্ষা করো, বলে, চিৎকার শুরু করছে।
-ওদিকে নিতুর কোন টেনশনই নেই, ও নৌকা পারে ভেড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে,
নিতুঃকি আর হবে আমি হিরো আর তুই হিরোইন আমি তোকে বাচাবো আর মিষ্টি আপু ভিলেন সে নদীতে ডুবে মরবে।বলে হো হো করে হাসতে লাগলো
নিরবঃতোকে থাপ্পড় মেরে সবকটা দাঁত ফেলে দেবো হারামজাদী, এই পরিস্থিতিতেও তুই মজা করছিস? আল্লাহ বাচাও, বাচাও আমায়?? বলে আবার চিৎকার করতে লাগলো নিরব।
নিরবের এই কথা আমি থতমত খেয়ে গেছি যে ছেলে কথাই বলতে পারেনা, সে এখন মরার ভয়ে রীতিমতো চেঁচামেচি করছে।
অবশেষে নিতু নৌকা পারে ফেরাতে সক্ষম হলো, নিরব লাফ মেরে নৌকা থেকে নেমে হাঁপাচ্ছে, আমি নিরব এর কান্ড দেখে হাসবো না কাঁদবো কিছুই বুঝতে পারছি না, বেচারা কি ভয় ই না় পেয়েছে সেটা বলা যাচ্ছে না।
বাসায় চলে আসলাম এদিকে নিতু এর কান্ড কারখানা দেখে আমার খুব মেজাজ গরম হচ্ছে, সারাক্ষণ নিরবের পিছে পড়ে থাকে, নীরব যদি খেতে যায়, তবে সেও তার সাথে খেতে যাবে।যদি কোথাও ঘুরতে যায় তাহলে সে ও তার সাথে ঘুরতে যাবে।
অসহ্য লাগছে, নিতুর কর্মকান্ড।
, তার বোনের যে বিয়ে সেদিকে তার কোন খেয়াল নেই, সারাক্ষণ শুধু নিরব, নিরব করে, মরতে বসেছে। এসব দেখে আমারও খুব টেনশন হচ্ছে।
যদি একবার ভালোবাসি বলে ফেলে, তাহলে আমার কি হবে? আমি তো শিওর আমি মারা যাব! এখানে থাকব আর 2 দিন, কিন্তু আমার মনে হচ্ছে এখনি নিরবকে নিয়ে পালিয়ে যাই় মেয়েটা কখন কি করে বসে বলা যায়না,
*পরেরদিন,
সকাল থেকেই খুব বিজি নিতুকে সাজাতে গিয়ে এত বেশি কেউ সাজে! মনে হচ্ছে নিতুর বড় বোনের না, নিতুর বিয়ে! আর বারবার নীরবকে বলছে দেখতো কেমন হয়েছে??? এতে আমার বিরক্তির চরম শিখরে পৌঁছে গেছে।আর নীরব কে এতো দেখানোর কি আছে?
নিরব বারবাই বলছে, ভালো হয়েছে! কিন্তু নিতুর বিশ্বাস হচ্ছে না।তার মনে হচ্ছে ভালো হয় নি? তাই বারবার এসে আমার কাছে বায়না করছে, আপু এভাবে না, অন্য ভাবে সাজিয়ে দাও।আমি পরেছি মহা সমস্যায়, না পারছি, হ্যা বলতে , তো, না পারছি না বলতে।
বড়আপুর বিয়ে হয়ে গেল, কান্নাকাটির পর্ব শেষ করে, তারা বৌ নিয়ে বিদায় হলো, নিতুকে দেখলাম, কান্না করছে, কিন্তু তার চোখ দিয়ে একফোটা জলও বের হচ্ছে না।তার একটা কারন আছে, সে মেকাপের চিন্তা করছে, যদি নষ্ট হয়ে যায়???
এই সুযোগে আমি, নিরবকে, টানতে টানতে নিয়ে বের হলাম, এখন নিতু নেই, যা করার এখনি নি করতে হবে, নিরব কে নিয়ে বারতি টেনশন নিতে ভালো লাগছে না।
নদীর পারে, নিয়ে এসেছি নিরব কে!
নিরবঃ এভাবে টেনে আনার মানে কি?
আচ্ছা আমি কি নিতুর থেকে দেখছে খারাপ??
-এতো দূর থেকে টেনে এনেছো এ কথা শোনার জন্য?
- হুমম, বল না???
- নিরব অনেক টা গম্ভির শুরে উওর দিল! না!!
-বুকের ভেতর ধুপ করে শান্তি ফিরে এলো। এবার ঠিক আছে। বলেই বত্রিশ টা দাত বের করলাম।
-কি এর মানে কি??
-মানে কিছুই না, তোমাকে নিয়ে বারতি টেনশন নিতে পারছি না।
-মানে???
-নিতুর মতিগতি ভালো লাগছে না, যখন তখন ভালোবাসি বলে ফেলতে পারে!!তুমি কিন্তু ভুল করেও রাজি হবা না। আর রাজি হলেই আমি শেষ!
-শেষ মানে??
-শেষ মানে শেষ, ছাদ থেকে লাফ দিয়ে পরে মারা যাব!!
-মানে???
-এতো মানে মানে করো না তো, শুনো আমি তোমাকে ভালোবাসি, আর তোমাকে না পেলে সত্তি সত্তি মারা যাবো!!
-কি???
- হুম, এতোদিন সাথে থেকেছো, এখনো বুঝতে পার নি?? কেন সারাদিন তোমার পিছে পিছে ঘুরি, কেন ঝগড়া করতে চাই?
নিরব স্টাচু হয়ে গেছে, কিছু বলছে না,
-শুনো তোমাকে একটা কথা বলতে চাই! যেটা এর আগে কাউকে বলি নি!
-কি?
-I love you, বলেই একটা দৌর দিলাম, খুব লজ্জা করছে, তাই রিপ্লে শোনার আশা করি নি, পালিয়ে এলাম,
এসেই দেখি, নিতু সামনে দারিয়ে, কই গেছিলে আপু?
-এই তো একটু তোমাদের এলাকা ঘুরে দেখলাম,
-নিরব ভাইয়া গেছিল?
-হুম, আমি আর নিরবই তো ঘুরলাম,
-তো আমাকে ডাকলে না কেন?
- দেখলাম তোমার বড় আপু চলে গেল তাই কান্না করছো, মন টা খারাপ তাই ডাকলাম না!
- কে বলছে আমার মন খারাপ। আমি তো খুব খুশি আপুর বিয়ে হয়েছে বলে।ভালো হয়েছে এবার আমার পালা, বলেই। লজ্জায় মুখটা লাল করে ফেলল।
-তাই নাকি? তবে কাদলে কেন?
-ওটুকু তো, লোক দেখানোর জন্য কেদেছি, তা ছারা মানুষ খারাপ বলতো না, বলতো, বরবোনের জন্য একটুও মায়া নেই!
-এ্যা?
-হুম, আচ্ছা নীরব ভাই এখন কোথায়?
- আমাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে সিগারেট খেতে গেছে কিনা বলতে পারছি না!
- কি নীরব ভাই সিগারেট খায়?
-কেন তুমি যানো না?
- নীতু মাথা নেড়ে বললো, না তো
- নীরব বাসায় আসার পর নিতু তাকে এমনভাবে জেরা শুরু করে দিচ্ছে মনে হচ্ছে তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে সে একটা সাংঘাতিক খুন করেছে, কোথায় গিয়েছিলি, আমাকে নিয়ে যাস নি কেন, তুই নাকি ইদানিং খুব বাজে হয়ে গেছিস, সিগারেট খাওয়া শুরু করেছিস, আমার কি মনে হচ্ছে জানিস?
-নিরব দুটো ঢোক গিলে উওর দিল, কি??
-নিতু দাত কিটবিট কিটবিট করতে করতে বলল, মনে হচ্ছে, এখনি গলা টিপে মেরে ফেলি?
-এ্যা
--নিতু আর কিছু বলল না, রাগ চেক দেওয়ার চেষ্টা করছে,
সেদিন রাতে অনেকক্ষণ আমরা তিনজন বসে আড্ডা দিলাম, আমার খুব মাথাব্যথা ছিল তারপরও ঘাপটি মেরে বসে ছিলাম, আর যাই করুক আমার সামনে ভালোবাসি তো আর বলতে পারবেনা, রাত পোহালেই তো বিদায় হব।
★সকালবেলা
চলে আসতেছি হঠাৎ নিতু এসে বলল, তোকে একটা কথা বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু বলবো না জানি তোকে বলে কোনো লাভ নেই, কারন তুই একটা আবাল পোলা।
সত্যি কথা বলতে সেদিনকার মত স্বস্তি আমি জীবনে পাইনি।
বাসায় চলে এসেছি নিরবের বাসায় যেতে লজ্জা লজ্জা করে তাই একটু কম যাই,় ওদিকে আন্টি তো রেগে ফায়ার।
.একদিন বিকেলবেলা আন্টিদের বাসায় গেছি,
কি এখানে এসেছিস কেন?
কেন আসবো না?
আন্টি রাগান্বিত কন্ঠে বললেন, না, এখানে আসবি কেন? আমি কি তোর কেউ হই? জানিস একা একা বাসায় সময় কাটে না, তোকে পেয়ে ভেবেছিলাম ভালোই হল, অন্তত একজন পেয়েছি, যার সাথে কথা বলে দিন পার করা যায়। এখন দেখি সেও একই রকম??
-আন্টি তোমার যেহুতো এতো সমস্যা, তাহলে তোমাকে একটা বুদ্ধি দেই,
-কি??
তোমার ছেলের সাথে আমার বিয়ে দিয়ে বৌমা করে নাও ?তাহলেই তো হয়!!
কিভাবে যে কথাটা বললাম নিজেও জানিনা এখন আন্টির চোখের দিকে তাকাতে লজ্জা করছে ওদিকে আন্টি হা করে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে!
-কি তুই ওই বাঁদরটাকে বিয়ে করবি? সারা জীবন জ্বলে মরবি!!
-তারপরও আন্টি আমি বাদরকে বিয়ে করতে চাই?? -নানা আমি তোর জীবনটা এভাবে নষ্ট হতে দিতে পারি না।
- ধুরো আন্টি তুমি কি যে বলো না জীবন নষ্ট হবে কেন, আমি ঠিক সামলে নেব!! লজ্জায় যে মুখ টা লাল করে ফেলেছি, সেটা নিজেই বুঝতে পারছি।
-সত্তি বাদর বিয়ে করবি??
--আমি মাথা নেরে বললাম হুম!
-কিন্তু সে তো বেকার!! খাওয়াবে কি তোকে?
- কেন তোমরা আছো না, তোমাদের ভাত জুটলে, আমারও জুটবে, ওতেই চলবে।
-আচ্ছা, তোর বাবার সাথে কথা বলে দেখি,
-সেটা আমি বাবা কে আগেই বলছি, বাবা রাজি আছে!
-এমা বলিস কি!?
-হ্য। আচ্ছা তোমার বাদর টা এখন কোথায়?
-কোথায় আবার দেখ রুমেই আছে, বলেই একটা হাসি দিল।
-নিরবের রুমে আসলাম, আসলেই আন্টি ঠিকই বলেছে, রুমটা বেশ অগোছালো, এখানে বই তো সেখানে বই, কোথাও কিছু ঠিক নেই। আর বেচারা শুয়ে শুয়ে বই পরছে, বই এর নাম, হিমু রিমান্ডে।
বইটা আমিও পড়েছি, বই পড়ে মনে হয়েছিল। আমি যদি ছেলে হোতাম। তবে হিমু হতাম। রাতের বেলা জঙ্গলে গিয়ে জোসনা দেখতাম, সারাদিন টইটই করে রাস্তায় ঘুরতাম, মজাই অন্যরকম।
রুমে ঢুকেই দরজা বন্ধ করে দিলাম,
আমাকে দেখে ধরফর করে উঠে পড়ল, নিরব!!
-এ এই তুমি এখানে কেন? আর দরজা বন্ধ করলে কেন ?? বেচারা কথা বলতে পারছে না, তোতলাচ্ছে।
--আমি থাকবো না তো কে থাকবে শুনি??
-মানে??
--মানে তুমি আমাকে বিয়ে করছ!!
--অসম্ভব
-- আমি একটু উদাশ ভঙ্গিতে বললাম,বলে আর কোন লাভ নেই, সব উপরওলার ইচ্ছা!!
- উপরওলার ইচ্ছা মানে, তোমাকে বিয়ে করা ইমপসিবল!!!
-হা হা শুনো, তুমি যদি আমাকে বিয়ে করতে রাজি না হও তবে আমি এখন চিল্লবো,
-চিল্লাবা মানে!!
-হুম চিল্লাবো, চিল্লায়ে লোক জরো করে বলব, তুমি আমার সর্বনাস করেছ, সেটা কি ভালো দেখাবে বল!! মানসম্মানের ব্যপার!!
- এ্যা,, (বাদর টার মুখ দেখার মত হয়েছে, ঘেমে পুরো শার্ট চিপচিপ করছে।)
--আমি এগিয়ে গিয়ে বাদর টার কলার চেপে ধরে বল্লাম,, আমি ৩ পযন্ত গুনবো এর মধ্যে রাজি হতে হবে, না হলেই, জামা টা কয়েক যায়গার ছিরে, চিল্লানি শুরু করব!বলেই, গুনতে শুরু করলাম,
তিন বলার আগেই, বেচারা ভয়ে ভয়ে, বলে উঠল, আমি রাজি!! আমি রাজি।
-সত্তি তুমি রাজি??
-হুম,
-হাউ সুইট, মনে হচ্ছে এখনি একটা কিস করি??
--কিস করবা?
--হুম
--আচ্ছা কর ??
-দেখে তো মনে হয় ভাজা মাছ উল্টে খেতে পারো না, আর এখন কিস করতে বলছো? বাদর একটা।
-সমস্যা কি বউই তো,
--এ্য ন্যাকা, বিয়ের আগেই বৌ বানিয়ে ফেলছে। বিয়ের আগে এসব করতে নেই, যা হবার বিয়ের পর হবে, বলেই, দৌরে চলে আসি।
কিছু জিনিস, জোর করে নিজের করে নিতে হয়
না হলে সারাজিবন পস্তাতে হয়।
★কিছুদিন পর,
দুই পরিবারের সম্মতিতেই ধুম ধাম করেই বিয়েটা হয়,
বাসর ঘরে বসে আছি খুব লজ্জা করছে, জিবনের প্রথম বৌ সেজে নিরবের আসার অপেক্ষা করছি,,
ফিলিংস টা যেন কি রকম নার্ভাস নার্ভাস,
অবশেষে, নিরব আসলো, আমি উঠে গিয়ে সালাম করলাম, এটা বাঙালী মেয়েদের একটা নীতি-স্বভাব
নিরব আমাকে টেনে তুলল,
-আমি ফট করে বলে উঠলাম, চলো আজকে জোসনা দেখে পার করে দেই, যে ভাবে হিমু দেখে??
আচ্ছা, চলো,
নিরবের বাম হাত টা ধরে কাধে মাথা রেখে, চাদের দিকে তাকিয়ে ভাবছি, আসলেই ছেলাটা অদ্ভুদ, যা
বলছি, তাই করছে, আসলে এমন জিবনসঙ্গী পাওয়া ভ্যাগের ব্যপার। আমি মানুষ চিনতে ভুল করি নি।
মিষ্টিঃ কি ব্যপার এ রকম ড্যবড্যব করে তাকিয়ে আছো কেন??
নিরবঃ দেখছি, চাদের আলোয় আমার মিষ্টিকে,
যেখানে জোসনা এসে হার মানে।
যে আলোয় তাকে আরো মধুময় লাগে,
যেটা দেখে আকাশের চাদঁ টা হিংসে করে
দেখছি আমার সেই মিষ্টি কে।
---বাহ খুব ভালো ছন্দ মিলাতে পারো তো?
-তোমাকে দেখে হয়ে উঠব কবি,
লিখব প্রেমের হাজার কবিতা।
তোমাকে দেখে হয়ে উঠব গায়ক,
গাইব, প্রেমের গান!!
--তা সাহেব,, এতোদিন কই ছিলেন, এতোদিন চোখে পড়ে নি??
--পড়েছে তো, তোমার মিষ্টি থ্রেট গুলো অসম্ভব ভালো লাগতো, আর তোমার রাগী রাগি চেহারা! সে জন্যই তো?
--কি,?? তারমানে তুমি, আমাকে ভালোবাসতে??
--সে তো প্রথম দিন থেকেই,
--কি, বাদর, হারমি, বিড়াল বলে, বুকে কিল ঘুষি মারতে মারতে জরিয়ে ধরলাম ।
নিরব ও তার বাহুতে জরিয়ে নিলো আমায়,।।
পৃথিবীতে যদি, ভালোবাসার অনুভৃতি থাকে, তবে এটাই সেই অনুভৃতি, যেটা আজ আমি খুজে পেয়েছি।
★★এখন একটা গান মনে পড়ছে,,,
এ ভালোবাসা, শেষ হওয়ার নয়,
নয় কভু হারাবার।
এ ভালোবাসা, অসীম, অনন্ত পথ
হাত ধরে পাড়ি দেওয়ার।
লেখক আইডি....
Nistobdho Nirob (হিমু)
আজ দুইমাস পার হয়ে গেল, তাও তার সাথে একের থেকে দুইটি কথা বলতে পারি নি, মাঝে মাঝে ঝগড়া করার চেষ্টা করি, কিন্তু সে তো একটা মস্ত বড় আবাল, সে আর ঝগড়া করবে কি?
আজকে বিকালের ঘটনা, ভার্সিটি থেকে বাসায় ফিরছিলাম, বাসার সামনে আসতেই দেখি, পিছনে নিরব, হাতে একটা ডিমের খাচি, মাথায় একটা বুদ্ধি চাপলো, ভাবলাম একটা ডোজ দেওয়া যায়।
তাই তার সামনে সামনে হাটতে শুরু করলাম, বেচারা বেশ কয়েকবার, আমার সামনে যাওয়ার চেষ্টা করল কিন্তু, সেটা আর সম্ভব হলো না, শিরির কাছে আসতেই, তার সামনে কোমরে হাত দিয়ে দাড়িয়ে পরলাম,
নিরব ও থমকে দারালো, মুখে আতংক, ভয়ে বেচার মুখ খানা দেখার মত হয়েছে,
-চোখ পাকিয়ে বললাম, কি ব্যপার????
-কই, কোন ব্যপার নেই তো, (মুখ টা চুপসে গেছে দেখে কি যে মজা লাগছে, বলার মত না। আসলে আমি একটু দুষ্ট আছি, তবে বেশি না, আসলে দুষ্টামি করতে ভালো লাগে, তাই মাঝে মাঝে একটু একটু করি!!)
-আরেকটু কঠিন গলায় বললাম, তাহলে পিছে পিছে ঘুরছো কেন?
বেচারা তথবত খেয়ে গেছে, তোতলানো কন্ঠে কিছু একটা বলতে চাচ্ছে, ঠিকই বলতে পারছে না,
কি, ক ক ক করছো, থাম আমার কথা শুনো! বলেই একটা ধমক দিলাম।
নিরব, আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে, কিছু বলতে পারছে না,
আমি বলতে শুরু করলাম,
শুনো তুমি কিন্তু আমার পিছে পিছে, আর ঘুরবে না, আমার কিন্তু এসব ন্যাকামি একদম ভালো লাগে না? অসহ্য লাগে।
-আচ্ছা।
-আচ্ছা মানে? এর আগেও তোমাকে বলেছি, আমার পিছে ঘুরবে না, ঘুরবে না! তারপরও ঘোরো লজ্জা করে না,বকা শুনে? আর কিছু বললেই আচ্ছা।
-নিরব কি বলবে সেটা ঠিক ভেবে পাচ্ছে, না তাই চুপ করে আছে। কারন মিষ্টি তাকে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে,
এখন যদি নিরব বলে, কই আমি তো আপনার পিছে ঘুরি না! তবে এটা নিয়ে তুমুল ঝগড়া বাধিয়ে দেবে মেয়েটা।
এর আগেও বেশ কয়েকবার এ রকম কান্ড করেছে,
উপড়ে পড়ে ঝগড়া করেছে, আসলে মেয়েটার নাম, মিষ্টি না হয়ে টক, হলেই ভালো হতো, নামের সাথে মানাতো।
-কি ব্যাপার চুপ করে আছো কেন?
-আমার কিছু বলার নেই।
-কিছু বলার নেই মানে, সারাদিন পিছে পিছে ঘুরবা, ইনিয়ে বিনিয়ে কথা বলতে আসবা, আর এখন বলছো কিছুই বলার নেই?
-আমি কখন ইনিয়ে বিনিয়ে কথা বলতে আসলাম, আমি তো ডিম কিনতে গেছলাম।
এ্য,, ডিম কিনতে গেছিল,,, হাদারাম কোথাকার, ----নিরব, সাইডে একটু যাইগা পেয়ে, ঝরের বেগে দৌরে পালিয়ে গেল,
তার রাস্তা আটকাতে গিয়ে, কাধের সাথে খুব জোরে একটা ধাক্কা খেলাম, অবশ্য বেথাও পেয়েছি, তবে মজা লাগছে, তাকে একটু জালাতে পেরেছি বলে।
একটু পর, নিরব দের বাসায় গেলাম, বেচারার খোজ নিতে, গিয়েই দেখি আন্টি রান্না করছে,
-কেমন আছেন আন্টি?
-এইতো মা ভালো, তুমি কেমন আছো,
-আমিও ভালো আছি,
-সারাদিন কোথায় ছিলে, একা একা দম বন্ধ হয়ে মারা যাচ্ছিলাম। এখন তুমি এসেছো ভালো লাগছে।
আমি আন্টির কথায় একটু হাসলাম, আন্টি টা এতো ভালো, তবে সারাদিন বাচালের মত কথা বলে, এতে আমার যে খুব খারাপ লাগে তা নয়,বরং ভালোই লাগে।
আমার আম্মু মারা যাওয়ার পর খুব একা হয়ে গেছিলাম, তবে এখন আন্টি কে পেয়ে আম্মুকে ভুলতে বসেছি, বাবা সারাদিন ব্যবসার কাজে বাইরে থাকে, আর আমি সারাদিন আন্টির সাথে গল্প করে পার করে দেই। আর একটু যদি আন্টির আরাল হই, সেটারই কৈফত দিতে হয় আন্টির কাছে।
দেখো না, মা তোমার আঙ্কেল সারাদিন তার কাজ নিয়ে ব্যস্ত, বাসায় আসে, তাও হাতে ল্যাপটপ নিয়ে পড়ে থাকে, কথা বলার সময় টুকু নেই। আর তার ছেলে হয়েছে আরেক ব্যস্ত মানুষ, সারাদিন বই হাতে, নিয়ে পরে থাকে। ঘর থেকে বের হওয়ার সময় টুকু তার হাতে নেই, একবার ভাবলাম, নিরব এর তো পরিক্ষা শেষ, পড়াও শেষ। এবার হয়তো ফ্রি হবে। তা তো নইই, উল্টো আরো বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ল,
-আরো ব্যস্ত হয়ে গেল মানে??
-আর বলো না, পড়াশোনা শেষ করে বিদ্যসাগর হয়েছিস ভালো কথা, এবার একটু ঘর থেকে বের হ, ঘুরাঘুরি কর, ঘরকুনো হয়ে বসে আর কতদিন থাকবি? তার খালাতো বোনের বিয়ে, কতবার যে ফোন করেছে, তোমাকে বলে বোঝাতে পারব না, তার একই কথা, সে গিয়ে কি করবে, আর গেলেও আমার সাথে যাবে!
আচ্ছা তুমি আমাদের সাথে যাবে??
-যাবো না মানে অবশ্যই যাবো! অনেকদিন কোথাও বেরাতে যাই না। (এমনভাবে কথাটা বললাম যেন আমি তাদের পরিবারেই একজন আমাকে ছারাই তারা যাবে, আর আমি একাই বাসায় বসে থাকবো)
আচ্ছা, তাহলে তোমার বাবাকে বলো,
-আচ্ছা।
-তারপর কি হলো আন্টি! আবার ব্যস্ত হয়ে গেল কিভাবে?
আর বলো না, এবার আবার পড়া শুরু করলো, গল্প আর উপন্যাসের বই, দিন রাত চব্বিশ ঘন্টা বই পরে, ছেলেটা রাতে ঠিকভাবে ঘুমোতে পারে না,
ঘুমের ঘরেই পড়ে, আমি বেশ কয়েকবার আরি পেতে শুনেছি,
সকালে উঠেই আবার, বই। তুমি বিশ্বাস করবে না , ওর যত বই আছে সেগুলো বিক্রি করে, ৬ মাস অনায়াসে সংসার চালানো যাবে।
-বলেন কি আন্টি???
-কি আর বলবো তোমায়, ওর পরিক্ষা শেষ হয়েছে, ২ মাস! এই ২ মাসে ও শুধু, এিশ হাজার, টাকার বই কিনেছে,
-আন্টির কথা শুনে আমি আকাশ থেকে পড়লাম। --কি বলছেন আন্টি?
হুম ঠিকই বলছি,ওর ঘরে কি তুমি কখনো গিয়েছো??
-আমি মাথা নেরে বললাম, না। কখনো যাই নি?
-গেলে বুঝতে, এখানে বই আর সেখানে বই, যেদিকে তাকাবে, শুধু বই আর বই,
-কি সাংঘার্তিক???
-হুম সে জন্যই তো বলছি তুমি থাকলে একটু, একাকিত্ব দুর হয়, মন খুলে দুটো কথা বলতে পারি,
এবার আন্টির জন্য সত্তি সত্তি মায়া হচ্ছে, বেচারা আন্টি।
আচ্ছা, আন্টি সে কি ঘরে আছে?
না, ছাদে গেছে, তার নাকি মাথা ঝিমঝিম করছে, আচ্ছা তুমিই বলো তো এতো বই পড়লে মাথা ঝিমঝিম করবে নাতো কি করবে??
-হুম তা তো অবশ্যই।
সে এখন আবার চা খেতে চেয়েছিল, দেই নি। বলছি বই খেতে! কথাটা কি খারাপ বলেছি???
না আন্টি একদম ঠিক কথা বলেছেন,
আচ্ছা আন্টি আমি এখন যাই, একটু পড়ে আবার আসব?
-আচ্ছা এসো কিন্তু।
আমি চলে আসলাম, নিরব আর আমার জন্য দুটো চা বানিয়ে ছাদে চলে গেলাম, এখন অন্তত তাকে একা পাওয়া যাবে,
আমি ছাদে উঠতেই, বেচারা তারাহুরো করে, নেমে আসার চেষ্টা করছে, আমি দরজার দুই দিকে হাত দিয়ে রাস্তা আটকিয়ে রেখেছি,
এই একদম পালানোর চেষ্টা করবেন না,
- মানে??
যদি পালানোর চেষ্টা করেন, আমি কিন্তু চিৎকার করব??
-চিৎকার করবেন কেন??
-এমনি, চিৎকার করে বলব,আপনি আমাকে ছাদে একা পেয়ে!! তাই বলে ভোঁ ভো করে কাদতে শুরু করব।তাই সবাই বুঝে যাবে!!! বলে একটা ভিলেনি হাসি দিলাম।হাহাহা
- এ্যা,
-হুম,
-তো আমি এখন ছাদে থেকে কি করব??
বলছি, আগে চা, টা ধরুন,
ভয়ে ভয়ে হাত থেকে চা, টা নিল,
-কি ব্যপার, খাচ্ছেন না কেন? ভয় পাবেন না, বিষ দেই নি।
-না না ঠিক আছে! বলে ভয়ে ভয়ে চুমুক দিল,
-কেমন হয়েছে চা??
-খুব ভালো হয়েছে, আমি এখন আসি?
-কি, চা খাওয়া শেষ হয়েছে, আর বিদেয় হবে?? তা হবে না,
-তাহলে,
এখন আমার সাথে বসে গল্প করবেন!
-কেন!!!!
-এতো কেন কেন করবেন না তো, বিরক্ত লাগে,
-আচ্ছা
-এখন আমার কি মনে হচ্ছে যানেন?
-না, কি মনে হচ্ছে,
-মনে হচ্ছে তোমাকে খুন করি!!! কথায় কথায়, কেন আর, আচ্ছা। এই দুটো শব্দ যেন ২য় বার না শুনি।
-আচ্ছা,, বলেই জিব কামর দিল,
আমি আর না হেসে পারলাম না, সাথে নিরবও হেসে উঠল, ছেলেটার হাসি টা দারুন, এতোদিন শুনেছি মেয়েদের হাসি, সুন্দর হয়। এখন দেখছি ছেলেদের ও হয়। মেয়েদের হাসি দিয়ে যদি মুক্তা ঝরে, তাহলে এই ছেলের হাসিতে হিরা ঝরবে।
-আচ্ছা, কালকে আমাকে মার্কেটে নিয়ে যেতে পারবে।
-না,
-না কেন?
- এমনি কালকে আমার অনেক কাজ আছে এখন উঠি সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে।
- আচ্ছা উঠুন ভিতুর ডিম একটা। তবে কালকে নিয়ে যেতেই হবে।
★সকাল বেলা,
আন্টিকে গিয়ে ধরলাম, আন্টি আপনার ছেলেকে বলেন না আমার সাথে মার্কেটে যেতে?
আন্টি নিরব কে ডাকতে শুরু করলেন এমনভাবে ডাকছে মনে হচ্ছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ যুদ্ধ বাধিয়ে ফেলবেন।
নিরব একটু মিষ্টি সাথে মার্কেটে যা তো, বেচারি যাওয়ার লোক পাচ্ছে না আমার কাজ আছে নাহলে আমিই যেতাম।
- না আমি যেতে পারবো না আমার অনেক কাজ আছে।
- তোর আবার কিসের কাজ সারাদিন ঘরের মধ্যে বসে থাকা ছাড়া যেতে বলছি এক্ষুনি যা।
-না আমি পারব না.
-নিরব! (আন্টি এমনভাবে নিরবে দিকে তাকালেন দেখে আমারই ভয় করছে)
-যাচ্ছি তো।
- এইতো আমার লক্ষি ছেলে যা বাবা দেখেশুনে যাস।
-tnq...আন্টি।
- আন্টি আমার কথায় মুচকি হাসলেন। তবে নীরবকে দেখে মনে হচ্ছে বেচারা খুব রেগে আছে।
তাতে আমার কি!!!
আমি আর নিরব এখন রিকশায় বসে আছি, খুব ভাল লাগছে তার সাথে ঘুরতে। মনের মধ্যে হাজার feelings জন্ম নিচ্ছে তার একটু একটু ছোঁয়া মাতাল করে দিচ্ছে, আচ্ছা কাউকে ভালবাসলে কি এরকমই হয়,হয়ত হয় কিন্তু সেটা আমার অজানা, কিন্তু দুঃখের বিষয় যতবারই তার সাথে আমার গা লাগছে ততবার'ই সে সরে সরে বসছে।
- কি ব্যাপার এ রকম ছটফট ছটফট করছ কেন?
- না মানে??
-কি মানে মানে করছ, আচ্ছা চাচা আপনার রিকশা কি ছোট??
-না মামনি রিকশা তো এরকমই হয়!
আমি কি বলতে চেয়েছি নিরব সেটা বুঝতে পেরেছে তাই সোজা হয়ে চুপ করে বসে আছে।
-আচ্ছা তোমার মধ্যে কি কোনো ফিলিংস নেই নাকি পাশে একটা সুন্দরী মেয়ে বসে আছে তুমি ছটফট ছটফট করছে।
-না মানে।
-কি মানে মানে করছো, বলেই তার দিকে একটু গরম দৃষ্টীতে তাকালাম বেচারা খুব ভয় পেয়েছে, মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে।
আজকে মার্কেটে গিয়ে অনেক বেশী মার্কেট করলাম নিরব কে একটা টি-শার্ট কিনে দিয়েছি, খয়েরি কালারের, তার গায়ে খুব মানিয়েছে, র্টি-শার্ট টি।
আজকে অফিস থেকে বাবা আসার পর বাবাকে বললাম, আমি আন্টির সাথে বেড়াতে যাব বাবা খুব অল্পতেই রাজি হয়ে গেল, বলল যাবি তো যা অনেকদিন তো কোথাও ঘুরতে যাসনি ঘুরে আয় ভালো লাগবে, আমার বাবা যে কেন এরকম মাঝে মাঝে বুঝে উঠতে পারিনা, কখনো কোনো আবদার অপূর্ণ রাখে না, পৃথিবীতে যদি একটি ভালো বাবা থাকে তবে সেটা আমার বাবা।
★সকালবেলা
আমি আন্টি, আঙ্কেল আর হাবলু টা বের হয়েছি অনেক দূরের রাস্তা তাই খুব সকালে বের হয়েছি আমি আর নীরব সামনে আর আন্টি আর আঙ্কেলও আমাদের পিছনে বসেছে। টুকটাক কথা হচ্ছে আমাদের মাঝে যতটা হাবলু ভেবেছিলাম আসলে ততটা না কথা বলতে পারে।
বাস চলছে আপন মনে, আর আমরা জানালা দিয়ে তাকিয়ে বাইরে প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করছি খুব সুন্দর লাগছে আরও সুন্দর লাগছে কারণ পাশে হাবলু টা বসে আছে। হাবলু টা পাশে বসে থাকলে কেন যে এত ভালো লাগে বুঝি না।
একটু পর,
ঘুমোনোর ভান করে, তার কাধে মাথা রাখছি, যতবারই মাথা রাখছি, ততবারই, সে মাথা ধরে সোজা করে দিচ্ছে, এতে আমার যে বিরক্ত লাগছে তা নয়, বরং ভালোই লাগছে, কাছের মানুষের একটু ছোয়াও কিছু সময় অনেক ফিলিংসের জম্ম দেয়। এ রকম করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি, বুঝতেই পারি নি।
ঘুম ভাঙলো নিরবের ডাকে, উঠে দেখি নিরবের কাধে আমার মাথাটা এখনো আছে।
- কি মেমসাহেব ঘুম হলো?
-আমি মাথা নেরে সায় দিলাম,
-তো চলুন এবার যাওয়া যাক,
-হুম চলেন। একটি প্রশ্ন মনের মধ্যে জম্ম নিচ্ছে যে,নিরবের কাধে মাথা ছিল, কিন্তু সে কিছু বলল না,
-চলে আসলাম খালার বাসায়, অনেক বড় বাড়ি, বাড়ি ভর্তি মানুষ, সবাই নিরব কে নিয়ে কি হেস্তনেস্ত শুরু করে দিসে, বলে বোঝাতে পারব না, আমার খুব মায়া হচ্ছিল,বেচারার জন্য, দেখে মনে হচ্ছে কখন যেন দম বন্ধ হয়ে মারা যাবে, আবার হাসিও পাচ্ছিল।
আন্টি সবার সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন, একজন কে পেয়ে খুব ভালো লাগছে, সে হচ্ছে নিতু, বয়সে আমার থেকে দু বছরের ছোট, তবে কথায় খুব সেয়ানা, আসার পর থেকে বলে যাচ্ছে, আপু তুমি কিন্তু আমার সাথে শোবে, সারা রাত তোমার সাথে গল্প করব ?? এ কথাটা না হলেও সাত বার বলেছে,
রাতের খাওয়া শেষে আমি আর নিতু এক রুমে ঘুমিয়েছি, বেচারি সারা রাত ঘুমোতে দেয় নি, এমনি তে রাত ভোরে বকর বকর করছে, তার উপর আবার ঘুমের ঘরে, একবার গায়ের উপর হাত তুলে দেয় তো একবার পা তুলে দেয়, কি সমস্যাই যে পরেছি, বলতে পারছি না।
খুব সকালে ঘুম থেকে ডেকে তুলেছে নিতু, আমাকে নাকি নদী দেখাবে, সকাল বেলা নাকি নদীর আলাদা একটা সুন্দর্য থাকে, সেটাই দেখাবে।
আচ্ছা মিষ্টি আপু, যদি নিরব ভাইয়া কে ডেকে নিয়ে আসি তবে কেমন হবে?
-হুম ভালোই, হবে,
-ঠিক আছে, বলেই চলে গেল নিরবের রুমে,আমিও পিছে পিছে গেলাম। গিয়ে ডাক শুরু করে দিল,
এই নিরব ভাইয়া ওঠ ওঠ না, বলেই হাত ধরে টানাটানি শুরু করে দিল, কিন্তু বেচারার ঘুম ভাঙার কোন লক্ষনই নেই। একবার হাত ধরে টেনে বিছানার এ পাশে নিয়ে যাচ্ছে, তো আরেক বার ও পাশে, কিন্তু মহারাজ এতোই ঘুমে ব্যস্ত যে কিছুই ঠিক পাচ্ছে না।
নিতু বলল আমার বিশ্বাস, এর ঘরে যদি চোর ঢুকে লুঙ্গিও খুলে নিয়ে যায় তাও সে ঠিক পাবে না, বলেই খিলখিল করে হাসতে শুরু করল।
নিতু একটা উপায় কিন্তু আছে !!
-কি??? নিতুর মুখখানা চকচক করছে,
তোমার ভাই এর মুখে , একমগ পানি ঢেলে দাও দেখবে, কাজ হয়ে গেছে,
- গুড আইডিয়া, বলে এক দৌরে পানি নিয়ে আসল নিতু।
-কি দেবো??
-দেবে না মানে অবশ্যই দেবে,,,
-! নিতু, নিরবের মুখে পানি ঢেলে দিল,
ওমনি কাজ হয়ে গেল, নিরব ধচমচ করে উঠে চিৎকার করতে লাগলো, কে কে??
এই ভাইয়া চুপ কর, আমি, আমি দিয়েছি!
-কেন তুই এতো সকালে আমার মুখে পানি দিলি ক্যন?
-ওঠ ঘুরতে যাবো, নদীর পারে,
- what????
-ওয়াট ফোয়াট বলে লাভ নেই, চল, যেতেই হবে, বলে টানতে টানতে নিয়ে আসল নিতু।
আর এদিকে আমি দর্শক হয়ে, সুধু তাদের কান্ডকাখানা দেখছি।
তিনজন মাটির রাস্তা ধরে হাটছি, মাঝখানে নিতু, আর একপাসে আমি, আর অন্য পাশে নিরব,
নিতু বকবক করে যাচ্ছে, আমি আর নিরব সুধু হ্য না উওর দিচ্ছি।
হাঁটতে হাঁটতে নদীর কাছে চলে এসেছি খুব সুন্দর নদী নদীতে হালকা স্রোত বইছে এমন সময় নিতু বলে উঠলো মিষ্টি আপু নৌকা তে উঠবে আমি নৌকা চালাতে পারি।
আমিতো মিষ্টির কথায় পুরো অবাক বলে কি মেয়েটা সে নাকি নৌকা চালাতে পারে? নৌকায় ওঠার ইচ্ছে আমার কোনোভাবে ছিল না তারপরও মিষ্টির জোরে উঠৈ পরলাম।
ওদিকে নিরব বেচারা পড়েছে মহা সমস্যা সে কিছুতেই নৌকাতে উঠবে না, তারওপর আবার সাঁতার জানেনা, শেষ পর্যন্ত নিতুর জোরাজোরিতে উঠতে বাধ্য হলো।
নিতু নৌকা চালাচ্ছে খুব ভালোই চালাচ্ছে কিন্তু বিপত্তি ঘটল নদীর মাঝখানে গিয়ে নোকা কিছুতেই পারে ফেরাতে পারছে না, কি একটা সমস্যা সবার মধ্যেই কি এক আতঙ্ক। এখন কি হবে ওদিকে নৌকা স্রোতে বয়ে চলে যাচ্ছে, আর নিরব এদিকে চেচামেচি শুরু করে দিয়েছে, ভয়ে বেচারার মুখ খানা দেখার মতন হয়েছে, তবে আমার খুব আনন্দ লাগছে এর আগে এরকম পরিস্থিতির শিকার হয়নি। কিছু মানুষ মরবে জেনেও আনন্দে থাকে যেমন এখন আমি আছি।
নিরবঃআমি বারবার করে বললাম আমি নৌকায় উঠব না আমি সাঁতার জানি না, আর উনি হিরো হয়েছে, জোর করে আমাকে নৌকাতে তুলল এখন আমাকে বাঁচাবে কে? আল্লাহ রক্ষা করো, বলে, চিৎকার শুরু করছে।
-ওদিকে নিতুর কোন টেনশনই নেই, ও নৌকা পারে ভেড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে,
নিতুঃকি আর হবে আমি হিরো আর তুই হিরোইন আমি তোকে বাচাবো আর মিষ্টি আপু ভিলেন সে নদীতে ডুবে মরবে।বলে হো হো করে হাসতে লাগলো
নিরবঃতোকে থাপ্পড় মেরে সবকটা দাঁত ফেলে দেবো হারামজাদী, এই পরিস্থিতিতেও তুই মজা করছিস? আল্লাহ বাচাও, বাচাও আমায়?? বলে আবার চিৎকার করতে লাগলো নিরব।
নিরবের এই কথা আমি থতমত খেয়ে গেছি যে ছেলে কথাই বলতে পারেনা, সে এখন মরার ভয়ে রীতিমতো চেঁচামেচি করছে।
অবশেষে নিতু নৌকা পারে ফেরাতে সক্ষম হলো, নিরব লাফ মেরে নৌকা থেকে নেমে হাঁপাচ্ছে, আমি নিরব এর কান্ড দেখে হাসবো না কাঁদবো কিছুই বুঝতে পারছি না, বেচারা কি ভয় ই না় পেয়েছে সেটা বলা যাচ্ছে না।
বাসায় চলে আসলাম এদিকে নিতু এর কান্ড কারখানা দেখে আমার খুব মেজাজ গরম হচ্ছে, সারাক্ষণ নিরবের পিছে পড়ে থাকে, নীরব যদি খেতে যায়, তবে সেও তার সাথে খেতে যাবে।যদি কোথাও ঘুরতে যায় তাহলে সে ও তার সাথে ঘুরতে যাবে।
অসহ্য লাগছে, নিতুর কর্মকান্ড।
, তার বোনের যে বিয়ে সেদিকে তার কোন খেয়াল নেই, সারাক্ষণ শুধু নিরব, নিরব করে, মরতে বসেছে। এসব দেখে আমারও খুব টেনশন হচ্ছে।
যদি একবার ভালোবাসি বলে ফেলে, তাহলে আমার কি হবে? আমি তো শিওর আমি মারা যাব! এখানে থাকব আর 2 দিন, কিন্তু আমার মনে হচ্ছে এখনি নিরবকে নিয়ে পালিয়ে যাই় মেয়েটা কখন কি করে বসে বলা যায়না,
*পরেরদিন,
সকাল থেকেই খুব বিজি নিতুকে সাজাতে গিয়ে এত বেশি কেউ সাজে! মনে হচ্ছে নিতুর বড় বোনের না, নিতুর বিয়ে! আর বারবার নীরবকে বলছে দেখতো কেমন হয়েছে??? এতে আমার বিরক্তির চরম শিখরে পৌঁছে গেছে।আর নীরব কে এতো দেখানোর কি আছে?
নিরব বারবাই বলছে, ভালো হয়েছে! কিন্তু নিতুর বিশ্বাস হচ্ছে না।তার মনে হচ্ছে ভালো হয় নি? তাই বারবার এসে আমার কাছে বায়না করছে, আপু এভাবে না, অন্য ভাবে সাজিয়ে দাও।আমি পরেছি মহা সমস্যায়, না পারছি, হ্যা বলতে , তো, না পারছি না বলতে।
বড়আপুর বিয়ে হয়ে গেল, কান্নাকাটির পর্ব শেষ করে, তারা বৌ নিয়ে বিদায় হলো, নিতুকে দেখলাম, কান্না করছে, কিন্তু তার চোখ দিয়ে একফোটা জলও বের হচ্ছে না।তার একটা কারন আছে, সে মেকাপের চিন্তা করছে, যদি নষ্ট হয়ে যায়???
এই সুযোগে আমি, নিরবকে, টানতে টানতে নিয়ে বের হলাম, এখন নিতু নেই, যা করার এখনি নি করতে হবে, নিরব কে নিয়ে বারতি টেনশন নিতে ভালো লাগছে না।
নদীর পারে, নিয়ে এসেছি নিরব কে!
নিরবঃ এভাবে টেনে আনার মানে কি?
আচ্ছা আমি কি নিতুর থেকে দেখছে খারাপ??
-এতো দূর থেকে টেনে এনেছো এ কথা শোনার জন্য?
- হুমম, বল না???
- নিরব অনেক টা গম্ভির শুরে উওর দিল! না!!
-বুকের ভেতর ধুপ করে শান্তি ফিরে এলো। এবার ঠিক আছে। বলেই বত্রিশ টা দাত বের করলাম।
-কি এর মানে কি??
-মানে কিছুই না, তোমাকে নিয়ে বারতি টেনশন নিতে পারছি না।
-মানে???
-নিতুর মতিগতি ভালো লাগছে না, যখন তখন ভালোবাসি বলে ফেলতে পারে!!তুমি কিন্তু ভুল করেও রাজি হবা না। আর রাজি হলেই আমি শেষ!
-শেষ মানে??
-শেষ মানে শেষ, ছাদ থেকে লাফ দিয়ে পরে মারা যাব!!
-মানে???
-এতো মানে মানে করো না তো, শুনো আমি তোমাকে ভালোবাসি, আর তোমাকে না পেলে সত্তি সত্তি মারা যাবো!!
-কি???
- হুম, এতোদিন সাথে থেকেছো, এখনো বুঝতে পার নি?? কেন সারাদিন তোমার পিছে পিছে ঘুরি, কেন ঝগড়া করতে চাই?
নিরব স্টাচু হয়ে গেছে, কিছু বলছে না,
-শুনো তোমাকে একটা কথা বলতে চাই! যেটা এর আগে কাউকে বলি নি!
-কি?
-I love you, বলেই একটা দৌর দিলাম, খুব লজ্জা করছে, তাই রিপ্লে শোনার আশা করি নি, পালিয়ে এলাম,
এসেই দেখি, নিতু সামনে দারিয়ে, কই গেছিলে আপু?
-এই তো একটু তোমাদের এলাকা ঘুরে দেখলাম,
-নিরব ভাইয়া গেছিল?
-হুম, আমি আর নিরবই তো ঘুরলাম,
-তো আমাকে ডাকলে না কেন?
- দেখলাম তোমার বড় আপু চলে গেল তাই কান্না করছো, মন টা খারাপ তাই ডাকলাম না!
- কে বলছে আমার মন খারাপ। আমি তো খুব খুশি আপুর বিয়ে হয়েছে বলে।ভালো হয়েছে এবার আমার পালা, বলেই। লজ্জায় মুখটা লাল করে ফেলল।
-তাই নাকি? তবে কাদলে কেন?
-ওটুকু তো, লোক দেখানোর জন্য কেদেছি, তা ছারা মানুষ খারাপ বলতো না, বলতো, বরবোনের জন্য একটুও মায়া নেই!
-এ্যা?
-হুম, আচ্ছা নীরব ভাই এখন কোথায়?
- আমাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে সিগারেট খেতে গেছে কিনা বলতে পারছি না!
- কি নীরব ভাই সিগারেট খায়?
-কেন তুমি যানো না?
- নীতু মাথা নেড়ে বললো, না তো
- নীরব বাসায় আসার পর নিতু তাকে এমনভাবে জেরা শুরু করে দিচ্ছে মনে হচ্ছে তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে সে একটা সাংঘাতিক খুন করেছে, কোথায় গিয়েছিলি, আমাকে নিয়ে যাস নি কেন, তুই নাকি ইদানিং খুব বাজে হয়ে গেছিস, সিগারেট খাওয়া শুরু করেছিস, আমার কি মনে হচ্ছে জানিস?
-নিরব দুটো ঢোক গিলে উওর দিল, কি??
-নিতু দাত কিটবিট কিটবিট করতে করতে বলল, মনে হচ্ছে, এখনি গলা টিপে মেরে ফেলি?
-এ্যা
--নিতু আর কিছু বলল না, রাগ চেক দেওয়ার চেষ্টা করছে,
সেদিন রাতে অনেকক্ষণ আমরা তিনজন বসে আড্ডা দিলাম, আমার খুব মাথাব্যথা ছিল তারপরও ঘাপটি মেরে বসে ছিলাম, আর যাই করুক আমার সামনে ভালোবাসি তো আর বলতে পারবেনা, রাত পোহালেই তো বিদায় হব।
★সকালবেলা
চলে আসতেছি হঠাৎ নিতু এসে বলল, তোকে একটা কথা বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু বলবো না জানি তোকে বলে কোনো লাভ নেই, কারন তুই একটা আবাল পোলা।
সত্যি কথা বলতে সেদিনকার মত স্বস্তি আমি জীবনে পাইনি।
বাসায় চলে এসেছি নিরবের বাসায় যেতে লজ্জা লজ্জা করে তাই একটু কম যাই,় ওদিকে আন্টি তো রেগে ফায়ার।
.একদিন বিকেলবেলা আন্টিদের বাসায় গেছি,
কি এখানে এসেছিস কেন?
কেন আসবো না?
আন্টি রাগান্বিত কন্ঠে বললেন, না, এখানে আসবি কেন? আমি কি তোর কেউ হই? জানিস একা একা বাসায় সময় কাটে না, তোকে পেয়ে ভেবেছিলাম ভালোই হল, অন্তত একজন পেয়েছি, যার সাথে কথা বলে দিন পার করা যায়। এখন দেখি সেও একই রকম??
-আন্টি তোমার যেহুতো এতো সমস্যা, তাহলে তোমাকে একটা বুদ্ধি দেই,
-কি??
তোমার ছেলের সাথে আমার বিয়ে দিয়ে বৌমা করে নাও ?তাহলেই তো হয়!!
কিভাবে যে কথাটা বললাম নিজেও জানিনা এখন আন্টির চোখের দিকে তাকাতে লজ্জা করছে ওদিকে আন্টি হা করে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে!
-কি তুই ওই বাঁদরটাকে বিয়ে করবি? সারা জীবন জ্বলে মরবি!!
-তারপরও আন্টি আমি বাদরকে বিয়ে করতে চাই?? -নানা আমি তোর জীবনটা এভাবে নষ্ট হতে দিতে পারি না।
- ধুরো আন্টি তুমি কি যে বলো না জীবন নষ্ট হবে কেন, আমি ঠিক সামলে নেব!! লজ্জায় যে মুখ টা লাল করে ফেলেছি, সেটা নিজেই বুঝতে পারছি।
-সত্তি বাদর বিয়ে করবি??
--আমি মাথা নেরে বললাম হুম!
-কিন্তু সে তো বেকার!! খাওয়াবে কি তোকে?
- কেন তোমরা আছো না, তোমাদের ভাত জুটলে, আমারও জুটবে, ওতেই চলবে।
-আচ্ছা, তোর বাবার সাথে কথা বলে দেখি,
-সেটা আমি বাবা কে আগেই বলছি, বাবা রাজি আছে!
-এমা বলিস কি!?
-হ্য। আচ্ছা তোমার বাদর টা এখন কোথায়?
-কোথায় আবার দেখ রুমেই আছে, বলেই একটা হাসি দিল।
-নিরবের রুমে আসলাম, আসলেই আন্টি ঠিকই বলেছে, রুমটা বেশ অগোছালো, এখানে বই তো সেখানে বই, কোথাও কিছু ঠিক নেই। আর বেচারা শুয়ে শুয়ে বই পরছে, বই এর নাম, হিমু রিমান্ডে।
বইটা আমিও পড়েছি, বই পড়ে মনে হয়েছিল। আমি যদি ছেলে হোতাম। তবে হিমু হতাম। রাতের বেলা জঙ্গলে গিয়ে জোসনা দেখতাম, সারাদিন টইটই করে রাস্তায় ঘুরতাম, মজাই অন্যরকম।
রুমে ঢুকেই দরজা বন্ধ করে দিলাম,
আমাকে দেখে ধরফর করে উঠে পড়ল, নিরব!!
-এ এই তুমি এখানে কেন? আর দরজা বন্ধ করলে কেন ?? বেচারা কথা বলতে পারছে না, তোতলাচ্ছে।
--আমি থাকবো না তো কে থাকবে শুনি??
-মানে??
--মানে তুমি আমাকে বিয়ে করছ!!
--অসম্ভব
-- আমি একটু উদাশ ভঙ্গিতে বললাম,বলে আর কোন লাভ নেই, সব উপরওলার ইচ্ছা!!
- উপরওলার ইচ্ছা মানে, তোমাকে বিয়ে করা ইমপসিবল!!!
-হা হা শুনো, তুমি যদি আমাকে বিয়ে করতে রাজি না হও তবে আমি এখন চিল্লবো,
-চিল্লাবা মানে!!
-হুম চিল্লাবো, চিল্লায়ে লোক জরো করে বলব, তুমি আমার সর্বনাস করেছ, সেটা কি ভালো দেখাবে বল!! মানসম্মানের ব্যপার!!
- এ্যা,, (বাদর টার মুখ দেখার মত হয়েছে, ঘেমে পুরো শার্ট চিপচিপ করছে।)
--আমি এগিয়ে গিয়ে বাদর টার কলার চেপে ধরে বল্লাম,, আমি ৩ পযন্ত গুনবো এর মধ্যে রাজি হতে হবে, না হলেই, জামা টা কয়েক যায়গার ছিরে, চিল্লানি শুরু করব!বলেই, গুনতে শুরু করলাম,
তিন বলার আগেই, বেচারা ভয়ে ভয়ে, বলে উঠল, আমি রাজি!! আমি রাজি।
-সত্তি তুমি রাজি??
-হুম,
-হাউ সুইট, মনে হচ্ছে এখনি একটা কিস করি??
--কিস করবা?
--হুম
--আচ্ছা কর ??
-দেখে তো মনে হয় ভাজা মাছ উল্টে খেতে পারো না, আর এখন কিস করতে বলছো? বাদর একটা।
-সমস্যা কি বউই তো,
--এ্য ন্যাকা, বিয়ের আগেই বৌ বানিয়ে ফেলছে। বিয়ের আগে এসব করতে নেই, যা হবার বিয়ের পর হবে, বলেই, দৌরে চলে আসি।
কিছু জিনিস, জোর করে নিজের করে নিতে হয়
না হলে সারাজিবন পস্তাতে হয়।
★কিছুদিন পর,
দুই পরিবারের সম্মতিতেই ধুম ধাম করেই বিয়েটা হয়,
বাসর ঘরে বসে আছি খুব লজ্জা করছে, জিবনের প্রথম বৌ সেজে নিরবের আসার অপেক্ষা করছি,,
ফিলিংস টা যেন কি রকম নার্ভাস নার্ভাস,
অবশেষে, নিরব আসলো, আমি উঠে গিয়ে সালাম করলাম, এটা বাঙালী মেয়েদের একটা নীতি-স্বভাব
নিরব আমাকে টেনে তুলল,
-আমি ফট করে বলে উঠলাম, চলো আজকে জোসনা দেখে পার করে দেই, যে ভাবে হিমু দেখে??
আচ্ছা, চলো,
নিরবের বাম হাত টা ধরে কাধে মাথা রেখে, চাদের দিকে তাকিয়ে ভাবছি, আসলেই ছেলাটা অদ্ভুদ, যা
বলছি, তাই করছে, আসলে এমন জিবনসঙ্গী পাওয়া ভ্যাগের ব্যপার। আমি মানুষ চিনতে ভুল করি নি।
মিষ্টিঃ কি ব্যপার এ রকম ড্যবড্যব করে তাকিয়ে আছো কেন??
নিরবঃ দেখছি, চাদের আলোয় আমার মিষ্টিকে,
যেখানে জোসনা এসে হার মানে।
যে আলোয় তাকে আরো মধুময় লাগে,
যেটা দেখে আকাশের চাদঁ টা হিংসে করে
দেখছি আমার সেই মিষ্টি কে।
---বাহ খুব ভালো ছন্দ মিলাতে পারো তো?
-তোমাকে দেখে হয়ে উঠব কবি,
লিখব প্রেমের হাজার কবিতা।
তোমাকে দেখে হয়ে উঠব গায়ক,
গাইব, প্রেমের গান!!
--তা সাহেব,, এতোদিন কই ছিলেন, এতোদিন চোখে পড়ে নি??
--পড়েছে তো, তোমার মিষ্টি থ্রেট গুলো অসম্ভব ভালো লাগতো, আর তোমার রাগী রাগি চেহারা! সে জন্যই তো?
--কি,?? তারমানে তুমি, আমাকে ভালোবাসতে??
--সে তো প্রথম দিন থেকেই,
--কি, বাদর, হারমি, বিড়াল বলে, বুকে কিল ঘুষি মারতে মারতে জরিয়ে ধরলাম ।
নিরব ও তার বাহুতে জরিয়ে নিলো আমায়,।।
পৃথিবীতে যদি, ভালোবাসার অনুভৃতি থাকে, তবে এটাই সেই অনুভৃতি, যেটা আজ আমি খুজে পেয়েছি।
★★এখন একটা গান মনে পড়ছে,,,
এ ভালোবাসা, শেষ হওয়ার নয়,
নয় কভু হারাবার।
এ ভালোবাসা, অসীম, অনন্ত পথ
হাত ধরে পাড়ি দেওয়ার।
লেখক আইডি....
Nistobdho Nirob (হিমু)
: